সুখী বিয়ের উপকরণ: নারীদের আত্মউন্নয়নের তিনটি দিক।

আমি গত বিশ বছর ধরে থেরাপি করি। আমি লক্ষ্য করেছি যে সম্পর্ক উন্নত করার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বোনদের মধ্যে আছে যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন এবং সমানভাবে নির্দিষ্ট কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ভাইদের মধ্যে আছে যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। নারীদের আত্ম উন্নতির বিষয়গুলোকে আমি তিনটি ভাগে ভাগ করে সংক্ষেপে তুলে ধরবো।

প্রথমটা হলো মানসিক স্থিতিশীলতা।

আপনার আবেগকে কন্ট্রোল করবেন, পাজি ড্রামাকুইন না হওয়া, বেশি প্রতিক্রিয়া না দেখানো, কান্নাকাটি না করা, বেশি চিৎকার চেঁচামেচি না করা। এর কারণ হলো ভাইরা তাদের স্ত্রীদের সম্পর্কে এইসব ব্যাপার নিয়েই সবচেয়ে বেশি অভিযোগ করেন। তারা মনে করেন যে তারা একটি ডিমের খোসার উপর রয়েছেন। তারা মনে করেন যে তারা এমন একটি টাইম বোমার সঙ্গে আটকে রয়েছেন তারা জানেন না কি তাকে বিস্ফোরিত করবে। এবং তাই এটা অনেকটা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে এবং রিলেশনশিপের মাঝে অনাস্থা তৈরি করে। যেখানে স্বামী জানেন না কি তার স্ত্রীকে বিস্ফোরিত করবে। এবং তাই এরকম মানসিক স্থিতিশীলতা অর্জন করা যেখানে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে- এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয় জিনিসটা হচ্ছে নিরাপদ থাকা। (নিজেকে নিরাপদ মনে করা)।

আমি দেখেছি নারীরা তাদের সকল সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। এটা হতে পারে তাদের বিয়ের ক্ষেত্রে, তাদের শ্বশুরালয়ের আত্মীয় স্বজনের ক্ষেত্রে, অথবা বন্ধু/বান্ধবের সাথে। এবং সেখানে সে একটি ভয়ভীতি বা অন্যদের সম্পর্কে অনিরাপদ বোধ করেন। তিনি অন্যদের কারণে হুমকির সম্মুখীন বোধ করেন বিশেষ করে অন্য নারী দ্বারা। তাই আমরা আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ গড়ে তোলার জন্য কাজ করতে পারি। আমরা যদি আমাদের নিজেদের সম্পর্কে সত্যিই ভাল বোধ করি তখন আমরা আমাদের সম্পর্কগুলোতে অন্য নারীদের দ্বারা প্রভাবিত হবো না। এবং নিঃসন্দেহে এতে আমাদের বিবাহ আরও ভালো হবে, বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও ভালো হবে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়তার সম্পর্ক আরও ভালো হবে।

তৃতীয় জিনিসটা হলো জ্ঞান বাড়ানো।

অনেক বোনরাই মাশাআল্লাহ অত্যন্ত শিক্ষিত এবং বুদ্ধিমতী। এখন কি ঘটে যে, একবার যখন তাদের বিয়ে হয়ে যায় তারা ঘরের ভেতরে থাকতে পছন্দ করেন। বাচ্চাদের এবং বাড়ির যত্ন নিতে পছন্দ করেন যা সম্পূর্ণরূপে প্রশংসনীয় এবং সম্মানিত মাশাআল্লাহ। কিন্তু যা ঘটে যে তখন তারা তাদের মেধা বিকাশে সময় এবং মনোযোগ দেয়া বন্ধ করে দেন। তাই যা ঘটছে যে ভাইয়েরা কাজে যাচ্ছেন তারা তাদের উত্কৃষ্টতর শিক্ষা নিচ্ছেন তারা অগ্রসর হচ্ছেন যখন বোনরা অনুরূপ কাজ করতে পারেন না। তারা স্থবির হয়ে পড়েন এবং তারা তাদের সময় উৎসর্গ করছেন, কোরবানি করছেন পরিবারের জন্য। তারা সবকিছু ঠিকঠাক রাখছেন, তারা এত কিছু করছেন মাশাআল্লাহ। কিন্তু তারা তাদের মেধা বিকাশে ততটা সময় দিচ্ছেন না। এবং আমি মনে বুদ্ধিবৃত্তিক বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য নিয়মিত পড়তে হবে, দুনিয়ার খবর রাখা, কি ঘটনা ঘটছে জানা। জ্ঞান বাড়ানো ক্রমাগত অব্যাহত রাখা। এতে আপনার সাথীর সাথে আপনার আর দূরত্ব তৈরি হবে না।

আমার একজন মহিলা ক্লায়েন্ট ছিলেন যার স্বামী একজন চিকিৎসক ছিলেন মাশাআল্লাহ। আর তার স্বামী ক্যারিয়ারে মেধা বিকাশের মাধ্যমে ক্রমাগত অনেক অগ্রগতি করছিলেন। কিন্তু তিনি (স্ত্রী) যেহেতু বাড়িতে থাকতেন আর তিনিও খুব বুদ্ধিমান ছিলেন, খুব শিক্ষিত ছিলেন। কিন্তু তিনি বাড়ীতে তার বাচ্চাদের দেখভাল তদারকির করায় এত বেশি ব্যস্ত ছিলেন যে তাদের মাঝে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি হওয়া শুরু করল। তাদের আলাপ আলোচনাগুলি আর আগের মত জমে উঠত না। এবং আমি মনে করি এটা ক্রিটিক্যাল যে জ্ঞান বাড়ানোর উদ্দীপনা অব্যাহত রাখার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালাতে হবে।