Articles |
আরবীতে হিকমাহ হলো – উপকারী জ্ঞান এবং এর উপর কাজ করা। হিকমাহ খুব সহজে বলতে গেলে বলা যায় – ১। একজন ব্যক্তি জানে যে আগুন পুড়ায় তবুও সে এটাকে স্পর্শ করল—এই ব্যক্তির জ্ঞান আছে কিন্তু হিকমাহ নেই। ২। আর যে ব্যক্তি জানে যে আগুন পুড়ায় এবং সে এটা স্পর্শ করে না—এই ব্যক্তির জ্ঞান এবং হিকমাহ উভয়ই আছে। এ কারণে কারো জ্ঞান থাকতে পারে কিন্তু হিকমাহ বা জ্ঞান থেকে কাজ করে উপকৃত নাও হতে পারে। অর্থাৎ জ্ঞান থাকলেও হিকমাহ না-ও থাকতে পারে। একজন ব্যক্তি জানে আগুন পুড়ায় এবং জানা সত্বেও সে এটা থেকে উপকার নিতে পারলো না, তার মানে তার জ্ঞান আছে কিন্তু হিকমাহ বা প্রজ্ঞা নেই। আর যে ব্যক্তি আগুন পুড়ায় জানে এবং এর অপকারিতা থেকে দূরে থেকে উপকার নেয়, সেই ব্যক্তির জ্ঞান (আগুন পুড়ায়) এবং হিকমাহ (পুড়ানো থেকে দূরে থাকা, রান্না করা) আছে। কেউ নেশা করে, সে জানে নেশা খারাপ জিনিস। এটা জ্ঞান। তবুও সে নেশা করে। তার জ্ঞান আছে কিন্তু এই জ্ঞান থেকে যেহেতু উপকার পায় না, উপকৃত হতে পারছে না, তাই এই ব্যক্তির হিকমাহ নেই। অর্থাৎ হিকমাহর সম্পর্ক জ্ঞানের সাথে, যে জ্ঞান থেকে উপকার নেওয়া হয়। সুতরাং হিকমাহ খুবই শক্তিশালী জিনিস। এ কারণে আমরা দেখি অনেকেই কেবল পড়তেই থাকে, শিখতেই থাকে, জানতেই থাকে…তারা কেবলই জ্ঞানার্জন করে, হিকমাহ শিক্ষা করে না। তারা কেবল নিয়ম-কানুন শেখে, শেখে না হিকমাহ। কিন্তু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কেবল আইন বা নিয়ম-কানুনই শেখাতেন না, কীভাবে এটা প্রয়োগ করতে হবে (সুন্নাহ), ধরে থাকতে হবে এবং উপকৃত হতে হবে, সেটাও শিক্ষা দিতেন। অর্থাৎ জ্ঞানের প্রায়োগিক দিক (Practical Dimension) হলো হিকমাহ বা প্রজ্ঞা। হিকমাহ বলতে এটা বুঝায় না যে উচ্চতর, গভীর ও তাত্ত্বিক আলোচনা, বরং (জ্ঞানের...
Videos |
Quran Weekly তে দেয়া উস্তাদ নুমান আলী খানের Quranic Gems সিরিজ থেকে। “হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, যখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর, তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প।” আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলি আল্লাহ্ সুরা তওবা-র ৩৮ নং আয়াতে বলেছেন “ইয়া আইয়ুহাল্লাজ্বীনা আমানূ” – যারা নিজেদের বিশ্বাসী বলে দাবী কর, “মা লাকুম” -তোমাদের কী সমস্যা? “ই’জা ক্বীলা লাকুমুনফিরূ ফী সাবীলিল্লাহ” তোমাদেরকে বলা হয়েছে আল্লাহ্র পথে এগিয়ে যাও “সাকালতুম ই’লাল আ’রদ্ব” তোমাদের পা হিঁচড়ে যায়। তোমরা মাটিতে গেঁড়ে যাও। ভাবুন এমন যে কারো পা বালিতে গেঁড়ে গিয়েছে। এবং সে তার পা টেনে হিঁচড়ে চলার চেষ্টা করছে এবং সে এগুতে পারছে না- আল্লাহ্ এই দৃশ্যের কথা বলছেন। “ইস সাকালতুম ই’লাল আ’রদ্ব” আল্লাহ্ কেন এই দৃশ্যের কথা বলছেন? আমি এই আয়াতটি বেছে নিয়েছি বিশেষত আমাদের তরুণদের জন্য। রমজান মাসে তোমরা দেখিয়েছ তোমরা রোযা রাখতে সক্ষম, তোমরা অনেক বদ-অভ্যাস থেকে বিরত থাকতে পারো যেসব থেকে তোমরা ভেবেছিলে তোমরা বিরত থাকতে পারবে না, তোমরা সময়মত উঠে নামায পড়তে পারো, তোমরা অ-নে-ক কিছু করতে সক্ষম; এইজন্য নয় যে এটা রমজান মাস এবং এমাসে তোমরা সুপার হিউম্যান হয়ে যাও বরং আল্লাহ্ তোমাদের সেই সামর্থ্য দিয়েছেন। এরপর আল্লাহ্ খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করলেন, যখন তোমাদেরকে সামনে আসতে বলা হয় এবং তোমরা তা করতে সক্ষম তখন তোমাদের পা টান দাও, এটা কেন?” “সাকালতুম ই’লাল আ’রদ্ব” এবং এই প্রশ্নটি করা হয়েছে বিশ্বাসীদের, বিশ্বাসীদের প্রশ্ন করা হয়েছে, “আ’রাদ্বীতুম বিল হায়াতিদ দুনিয়া মিনাল আখিরাহ” তোমরা কী আখিরাতের পরিবর্তে এই পার্থিব জীবন নিয়ে পরিতুষ্ট? আল্লাহ্ এই প্রশ্ন করেছেন বিশ্বাসীদের। আল্লাহ্ যেন বলছেন, যারা বিশ্বাসী নয় তারা তো অবশ্যই এই পার্থিব জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট কারণ...
Videos |
Quran Weekly তে দেয়া উস্তাদ নুমান আলী খানের Quranic Gems সিরিজ থেকে। আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আজকে আমি আপনাদের সাথে সূরা বাকারার ৫৭তম আয়াতের কিছু বিষয় বর্ণনা করতে চাই। এবং এই আয়াত আল্লাহ্ আযযা ওয়া জাল বনী ইসরাইলদের সম্বোধন করে বলছেন, ইসরাইলের সন্তানদের। এবং আল্লাহ্ তার কিছু অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করেছেন। যেই কারণে আমি আপনাদের সাথে আয়াতটি শেয়ার করতে চাই তা হল এই আয়াতটির ভেতরে একটি অসাধারণ স্থানান্তরণ ঘটে। সেই পরিবৃত্তি অনুধাবন করার সুবিধার্থে আমি প্রথমে আপনাদের জন্য একটি দৃশ্যপট দাঁড় করছি। ধরুন একজন শিক্ষক ক্লাসরুমে, এবং ধরা যাক তার ছাত্ররা ৩ ভাগে, না, ২ ভাগে বিভক্ত। বাম পাশে হচ্ছে ছাত্রদের একাংশ, মাঝখানে কিছুটা ফাঁক, এবং ডান পাশে রয়েছে আরেক অংশ। বাম পার্শ্ববর্তী ছাত্ররা আগের দিন পরীক্ষা দিয়ে দিয়েছে, ধরা যাক তারা গ্রুপ A, তারা পরীক্ষা দিয়েছে, এবং ফেল করেছে। আর গ্রুপ B এই পরীক্ষাটি দিবে কালকে। দিনটি হল দুই পরীক্ষার মধ্যখানে। শিক্ষক ক্লাসে ঢুকলেন, এবং গ্রুপ A, যারা কিনা পরীক্ষাটি দিয়েছে, তাদেরকে তীব্র ভাবে বকা দিতে লাগলেন। কারণ তারা পাশ করে নি। এবং তিনি বকা দিয়ে বলছেন, মনে করেন, “ আমি তোমাদের জন্য কি না করেছি!রিভিউ করেছি!সব উত্তর দিয়ে দিয়েছিলাম, এমন কি প্রশ্নপত্রের কপিও পরীক্ষার আগের দিন দিয়ে দিয়েছিলাম!তাও কিভাবে ফেল করলে? তোমাদের জন্য আর বেশি কি করা যাই আমি ভেবে পাই না!” আর এই সময়টুকুতে, যখন তিনি তাদেরকে বকাঝকা করছিলেন, গ্রুপ B বসে বসে দেখছিল। কয়েকজন ওই ছাত্রগুলোকে টিটকারি মারছিল, “হা হা দেখ না ওদের অবস্থা”। তবে তাদের মধ্যেকার অন্যরা,যারা বুদ্ধিমান, তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ল কারণ তারা জানে কাল তাদের পরীক্ষা, এবং তারা খুব শীঘ্রই একি ধরনের শাস্তির শিকার হতে পারে। এখন শিক্ষক বললেন, “তোমরা, জান? তোমাদের সাথে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না”। তিনি গ্রুপ...
Videos |
“Quran Weekly” তে দেয়া উস্তাদ নুমান আলী খানের ”Quranic Gems” সিরিজ থেকে। ”এবং আমি নিশ্চয়ই জাহান্নাম সৃষ্টি করেছি কিছু মানুষ এবং জ্বিনদের জন্য। ওদের অন্তর আছে কিন্তু বুঝতে পারে না, তাঁদের দৃষ্টি আছে কিন্তু ওরা দেখে না এবং ওদের কান আছে কিন্তু তারা শুনতে পায় না। তারা পশুর মত, বরং এরচেয়েও জঘন্য। এরাই তারা যারা অসাবধানী।” (সুরা আল-আ’রাফ – ১৭৯) আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলি, আজকে আমি সুরা আল-আ’রাফ এর ১৭৯ নং আয়াত এবং কুরআনের আরো কিছু জায়গা থেকে এবং রাসুল (সাঃ) এর কিছু হাদিস নিয়ে আলোচনা করতে চাই। দেখুন আল্লাহ্ কুরআনে সুরা আল-মুমিনুন এ বলেছেন যে, বিশ্বাসীরাই হবে জান্নাতের উত্তরাধিকারী। أُولَٰئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ “ওলা-জকা হুমু আলওয়ারিঝুন” (২৩:১০) তারা হবে বেহেশতের উত্তরাধীকারী। যখন আপনি উত্তরাধিকার নিয়ে ভাবেন, আপনার মনে হবে এমন কিছু যা আপনার জন্য আপনার নামে লিখে রাখা আছে, যখন সময় হবে সেটা আপনি পেয়ে যাবেন। তো এটা আমাকে ভাবালো, আমরা কেন বেহেশতের উত্তরাধিকারী হতে যাবো? এটা তো এমন না, ওটা কী আগেই আমাদের জন্য লেখা ছিলো?” এবং তাই আমি এ বিষয়টি আরো গভীরভাবে বুঝতে চেষ্টা করলাম এবং আমি দেখলাম রাসুল (সাঃ) এই বিষয়ে বলেছেন, একটু মন দিয়ে শুনুন, আল্লাহ্ বেহেশতে বাড়ী বানিয়ে রেখেছেন, যত মানুষ সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেকের জন্য। যত মানুষ পৃথিবীতে এসেছে প্রত্যকের জন্য বেহেশতে বাড়ী বানানো আছে। এবং বিশ্বাসীরা, অবশ্যই সব মানুষই বেহেশতে যাবে না, যখন বিশ্বাসীরা বেহেশতে যাবে তারা তাঁদের নিজের বাড়ীতে যাবে তারা তাঁদের আশেপাশে কিছু বাড়ী দেখবে যেগুলো খালি। এবং ঐসব বাড়ী ওদের জন্য বানানো আছে যারা বেহেশতে যাবে কিন্তু যেতে অস্বীকার করেছে। তারা ওখানে যেতে চায়নি। এবং তাই তারা যে শুধু নিজের বাড়ী পাবে তা নয়, তারা ঐসব বাড়ীর ও উত্তরাধিকারী হবে যারা ওখানে যেতে পারেনি। এখন আপনি হয়তো ভাবতে থাকবেন, “আল্লাহ্...
Videos |
The Deen Show তে দেয়া নুমান আলী খানের সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ। দা দীন শো হোস্টঃ আমাদের বলুন, নারী এবং পুরুষ, ছেলে এবং মেয়ে কি বন্ধু হতে পারে? একটা মেয়ে কি এই রকম আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারে দেখ আমি ওর সাথে শুধু ঘুরতে যাচ্ছি এবং অন্য মেয়েরা আমাকে নিয়ে ঈর্ষান্বিত। শুধু শুধু ওরা ভুল কথা বলে। জানো ও আমার সাথে হাঁটবে। ও আমার সাথে খুবই ভালো আচরণ করে, ও আমার আসলে প্রশংসা ও করে, ও সবসময় আমাকে খুব মিষ্টি করে কথা বলে, ও আসলে খুবই ভালো জানো। আমি ওর সাথে কিছুই করবো না; আমরা শুধু একসাথে ঘোরাঘুরি করবো। এটা কি সম্ভব? নুমান আলী খানঃ এটা হতে পারে না, এটা হচ্ছে তো অবশ্যই। এবং এটা হওয়া উচিৎ নয় তাও সত্যি। দা দীন শো হোস্টঃ কিন্তু ওরা বলছে ওরা শুধুই বন্ধু। ওরা বন্ধুই থাকবে। ছেলে এবং মেয়ে কি শুধু বন্ধু হতে পারে? নুমান আলী খানঃ না। ছেলেরা সেটা খুব ভালো করে জানে। তারা স্বীকার করবে না কিন্তু তারা এটা খুব ভালোভাবে জানে। কখনো কখনো মেয়েরা জানে না এবং এটাই আমাকে আমার বোনদের, মেয়েদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফেলে যে তারা অনেক সময় পুরুষদের এই পরিকল্পিত ফাঁদটা বুঝতে পারে না। দা দীন শো হোস্টঃ পুরুষদের পরিকল্পিত ফাঁদ? নুমান আলী খানঃ হ্যাঁ। তো আমরা দেখা করছি কারণ জানেন তো আমরা ল্যাব পার্টনার অথবা আমরা স্কুলের প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা করছি, MSA, সম্মেলন, আমরা ইসলাম নিয়ে আলোচনা করছি এবং এইসব বোনেরা অনেক সময় এসবের আড়ালের পুরোটা দেখতে পান না এবং আমাদের বোনদের মধ্যে আসলে সচেতনতার এবং সাবধানতার মাত্রা বাড়াতে হবে। যাতে তারা…আপনাকে পুরুষদের সাথে মতবিনিময় করতে হবে, এটা হবেই, ব্যবসা ক্ষেত্রে, স্কুলে, কর্ম ক্ষেত্রে এটা হবেই। আপনার মতবিনিময় হবেি কিন্তু কিছু গাইডলাইন আপনাকে মানতে হবে যাতে তা...