ধর্ম সম্পর্কে না জেনে কথা বলা

আল্লাহ তায়ালা বলেন – وَمِنْهُمْ أُمِّيُّونَ لَا يَعْلَمُونَ الْكِتَابَ إِلَّا أَمَانِيَّ وَإِنْ هُمْ إِلَّا يَظُنُّونَ – – “তাদের মাঝে এমন কিছু নিরক্ষর লোক আছে, যাদের মিথ্যা আকাঙ্ক্ষা ছাড়া কিতাবের কোন জ্ঞানই নেই, তারা কেবল অলীক ধারণা পোষণ করে।” 2:78

এখানে ‘উম্মি বা অশিক্ষিত’ বলতে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝানো হয়েছে? ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। তাদের হয়তো ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্ৰী রয়েছে। তারা হয়তো সি ++ জানে, কিন্তু আরবি তাদের জন্য অনেক বেশি কঠিন। কুরআন তাদের জন্য অনেক বেশি কঠিন।

“আমি যদি চাই চোখ বন্ধ করেও কোড লিখতে পারবো। আমি পুরো একটা রোবটের কোডিং একা একাই লিখে ফেলতে পারবো। কিন্তু কুরআনের ভাষা?? কার এতো সময় আছে?” তারা ইচ্ছা করেই অশিক্ষিত থেকে যায়। لَا يَعْلَمُونَ الْكِتَابَ – তারা আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে জানে না। এর আরেকটি অর্থ হলো, তারা আল্লাহর বিধান জানে না। কিতাব শব্দের দুইটি অর্থ, বই এবং আইন। لَا يَعْلَمُونَ الْكِتَابَ إِلَّا أَمَانِيَّ – “তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া আল্লাহর গ্রন্থের কিছুই জানে না।” إِلَّا أَمَانِيَّ তারা নিজেদের কল্পনাপ্রসূত অনুমান ছাড়া আর কিছু জানে না।

তারা এভাবে বলে – “আমি মনে করি, বিষয়টা এটা এভাবে না, ঐভাবে। আমি মনে করি না যে, শাস্তি এতো কঠোর হবে, আল্লাহ এর চেয়ে অনেক কোমল। হুজুররা ঐ জিনিসটাকে শুধু শুধু হারাম হারাম বলে আসছে। ঐ জিনিসটাকে হারাম বলা পুরাই অবাস্তব। বিষয়টা এতো খারাপ না। আমরা বড় জোর এটাকে অপ্রয়োজনীয় বলতে পারি।”

অর্থাৎ, নিজেরা যা কামনা করে তা ধর্মের কথা বলে চালিয়ে দেয়। আমাদের সময়ে এই রোগটা অনেক জটিল আকার ধারণ করেছে। তারা ধর্ম সম্পর্কে এমনভাবে কথা বলে যেন বাজারের কোনো পণ্য সম্পর্কে কথা বলছে।

“আমি ধর্মটাকে এমনভাবে চাই যেন আমি নিজের সম্পর্কে ভালো ফিল করতে পারি। কিন্তু এই এই বিধানগুলো আমার জন্য অনেক কঠোর। আমি যদি এগুলো পালন না করি, আল্লাহ বুঝবেন যে আমি সুখী হতে চাই তাই…….ইত্যাদি ইত্যাদি। ”

সত্যিই? কোন ধর্ম নিয়ে আপনি কথা বলছেন?? এটার নাম কি ইসলাম? আপনি আল্লাহর দ্বীনের নিকট আত্মসমর্পণ করবেন নাকি আল্লাহর দ্বীন আপনার নিকট আত্মসমর্পণ করবে? আপনি কোথায় প্রবেশ করেছেন?

কিছু কিছু মানুষ এভাবে বলে – “ইসলাম অনেক কঠোর, আমাদের কিছুটা শিথিলতা অনুসরণ করা উচিত। কিছুটা সহজভাবে নাও, রিলাক্স।” আমার কাছে এমন মানুষও আসে এবং বলে – “কুরআন যদি আজকের দিনে নাজিল হতো তাহলে এতটা কঠোর হতো না।” আমি তখন বলি – ঈদ মোবারক ভাই। আমি এতো স্টুপিড কথোপকথনে জড়াবো না। এটা অনেক বেশি মূর্খতাপূর্ণ কথা।

— উস্তাদ নোমান আলী খান।