ধর্মের বিরুদ্ধে ইউরোপবাসীদের অভিযোগ

ধর্মের বিরুদ্ধে ইউরোপবাসীদের অভিযোগ শত শত বছরের পুরনো। এখন সারা দুনিয়াতে এই অভিযোগ শোনা যায়। ধার্মিক মানুষ বদ্ধ মস্তিস্কের, ধার্মিক মানুষ উন্মত্ত , ধার্মিক মানুষ অসহিষ্ণু , ধার্মিক মানুষ সমালোচনা সহ্য করতে পারে না, ধার্মিক মানুষ আলোচনার জন্য উন্মুক্ত নয়। তাই আপনি যদি ধর্ম থেকে মুক্তি পেতে পারেন তবেই আপনি পেতে পারেন মুক্ত বুদ্ধি চর্চার একটি সমাজ যেখানে মানুষ নিজেদের জন্য চিন্তা করতে পারবে। এটা তাদের অভিযোগ। খ্রিস্ট ধর্মের ক্ষেত্রে তাদের এ অভিযোগ সত্য। যা শত শত বছর যাবত ইউরোপে আধিপত্য বিস্তার করে ছিল। কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্রে –আল্লাহ তার রাসুল (স) কে ঠিক তার উল্টোটা দিয়েছেন। এটা এমন ধর্ম যা আলোচনাকে স্বাগত জানায়, هَاتُوا بُرْهَانَكُمْ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ তোমরা সত্যবাদী হলে, প্রমাণ উপস্থিত কর।( সুরা বাকারা – ১১১, সুরা আন নামল – ৬৪) কেন তুমি কুরআনের বিরুদ্ধে তোমার সকল অভিযোগ উপস্থাপন কর না ? আমি তোমাকে আহ্বান জানাচ্ছি, নিয়ে আস তোমার সকল অভিযোগ। একটা বই কীভাবে মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছে শুধু বিশ্বাস করার জন্য নয় বরং একত্রিত কর তোমার সব অভিযোগ, সব সমালোচনা এবং নিয়ে আস। এটাকেই বলা হয় মনের প্রকৃত উদারতা। আল্লাহর বই উদার, কিন্তু আমরা নিজেরাই বদ্ধ মনের। আমাদের মনের উন্মুক্ত করণের মাধ্যমে এই উম্মাহকে আবার শক্তিশালী করতে হবে। এই বই খুলে দেখার মাধ্যমে এবং সেভাবে চিন্তা করার মাধ্যমে যেভাবে এই বই আশা করে। এটা দেখিয়ে দেয়ার জন্য যে ধর্ম মানুষের দৃষ্টিশক্তি আর মনের জানালা বন্ধ করার জন্য নয়। বরং ধর্ম এসেছে মানুষের মনের জানালা খোলার জন্য , আলোচনায় অংশগ্রহণ করার জন্য এবং মানুষকে সভ্যতা শেখানোর জন্য।

তারা মনে করে সমাধান হলো যখন আপনি ধর্ম থেকে মুক্তি পাবেন। কিন্তু আমরা বলি, সমাধান হলো যখন আপনি প্রকৃত ধর্মকে ফিরিয়ে আনবেন। হ্যাঁ , মিথ্যা ধর্ম অন্যায়- অত্যাচার নিয়ে আসবে। কিন্তু যখন আপনি আল্লাহর দ্বীনকে ফিরিয়ে আনবেন – এটা সৌন্দর্যমন্ডিত একটা জিনিস। যদি আমরা তাদেরকে তা দেখাতে না পারি তাহলে কে দেখাবে ? এজন্যই আল্লাহ আমাকে আপনাকে এই দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন। এই উম্মাহর একজন সদস্য হওয়া সম্মানের ব্যাপার, এটা কোনো ছোট বিষয় নয়। আমরা সম্মিলিতভাবে আমাদের কাঁধে সে বোঝা বহন করছি যা বহন করেছিলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এই দায়িত্বের বোঝা আমরা প্রতিদিন বহন করে চলছি আমরা এটা স্বীকার করি বা নাই করি। যখন আমরা সে দায়িত্বের বোঝা থেকে কিছু না করি, আমরা মানবতাকে না দেখাই এটা কী, তাহলে আমরা সমস্যায় পতিত হব। এই সমস্যা বিভিন্ন অথরিটি, বা মিডিয়ার সাথে নয়, আমরা আল্লাহর সাথে সমস্যায় পতিত হব।

— উস্তাদ নোমান আলী খান।