আলেমরা হচ্ছে আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান

আলেমরা হচ্ছে আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান। আম্বিয়া কিরামের উত্তরসূরী ।স্থানীয় আলেমেদ্বীনদের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করা আমাদের ঈমানী দ্বায়িত্ব। অনলাইনে যত যাই হোক, দিন শেষে বাস্তব জগতে একাধিক ভাল আলেমের সাথে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকা উচিত। তাদের সম্মান ও খেদমত করাও আমাদের দ্বায়িত্ব।

অনেক সময় আলেমদের কিছু ছাত্র উস্তাদ নুমান আলী খান সম্পর্কে আংশিক তথ্য দিয়ে এমন ভাবে উপস্থাপন করে যা বাস্তবতা থেকে ভিন্ন। এই আংশিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে অনেক সময় তারা নানা কথা বলেন। উনারা যে উদ্দেশ্যে নিয়ে কথা বলে আমরা শ্রদ্ধা করি। আমরা যারা এই পেইজে আছি, তাদের অনেকের লেকচার শুধু শুনিই নি তাদের অনেকের ক্লাসে এ সরাসরি অংশগ্রহনও করেছি। অনেক সিরিজ যেমন কিতাবুত তাওহীদ, ফিকহুস সালাহ, সিয়াম, যাকাত, আকীদা সহ অনেক ক্লাস করেছি। সত্যিকারের দ্বীন শিখতে আপনাকে আমাকে আলেমের শরণাপন্ন হতেই হবে। দ্বীনের কোন বিষয়ে গভীরভাবে জানতে আমরাও তাদের কাছেই যাই।

নোমান আলী খান বহুবার তার লেকচারে বলেছেন আর আমরাও বলি, তিনি আলেম নন বরং দ্বা’য়ী ইলাল্লাহ অর্থাৎ যে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকে। আলেমরা গভীর একাডেমিক গবেষণায় যেহেতু মগ্ন থাকেন তাদের কথা অনেক সময় সাধারণ মানুষ বুঝে না। আর অনেক আলেমের পক্ষে সাধারন মানুষদের চাহিদা কি, তারা কিসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাও জানা সম্ভব হয় না। এই সেতু বন্ধনে দ্বা’ইয়ী ইলাল্লাহ কাজ করে। ইসলাম প্রচারে দ্বা’ইয়ী ইলাল্লাহর ও দরকার আছে। আলেম যেখানে পৌঁছাতে পারেনা, সেখানে দ্বায়ী ইল্লাল্লাহ গিয়ে মানুষদের আল্লাহর পথে টেনে আনে। আমরা হাতে নাতে দেখেছি বিষয়টি পেইজটি চালাতে গিয়ে। আরও আমরা দেখেছি আরিফ আজাদের মত দ্বা’ইয়ী থেকে। মানুষ যখন আল্লাহর পথে আসে আমরা তাদের বলি আলেমের কাছে চলে যেতে আরও গভীরভাবে দ্বীন শিখতে।

আমরা পেইজ থেকে আগেও বলেছিলাম,

আর উস্তাদ নোমান আলী খান নিজেও বলেছেন, শুধু আমাকে নিয়ে পরে থাকবেন না। অর্থাৎ শুধু একজন আলেম, দ্বায়ীদের নিয়ে পরে থাকবেন না। আরও বিষয় আছে ইসলামের যেমন ইতিহাস, তাওহীদ, হাদীস, ফিক্‌হ, ভাষা সহ আরও অনেক। এক জনের পক্ষে সব বিষয়ে পারদর্শী হওয়া সম্ভবও নয়। এ বিষয়ে একজন তার কাছে এসে বলেছিল
 
“Ustadh Nouman! You are the only speaker I listen to! I don’t need anyone else!”
What? Dude! I ain’t gonna teach ya how to pray, how to do hajj, the history of Islam, manners, fiqh, aqeedah, hadith and a WHOLE bunch of other stuff that you NEED to know. I appreciate the love but you’ve got to broaden your perspective homey!
 
https://muslimmatters.org/2014/07/31/about-fame-a-personal-life-and-responsibility/
আমরাও তাও বলি, শুধু একজন আর এক ঘরনার আলেম, দ্বা’য়ীদের নিয়ে পরে থাকবেন না। আমরা সকলেই জান্নাতে যেতে চাই। সত্য খুঁজার জন্য আমাদের আন্তরিক হওয়া দরকার। প্রতি রাকাতে আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি “হে আল্লাহ আমাদের সরল পথ দেখাও।” কোন দল, আলেম বা দ্বা’য়ীকে ফোলো করি বলেই আমরা সরল পথে আছি এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। রাসুল (সাঃ) এর পর উম্মত ছোট ছোট বিষয়ে বুহু ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। কোন একটি দল, আলেমে, বিশ্ববিদ্যালয় যাই বলেন একক ভাবে সত্য কারও কাছে গচ্ছিত নেই। যে সত্য অন্বেসন করে সে কুর’আন আর সুন্নাহ সর্বদা পড়বে আর আন্তরিক ভাবে সবার কথা শুনবে। কুর’আন আর হাদীস দিয়েই সকলেই কথা বিচার করবে। দলীল অনুযায়ী জ্ঞান নিবে যদিও সত্য শত্রুর কাছ থেকে আসে। আমাদের জাতির একটা বড় সমস্যা হল যে কোন বিষয়ে কোনো একটি দলকে ভাল লেগে গেলে তাকে মাথায় উঠায় আর বাকি দলকে ঘৃণা করি। যেমন ফুটবলে ব্রাজিলকে সাপোর্ট করলে আর্জেনটিনাকে অবশ্যই অবশ্যই ঘৃণা করতেই হবে! একি সাথে দুই দলকে সাপোর্ট করতে পারিনা। খেলাধুলা ছেড়ে ইসলাম এ আসলেও আমরা এই মনোভাবটি ইসলামে নিয়ে এসেছি। একটি দল মতের আলেমরাই ভাল আর বাকিদের ঘৃণা করতেই হবে। এই মানসিকতা থেকে উঠে আসতে হবে যদি আমরা সত্যের সন্ধান পেতে চায়। এ নিয়ে আমাদের এই লিখাটি পড়ুন। https://bit.ly/369npGS

আকরাম নাদভীর বিষটি সুন্দর ভাবে বলেছেন। পৃথিবীতে আর নবী আসবেন না। আর মুসলিমরা শত শত দলে বিভক্ত। কেউ যখন ইসলামের দাওয়াত পায় সে মুসলিমের কোন না কোন দলের থেকে দাওয়াত পান। আর প্রথম যে দলের থেকে দাওয়াত পান সে সেই দলের প্রতি খুব কৃতজ্ঞ থাকে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এখানেই থেমে গেলেই বিপদ। যেহেতু সত্য এককভাবে কোন দলের কাছে নেই। তাকে কুর’আন আর সুন্নাহ নিজস্ব গতিতে পড়তে থাকতে হবে। যখনই দেখবে কোন একটি বিষয় তার দল যেভাবে দেখে তা কুর’আন আর সুন্নাহর বিপরীত, তখন তার দরকার সেই বিষয়ে নিজের প্রিয় দল, আলেমের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া আর কুর’আন আর সুন্নাহর মত মেনে নিয়ে আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে চলা। যদি মনোভাব এমন হয় যে, যে যাই বলুক দল আর আমার প্রিয় আলেম, দল যেটা বলে সেটাই আকঁড়ে ধরবো, এটাই পথভ্রষ্টতা এটাই অন্ধভক্ত। আপনি যদি ভিন্ন আলেমের কথা নাই শুনেন তাহলে বুঝতেই পারবেন না আপনার দলের দুর্বলতা কথায় আর সত্য থেকে আপনি আদৌ দূরে কিনা।

তাই আমরা অনুরোধ করবো অন্য কোন আলেমকে গালাগালি তো নয়, বরং তাদের কথা শুনুন। তাদের হালাকাতেও যান আর তাদের হাত শক্তিশালী করুন দ্বীন ইসলামের খেদমতে। আর শুধু এক ঘরণার আলেমের কাছে না গিয়ে বিভিন্ন ঘরণার আলেমের কাছে যান। আর কখনও কুর’আন পড়া ছাড়বেন না। সুন্নাহকে ধরে রাখবেন। এতে আপনার দৃষ্টি প্রসারিত হবে। সঙ্কীর্ণমনা দুর হবে। পৃথিবী যে কত বড় বুঝতে পারবেন।

— NAKBangla এডমিন প্যানেল থেকে