ইসলাম ও ইগো (আত্ম-অহংকার) – পর্বঃ ০৪

আপনি এখানে কেন এসেছেন? আপনি কি এখানে এসেছেন কারণ আপনার বন্ধুরা এসেছে বলে? কারণ আপনাকে আসতে জোর করা হয়েছে? আপনার গাড়ি আজ ছাড়ছে না, তাই আপনি আটকে গেছেন এখানে। এজন্য? তাহলে আপনি কিছুই অর্জন করতে পারলেন না।কিন্তু আপনার এখানে আসার কারণ এবং নিয়ত যদি এরকম হয়-“আজ রাতে আমি আল্লাহ্‌ কে স্মরণ করব, আমি আল্লাহ্‌র আরোও নিকটবর্তী হব। এমনকি যখন কিছু হচ্ছে না, আপনি সেটার অপেক্ষায় আছেন। এ অপেক্ষার সময়টাও আপনার স্বপক্ষে পূণ্য হিসেবে গণ্য হবে। শুধু দরকার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, নিয়তের পরিবর্তন। ঠিক আছে? এটি আপনাকে জীবনভর অনেক সাহায্য করবে। কারণ আপনি যখন কিছু করবেন, যেমন- প্রচারপত্র দেওয়া, মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া এবং কেউ কোন আগ্রহ দেখাল না এবং আপনি হয়তো মনে মনে বলবেন-কেউ কিছু শুনতে চায় না। কিন্তু আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন না। কেন জানেন? কারণ, কেন আপনি প্রচারপত্র গুলো বিলি করছিলেন? কেন আপনি দাওয়াত দিচ্ছিলেন? কোথায়, কার আছে আপনার প্রত্যাশা? (আঙুল ঊর্ধ্বমুখী, মানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে।)আপনার কাজ চেষ্টা করা। ফলাফল তাঁর কাছে। আপনি এই ফলাফলের দায়িত্বে নন। আপনি যখন এটাকে আন্তরিক ভাবে মেনে নিতে পারবেন,তখন জীবন অনেক সহজ হয়ে যাবে। এবং নিজের প্রতি অনেক সন্তুষ্ট থাকবেন। আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন না।’ ‘সেখানে মাত্র অল্প কিছু মানুষ, তাদের সংখ্যা আরোও বেশি হতে পারত।’ ‘ হ্যাঁ,সেখানে আরো মানুষ থাকতে পারত কিন্তু সেটি আল্লাহ্‌র হাতে। আমি কি আমার দায়িত্বটুকু পালন করেছি? আমি কি যথেষ্ট চেষ্টা করেছি? শুধুমাত্র এটাই নিজেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন এবং আমার চেষ্টা কি সত্যিই আল্লাহ্‌র জন্য ছিল? এই প্রশ্নটিই নিজেকে করতে পারেন।

আমি এসব আলোচনায় আনছি কারণ ‘নিয়ত’ এমন কিছু নয় যা আপনি জীবনে একবারমাত্র করেন। জীবনে একবার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন যে আল্লাহ্‌র রাস্তায় কাজ করবেন, একজন ভালো মুসলিম হবেন। আপনি সেই ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন কিন্তু সেই ‘ইচ্ছা’ তে মরিচা পড়তে পারে, তাই বার বার নিয়ত ঠিক করে নিতে হবে। এবং আপনি জানেন(?) সবাই ভাবছে যে আপনার ইচ্ছা অনেক শক্তিশালী কারণ তারা শুধু আপনার বাইরেটা দেখছে। তারা কী দেখে না? ভেতরেটা। এবং যেহেতু তারা শুধু বাইরেরটা দেখে, তারা আপনাকে বলবে,”আপনি খুবই ভালো একজন মানুষ।” এবং আপনি তাদের বিশ্বাসও করা শুরু করবেন, যার ফলে আপনি সমস্যাটাকে আপনার জন্য আরো ভয়াবহ করে তুলছেন।

প্রথম প্রতিকার হচ্ছে-আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কে স্মরণ করা। দ্বিতীয় প্রতিকার হচ্ছে- উত্তম সঙ্গী-সাথী খোঁজা। এমন সহচর খোঁজা যারা আপনার চেয়ে উত্তম। তৃতীয় প্রতিকার, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিকার-নিজের মুখ বন্ধ রাখতে শেখা। নিজের মুখ বন্ধ রাখতে শেখা। যদি আপনি খুব খারাপ কিছু দেখেন তাহলে একজন মুসলিমকে উপদেশ দেওয়ার নমনীয় পন্থা খুঁজে বের করুন। এভাবে ভাবুন- “আমি তাদের যে কথা গুলো বলতে যাচ্ছি, সেগুলো কি তাদেরকে ধর্মের প্রতি আরো বিমুখ করে দিবে?” অথবা আমার সৌহার্দপূর্ণ,নমনীয় পন্থা খুঁজে বের করা উচিৎ যা তাদের ইসলামের মুল বিষয় গুলোর সাথে আপস না করে দ্বীনের আরো নিকটে নিয়ে আসবে। হয়ত তাদের সহচরদের পরিবর্তনের মাধ্যমে, দৃশ্যপটের পরিবর্তনের মাধ্যমে, হয়ত যদি তারা সামান্য একটু উপদেশ শুনতে পায়…

আপনি প্রথমেই তাদের আচরণ পরিবর্তন করতে চান না, আপনি প্রথমে কী পরিবর্তন করতে চান? তাদের অন্তর। যখন তাদের অন্তর পরিবর্তন হবে তখন ব্যবহার আপনাআপনি পরিবর্তন হবে। বেশির ভাগ সময় আমরা মানুষের কিসের পিছে ছুটি? আমরা তাদের ব্যবহার এর পেছনে ছুটি। আপনি মানুষের ব্যবহার পরিবর্তন করতে পারবেন না। আপনি শুধু তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন এবং আশা করতে পারেন আল্লাহ্‌ তাদের অন্তরকে পরিবর্তন করে দিবেন। আপনার দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়া “ফাযাক্কির”(অতঃপর স্মরণ করিয়ে দিন)। আল্লাহ্‌র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও্রয়া সাল্লাম মানুষদের আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করতে দেখেছেন, কুফরি করতে দেখেছেন এবং আল্লাহ্‌ তাদের বলেছেন,” فَذَكِّرْ إِن نَّفَعَتِ الذِّكْرَىٰ ‘ ‘স্মরণ করিয়ে দাও, স্মরণের উপকারিতা আছে ”(৮৭-১০)।মহানবী (সাঃ) এই একই ধরনের খুব খারাপ মানুষদের কাছে দশ বছর দাওয়াত দিয়েছেন এবং আল্লাহ্‌ বলে গেছেন,”স্মরণ করিয়ে দাও, এতে কাজ হবে, স্মরণ করাও… এর উপকার পাবে।

আপনি কাউকে স্মরণ করিয়ে দিলেন, এতে কোন ফল পাওয়া গেল না । আপনি হয়ত বলবেন,”আমি তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম, সে পাত্তা দেয় নি হুহ! তাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মাঝে কোন উপকার নেই। নবীজি (সাঃ) এর জীবনী দেখুন, তিনি কী পরিমাণ স্মরণ করিয়ে দিতেন? এবং আল্লাহ্‌ বলে যেতেন আপনি হয়ত উপকারিতা দেখতে পাচ্ছেন না কিন্তু সেখানে কি উপকারিতা আছে? হ্যাঁ আছে। এবং আন্তরিক ভাবে মনে করিয়ে দেয়া থেকে উপকারিতা প্রথম কে পাবে? সেই ব্যক্তি যে স্মরণ করিয়ে দেয়। কে প্রথমে উপকৃত হচ্ছে? আপনি, কারণ আপনি স্বীকার করে নিয়েছেন যে শব্দ গুলো আপনার মুখ দিয়ে বের হচ্ছে কিন্তু প্রভাব কোথা থেকে আসবে? আল্লাহ্‌র কাছ থেকে । যদি আপনার কথায় কাজ না হয় তাহলে হয়ত কার মাঝে কিছু সমস্যা আছে? আপনার। আপনার প্রথম প্রতিক্রিয়া এমন হওয়া উচিৎ নয় যে তার মাঝে কিছু সমস্যা আছে। সে আমার কথা শুনে না। এটি প্রথম প্রতিক্রিয়া হবে না। আপনি জানেন ? নবীজি (সাঃ) (এবং এটি আমার শেষ মন্তব্য) যখন মানুষকে উপদেশ দিতেন, দাওয়াত দিতেন এবং তারা উনার (সাঃ) কথা শুনত না তখন উনার মনে চিন্তা উঁকি দিত-“হয়ত আমি আমার দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করছি না, হয়ত আমি এই কথাগুলো আরো ভাল ভাবে বলতে পারতাম । আর তখন আল্লাহ্‌ তাকে বলতেন ”, না না আপনি আপনার দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করছেন। আপনার যা করার কথা আপনি তাই করছেন। আপনি শুধু সতর্ক করে যান। আপনি শুধু সতর্ক করে যান। ফলাফল নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। আপনার যা করার কথা শুধু তা করে যান।আপনার যা করার কথা তা করে যান।

এই লাইন গুলোর সাথে, শেষ যে আয়াতটি আমার মাথায় এসেছে, আমার এটি আপনাদের সাথে শেয়ার করা উচিৎ কারণ এটি এই ইস্যুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইনশাল্লাহ। দুইটি আয়াত, একটি সুরা-শুরা, সুরা নাম্বার-৪২ এবং আরেকটি সূরা আলে ইমরানের আয়াত। যেখানে নবীজি (সাঃ) কে উপদেশ দেয়া হয়েছিল, তারমানে দুইটি আয়াত। সুরা-শুরাঃ.وَمَا تَفَرَّقُوا إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُم ‘ ‘ তাদের কাছে জ্ঞান আসার পরই তারা পারস্পরিক বিভেদের কারণে মতভেদ করেছে। (৪২;১৪) তারমানে কারা এখন মতপার্থক্য করছে? জ্ঞানী মানুষেরা। কিসে জ্ঞানী? বিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান কিসে তারা জ্ঞানী? ধর্মীয় জ্ঞানে। কিতাবে জ্ঞানী, সুন্নাতে জ্ঞানী এবং জ্ঞানী হবার পর তারা কী করছে? মতবিরোধে পতিত হচ্ছে। কেন? আল্লাহ্‌ এর কারণ ও বলে দিয়েছেন,”بَغْيًا بَيْنَهُم” “একজন আরেকজনের উপর কর্তৃত্ব করার জিদ থেকে”। তাদের এরূপ জিদ থাকে এবং তারা নিজেদের সেরা মনে করতে চায় এবং কী সেই হাতিয়ার যা তাদের সেরা ভাবায়? ধর্মীয় বিষয়ে জ্ঞান। তারা ধর্মীয় জ্ঞানকে এমন একটা মাধ্যম বানিয়ে ফেলে যা দ্বারা তারা নিজেদের গর্ববোধকে আরো বাড়িয়ে তোলে। সুবহানালাহ! কী ভয়ানক অপরাধ!

এবং এই আয়াতের শেষে আল্লাহ্‌ বলছেন —
وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى لَّقُضِيَ بَيْنَهُمْ
“যদি আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবকাশের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকত, তবে তাদের ফয়সালা হয়ে যেত।”

তাদেরকে তখনই শাস্তি প্রদান করা হত। এটি খুবই গুরতর অপরাধ। এটি খুবই গুরতর অপরাধ যে তারা তাদের দ্বীনকে মতবিরোধ এর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। অহংকার ছাড়া অন্য কোন কিছুই তাদের জ্ঞানকে একে অপরের সাথে মতবিরোধ এর হাতিয়ারে পরিনত করেনি। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের এই মারাত্মক অপরাধ থেকে হিফাজত করুক বিশেষ করে আমাদের তরুন প্রজন্মকে। এই দেশে তরুণদের যে সংস্কৃতি, আপনারা “Ball” খেলেন; কেউ একজন আপনার শটকে ব্লক করে দেয়, এরপর কী হয়? পরের খেলায় আপনি প্রতিশোধ গ্রহন করেন এবং আপনার অবস্থান পুনরায় উদ্ধার করেন,কারণ প্রতিপক্ষ আপনাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করবে। এই হচ্ছে সংস্কৃতি, আমার বিরুদ্ধে তোমার এত সাহস কীভাবে হয়? এটি শুধু মাত্র কোন খেলা নয়, এটি অহংকারের একটি পরীক্ষা। গাড়ি চালানো অবস্হায় কেউ একজন আপনাকে পেছনে ফেলে যায়, কী আপনাকে ক্রুদ্ধ করে তোলে? “তুমি! তুমি আমাকে তোমার Honda civic দিয়ে পাস করে যাচ্ছ? আমি আছি M5 এ…… না না আমি তোমাকে দেখে নিব। আমি তোমাকে আমার ক্ষমতা দেখায় ছাড়ব। আমি গ্যাস প্যাডেল ফ্লোর পর্যন্ত চাপ দিয়ে তোমাকে দেখায় দিব কীভাবে কী করতে হয়।” এসব কীসের বহিঃপ্রকাশ? অহংকার।

এই সমাজে প্রতিনিয়ত আমাদের জানানো হচ্ছে তোমার অহংকার বৃদ্ধি কর। সব কিছু তোমাকে নিয়ে। গীতিকার, সুরকাররা যে গান রচনা করে ..যেমন, আমার চেইন, আমার হ্যাট, আমার জুতা, আমার মোজা যাই হোক… সব কিছুতে আমি আমি আমি। তুমি আমাকে ছুঁতে পারবে না, আমার দিকে তাকাতে পারবে না, তুমি আমার চোখের দিকে তাকাবে না। আমি তোমার এই করব, এরপর আমি তোমার সেই করব। এসবের মানে কী? এসব কী তাৎপর্য বহন করে? অহংকার। নিজের উপাসনা করা। এটা ঠিক তাই। আসলেই এই ইগো আত্মপূজার দিকেই ধাবিত করে। এবং এই দ্বীন শুধু মাত্র তাদের জন্য একটি দ্বীন যারা আল্লাহ্‌র সামনে নিজেদেরকে নত করে দেয়। তারমানে এই আয়াতটি খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ। সুরা আল-ইমরান এর ১৫৯ নং আয়াত।

বিশেষ করে আপনাদের মাঝে যারা নেতৃ স্থানীয় অবস্থানে আছেন, যাদেরকে অন্যরা অনুস্মরণ করে এবং যারা জানেন অথবা ভাবেন যে তিনি অন্যদের চেয়ে বেশি জানেন। আল্লাহ্‌ তাঁর রসূল (সাঃ) কে বলেছেনঃ

فَبِمَا رَحْمَةٍ مِّنَ اللَّهِ لِنتَ لَهُمْ ۖ وَلَوْ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ لَانفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ

“আল্লাহ্‌র বিশেষ দয়া ও অনুগ্রহের কারনে আপনি (সাঃ) সাহাবীদের প্রতি কোমল।” وَلَوْ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ الْقَلْبِ যদি আপনি (সাঃ) তাদের প্রতি শক্ত হতেন, কঠোর হৃদয়ের হতেন, জিদ করতেন, এমনকি যদি তাদের সাথে কথা বলার সময় কিছু পরিমাণ কঠোরতা প্রদর্শন করতেন… لَانفَضُّوا مِنْ حَوْلِكَ ۖ তারা আপনার থেকে দূরে সরে যেত।” তারা। তারা কারা? সাহাবারা। সাহাবারা আপনার থেকে দূরে পালিয়ে যেত এবং আপনি কে? রসূল(সাঃ)। চিন্তা করতে পারেন সাহাবারা রসূল(সাঃ) থেকে দূরে পালিয়ে যাচ্ছে।

আল্লাহ্‌ বলেননি, আপনি (সাঃ) যদি সত্যের পথে না ডাকেন তাহলে তারা পালিয়ে যাবে, আপনি যদি তাদের কোরআন শিক্ষা দেয়া বন্ধ করে দেন তাহলে তারা পালিয়ে যাবে, যদি আপনি ওহী প্রকাশ না করেন তাহলে তারা পালিয়ে যাবে…… রাসূল (সাঃ) কী করলে তারা পালিয়ে যাবে? তিনি এখনও কোরআন শিক্ষা দিচ্ছেন, এখনও সত্যের সন্ধান দিচ্ছেন, সবকিছুই আগের মত। শুধু মাত্র কী পরিবর্তনের কথা এই আয়াতে বলা হয়েছে যা তাদেরকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাবে? তিনি(সাঃ) তাদের (সাহাবী) প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করলে, তাদের প্রতি কঠিন হলে.. এতোটুকুই যথেষ্ট এবং তারা দূরে সরে যাবে সুবহানাল্লাহ। কী দারণ শিক্ষা দিচ্ছেন আল্লাহ্‌ তাঁর রাসূল (সাঃ) কে।

সর্বোৎকৃষ্ট নেতার প্রতি যদি এই শিক্ষা হয় তাহলে কি আপনার মনে হয় না এটি আমাদের বেশির ভাগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য? এটি অবশ্যই প্রযোজ্য। যদি আপনি কোন নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানে থাকেন এবং যদি আমি হাত উঠাতে বলি, হাত উঠানোর দরকার নেই, কথার কথা- আমি যদি আমি হাত দেখাতে বলতাম, আপনারা কয়জন নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানে আছেন? জানেন? আপনাদের প্রত্যেকের হাত উঠানো উচিৎ। আপনারা প্রত্যেকে নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানে আছেন। আপনাদের সবার সে অবস্থান আছে যেখান থেকে আপনারা অন্য কাউকে উপদেশ দিতে পারেন এবং এটি খুবই ভালো কিন্তু আপনি কিভাবে উপদেশ দিবেন? বিশেষ করে যদি তারা মুসলিম হয়? তাদেরকে ধর্ম থেকে আরও দূরে সরিয়ে নিয়ে যাবার পরিবর্তে আরো ধৈর্যশীল হতে শিখুন। আমি বলছি না- কেউ ভুল করলে তা মেনে নিতে হবে। আমি বলতে চাইছি যে, যদি হারাম কিছু করতে দেখেন তাহলে বলবেন- দেখুন আমি জানি এটি হারাম। আমি আপনার জন্য সত্যিই উদ্বিগ্ন। এটি বিভিন্ন ভাবে বলা যায়। এভাবে বুঝিয়ে বলা যায়। (চলবে ইনশাল্লাহ…)