ইস্তেগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) করার সুফল

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا বাংলা ভাবার্থঃ “অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন”। [সূরা নুহ (৭১): ১০-১২] কুর’আনের উনত্রিশতম পারার অন্তর্ভুক্ত সূরা নুহের তিনটি (১০, ১১ এবং ১২) আয়াত নিয়ে আলোচনা করবো। আল্লাহ্‌‘তালা যুগে যুগে বিভিন্ন কাওমের কাছে নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন। এই আয়াতে নুহ (আঃ) আল্লাহ্‌কে বলছেন, তিনি (আঃ) তাঁর কাওমের জন্য কি কি সম্পন্ন করেছেন বা তাদেরকে কীভাবে আল্লাহ্‌র দিকে আহ্বান করেছেন। এই ঘটনাটি কুরআনে অন্তর্ভুক্ত করার আল্লাহ্‌‘তালা মনস্থ করেছেন, কারণ এই আয়াতগুলোতে একটি চমৎকার শিক্ষা আছে। অন্তর থেকে আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করার সুফল এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। বিশুদ্ধ ইস্তেগফার করলে কি পাওয়া যাবে বা লাভ করা যাবে? আপনি আল্লাহ্‌র কাছে ইস্তেগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) করছেন, স্বভাবতই বিনিময়ে আপনি আল্লাহ্‌র মার্জনা পাওয়ার আশা করবেন এবং ইন শা আল্লাহ্‌ পাবেন। কিন্তু ক্ষমাপ্রাপ্তি ছাড়াও আর বাড়তি কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে? আল্লাহ্‌ যখন আপনার ইস্তেগফার কবুল করেন, তখন মার্জনা করার সাথে সাথে তিনি বান্দার উপর দয়াপরবশত কিছু দুনিয়াদি সুবিধাও দান করেন। এই আয়াতগুলোতে সেটাই বলা হয়েছে। “ফাকুলতুস্ তাগফিরু রাব্বাকুম; ইন্নাহূ কা-না গাফফা-রা” অর্থাৎ ‘অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল’। একজন প্রকৃত ধর্মপ্রচারকদের যা কিছু করণীয় নূহ (আঃ) তার সব কিছুই প্রয়োগ করেন তার সম্প্রদায়ের হেদায়েতের জন্য। তিনি বারে বারে আল্লাহ্‌র বাণী পুণরুক্তি করেন, শোনান, প্রচারণা করেছেন, প্রকাশ্যে ও গোপনে ব্যক্তিগত ভাবে আহ্বান করেছেন। তিনি তাঁর কাওমকে আল্লাহ্‌র দরবারে অন্তর থেকে ক্ষমাপ্রার্থনা করার আবেদন করেন, এবং...

সুখী বিয়ের উপকরণ: পুরুষদের আত্মউন্নয়নের তিনটি দিক

এখন পুরুষদের ব্যক্তিগত উন্নয়নকে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে– প্রথমতঃ আত্মসংযম করা। মৌখিক, মানসিক বা দৈহিকভাবে অভদ্র আচরণ করবেন না। এটা একটা বড় সমস্যা, যেটা নিয়ে অনেক বোন তাদের স্বামীর ব্যাপারে অভিযোগ করেন। আমার স্বামী, তার মেজাজ নিয়ন্ত্রণে থাকে না তিনি যখন মেজাজ হারান তখন চিত্কার চেঁচামেচি করেন। এবং আমাকে কষ্টদায়ক কথা বলেন এবং কখনও কখনও দুর্ভাগ্যবশত কিছু ভাইয়েরা এতটাই রাগান্বিত হন যে তারা তাদের স্ত্রীর প্রতি দৈহিকভাবে নির্যাতন করেন। আমার এক ক্লায়েন্ট ছিল যারা নবদম্পতি ছিলেন এবং তারা শ্বশুরবাড়ির সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন, স্ত্রী তার শ্বশুরবাড়ির উপরে অনেক হতাশ ছিলেন এবং তিনি ক্রমাগত স্বামীকে অভিযোগ করতেন। স্বামী তাকে বলতেন, বন্ধ করো বন্ধ করো এসব কথা। আমি শুনতে চাই না। কিন্তু স্ত্রী ক্রমাগতভাবে স্বামীকে অভিযোগ করতেই থাকলেন এবং পরিশেষে স্বামী এতটাই রেগে গিয়েছিলেন যে তিনি তার স্ত্রীকে শেষ পর্যন্ত চড় মেরে বসেন। এরপর স্বামী একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন। তিনি এরকম করেছিলেন, ”আমি কখনোই ভাবিনি আমি আমার স্ত্রীকে আঘাত করবো”। তিনি সেশনেই কাঁদছিলেন। ”সেটা আমি নই, এটা আমার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যর সাথে মেলে না। কিন্তু সে বন্ধ করেনি”। তাই আমাদের আবেগ আমরা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো তা শিখতে হবে। এর কারণ হলো, একবার যদি আপনি কিছু বলে ফেলেন বা খারাপ আচরণ করেন আপনি কখনোই তা ফিরিয়ে নিতে পারবেন না এবং এটা এমন কিছু যা তাদের সম্পর্কটিকে চিরতরে বদলে দিয়েছিলো। যখন সম্পর্কের কোন পর্যায়ে দৈহিক নির্যাতন হয়, যখন আপনি আপনার সাথীকে কোন আক্রমণাত্মক বা কষ্টদায়ক কথা বলেন, আপনার সম্পর্ক আর আগের মত থাকে না। এবং আপনি তা আর ফিরে পাবেন না। আমার একজন ভাইকে মনে পড়ছে তিনি থেরাপির জন্য এসেছিলেন এবং তিনি আমাকে বলেছিলেন আপনি জানেন, সব আমার দোষ ছিল। আমি তাকে বললাম, আপনি কি রসিকতা করছেন? তিনি বলেন, “এটি সত্যি। সব দোষ আমার...

সুখী বিয়ের উপকরণ: নারীদের আত্মউন্নয়নের তিনটি দিক।

আমি গত বিশ বছর ধরে থেরাপি করি। আমি লক্ষ্য করেছি যে সম্পর্ক উন্নত করার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বোনদের মধ্যে আছে যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন এবং সমানভাবে নির্দিষ্ট কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ভাইদের মধ্যে আছে যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। নারীদের আত্ম উন্নতির বিষয়গুলোকে আমি তিনটি ভাগে ভাগ করে সংক্ষেপে তুলে ধরবো। প্রথমটা হলো মানসিক স্থিতিশীলতা। আপনার আবেগকে কন্ট্রোল করবেন, পাজি ড্রামাকুইন না হওয়া, বেশি প্রতিক্রিয়া না দেখানো, কান্নাকাটি না করা, বেশি চিৎকার চেঁচামেচি না করা। এর কারণ হলো ভাইরা তাদের স্ত্রীদের সম্পর্কে এইসব ব্যাপার নিয়েই সবচেয়ে বেশি অভিযোগ করেন। তারা মনে করেন যে তারা একটি ডিমের খোসার উপর রয়েছেন। তারা মনে করেন যে তারা এমন একটি টাইম বোমার সঙ্গে আটকে রয়েছেন তারা জানেন না কি তাকে বিস্ফোরিত করবে। এবং তাই এটা অনেকটা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে এবং রিলেশনশিপের মাঝে অনাস্থা তৈরি করে। যেখানে স্বামী জানেন না কি তার স্ত্রীকে বিস্ফোরিত করবে। এবং তাই এরকম মানসিক স্থিতিশীলতা অর্জন করা যেখানে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে- এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় জিনিসটা হচ্ছে নিরাপদ থাকা। (নিজেকে নিরাপদ মনে করা)। আমি দেখেছি নারীরা তাদের সকল সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। এটা হতে পারে তাদের বিয়ের ক্ষেত্রে, তাদের শ্বশুরালয়ের আত্মীয় স্বজনের ক্ষেত্রে, অথবা বন্ধু/বান্ধবের সাথে। এবং সেখানে সে একটি ভয়ভীতি বা অন্যদের সম্পর্কে অনিরাপদ বোধ করেন। তিনি অন্যদের কারণে হুমকির সম্মুখীন বোধ করেন বিশেষ করে অন্য নারী দ্বারা। তাই আমরা আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ গড়ে তোলার জন্য কাজ করতে পারি। আমরা যদি আমাদের নিজেদের সম্পর্কে সত্যিই ভাল বোধ করি তখন আমরা আমাদের সম্পর্কগুলোতে অন্য নারীদের দ্বারা প্রভাবিত হবো না। এবং নিঃসন্দেহে এতে আমাদের বিবাহ আরও ভালো হবে, বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও ভালো হবে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়তার সম্পর্ক আরও ভালো হবে। তৃতীয় জিনিসটা হলো জ্ঞান বাড়ানো। অনেক বোনরাই মাশাআল্লাহ অত্যন্ত শিক্ষিত এবং...