ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি যে, ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার একটি বিপ্লব দরকার।
এটা একান্তই আমার নিজস্ব মতামত, “ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি বিপ্লবের প্রয়োজন”
আমি এর দ্বারা কি বুঝাতে চাচ্ছি ?
(দেখুন) আলেমদের জন্য ইসলামি অধ্যাপনার ব্যবস্থা আছে যেখানে তারা পড়াশুনা করবেন ফিকহ, হাদিস, তাফসীর, আকীদাহ নিয়ে, এগুলো সবই তারা চর্চা করবেন এবং (এভাবে) আপনিও একজন আলেম হবেন আর আপনি সেগুলো চর্চা করে অনেক উচু স্তরে যেতে পারেন।
কিন্তু এর নিচেও একটি স্তর আছে, যেটা আসলে আমাদেরই তৈরি করা প্রয়োজন।
যেটার বাস্তবে তেমন কোন অস্তিত্ব নেই, এখনো
এবং (তাই) আমাদের প্রয়োজন ইসলাম শেখার একটি স্তর তৈরি করা
শুধুমাত্র প্রতিদিন অনুশীলনের জন্য, প্রাত্যহিক জীবনে।
আমি ফিকহ নিয়ে কথা বলছি না,
আমি কথা বলছি বাবাদের জন্য উপদেশ নিয়ে,
আমি কথা বলছি স্ত্রীদের জন্য উপদেশ নিয়ে,
শুধু একটি পাঠ্যক্রম,
কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো মুসলিম স্ত্রী?
কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো মুসলিম স্বামী?
কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো মুসলিম….. পিতা?
কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো পুত্র?
কিভাবে হওয়া যায় একজন ভালো কন্যা?
এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাআলার কি কি উপদেশ আছে?
পুরো পাঠ্যক্রমটার ভিত্তি হবে কিভাবে আমাদেরকে ভাল মানুষে পরিণত করা যায়, এটাই হচ্ছে (প্রকৃত) শিক্ষা।
প্রকৃত শিক্ষা এটা না যে, তুমি C++ কোডিং জানো,
আর তুমি মাইক্রোসফটের কিছু একটায় সার্টিফাইড হয়েছো এবং তুমি সিসকো সার্টিফাইড হয়েছো
আর এ সবগুলোর উপরে তোমার একটা একাউন্টিং ডিগ্রী আছে, এমবিএ ডিগ্রী আছে।
এ সবকিছুরই মানে হলো, তুমি টাকা উপার্জন করতে সক্ষম কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তুমি শিক্ষিত।
এটার মানে শুধু এই যে, তুমি টাকা উপার্জন করতে সক্ষম। এতটুকুই, এ সবকিছুর মানে শুধু এতটুকুই।
এগুলোর কোনোটাই তোমাকে একজন ভালো মানুষ হিসাবে গড়ে তুলবে না।
আমি অনেক চিকিৎসকদেরকে চিনি যারা মানুষ হিসাবে ভয়ংকর,
আমি অনেক প্রোগ্রামারদেরকেও চিনি যারা মানুষ হিসাবে জঘন্য।
এরা খুবই জাহিল (প্রকৃতির)।
কিভাবে একজন স্বামী হতে হয় সে ব্যাপারে এরা অজ্ঞ,
কিভাবে একজন পিতা হতে হয় সে ব্যাপারে এরা অজ্ঞ,
কি মূল্য তাহলে তাদের এ শিক্ষার?
এ সবকিছুই আসলে দক্ষ কর্মী তৈরির জন্য, আপনি শুধু কারখানার জন্য একজন দক্ষ কর্মী মাত্র,
এ সবকিছুর মানে (আসলে) এটাই,
এটা একটি অপার্থিব/কৃত্রিম/কাল্পনিক কারখানা, কিন্তু আপনার মূল্য আসলে এতটুকুই।
ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন, আমাদেরকেই করতে হবে ।
সেক্ষেত্রে, ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থাকে আমাদের তৈরি করতে হবে ভালো মানুষ গঠন করাকে কেন্দ্র করে।
আদব:
নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রের এখনই সাহায্য প্রয়োজন আগে যেখানে সাহায্য দরকার ছিল না।
আমি আগেই বলেছিলাম কি ঘটছে, “ঘরের ভেতরকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে” ।
বেশিরভাগ মুসলিম পিতারা এখন আর জানেনই না একজন “মুসলিম পিতা” হবার মানে কী?
এইসব ব্যাপারগুলো আগে স্বাভাবিকভাবেই এসে পড়ত, এগুলো আগে এত কঠিন ছিল না আমাদের কাছে ।
কিন্তু এখন পৃথিবী বদলে যাবার কারণে এবং আমাদের জীবনযাত্রা পরিবর্তনের কারণে
এগুলো….আমাদেরকে এগুলো পুনরায় শিখতে হচ্ছে ।
আমাদের অবশ্যই ফিরে আসতে হবে এবং আবার শুরু থেকে এগুলো সবই করতে হবে।
বিশেষ করে, কিভাবে বাচ্চাদের লালন-পালন করতে হয়।
এক সেট সিডি ছিল…. আমার মনে হয় আপনারা অনলাইনে (এর) এমপিথ্রিও খুঁজে পাবেন।
আমি চাই এখানকার সবাই সেগুলো শুনবেন।
এগুলো (সিডিগুলো) আমার নয়, এগুলো তৈরি করছেন এমন একজন ব্যাক্তি যার প্রশংসা আমি খুবই করি,
ভাই, হিশাম আল আওয়াদি।
ভাই, হিশাম আল আওয়াদি।
“নবীদের কাছে শিশুরা” – এটা একটা সিরিজ।
কি নাম…? আবার?
“নবীদের কাছে শিশুরা” এবং ” বিশ্বাসীদের মা”
এই দুইটি সিরিজ।
আমি চাই প্রত্যেকে, বিশেষ করে এখানকার প্রত্যেক পিতা…. বিশেষ করে প্রত্যেক পিতা এবং পুরো পরিবারেরও উচিত উভয় সিরিজই শুনা।
আপনাদের এই কাজটি করা খুবই, খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
এই সিরিজগুলো আমাকে দারুণভাবে উপকৃত করেছে এবং সেগুলো অভিভাবকদেরও উপকার করবে, সাধারণভাবে।
এরকম সিরিজ অল্পই আছে, কিন্তু এগুলো সোনার সমতুল্য।
এগুলো আসলেই অনেক দামী।
আমাদের এগুলোর শুনে নেওয়া উচিত … ইন শা আল্লাহু তায়ালা, পুরো পরিবারকেও এগুলো শুনানোর চেষ্টা করা উচিত ।
এগুলো আপনার আইপডে রাখুন, এগুলো আপনার গাড়িতে রাখুন এবং সারাদিন শুনতে থাকুন।
আপনি ভীষনভাবে উপকৃত হবেন।
আপনার সন্তানকে সাথে নিয়ে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করুন, কোন কারী ভাড়া করবেন না কুরআন তেলাওয়াত করার জন্য । আপনার সন্তানকে সাথে নিয়ে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করুন।
মাওলানা সাহেব আসেবেন, কুরআন পড়েবেন এবং চলে যাবেন।
আপনার খবর কি? আপনার কি অবস্থা ?
আপনার কি সময় নাই?
যদি আপনারই পবিত্র কুরআন পড়বার সময় না থাকে, তাহলে আপনার সন্তানের কেন কুরআন পড়বার সময় থাকবে?
আপনার সন্তানের সাথে বসুন এবং সেই ২০ মিনিট সময় ব্যয় করুন।
শয়তান আসবেই
এবং সে আপনার হাই উঠবে,
এবং সে আপনাকে তৃষ্ণার্ত করবে,
এবং সে আপনাকে তন্দ্রাচ্ছন্ন করবে,
এবং সে আপনাকে মনে করিয়ে দিবে আপনার একটা মিটিং ছিল, এ সবকিছুই এই ২০ মিনিট সময়েই ঘটবে।
কেন? কারণ আপনি এই ২০ মিনিট সময় পবিত্র কুরআনকে দিয়েছেন।
শয়তান এটাকে ঘৃণা করে, সে এটা সহ্যই করতে পারে না।
কিন্তু আপনাকে সেই ২০ মিনিট সময় তৈরি করতে হবেই।
নিজেকে এই ব্যাপারে প্রতিজ্ঞা করুন, আপনার সন্তানের সাথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন,
দিনের একাংশে পুরো পরিবারকে নিয়ে আসুন,
(বলুন) “আমরা সবাই এখন বসবো এবং পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করবো”
পবিত্র কুরআনের ব্যাখ্যা শুনুন, অন্তত পবিত্র কুরআনের অনুবাদ শুনুন, পরিবারের সাথে একত্রে।
সেটা যদি আপনি এক ঘণ্টার জন্য করতে নাও পারেন, দশ মিনিটের জন্য করুন।
ঠিক আছে, শুধুই শুনুন। অল্প একটু কুরআন, শুধু দশ মিনিটের জন্য ।
এটা কুরআন তেলাওয়াতের বাইরে।
তেলাওয়াত, আমি বলছিলাম কত মিনিট ?
২০ মিনিট।
অনুবাদ শুনা, কিছু তাফসীর, কিছু ব্যাখ্যা, কতক্ষন ?
১০ মিনিট।
তাহলে, কতক্ষন প্রতিদিন ?
৩০ মিনিট।
আপনি, একটি পরিবার হিসাবে মহান আল্লাহ তায়ালার জন্য কিছু করলেন।
আমার মতামত, মাগরিব আর ইশা এর মাঝামাঝি।
এবং আমার মতামত,
এখন আপনারা বলবেন, “বাচ্চাদের পরীক্ষা আছে, এখন মে মাস, সেমিস্টারটা শেষ হোক” ।
ঠিক আছে, আমি মেনে নিলাম।
এই পুরো গ্রীষ্মকাল, আপনি এটাই করবেন, প্রতিদিন ৩০ মিনিট ।
বলবেন না, “কোন প্রোগ্রাম আমার বাচ্চাকে ঢুকাবো ?
আপনি নিজেই সেই প্রোগ্রাম!
অন্য সবকিছু পরে।