এক মহিলা জর্ডানে বাস করতেন। তাঁর বয়স ছিল সত্তর বছর। আর তিনি নিরক্ষর ছিলেন। পড়তে বা লিখতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর সন্তানদের শ্রেষ্ঠতম উপায়ে গড়ে তুলতে সক্ষম হন। স্পষ্টতই এতো বছর বয়সে সংসারের প্রতি তাঁর আর কোন দায়দায়িত্ব ছিল না। তিনি প্রায় সময় কুরআন তিলাওয়াত শুনতেন। তিনি কুরআনকে ভালবাসতেন। আর তাই প্রায় সময় কুরআন শুনতেন। তারপর তিনি ভাবলেন, কেন আমি আরেকটু অগ্রসর হই না? তিনি ভাবলেন, আমি কুরআনের দিকে তাকিয়ে যেন শুধু ‘আল্লাহ’ শব্দটি দেখতে পারি। আমি এই শব্দটি চিনতে চাই। তারপর তিনি তাঁর এক নাতিকে ডেকে বললেন, ” আমাকে একটু শিখাওতো কীভাবে তুমি ‘আল্লাহ’ শব্দটি লেখ। তাঁর নাতি তাঁকে এটা শিখিয়ে দিলেন। এরপর থেকে তিনি ক্যাসেটে কুরআন শুনতেন আর কুরআন শরীফ খুলে ক্বারির তিলাওয়াতের সাথে সাথে ‘আল্লাহ’ শব্দটা খুঁজে বের করতেন। এইতো এখানে, এইতো এখানে ……। তিনি কুরআনের সাথে এতো বেশী যুক্ত ছিলেন। আপনাদের কি মনে হয় এই মহিলা আল্লাহকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন? হ্যাঁ, স্পষ্টতই। আমরা এখনি জানতে পারবো।
তো, তাঁর কাছে এটা খুবই ভালো লাগলো যে তিনি আল্লাহ শব্দটি শনাক্ত করতে পারছেন। তিনি আরও শিখতে চাইলেন। আর তাই তিনি তাঁর নাতিকে ধরলেন তাঁকে আরবি বর্ণমালা শিখিয়ে দেয়ার জন্য। তিনি শুরু করলেন…মনে আছে তো তাঁর বয়স কত ছিল? সত্তর। তিনি শিখলেন আলিফ, বা, তা, ছা … তারপর শিখলেন কীভাবে একটা আরেকটার সাথে যুক্ত হয়। তারপর ধীরে ধীরে তিনি ক্বারির তিলাওয়াত শুনে আরবি লেখা বুঝতে শুরু করলেন। এভাবে ক্বারির তিলাওয়াত অনুসরণ করতে করতে একসময় নিজে নিজে পড়া শিখে গেলেন। পঁচাত্তর বছর বয়সে তিনি সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্ত করে ফেললেন। সুবহানাল্লাহ!
আমাদের অনেক যুবক ভাইয়েরা বলেন, আমার বয়স হয়ে গেছে, আমার এখন পঁচিশ বছর। কীভাবে আমি কুরআন মুখস্ত করবো? যদি আমি ছয়-সাত বছর বয়সের হতাম, আমার ফ্রেশ মেমোরি থাকতো, তাহলে মুখস্ত করে ফেলতাম। এখন আমার বয়স হয়ে গেছে। আমার ৩০ বছর, আমার ৪০ বছর, আমার ৫০ বছর। আর এই মহিলা ৭০ বছর বয়সে শুরু করেন। ৭৫ বছর বয়সে তিনি সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্ত করে ফেলেন। তিনি এই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। আল্লাহ তাঁর উপর সদয় হউন। তিনি আমাদের সময়কালের দুইজন মহান স্কলারের সম্মানিত মাতা। যে ছয়টি বইয়ের কথা আমি বলেছিলাম, তার লেখক। তার বড় ভাইয়ের নাম হলো মুহাম্মাদ আল আসকার। দুইভাই, উমর আল আসকার, মুহাম্মাদ আল আসকার। একজন কয়েক বছর আগে আর অন্যজন কয়েক মাস আগে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে গেছেন। দোয়া করি আল্লাহ তাদের উপর সদয় হউন।
— মুতাসিম আল-হামিদি