Videos |
আলহামদুলিল্লাহ্, আমি মনে করি আপনারা সবাই অবহিত যে রমযান মাস খুব দ্রুতই এগিয়ে আসছে। এবং এটাই উপযুক্ত সময়, আমরা যাতে আমাদের প্রত্যেকটি সুযোগকে কাজে লাগাই নিজেকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য এবং যতটুকু সম্ভব নিজেদেরকে প্রস্তুত করে নিই এই মাসটির সম্পূর্ণ সুযোগ গ্রহণের জন্য। ক্ষমার প্রাপ্তির সুযোগ, আল্লাহ্র জান্নাত লাভের সুযোগ, এবং আমাদের ঈমানকে নতুন করে তরতাজা করার সুযোগ — আমরা যেন এই সুযোগগুলো কোন মতে না হারাই। আর তাই আমি মনে করেছিলাম এটি একটি উপযুক্ত সময় আমার নিজের এবং আমার পরিবারের স্মরণের জন্য এবং আপনি এবং আপনার পরিবারের স্মরণের জন্য, যে কী কী উপায়ে আমরা রমযান থেকে সবচাইতে বেশি লাভবান হতে পারি। সেই কারনেই আমি খুৎবার শুরুতে রমযান সম্পর্কিত আয়াতটি তেলাওয়াত করেছি, এটি কুর’আনে উল্লেখিত রমযান সম্পর্কিত একমাত্র আয়াত। তবে সম্পূর্ণ আয়াতটি বর্ণনা না করে, আমি আয়াতটির শেষাংশের দিকে দৃষ্টিপাত করতে চাই। সাধারনত খুৎবার সময়টুকু হয় আধঘণ্টা বা তার কম, এবং আয়াতের শুরুর অংশ বর্ণনা করতে করতে এত সময় পেরিয়ে যায় শেষের দিকে গেলে আপনি অত মনোযোগ দিতে পারেন না, অথবা খতীবের কাছে খুব কম সময় থাকে রমযান সম্পর্কিত এই আয়াতটির শেষাংশের প্রাচুর্যটা তুলে ধরার। তাই, ইন শাা আল্লাহু তা’য়ালা, আমার আজকের খুৎবা হবে শুধুমাত্র আয়াতটির শেষের অংশ নিয়ে, সুবর্ণ এই রমযান মাস সম্পর্কিত আল্লাহ আজ্জা ওয়া জালের বাণীগুলো নিয়ে। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ আপনার জন্য সহজ করতে চান, তিনি আপনার জন্য কাঠিন্য চান না”। কাউকে এটা বলাই যথেষ্ট যে ‘আমি চাই তোমার কাজগুলো সহজ হোক’, তার উপরে এটা না বললেও হয় যে ‘আমি চাই না যে তোমার কাজগুলো কঠিন হোক’ । আপনি বলতে পারেন ‘আমি চাই খাবার টা সুস্বাদু হোক’। আপনার বলতে হবে না, ‘আমি চাই না খাবার টা খেতে খারাপ হোক’। ব্যাপারটা বলা হয়ে যায় যখন আপনি বলেন,...
Videos |
উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া “Quranic Gems” সিরিজ থেকে নেয়া। আজ আমি আপনাদের সাথে সুরা আনফালের দুটি আয়াত আলোচনা করব। আয়াত ২১ ও ২২। এই দুটি আয়াতে আল্লাহ রব্বুল আলামীন শ্রবণের গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ বলেন, “আর তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা বলে যে, আমরা শুনেছি, অথচ তারা শোনে না।” অতএব শুধু শুনলেই হবে না, মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। এই আয়াতে মনোযোগী শ্রোতা হওয়ার ব্যাপারে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন যে, আজকাল আমরা মিডিয়ার উপরখুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। আপনি হয়ত একই সময়ে কিছু শুনছেন এবং অন্য কিছু দেখছেন, আবার হয়ত আপনার বাবা-মার কথাও শুনছেন। আমরা একই সময়ে বিভিন্ন জিনিস নিয়ে ব্যস্ত আছি, কিন্তু আসলে কোনোটাই মনোযোগ দিয়ে করছি না। আমাদের এমন ভাবে নিজেদের তৈরি করতে হবে যে, যখন আমরা কিছু শুনব, আমরা যেন তাতে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারি। আজকাল এটা খুবই সাধারণ ঘটনা যে, এমনকি জুমুয়ার নামাজে, লেকচারে বা ধর্মীয় আলোচনার আসরেও শ্রোতারা মনোযোগ দিচ্ছেন না। এমনকি আপনারা যখন আমার এই লেকচার শুনছেন আপনারা মোবাইলে মেসেজ চেক করছেন। কেউ কেউ হয়ত মোবাইল ঘাঁটছেন বা ফেইসবুক আপডেট করছেন ।এই ভিডিওটিও শুনার সময়ই আপনি হয়ত অর্ধেক মনোযোগ দিয়ে আমার লেকচার শুনছেন। বাকি অর্ধেকটা দিয়ে অন্য কিছু করছেন। আল্লাহ বলেন, “তাদের মত হয়ো না যারা বলে যে, শুনছি কিন্তু আসলে মনোযোগ দিয়ে শুনে না।” রাসুলাল্লাহকে (সাঃ) তাদের যে সম্মান দেখানোর কথা এখানে তার কথাই বলা হচ্ছে। তাহলে আয়াতের প্রথম অংশে মনোযোগ দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। প্রথম উপদেশ হচ্ছে যে, “আমরা যখন কারো কথা শুনব…” দেখুন, এখানে কিন্তু সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি যে, কার কথা শুনব,এখানে এই মুহূর্তে শুধু শিষ্টাচারের কথাই বলা হচ্ছে। আমাদের ভালো মনোযোগী শ্রোতা হতে হবে। আপনার মা আপনার সাথে কথা বলছেন, ফোন সরিয়ে রাখুন।...
Videos |
উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া “Quranic Gems” সিরিজ থেকে নেয়া। أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنسَوْنَ أَنفُسَكُمْ وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ ۚ أَفَلَا تَعْقِلُونَ কুরআন পড়ার সময় তোমরা কী মানুষকে ভালো কাজের আদেশ দাও আর নিজেদের কথা ভুলে যাও? তোমরা কী তোমাদের বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করবে না? (২:৪৪) আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলি, আজকে সুরা বাকারার ৪৪তম আয়াত থেকে কিছু পয়েন্ট আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। আল্লাহ্ আজ্বা ওয়া জাল ইসরাইলীদেরকে বলছেন এবং উনি তাদেরকে বেশ কিছু আদেশ দিলেন প্রথমে। এই আদেশগুলো আসলে আপনি ইতিবাচক প্রভাব বলতে পারেন। একটা অংশ হচ্ছে, , “أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ ۚ” “আতআ’মুরুনা আন-নাসা বিল-বিররি” তোমরা কি মানুষকে ভালোর কথা বল বা ভালো কাজের আদেশ, পরামর্শ দাও আর একই সময় নিজেদের কথা ভুলে যাও, “وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ” “ ওয়া আ’ন্তুম তাতলূনা আল-কিতাবা” যখন আদতে তোমরাই কিতাবটি পড়ছ। তোমরাই এই বই পড়াতে নিমগ্ন। এখন এই “কিতাব পড়াতে” কথাতে আমি ফিরছি একমিনিট পর। এখন এই আয়াত “أَفَلَا تَعْقِلُونَ” “আ’ফালা তা’ক্বিলুনা” তখন তোমরা কী ভাবো না, তোমরা কী নিজেদের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ কর না। অবশ্যই এই আয়াতের মূল অর্থ হচ্ছে তোমারা মানুষকে ভালো কাজ করতে বল এবং তোমরা নিজেদের কথা ভুলে যাও, নিজেরাই তা কর না। এটা কীভাবে হয়? আসুন আরো গভীরভাবে দেখি কয়মিনিটের জন্য। প্রমথত এবং প্রধাণত, আল্লাহ্ আজ্বা ওয়া জাল, বিদ্রুপ করে বলছেন ““وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ” “ ওয়া আ’ন্তুম তাতলূনাল-কিতাবা” তোমারা হচ্ছ তারা যারা কিতাবটি পড়ছ। এখানে বলা হচ্ছে যে কেউ আল্লাহ্র কিতাব পড়ে, এটা হতে পারে অতীত কালের তাওরাত অথবা বর্তমান কুরআন, যখন আপনি আল্লাহ্র কিতাব পড়ছেন, প্রথম যার কথা আপনার চিন্তা করা উচিৎ, প্রথমত এবং প্রধাণত আপনার নিজের জন্য ভাবা উচিৎ। আমার নিজের জন্য ভাবা উচিৎ। আল্লাহ্র কিতাব আমার এই উদ্দেশ্য নিয়ে দেখা উচিৎ নয় যাতে...
Videos |
উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া “Quranic Gems” সিরিজ থেকে নেয়া। আজকে আমরা নৈতিকতা ও আচরণের একটি বিষয় শিখব- তা হচ্ছে আদাব। উম্মাহর মধ্যে, মুসলিমদের লাইফস্টাইলের মধ্যে এবং এমন কিছু যা আল্লাহ আমাদের শিক্ষা দেন, যেটি সাধারণভাবে অবহেলিত। এবং আল্লাহ বলেন, “ইয়া আইউহাল্লাযিনা আমানু”– তোমরা যারা ঈমান এনেছ, তোমরা যারা ঈমানে প্রবেশ করেছ, লা তাসআলু আনইয়াশইয়াআ- জিজ্ঞেস করোনা বিষয়াদি সম্পর্কে, ইন তুবদালাকুম তাসু’কুম- যদি তা তোমাদের উপর প্রতীয়মান হয়, যদি উত্তরটি তোমাদের জন্য স্পষ্ট হয়ে যায়, তোমরা তা পছন্দ করবেনা। তা তোমাদের জন্য খারাপ হবে, তোমরা উত্তরটির জন্য কষ্ট পাবে।” আমি আপনাদের একটি গল্প বলবো, আপনারা অনেকেই যারা আমাকে অনলাইনে ফলো করেন অথবা আমি যে ধরনের ভিডিও এবং লেকচার করি এগুলোর সাথে পরিচিত, আপনারা জানেন যে আমি ফাতওয়া দেই না। আমি ফিক্হ নিয়ে কথা বলিনা। লোকে আমাকে সবসময় জিজ্ঞেস করে কোনটা হালাল, কোনটা হারাম। আমি তাদের সবসময় বলি কোন প্রকৃত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের কাছে যেতে। শেইখ ওমর সুলেমানকে জিজ্ঞেস করুন, শেইখ আব্দুন নাসেরকে জিজ্ঞেস করুন, অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করুন। আমাকে কুর’আন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন। আশা করি আমি আপনাদের উত্তর দিতে পারব অথবা আমি গবেষণা করে আপনার উত্তরটি দিতে চেষ্টা করব। কিন্তু হালাল এবং হারাম বড় বিষয়। তো একজন আমার কাছে আসলো এবং জিজ্ঞেস করল, এবং এটি একটি সত্য ঘটনা। আমি বলবোনা তারা আমাকে কি প্রশ্ন করেছিল, কিন্তু তারা বলল, “এক্স ওয়াই যেড…এটি কি হারাম?” আমি বললাম, “আমি জানিনা। আমি আপনাদের বলতে পারবনা।” তারা জিজ্ঞেস করল “আমি কি মনে করি?” “না, আমি কিছু জানিনা, আমি আপনাদের বলতে পারবনা, আপনাদের অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করতে হবে।” “তাহলে কাকে জিজ্ঞেস করা উচিত?” তো আমি একজন স্কলারের কথা বললাম, তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি তাকে এই প্রশ্নটি করেছেন?” আমি বললাম, “হ্যাঁ, আমি...
Videos |
উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া “Quranic Gems” সিরিজ থেকে নেয়া। আজকে সুরা আল ইমরানের আট নম্বর আয়াত দিয়ে আমি আপনাদের সাথে একটি খুব শক্তিশালী এবং সুন্দর কুরআনের দুয়ার কিছু প্রতিফলন আলোচনা করতে চাই। আমরা আল্লাহের কাছে প্রার্থনা করে বলে থাকি, রব্বানা লা তুজিগ কুলুবানা। আমি এই দুয়াটি সুরা আল ইমরান সকল আয়াত থেকে বিশেষ করে বেছে নিয়েছি, চিন্তা করে যে কোন আয়াত দিয়ে এই ভিডিও সিরিজ শুরু করা যায়, আমি এই আয়াতটি বেছে নিয়েছি কারন রমজান মাস বিশেষ করে এই দুয়া করার জন্য ভাল সময়। “মালিক আমাদের হৃদয়কে পথভ্রষ্ট হতে দিও না।” লা তুযিঘ কুলুবানা। যাঘা আরবি শব্দটির অর্থ হল যখন কোনকিছু হালকা বাঁকিয়ে যায় কিন্তু তা আমরা অনুধাবন করতে পারি না। যেমন তারা এই শব্দটি ব্যবহার করতো কবর খননের সময়। যখন কবর খননের কথা থাকে আয়তক্ষেত্রের মত কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে কবর একাধারে খনন করার কারনে এর চারিদিক আর সরল রেখার মত থাকে না। যখন খনন শেষ হয় তখন দেখা যায় চারিদিকে একটু বাঁকা, মনেহয় প্রায় একটি ‘C’ (ইংরেজি শব্দ)। এই সমস্যার জন্য একে আরবিতে যাইঘ বলা হয়ে থাকে। এখন যদি কোন মানুষ সোজা পথে যেতে থাকে আর সে না বুঝেই ভুল দিকে মোড় নেয় এবং পথভ্রষ্ট হয়ে যায় তখন তাকে বলা হয় যাইঘ। সুতরাং দুয়াটি হল রব্বানা লা তুযিঘ কুলুবানা। আমাদের হৃদয়কে পথভ্রষ্ট হতে দিও না। পথভ্রষ্ট হওয়া মানে এই নয় যে আমরা একবারে ৯০ ডিগ্রি বেঁকে যাব, যে আমরা এইদিকে যাওয়ার কথা কিন্তু ঐ দিকে চলে গেলাম, আর পথ ভুলে গেলাম। তা নয়। আমাদের হৃদয় যখন আল্লাহর সন্নিকটে যায় তখন তা আল্লাহ থেকে ক্ষণিকের মধ্যে দুরে সরে যায় না।তা আল্লাহ থেকে খুব অল্প অল্প করে দুরে সরে যায়। এবং তাই আমরা আল্লাহের কাছে নিরাপত্তা...