বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
[উস্তাদ নুমান আলী খানের সূরা আরাফের ১৭ নং আয়াতের তাফসীর থেকে অনুপ্রাণিত]
“অতঃপর আমি অবশ্যই (পথভ্রষ্ট করার উদ্দেশ্যে) আমি তাদের সম্মুখ দিয়ে, পেছন দিক দিয়ে, ডান দিক দিয়ে এবং বাম দিক দিয়ে তাদের কাছে আসব। আর আপনি তাদের অধিকাংশকেই কৃতজ্ঞ বান্দারূপে পাবেন না।” (সূরা আরাফঃ ১৭)
শয়তানকে যখন আদম আলাইহিস সালাম এর ব্যাপারে আল্লাহর আদেশ মান্য করল না, আল্লাহর আদেশের বিরোধিতা করল, অহংকার করল আল্লাহর আদেশের ব্যাপারে একজন মানুষের প্রতি, তখন আল্লাহ শয়তানকে বললেন বেরিয়ে যাও এখান থেকে, তুমি পাপী, তুমি আমার আদেশ মানোনি।
তখন শয়তান শপথ করে বলল আমি অবশ্যই, অবশ্যই আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য তাদের পথে বসে থাকব যতক্ষণ না আমি তাদের পথভ্রষ্ট করতে পারি।
এখানে ১৭ নং আয়াতে তার আক্রমনের কথা তার নিজের ভাষায়ই আল্লাহ বলেছেন সে শয়তান প্রচন্ড শপথ করে বলল, যতক্ষণ লাগুক না কেন সে বসে থাকবে সৎ বান্দাদের পথে এবং আক্রমণ করবে ৪টি দিক দিয়ে — ডান, বাম, সম্মুখ ও পেছন দিক দিয়ে।
এখানে কেবল একটি দিক বাদ রয়ে গেছে। তা হল ‘উপরের দিক’। কেন উর্ধ্ব বা উপরের দিক বাদ?
স্কলাররা বলেছেন কারণ এটা হল ‘ওহী’ আসার দিক, ‘আল্লাহর বাণীর দিক’, ‘আল্লাহর দিক’। আর ‘ওহী’ বা আল্লাহর বাণীকে শয়তান কিছুই করতে পারে না, শয়তান আল্লাহর বাণীকে ধারণ করে, এমন ব্যক্তিকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না।
যেহেতু শয়তান চতুর্দিক থেকে আঘাত করবে বলেছে এবং একটি দিক দিয়ে সে পারবে না সে নিজেও জানত, কারণ আল্লাহর ক্ষমতার কাছে তার ক্ষমতা টিকবে না, তাই আমরা যদি আল্লাহর কাছে চাই (দোয়া করি), আল্লাহর বাণীর দিকে ফিরে যাই (কুর’আনের কাছে), আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি (আল্লাহর পানে চেয়ে), আসমানের দিকে আল্লাহর পানে আশ্রয় চাই, তবে শয়তান এই দিক দিয়ে কখনই আক্রমন করতে পারবে না আর আমরাও শয়তান থেকে বেঁচে থাকতে পারব, তার ধোঁকা থেকে বেঁচে থাকতে পারব।
সুতরাং যত পারুন দুআ করতে থাকুন, ঐ আসমান থেকে আসা কুর’আন পড়তে থাকুন, ঐ আসমানের মালিকের নিকট সালাতের মাধ্যমে চাইতে থাকুন কারণ শয়তান এদিক দিয়ে কোন আক্রমন করতে পারে না।