নষ্ট করার মত অলস সময় আপনার হাতে নেই

“এই বক্তব্যটি বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মের জন্য। তোমাদের হাতে নষ্ট করার মত কোন অলস সময় নেই। তোমরা এই উম্মার সদস্য। এই উম্মার সব সদস্য, বিশেষভাবে যারা তরুণ তারা নিরলসভাবে উন্নততর সমাজ গঠনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, মানুষের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করছে। তোমার কোনো অলস সময় নেই। ৮ ঘন্টা ধরে ভিডিও গেইম খেলে নষ্ট করার মত সময় তোমার নেই। তোমার সময় নেই গ্র্যান্ড থেফট অটো কিংবা মডার্ন ওয়ার খেলার। তোমার সময় নেই। এমনকি নতুন যে মুভি আসছে সেটার জন্যও তোমার কিন্তু সময় নেই। সুপারম্যান এর জন্য নষ্ট করার মত সময়ও নেই তোমার। তোমাকে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে। তুমি এই প্রজন্মের একজন তরুণ, নিজের জন্য তোমাকে একটা উচ্চতর স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণ করতে হবে। এ জন্য না যে বড়রা, কিংবা ইসলামিক স্কলাররা অথবা অন্য কেউ বলার কারণে তুমি এটা করবে। তোমার নিজের আত্মউপলব্ধি থেকেই এটা তোমাকে করতে হবে। তোমার যে বিশ্বাস – ”লা ইলাহা ইল্লালাহ’, সেটাই তোমাকে এটা করতে বলা উচিত। এই বিশ্বাস তোমাকে কর্মশীল হওয়ার জন্যও তাগিদ দেয়া উচিত !

এই যে তুমি দেখছ সমাজে তোমার চারপাশে দুর্নীতি, যুব সমাজ আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তুমি কী মনে করো ? কে তাদের দাওয়াত দেবে? আমি? না ! এইসব ছেলে মেয়ে যারা মসজিদে আসে না, কোনো হালাকায়ও আসে না, তাদের কাছে পৌঁছানোর কোনো পথ আমার নেই। তোমাকে তাদের কাছে যেতে হবে, তারা তোমার বন্ধু। তারা আমার সাথে নয়, তোমার সাথে চলাফেরা করে। তোমাকে তাদের কাছে যেতে হবে, দাওয়াত দিতে হবে, তাদের প্রেরণার উৎস হতে হবে। তোমাকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে তোমার আশ পাশের বন্ধুদের নিয়ে তুমি চিন্তা কর। সবসময় শুধু তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করো না যে ‘আমার বন্ধুরা সারাদিন শুধু মুভিই দেখে’! তুমি কি কখনো তাদের উপদেশ দিয়েছ ? কখনো কি তাদের মুভির বদলে ভালো কিছু করার জন্য বলেছ? তুমি কি তাদের জন্য ভালো কোনো কাজে উৎসাহদানকারী হতে পেরেছ? তুমি কি জানো, তোমাকে এটাই করতে হবে ! আল্লাহ আমাদের তরুণদেরকে এই প্রজন্মের নেতা করে দিন এবং তাদের অনুকরণীয় আদর্শ করে দিন সেসব লোকদের জন্য যারা আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরে গেছে, যেন তারা আবার আল্লাহর কাছে ফিরে আসে। আল্লাহ তোমাদের সবাইকে ইসলামের ভালো উদাহরণ করে দিন যাতে করে অমুসলিমরা এদেশে এসে তোমাদের দেখেই যেন বলে ‘আমি মুসলিম হতে চাই ! আমি ওই লোকের মত হতে চাই ! আমি চাই তুমিও ঐরকম হও।’ এটাই সে চরিত্র যেটা তোমার দেখানো উচিত।

তোমার সততা, তোমার একাগ্রতা, যেভাবে তুমি চলাফেরা কর, অন্যকে যেভাবে সম্মান কর। শুধুমাত্র এসব দেখেই যেন তারা বলে যে ‘আমি মুসলিম হতে চাই। এই মুসলিমদের মধ্যে আলাদা কিছু আছে।’ তোমাকে এটাই হতে হবে। এটা চিন্তা করো না যে অমুসলিমদের একটা লিফলেট, ওয়েবসাইটের ঠিকানা অথবা একটা ভিডিও দেখিয়ে দিলেই দাওয়াত হয়ে গেল। একজন মুসলিমের চরিত্র, একজন মুসলিমের চরিত্রই হলো ইসলামের প্রতি সঠিক দাওয়াত। কোনো কথা বলা ছাড়াই তুমি ইসলামের দাওয়াত হতে পারো। বিশেষ করে এখানে, যখন মেহমান আসে, অমুসলিম আসে তারা মুসলিমদের পর্যবেক্ষণ করে। মুসলিমদের খারাপ কার্যকলাপ দেখে তারা এটা কখনো বলবে না যে ‘ইসলাম খুবই ভালো, কিন্তু মুসলিমরা এটা ঠিকভাবে মানছে না।’ তারা এইভাবে চিন্তা করবে না। তারা চিন্তা করবে যে ইসলামই খারাপ! কারণ তারা তোমাকে যেটা করতে দেখবে সেটাকেই ইসলাম মনে করবে। তারমানে, তুমি যা কিছুই করো না কেন, যখনই করো না কেন, তুমি হচ্ছো ইসলামের প্রতিনিধি। আল্লাহ আমাকে এবং তোমাদের কিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসা করবেন ‘এগুলোই কি সেসব কাজ যা তুমি ইসলামের পথে যারা এসেছিল তাদের দেখিয়েছ? তোমার কারণেই কি তারা ইসলামের কাছে আসলো? নাকি তোমার কারণে তারা আরও দূরে সরে গেল?’ সুবাহানাল্লাহ! আমাদের কাঁধে গুরু দায়িত্ব। আল্লাহ আমাদেরকে এই দায়িত্ব নেয়ার এবং এই সুন্দর উম্মাহর একজন দায়িত্বশীল সদস্য হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।