কিয়ামতের দিন সবার বিচার শেষ করার পর একজন লোক বাকি থাকবে। তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হবে কিন্তু তার চেহারা জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। তখন সে লোকটি কেঁদে বলবে- হে আমার রব! জাহান্নামের উত্তাপ আমাকে অস্থির করে তুলছে এবং এর শিখা আমাকে জ্বালাচ্ছে। আপনি আমার চেহারা জাহান্নাম থেকে অন্য দিকে ফিরিয়ে দিন। সে এভাবে আল্লাহর কাছে ক্রমাগত প্রার্থনা করতে থাকবে। তারপর আল্লাহ তাকে বলবেন- তোমার এ প্রার্থনা মঞ্জুর করা হলে তুমি কি আর কিছু চাইবে? সে বলবেঃ না, আপনার ইজ্জতের কসম! আমি আর কিছু চাইবো না। তো, তার চেহারা জাহান্নমের দিক থেকে সরিয়ে দেয়া হবে।
তারপর সে আবার বলতে শুরু করবে, হে আমার প্রভূ! আমাকে একটু জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দেন। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি বলোনি এরপর আর কিছু চাইবে না? ধিক হে মানব সন্তান! তুমি কোন কথা রাখো না। কিন্তু এ ব্যক্তি প্রার্থনা করতেই থাকবে। তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলবেন – তোমার এ ইচ্ছা পূরণ করা হলে আর কিছু চাইতে পারবে না। সে বলবে- না, আমি আপনার মর্যাদার কসম করে বলছি আমি আর চাইবো না। এভাবে সে অঙ্গীকার আর প্রতিজ্ঞা করতে থাকবে যে সে আর কিছু চাইবে না। অবশেষে তাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দেয়া হবে। অতঃপর যখন সে জান্নাতে গেটের দিকে তাকিয়ে জান্নাতের সূখ শান্তি দেখবে, নিজের ওয়াদার কথা স্মরণ করে কিছুক্ষণ চুপ থাকবে। কিন্তু পরিশেষে সে বলবে, হে আমার প্রভু আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন।
তখন আল্লাহ বলবেন- তুমি না এতক্ষণ ধরে সব ওয়াদা আর অঙ্গীকার করলে যে আর কিছু চাইবে না? ধিক তোমার! হে বানী আদাম! কতই না ও‘য়াদা ভঙ্গকারী তুমি। সে বলবে, হে আমার প্রভূ আমাকে আপনার সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে দুর্ভাগা করে রাখবেন না। সে এভাবে প্রার্থনা করতেই থাকবে, অবশেষে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা হেসে দিবেন।
আল্লাহর কসম! আমরা কখনই এমন একজন প্রভুর কাছ থেকে কল্যাণের আশা হারাতে পারি না যিনি হাসি দেন। তারপর আল্লাহ যখন হাসি দিবেন তখন তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিবেন।
সে জান্নাতে প্রবেশ করলে আল্লাহ তাকে বলবেনঃ এবার তুমি চাও। সে আল্লাহর কাছে বিভিন্ন জিনিস চাইতে থাকবে এবং সে এতো কিছু চাইবে যে শেষে আর চাওয়ার মত কিছু খুঁজে পাবে না। তখন আল্লাহ বলবেন- তোমার সব ইচ্ছা পূর্ণ করা হল। এবং দ্বিগুণ দেয়া হল।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ ঐ লোকটি হচ্ছে সর্বশেষে জান্নাতে প্রবেশকারী।
তাই, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমাদের রবের সাথে সাক্ষাতের জন্য প্রস্তুত হও। এবং তাঁর সম্পর্কে সুধারণা পোষণ কর। কারণ তিনি সেরকম যেমন তাঁর দাস তাঁর সম্পর্কে চিন্তা করে। তোমাদের রব সম্পর্কে ভাল ধারণা কর। কারণ তিনি তাঁর বান্দার সাথে তেমন আচরণ করবেন যেমন তাঁর বান্দা তাঁর সম্পর্কে ধারণা করে।
আর তাঁর সম্পর্কে ভাল ধারণা করার অর্থ ভাল কাজ করা। অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁর নিকট প্রত্যাবর্তন করা। তাঁর দয়ার স্বীকৃতি দেয়া এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
ও আল্লাহর বান্দারা! আল্লাহকে ভয় কর। মনে রাখ- একদিন তোমরা তাঁর সাথে সাক্ষাত করবে।
(মূল ভিডিওটি MercifulServant থেকে নেয়া।)