তারপর আল্লাহ একই আয়াতে একটি সতর্ক বাণীও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন : وَلَا يَكُونُوا كَالَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلُ তারা (মুমিনরা) যাতে তাদের মত না হয়, যাদেরকে তাদের পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল।فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْأَمَدُ তাদের উপর একটি বড় সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। তার মানে তারা এই কিতাব ধারণ করেছিল দীর্ঘ সময়ের জন্য। যখন তারা এভাবে কিতাব ধারণ করেছিল, আপনারা জানেন – যখন আপনি প্রথম ধর্মীয় অনুশাসন মানা শুরু করেন, আপনি এ ব্যাপারে খুবই উত্তেজিত থাকেন। এই উত্তেজনা একসময় চলে যায়, যা থাকে তা হলো বহিরাবরণ। সুতরাং ঐসব লোকদের ক্ষেত্রে কী ঘটল? فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেল। একটি দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর, ধর্মীয় কর্ম সম্পাদন একটি রুটিনে পরিনত হয়ে গেল। এমন কিছু যা তারা শুধু করে, যা করতে হয়, তারা এটা করছে কারণ এটাতে তারা অভ্যস্ত। কিন্তু এটা আর এমন কিছু নয়, যা তাদের হৃদয়কে আলোড়িত করে। তাদের হৃদয় হয়ে গেছে কঠিন।
আর যখন আপনার অন্তর কঠিন হয়ে যায়, তখন কলুষিত হওয়া আপনার জন্য খুবই সহজ। এজন্য আয়াতের পরবর্তী অংশে বলা হয়েছে- وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ তাদের অধিকাংশই পাপাচারী। তাদের বড় একটা সংখ্যা আসলে খারাপ।আয়াতটি শেষ হয়েছে আহলে কিতাবদের দিয়ে , আর এটা কি দিয়ে শুরু হয়েছিল? আলোচনাটি আসলে তাদের নিয়ে যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আর কিভাবে তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে।
আর এটা যদি আপনি আপনার ভেতরে অনুভব করতে পারেন, কেউ আপনাকে এটা বলে দিতে পারবে না। আমি আবার বলছি, আপনার জন্য কেউ এটা অনুমান করতে পারবে না। একমাত্র যে এটা ধরতে পারবে সে ব্যক্তি হলো আপনি নিজে, অন্য কেউ নয়। আপনি আল্লাহর সামনে কতটুকু বিনয়ী, আপনি অন্যদের সামনে কতটুকু বিনয়ী এ বিষয়টা আমরা আপনাকে বলে দিতে পারব না, একমাত্র আপনি আপনার এই বিষয়টা ভালো বলতে পারবেন।
আপনি যদি কখনো হতাশায় ভোগেন, আপনি বুঝতে পারছেন যে আপনার অন্তর আসলেই কঠিন হয়ে গেছে – আর আপনি নিজেই এই সমস্যাটা আপনার মধ্যে বাড়তে দিয়েছেন। কখনো কখনো ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি খুবই ভীতিকর মনে হয়। তাদের সাথে কথা বলা কঠিন, তাদের আশে পাশে যাওয়া আতংকজনক কারণ তারা হয়ত আমাকে অপমান করতে পারেন। আপনি তাদের ভয়ে ভীত থাকেন। অনেক সময় যেসব বোন্ হিজাব পরেন না তারা হিজাব পরা একজনকে আসতে দেখলে রাস্তা ক্রস করে অন্য দিকে চলে যান। তারা মনে করেন – ঐ যে হিজাব পুলিশ আসছে!! সে নিশ্চয়ই আমাকে কিছু বলবে, আমার মন খারাপ করে দিবে।
এখন- একদিকে এটা একটা ভয়ের কারণ, অন্যদিকে কখনো কখনো এটা সত্য যে , কিছু মানুষ রয়েছে যারা অন্যদের নিচু চোখে দেখে, তারা অন্যদের প্রতি উদ্ধত। ’’আমাকে বল – কয়েকদিন আগে না তুমি পার্টি মাতিয়ে রাখতে!’’ যারা আপনার সাথে এভাবে কথা বলে তাদেরকে আপনি কিভাবে জবাব দেন? আপনি কি ভুলে গেছেন যে, আপনি কোথা থেকে এসেছেন? আল্লাহ আপনাকে কোথায় এনেছেন। কারণ মানুষ ভুলে যায়, মানুষ ভুলে যায় যে তারা কি ছিল আর আল্লাহ তাদের কোথায় এনেছেন।
তারপর কয়েক বছর অতিক্রান্ত হওযার পর, যখন তারা এমন কাউকে দেখে যে পার্টি এনিম্যাল – তারা তখন বলে উঠে , আস্তাগফিরুল্লাহ, সে এমন হলো কিভাবে? আপনি কোথায় ছিলেন? এই লোককে দেখেতো আপনার নিজের কথা মনে হওয়া উচিত। আপনিতো ঠিক তার মতই ছিলেন। আল্লাহর যে রহমত আপনার উপর বর্ষিত হয়েছে তা আপনার স্মরণ করা উচিত। وَكُنتُمْ عَلَىٰ شَفَا حُفْرَةٍ مِّنَ النَّارِ আপনি অগ্নিকুন্ডের একেবারে প্রান্তসীমায় ছিলেন। فَأَنقَذَكُم مِّنْهَا তিনিই আপনাকে রক্ষা করেছেন। আর সেই আয়াতেই আল্লাহ বলেছেন, فَأَلَّفَ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ তিনি তোমাদের অন্তরে ভালবাসা সৃষ্টি করেছেন। (৩:১০৩)
আপনারা আপনাদের অন্তরসমূহের মাঝে যদি ভালবাসা পেতে চান, তাহলে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে আপনি নিজেও অগ্নিকুন্ডের কিনারায় ছিলেন, আপনাকে সেখান থেকে রক্ষা করা হয়েছে। আর আপনাকে এইজন্য রক্ষা করা হয়নি যে – আপনি খুবই স্মার্ট মানুষ তাই আপনি রক্ষা পাওয়ার যোগ্য। এটা আপনার প্রতি কার অনুগ্রহ ছিল? এটা আপনার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ছিল। কোন সাহসে আপনি অন্যদের দিকে এভাবে তাকান এবং এভাবে চিন্তা করেন।
এই দাম্ভিকতা জঘন্য ব্যাপার, এটা আপনার সকল ভালো কাজ ধ্বংস করে দিবে। এটা সব ভালো ধুয়ে মুছে নিয়ে যাবে। অধিকাংশ সময় আমাদের যুবকরা যারা তীব্র বিতর্কে লিপ্ত হয় – যেকোনো বিষয় নিয়ে এটা হতে পারে যেমন ধর্মতত্বের বিষয়, ফিকহ সম্পর্কিত বিষয়, এটা সংঘঠনের পদ নিয়ে হতে পারে – যেকোনো ব্যাপার নিয়েই এটা হোক না কেন, আপনারা জানেন বিতর্কের মূল কারণ কী? ইগো। আসলেই এটা আত্ম-অহংকার এর কারণে।
মানুষ স্কলারদের সম্পর্কে এমনভাবে কথা বলে যেন তারা কোনো ক্রীড়াবিদকে নিয়ে কথা বলছে। ”ঐযে উনি! আমি ওনার কথা একদম পছন্দ করি না।” আমাকে মাফ করবেন। আপনি জানেন তিনি কত পরিশ্রম করেছেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য! যদি আপনি তার সাথে একমত নাও হন। প্রকৃত ব্যাপার হলো তিনি তার বাড়ি ত্যাগ করেছেন। তিনি যে স্কলারই হন না কেন- তিনি বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ভ্রমন করেছেন শুধু জ্ঞান অর্জনের জন্য, রাতের পর রাত ব্যয় করেছেন প্রার্থনা করে, মুখস্ত করে, অধ্যয়ন করে। আর আপনি কি তার সম্পর্কে এমন একটা মন্তব্য করে বসলেন যে , তিনি কি বলছেন আমি পছন্দ করি না আমার মনে হয় তিনি বিপথগামী। কোন সাহসে আপনি এটা বলেন!! আপনি কি করেছেন?? কিসে আপনাকে এমন অবস্থানে নিয়ে যায় যে আপনি তার সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেন??
আপনি যে কোনো মুসলিমের সাথে দ্বিমত পোষণ করতে পারেন আর আপনি মনে করতে পারেন যে তারা সঠিক নয়। এক্ষেত্রে তাদের প্রতি আপনার প্রথম দৃষ্টিভঙ্গিটা কেমন হওয়া উচিত? আপনার কি এমন রায় দেয়া উচিত যে তারা জাহান্নামের পথে, নাকি আপনার সত্যিই তাদের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত? আর আপনি যদি তাদের ব্যাপারে সত্যিই উদ্বিগ্ন থাকেন তাহলে তাদের ব্যাপার নিয়ে আপনি অন্যদের সাথে কথা বলবেন না, বরং কার সাথে কথা বলেবেন? সরাসরি তাদের নিজেদের সাথে। আপনি সরাসরি তাদের সাথে কথা বলবেন। যদি আপনার মাঝে আন্তরিকতা থাকত তাহলে আপনি আপনার উদ্বেগ উৎকন্ঠার কথা সরাসরি তাদের বলতেন অন্যদের নয়। অন্যথায় আপনার মাঝে আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। এর ফলে যা প্রদর্শিত হয় তা হলো আপনার ইগো, আপনার নিজ দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাচ্ছেন, নিজ মতের পক্ষে দাড়িয়েছেন আর অন্যদের সম্পর্কে যাচ্ছেতাই মন্তব্য করছেন। এটা অপরিপক্ব, দাম্ভিক এবং আত্ম-অহংকারমূলক। এটা ঠিক তাই।
যদি আমাদের অবস্থা এই পর্যায়ে এসে পৌছে, তাহলে আমাদের প্রতিষেধক প্রয়োজন। সর্বপ্রথম প্রতিষেধক হলো আশা (hope) . আশা হারিয়ে যায়নি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পরবর্তী আয়াতে অত্যন্ত সুন্দরভাবে বলেছেন- সুবহানাল্লাহ- اعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يُحْيِي الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا
তোমরা জেনে রাখ, আল্লাহই ভূ-ভাগকে তার মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন।
পূর্ববর্তী আয়াতে আল্লাহ অন্তরসমূহ সম্পর্কে কথা বলছিলেন। আর এখন তিনি কি বিষয়ে কথা বলছেন? ভূপৃষ্ঠকে জীবন দেয়া সম্পর্কে। আল্লাহ আপনাদের বলছেন যে , যেভাবে আল্লাহ পৃথিবী পৃষ্ঠকে মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করতে পারেন ঠিক সেভাবে আল্লাহ আপনার মৃত অন্তরকেও পুনরায় জীবিত করতে পারেন।
আপনার অন্তর পুনরায় কোমল হতে পারে। এটা প্রত্যাশার বাইরে নয়। আমরা অলৌকিক নিদর্শনাবলী প্রকাশ করছি যাতে তোমরা বুঝতে পর। বুঝতে পেরেছেন? আপনাদের জন্য আশা রয়েছে। আপনি আপনার অন্তরকে পরিষ্কার করে নিতে পারেন। এটা সম্ভব। আল্লাহ যদি শুষ্ক জমিনে প্রানের সঞ্চার করতে পারেন তিনি আপনার অন্তরকেও পুনরায় জীবিত করতে পারেন।
এখন চিকিতৎসার ব্যাপারে আলোচনা করা যাক। এই চিকিৎসা কি? আপনি আপনার ইগো সমস্যার সমাধান কিভাবে করবেন? প্রথম যে বড় বিষয়টি আপনার অন্তর পরিষ্কার করতে সহায়তা করবে তা হলো – আল্লাহর স্মরণ। প্রথম এই বিষয়টি আপনাকে আয়ত্ত করতে হবে।কত ঘন ঘন আপনি আল্লাহকে স্মরণ করেন। আল্লাহকে স্মরণ করা মানে শুধু সুবহানাল্লা, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার বা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা নয়। আর এগুলো অবশ্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিকর যা আমরা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহ থেকে জানতে পারি। কিন্তু এই জিকর গুলো যদি চিন্তাহীন হয়, আপনি যদি এগুলোর অর্থ ও মাহাত্ম না বুঝেন এবং এগুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা না করেন তাহলে এটা জিকর নয়। এতে শুধু মুখস্তটা আরেকবার রিভাইস দেয়া ছাড়া আর কিছুই হয় না।
আলহামদুলিল্লাহ অর্থ হলো – সকল কৃতিত্ব, সুনাম, প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহকে সবকিছুর জন্য প্রশংসা করতে হবে এবং ধন্যবাদ দিতে হবে। ধরুন, কখনো আপনার একটা খারাপ দিন গেল , আপনি কি বলবেন? আলহামদুলিল্লাহ। আমি শুধু আল্লাহকে ধন্যবাদ দেই না আমি তার প্রশংসাও করি। যাই এখন ঘটছে তা অবশ্যই ভালো এবং এটা এত ভালো যে আমি এর জন্য তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। আর আমি শুধু তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি না আমি তার প্রশংসাও করি। কী দারুন কাজ তিনি করেছেন! আপনি সমস্যায় পড়া সত্বেও বলেন আলহামদুলিল্লাহ।
কিন্তু যখন আপনি এর অর্থ বুঝে বলবেন তখন এটা অন্য কিছু। এখন আপনি আসলেই আল্লাহকে স্মরণ করছেন। আল্লাহর এই প্রশংসা , আল্লাহকে কৃতিত্ব দেয়া আপনাকে আপনার নিজের সম্পর্কে কী শিক্ষা দেয়? যখনি কোনো ভালো কাজ আপনি মনে করেন যে আপনি সম্পাদন করেছেন, আপনার তখন কি বলা উচিত? আলহামদুলিল্লাহ। আপনি আসলে কাকে এই কাজের কৃতিত্ব দিলেন? আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লাকে। আপনি কোনো বক্তব্য দেয়ার পর হয়তো কেউ এসে আপনাকে বলে, ভাই দারুন বক্তব্য দিলেন। আপনি হেসে বললেন – আলহামদুলিল্লাহ, আমি জানি ভালো হয়েছে।
তাহলে এই আলহামদুলিল্লাহ আসলে আলহামদুলিল্লাহ নয়।
তাহলে এভাবে বলার মাধ্যমে প্রকারান্তরে আপনি নিজের প্রশংসাই করলেন। প্রশংসা পেলে কিভাবে অস্বস্তিতে পড়তে হয় আপনাকে তা শিখতে হবে। প্রশংসা আপনার মাঝে বিরক্তির উদ্রেক করা উচিত। আল্লাহকে কৃতিত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে দ্রুত হতে হবে এবং একই সাথে নিজেকে বিনম্র করে দিতে হবে। ‘’ভাই আপনি জানেন না, আপনি জানেন না। আপনার এভাবে বলা ঠিক নয়। আমি আসলে কিরকম তা আপনি জানেন না আল্লাহ জানেন। শুধু আমার জন্য দোআ করবেন। আপনার প্রশংসার আমার দরকার নেই, আমার দরকার আপনার দোয়া।”
আমি চাই না আপনি আমাকে ধন্যবাদ দিন। বোন আমি খুবই ভালো এটা আপনি আমাকে বলার দরকার নেই, না আমি আপনার কাছ থেকে এটা শুনতে চাই না। এটা আসলে আমাকে সাহায্য করে না , এটা আমার ক্ষতি করে। কারণ যখন কেউ আমাকে বলে আমি কত ভালো ! এটা আমার মাঝে কী জাগিয়ে তোলে? আমার ইগো। আর এটা মানুষের জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর সমস্যা। তাই কেউ অন্য কারো প্রশংসা করার মাধ্যমে তার উপকার করছে না।আর নম্রতা সম্পর্কে শেষ যে বিষয়টা আমি এর সাথে যোগ করতে চাই তা হলো – যখন কেউ আপনাকে বাজে কথা বলে বা আপনাকে অপমান করে – এটা আসলে আপনাকে বিনয়ী করতে সাহায্য করে। তারা হয়তো আপনার প্রতি একটা অনুগ্রহ করলো। তারা মনে করতে পারে তারা আপনাকে ছোট করতে পেরেছে কিন্তু এটা হয়তো আল্লাহর তরফ থেকে একটা মেসেজ বা উপহার আপনার জন্য। এর মাধ্যমে আল্লাহ আপনাকে নম্রতা উপহার দিলেন। এই জন্য ইবন তাইমিয়্যাহ র বলতেন – যখন কেউ আমাকে কষ্ট দেয় আমি মনে করি এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার, তিনি আমাকে নম্রতা শিক্ষা দিচ্ছেন। এটা একটি ব্যাতিক্রমি উদাহরন।
এরপর মানুষের উপকার করা শিখুন, শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।অনেক সময় কেউ কেউ সাধ্যের অতিরিক্ত করে ফেলে। ধার্মিকদের প্রতি এটাই আমার শেষ বক্তব্য, বিশেষ করে তরুণদের জন্য। তারা অনেক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়, তারা সংগঠনে অংশ নেয়, কোন দলে যোগদান করে, মসজিদে যোগদান করে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যায়, তারা সবসময় কর্মঠ থাকে আর নিজেদেরকে ক্লান্ত করে ফেলে একের পর এক অনুষ্ঠানের কাজ করে। এরপর কি ঘটে জানেন? তারা ইচ্ছা শক্তি হারিয়ে ফেলে। তারা পুরোপুরি ক্লান্ত হয়ে যায়, এবং এরপর আর কখনই আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারেনা। ভারসাম্য রাখুন, ধীরে ধীরে অগ্রসর হউন। এক সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যে সব করতে হবে এমন কোন কথা নেই, অথবা এক গ্রীষ্মের ছুটিতেই সব করতে হবে এমন নয়। বরং ধীরে ধীরে এগোন।
ইনশাল্লাহ আপনি গতি ধরে রাখতে পারবেন। কিন্তু যখন আপনি শুধু আল্লাহ্র জন্যই কিছু করবেন, আর আপনি হতাশ হয়ে যান যে কোন ফলাফল আসছে না, উদাহরন হিসেবে এই অনুষ্ঠানের কোথায় বলা যাক, আমাকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল, আমি বলে ছিলাম, ঠিক আছে আমি রবিবার আসব। শনিবার রাতে কেন নয়? কারন তখন কেউ এখানে থাকবেনা। জানেন আমার প্রথম মতামত কি ছিল? “তো কি হয়েছে?”। আমি আপনাদের জন্য এখানে আসছিনা, আমি কেন আসছি? আরও বড় কোন কারনে। আপনারা আমাকে কিছু দিচ্ছেন না, কে দিচ্ছেন? ঠিক? তাই এইখানে ১ জন থাকুক, ১০০ জন থাকুক আর কেউ না থাকুক, আমি কি আমার বিনিময় পাব যদি আমার নিয়ত ঠিক থাকে? আমি পেয়েছি, যদি আমার নিয়ত ঠিক থেকে থাকে।