আমরা আমাদের অতীত জীবনের দিকে তাকালে এতো বেশি ভুল এতো বেশী পাপ দেখতে পাই যে, নিজেকে ভালোবাসা অসম্ভব হয়ে পড়ে। নিজেকে ভালোবাসতে পারা যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা হয়তো অনুভব করতে পারছি না। এটি আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি। যে সিদ্ধান্তটি আপনার জীবনের অন্য সব সিদ্ধান্তকে কোন না কোন ভাবে প্রভাবিত করবে তা হলো সর্বান্তকরণে নিজেকে গ্রহণ করে নেয়ার সিদ্ধান্ত।
এটি সরাসরি আপনার সম্পর্কগুলোকে প্রভাবিত করে, আপনার চাকরি, আপনার অবসর সময়, আপনার ভবিষ্যৎ তথা সমগ্র জীবনকে। আপনি যদি নিজেকে ভালোবাসতে না পারেন তাহলে অন্যদের কাছ থেকে ভালোবাসা পাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়বে। নিজের মূল্য বুঝতে হলে এবং আত্মবিশ্বাস গড়তে হলে সচেতনতা এবং ভালোবাসার সাথে নিজের দিকে লক্ষ্য করতে হবে। গ্রহণযোগ্যতা এবং ভালোবাসা নিজের ভেতর থেকেই আসতে হবে।
আরেকটা বিষয় মনে রাখুন, নিজেকে গ্রহণ করে নেয়া এবং ভালোবাসা এটা একবারেই করে ফেলার মত বিষয় না, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। তাই নিচে বর্ণিত এই কয়েকটি কাজ দিয়ে আজ থেকেই শুরু করতে পারেন, ইনশাআল্লাহ।
১। এই মুহূর্তে জীবনের যে পর্যায়ে আছেন তাকে গ্রহণ করে নিন।
এটা আপনার ভাগ্যের অংশ, পেছনে ফিরে গিয়ে এটার পরিবর্তন করতে পারবেন না। এই জীবনের একটা সৌন্দর্যমণ্ডিত ব্যাপার হলো, কোনো কিছুই স্থায়ী নয়, সবকিছুর পরিবর্তন ঘটে।…… অভিযোগ করা, ঘ্যানঘ্যান করা বন্ধ করুন। মনে মনে এই প্রশান্তি রাখুন যে বর্তমানে আপনি যে চ্যালেঞ্জ এবং পরীক্ষায় পতিত আছেন একসময় তার সমাপ্তি ঘটবে।
২। নিজেকে ভালবাসুন এবং ক্ষমা করুন।
সকল সম্ভাব্য উপায়ে নিজের উত্তরোত্তর উন্নতির চেষ্টা করুন। আপনার নিজের জীবনের যে ভালো দিকগুলো আছে তার দিকে লক্ষ্য করুন এবং আপনি যে নিখুঁত নয় তা মেনে নিন। এটার মানে এই নয় যে, আপনি ত্রুটিগুলো দূর করার চেষ্টা করবেন না। বরং এর মানে হলো আপনি অবশ্যই চেষ্টা করবেন, কিন্তু নিজের প্রতি একটু সদয় হয়ে, আরেকটু অমায়িক হয়ে। যদি অতীত জীবনে এমন কোনো অন্যায় করে থাকেন যার ফলে নিজেকে মূল্যহীন মনে হয়, তাহলে নিজেকে ক্ষমা করে দিন।
৩। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ছেড়ে দিন।
এটা জীবন ধ্বংস করার এক নীরব ঘাতক। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কোন কিছুই পরিবর্তন করতে পারে না, বরং সুচিন্তিত কাজই পারে কোনো কিছুর পরিবর্তন করতে।
৪। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করুন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।
আল্লাহ আপনাকে যেমন করে তৈরি করেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞ হউন। আপনার শক্তি, সামর্থ্য, প্রতিভার দিকে লক্ষ্য করে কৃতজ্ঞ হউন। আমরা যে জীবিত এবং সুস্থ তার জন্য আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। এভাবে চিন্তা করুন যে, জীবনে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য আমাদের পরিপূর্ণ সামর্থ্য আছে।