সূরা ফাতিহা ৪র্থ পর্ব

তো আমরা কি নিয়ে যেন কথা বলছিলাম? সূরা আলি ইমরান? আয়াত নাম্বার… কি নিয়ে যেন কথা বলছিলাম? কত দূর গিয়েছিলাম? তো, আপনারা আশা করি ইংরেজি ভাষা সম্পর্কে পরিচিত। আমি ২টি বাক্য বলব। আপনারা আমাকে বলবেন কোনটা শুনতে স্বাভাবিক লাগছে। আমি দুপুরের খাবার খেয়েছি- এটা প্রথম বাক্য। ২য় বাক্যঃ “দুপুরের খাবার, আমি খেয়েছি”। কোনটা শুনতে আপনাদের স্বাভাবিক লাগছে? আমি দুপুরের খাবার খেয়েছি। ঠিক আছে। তারা স্কুলে গেল। স্কুলে, তারা গেল। কোনটা শুনতে স্বাভাবিক মনে হচ্ছে? কোনটা শুনতে স্বাভাবিক মনে হচ্ছে আবার বলুন… আমি স্কুলে গিয়েছিলাম বা, তারা স্কুলে গিয়েছিল, তাই না? কিন্তু যদি আমি বলি, “স্কুলে তারা গিয়েছিল” আপনি কি তবুও আমার কথা বুঝতে পারবেন? ঠিক আছে, একটা স্বাভাবিক আর অন্যটা অস্বাভাবিক কিন্তু, দুটোই বোঝা যাচ্ছে, তাই না ? ঠিক আছে। আসলে ব্যাপারটা এটা নয় যে আমি আপনাদের বোঝাতে চাচ্ছি ইউডা স্টার ওয়ার্সে কিভাবে কথা বলে। “Strong the force is..” কিন্তু আমি আসলে বলতে চাচ্ছি যে, আরবিতে মাঝেমধ্যে বাক্যে শব্দের ক্রম পরিবর্তিত হয়। এবং এটাকে অস্বাভাবিক করে। যখন আপনি ঈদের নামাযে হেঁটে যান যখন আপনি ঈদের নামাযে গাড়ি চালিয়ে যান, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া…. আমরা কি বলি ? লিল্লাহিল হামদ। লিল্লাহি আল হামদ। ফাতিহাতে কি বলেন? আলহামদুলিল্লাহ। শব্দগুলো একই কিন্তু বলা হয়েছে… উল্টা করে। এবং এমনটা শুধু ঈদের নামাজের জন্য না। কুর’আনেও এমনটাই রয়েছে । ওয়া লিল্লাহিল হামদ। রাব্বিস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বিল আরদ। রাব্বিল আলামিন, কুর’আনেই আছে। কখনো কখনো আল্লাহ বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ”। আসলে, আল্লাহ ৭ বার আলহামদুলিল্লাহ বলেছেন। এবং কয়েকবার কুর’আনেই পাবেন লিল্লাহিল হামদ। দুঃখজনক বিষয় হল, এর সবগুলোই একই ভাবে অনূদিত হয়। কিন্তু তারা আসলে একই জিনিস না। ২টা ভিন্ন জিনিস।

আর আমি আপনাদের ব্যাখ্যা করব, কি পার্থক্য আছে আলহামদুলিল্লাহ এবং কিসের মধ্যে? লিল্লাহিল হামদ। এবং আল্লাহ কেন ফাতিহা’তে আলহামদুলিল্লাহ বলেছেন। এবং কি পার্থক্য তৈরী হয়েছে তিনি লিল্লাহিল হামদ না বলাতে। আলহামদুলিল্লাহ নিয়ে বলা শেষ কথা গুলোর একটা হবে এটা। আরবিতে যখন অস্বাভাবিক ক্রম ব্যবহার করবেন, চলুন, ফিরে যাই আগের আমি দুপুরের খাবার খেয়েছিলাম। এটাকে অস্বাভাবিকভাবে বলাটা কেমন ছিল? ”দুপুরের খাবার, আমি খেয়েছি।” মনে পড়ে? যখন আপনি অদ্ভুতভাবে কথাটা বলছেন তখন আপনি আসলে বলছেন, আমি অন্য কিছু খাই নাই। আমি শুধু দুপুরের খাবার খেয়েছি। কিন্তু আরবির ক্ষেত্রে ‘only’ (শুধু) বলার দরকার পড়ে না। তারা শুধু ক্রমটাকে উলট পালট করে দিলেই তা বোঝা যাবে। এবং এটা “শুধুমাত্র” শব্দটাকে নির্দেশ করছে। যদি আমি বলি, তারা স্কুলে গিয়েছে – এটা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি বলি, স্কুলে, তারা গিয়েছে। আমি আরবি’র দৃষ্টি কোন থেকে আসলে কি বোঝাচ্ছি? আরবির যুক্তি অনুযায়ী আমি কি বলছি? তারা শুধু স্কুলেই গিয়েছে। তারা সিনামা হলে যায় নি। তারা খেলতেও যায় নি। তারা কাজেও যায় নি। তারা শুধু স্কুলেই গিয়েছিল, আর কোথাও যায় নি। বুঝতে পারছেন? যখন আপনি ক্রমটা উল্টো দেন, তখন সেটা অর্থের সাথে একটা অতিরিক্ত শব্দ যোগ করে। কোন শব্দটা যোগ করে? কেবলি/শুধুমাত্র এবং আমি চাই আপনারা এই শব্দটাকে একটু অন্যদিক থেকে ভাবুন যেন ভালো করে বুঝতে পারেন। শিক্ষক হিসেবে, একসময় আমি প্রাথমিক স্কুলে পড়াতাম। একসময় কিন্ডারগার্ডেনে পড়াতাম। আরেক সময় দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াতাম। এটা আমার জন্য একই সাথে সবচেয়ে ভালো এবং সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্যে একটা। কিন্তু যাই হোক, তো আমি ৩য় শ্রেনীতে পড়াচ্ছিলাম। ২টা মেয়ে পেছনে বসে ক্লাসে কথা বলছিল। যায়নাব ও ফাতেমা। আর, আমি মেয়েদের ব্যাপারে একটা কথা বলতে পারি কারন আমার ৪ টা (মেয়ে) আছে। তারা (অনেক) কথা বলতে পারে। তো, পেছনের ২ মেয়ে। তারা চালিয়েই যাচ্ছে। কথা বলছে তো বলছেই। আর, আমি বললাম “যায়নাব!”। আর, তখন সে বলল, শুধু আমিই কথা বলছি না। এখন যখন সে বলল, “শুধু আমি একাই কথা বলছিলাম না।” তখন সে আসলে কি বোঝালো? যদি আমি প্রিন্সিপালের অফিসে যাই, তাহলে ফাতেমাকেও যেতে হবে কিন্তু, তাকে পুরো আরেকটি বাক্য বলতে হয়নি। সে শুধু কোন শব্দটি কৌশলে ব্যবহার করল? শুধুমাত্র। তাই, যদি আপনি এই ‘শুধু’ শব্দটাই কৌশলে ব্যবহার করেন, আপনি আসলে ২টি কথা বলছেন একটি কথা বলার মাধ্যমে। এটাই “শুধু” শব্দটার মজা।

উদাহরণ হিসেবে যদি আমি বলি, আমি শুধু সিংগাপুরে আসি নাই। আমি কিন্তু বেশি কিছু বলিনি। কিন্তু আপনি বুঝেছেন, তাই না? আমি মালয়শিয়াতেও গিয়েছিলাম…ইত্যাদি, তাই না? আপনি খালি জায়গাটা পূরণ করে নিতে পারেন। এখন, আল্লাহ মাঝেমধ্যে বলেছেন, লিল্লাহিল হামদ হামদ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। হামদ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। বাকিটা পূরণ করুন। এখানে আরো আছে, এটা দ্বারা আরও বুঝা যায়… সেটা কি? হামদ শুধু আল্লাহর জন্য… আমি উত্তরের জন্য অপেক্ষা করব। হয়ত এটা বেমানান দেখাবে, কিন্তু আমার কিছু আসে যায় না। আমি অপেক্ষা করব। হামদ শুধু আল্লাহর জন্য। খুব ভালো, আর কারো জন্য না। এটা আর কারো জন্য না। ফুল স্টপ। যখন আপনি বলেন, শুধুমাত্র। তখন আপনি আসলে বলছেন, হামদ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং আর কারো জন্য নয়। আল্লাহ বলেন, লিল্লাহিল হামদ- ৪৫ নাম্বার সূরায়। সূরা জাসিয়া। ৪৫ নাম্বার সুরার শেষ অংশে, ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য যে, পুরো ৪৫ নাম্বার সুরাটা হচ্ছে শিরককারীদের সাথে বিতর্ক। পুরো সূরাটাই একটা বিতর্ক। এবং এই বিতর্কের শেষে, আল্লাহ মুশরিকদের বলছেন, এই! হামদ, শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। তো উনি মুশরিকদের কি বলছেন? হামদ শুধু মাত্র আল্লাহরই জন্য, এটা আর কারো জন্য নয়। অন্য ভাবে বললে, লিল্লাহিল হামদ ব্যবহার করা হয় এমন কারো সাথে কথা বলার সময় যারা আপনার সাথে একমত নয়। যখন মুসলমানরা পরস্পরের সাথে কথা বলে তখন আমরা লিল্লাহিল হামদ বলি না। আমরা কি বলি? আলহামদুলিল্লাহ, কারণ আমাদের মধ্যে সে ধরণের মতভেদ নাই। আপনি কোন মুসলিমকে এভাবে বলেন না, “এই! হামদ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। বুঝছিস?” না! আমরা শুধু আলহামদুলিল্লাহ বলি। কারণ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র ব্যাপারে আমরা একমত। তাই এখানে বিতর্কের কোন দরকার নাই। আমাদের সেই সুর ব্যবহার করার দরকার পড়ে না। প্রতিধ্বনিতে এত সমস্যা হচ্ছে কেন? আপনি কি ওখানে বসে রিমিক্স করছেন? তো, ব্যাপারটা হচ্ছে এমন, আপনাদেরকে একটা ছোট গল্প বলি। একবার আমি ভ্রমণ করছিলাম। সময়টা ছিল ৯/১১’র কিছুদিন পরেই দেশের অবস্থাও বেশ উত্তেজিত ছিল। আমি লুইজিয়ানাতে গিয়েছিলাম, আপনাদের যেতে সুপারিশ করব না কিন্তু আমি গিয়েছিলাম। তো, ভ্রমণ করছিলাম, এর মধ্যে আমি একটা গ্যাস স্টেশনে থামলাম গ্যাস নিচ্ছিলাম। এক লোক আমার দিকে তাকালো তার সাথে একটা পিক আপ ট্রাক ছিল। আমি জানতাম না। পিক আপ ট্রাকের পেছনে সাধারণত শট গান থাকে। আমি জানতাম না। আর সে বলল, “ছেলে তুমি কি ইসলাম থেকে এসেছ?” আর আমি ভাবছি আমার কি বলা উচিৎ। আমি যদি বলি, না আমি নিউ ইয়র্ক থেকে এসেছি এটা তাদের জন্য আরও খারাপ শোনাবে। আমি বললাম, প্রভুর প্রশংসা। প্রভুর প্রশংসা। আমি যখন বললাম, প্রভুর প্রশংসা। তিনি ‘আমিন’ বলে চলে গেলেন। যখন আমি বললাম প্রভুর প্রশংসা করুন, এটা কি এমন হতে পারে তখন কেউ আমাকে অন্যভাবে বুঝতে পারে? তা কি সম্ভব? যদি আমি তাকে বলতাম, প্রশংসা আল্লাহর জন্য। তাহলে ডিস ডিস…ডিস। (গুলি করে দিত হয়তো) কিন্তু প্রভুর প্রশংসা করুন কথাটা বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে বুঝতে পারে।

আমি পরবর্তি পয়েন্টে যাচ্ছি। পরবর্তি পয়েন্ট হচ্ছে, আল্লাহ এভাবেই আমাদের কাছে তাঁর পরিচয় দিয়েছেন সুরা ফাতিহায়। তিনি এটাকে একটা বিতর্কের বিষয় করেন নি তিনি আমাদের বকা বকি করেন নি কুর’আনের শুরুতেই। তিনি আমাদের বলতে চেয়েছেন যে আলহামদুলিল্লাহ কোন বিতর্কের বিষয় না এটা এমন কিছু যা আপনারা আগে থেকে জানেন। এটা আপনার হৃদয়ে আগে থেকেই ছিল। তাই কোন দরকার নেই লিল্লাহিল হামদ বলার। এর বদলে আল্লাহ কি বললেন? আলহামদুলিল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ। জানেন এটা আমাদের কি শেখাচ্ছে? আলহামদুলিল্লাহ আমার অন্তরে আগে থেকেই আছে। আমার এর ব্যাপারে আশ্বস্ত হতে হবে না। আমার মধ্যে গেঁথে দিতে হবে না। মুশরিকরা এটা হারিয়ে ফেলেছিল। তাই তাদেরকে এটা আবার দিতে হবে। তাই তিনি কি ব্যবহার করলেন? লিল্লাহিল হামদ। এটা পরবর্তি অংশ। এটা সত্যিই মজার। আল্লাহর কমপক্ষে কতটি নাম রয়েছে? ৯৯টি নাম। আল্লাহ বললেন না, আলহামদুলির রহমান ,আলহামদুলির রাহিম, আলহামদুলিল মা’লিক, আলহামদুলিল খালেক, আলহামদুলিল ওয়াহহাব, আলহামদুলিল কাহহার, সবগুলোই ঠিক আছে। সবগুলোই ঠিক আছে। কোনটাইতো ভুল না। আল্লাহ কেন ব্যবহার করলেন আলহামদুলি… কি? আল্লাহ ফাতিহা হচ্ছে- আল্লাহ নিজের পরিচয় দিচ্ছেন যখন আপনি কারো কাছে নিজের পরিচয় দেন আপনি আপনার বিবরণ বলেন নাকি নাম বলেন? আপনি নাম বলেন। আপনি যদি আমার নাম না জানেন, আমি এসে বলব না “আসসালামুয়ালাইকুম, আমি একজন শিক্ষক।” কি? আসসালামুয়ালাইকুম, আমি নো’মান আমি যদি বলি, আসসালামুয়ালাইকুম আমি একজন শিক্ষক অন্যজন কি বলবে? ওয়ালাইকুমুস সালাম, আপনি অদ্ভুতও বটে। এরপরে হেঁটে চলে যাবে আপনি আপনার পরিচয় দিতে গিয়ে বিবরণ দেবেন না আপনি আপনার পরিচয় দেবেন নাম দিয়ে। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, চলুন আরেকটু বিশ্লেষণ করি।

ধরুন আল্লাহ শব্দটি এখানে নেই। শব্দটি সরিয়ে দিন। তাহলে কি বাকি থাকলো? আলহামদুলি-রব্বিল আলামিন। আমি আপনাদেরকে পূর্নাংগ অনুবাদটা বলছি না, হামদ- জগৎ সমূহের প্রতিপালকের জন্য। এভাবেই এটা অনুবাদ করা হবে- ঠিক না? এবং আপনি আল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করছেন না মনে আছে আমি কি বলেছিলাম? প্রভুর প্রশংসা। এটা কি কারো জন্য বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে? যখন আপনি কাউকে বলবেন, এই! হামদ জগৎ সমূহের প্রতিপালকের জন্য। এটা কি সম্ভব যে তাদের কাছে রব্বিল আলামিন (জগৎসমূহের প্রতিপালক) বলতে অন্য কিছু বোঝায়? এখন আমি যদি আমার সেই লুইজিয়ানার বন্ধুকে বলতাম, আল্লাহর প্রশংসা কর- যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক তার জন্য সেখানে বুঝার কিছুই বাকি থাকবে না যে আমি আসলে আল্লাহর কথা বোঝাচ্ছি কুর’আনেই এমনটি আছে কোন নবীকে জাদুকরদের সাথে লড়তে হয়েছিল? মুসা (আঃ)। মুসা (আঃ) জাদুকরদের মুখোমুখি হলেন। তারা ফেলল তাদের দড়ি এবং লাঠি তিনি তাঁর লাঠি ফেললেন। তাঁর লাঠি বাকিগুলোকে খেয়ে ফেলল। জাদুকরদের কি হল? তারা কি করল? তারা পড়ে গেল সেজদায়। ফেরাউন মঞ্চে দাঁড়ানো। আর তারা সেজদা করছে এবং ফেরাউন কিছু বুঝে উঠতে পারছিল না। কি হচ্ছে এগুলো। তোমরা কি ২য় পর্বের জন্য তৈরি হচ্ছ? নাকি এটা জাদুরই অংশ? নাকি… এটা কি আসলে? তারা সিজদাহ থেকে উঠল এবং বলল, আমরা বিশ্বাস আনলাম রব্বিল আলামিনের উপর ফেরাউন এখনো দ্বিধান্বিত কারণ, সে বলল, বুঝছি বুঝছি, আমি জানি, আমার কথাই বলছ কারণ সে ভাবছিল সে কি? রব (প্রভু)। যখন তারা বললেন, আমান্নাবি রব্বিল আলামিন। ফেরাউনের তাতে কোন সমস্যাই ছিল না সে ভাবছিল, “আর…” বলো… তারা বোঝালো, আরে না… রাব্বি মুসা ওয়া হারুন। মুসার রব, হারুনের রব। তুমি না। তাদেরকে পরিষ্কার করতে হয়েছিল যদি তারা শুধু বলত রব্বিল আলামিন, ফেরাউনের তাতে কোন সমস্যাই ছিল না বুঝতেছেন? তাই আল্লাহ- শব্দটি গুরুত্বপূর্ণ। আলহামদুলিল্লাহতে আল্লাহ শব্দটি গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু আরেকটা খুবই চমৎকার ব্যাপার আছে। যখন আমি একজন চিত্রকরকে ধন্যবাদ দেই, একটা চিত্রকর্মের দিকে তাকিয়ে কিংবা সে আমাকে একটা ক্যালিগ্রাফি বানিয়ে দেয়ার কারণে। আমি যদি বলি “আপনাকে ধন্যবাদ”, আমি তাকে আসলে কেন ধন্যবাদ দিলাম? তার চিত্রকর্মের জন্য। যখন আপনি একজন শিক্ষককে ধন্যবাদ দেন, আপনি তাদের ধন্যবাদ দেন যেভাবে তারা আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন তার জন্য। যখন আপনি ধন্যবাদ দেন এমন একজনকে যে আপনাকে সাহায্য করেছেন, আপনি তাদেরকে ধন্যবাদ দেন তারা আপনার প্রতি যে সাহায্য করেছেন তার জন্য। ধন্যবাদ খুব নির্দিষ্ট। আপনার জন্য যা করা হয়েছে তার জন্য। ঠিক? প্রশংসাও তেমনি খুব নির্দিষ্ট। আপনি একটা পর্বতের সৌন্দর্যের প্রশংসা করেন। এর সৌন্দর্যের জন্য। আপনিই মুক্ত বাতাসের সজীবতার প্রশংসা করেন কারণ আপনি এটা অনুভব করছেন। কিন্তু আপনি যদি বলেন, আলহামদুলিল খালেক প্রশংসা ও ধন্যবাদ সৃষ্টিকর্তার জন্য। তখন আপনি আল্লাহকে শুধুমাত্র যে কারণে প্রশংসা করছেন তা হচ্ছে… সৃষ্টি করার জন্য। আপনি যদি বলেন, আলহামদুলিল হাকিম প্রশংসা ও ধন্যবাদ মহাপ্রজ্ঞাময়ের জন্য তখন আপনি আল্লাহর যে গুনটির জন্য তাঁর প্রশংসা করছেন তা হচ্ছে, তাঁর প্রজ্ঞা। আমি কি করে আল্লাহর সব ব্যাপারকে প্রশংসা করতে পারি? এবং আমি কোন কিছুই বাদ দিব না যে সব বিষয় আমি চিন্তা করতে পারি এবং যে সব বিষয় আমার চিন্তার বাহিরে সব কিছু একটা বাক্যতেই পাব, যাতে আমি সত্যিকার অর্থে এক বাক্যে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারব যেভাবে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিৎ। আমার হাতে একমাত্র উপায় কি? আলহামদুলিল্লাহ। এটাই একমাত্র উপায়। এগুলো হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ’র ব্যাপারে অল্প কিছু কথা যেসব অনুশীলন আপনাদের সাথে করলাম যেসব ক্লান্তিকর অনুশীলন সবকিছু দিয়ে আমি শুধু এতটুকুই বোঝাতে চাইলাম যে, আলহামদুলিল্লাহ কি… এর বিকল্প কি হতে পারে? কি কারণে বিকল্পগুলো এর মত অত ভালো নয় ভাবতে পারেন, এরকম অনুশীলন আছে পুরো কুর’আন জুড়েই!! শব্দের পর শব্দ জুড়ে!! এটা আপনাকে কুর’আনকে প্রশংসা করাতে বাধ্য করবে। আমাকে সম্প্রতি জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ফাতেহা’ই কেন? আমি বলেছিলাম, যদি মুসলিমরা চিন্তার গভীরে যায় ফাতিহা নিয়ে, তা পুরো কুর’আনের জন্য দ্বার উন্মুক্ত করে দেবে। যখন আমরা ফাতিহা’কে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করি, স্বাভাবিকভাবেই আমরা পুরো কুরআনকেই কম গুরুত্ব দিয়ে দেখব। যদি আমরা সুরা ফাতিহা’র গভীরতা এবং এর সৌন্দর্য্যকে প্রশংসা করতে শুরু করি, তা আমাদের বাকি কুর’আনটা জানতে উৎসাহিত করবে। ফাতিহা’র অর্থ কি? সূচনা। যখন আপনি এটা নিয়ে ভাববেন, তা বাকি দরজাগুলো খুলে দেবে। আর যদি না ভাবতে শেখেন, তাহলে দরজা বন্ধ থেকে যাবে আমরা আজকে এটাই করতে যাচ্ছি। এজন্যেই ফাতিহা।