কোন কিছুকে বড় করে দেখলেই সেটা বড় ব্যাপার হয়ে যায়। কোন কিছুকে ছোট করে দেখ তাহলেই সেটা সামান্য মনে হবে। জানেন, এই আয়াতে আখিরাতকে বড় এবং দুনিয়াকে ছোট করে দেখানো হয়েছে।পুরো আয়াতটা এটা নিয়েই।
দুনিয়াতে আমরা জীবন যাপন করবো। আমাদের ক্যারিয়ার হবে।আমাদের শিক্ষাগত অর্জন থাকবে।আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই সব কিছুই জীবনে থাকবে।কিন্তু একটা ব্যাপার কি জানো এই সব কিছু ক্ষণস্থায়ী। সব কিছুই। একদিন আসবে যেদিন এক জমায়েত হবে।এবং সেদিন তারা নামায পড়বে। আর সেদিন তারা একটা ঘোষণা দিবে।যে একটা জানাযা হবে। এবং এই ঘোষণাটা একদিন হবে আমার জন্য এবং একদিন হবে আপনার জন্য।
এটা হতে যাচ্ছে এবং একদিন মানুষ আমাদের জন্য জানাজার নামায পড়বে। এবং ততক্ষনে আমরা চিরকালের জন্য চলে গেছি। এবং এটা শীঘ্রই ঘটবে, দেরীতে নয়।
আমি বলতে চাচ্ছি আমাদের জীবনের অনেকখানি তো ইতোমধ্যেই কেটে গেছে। সুতরাং এমন নয় যে সেই দিনটা থেকে আমরা দূরে যাচ্ছি, বরং আমরা সেই দিনের আরো কাছে পৌছাচ্ছি।
তাই যত তাড়াতাড়ি আমরা এটা আত্মস্থ করি যে, আল্লাহর কাছে যা আছে তা তুলনামূলক ভাবে ভালো। কারন যে কোন ভাবেই হোকনা কেন আমরা সেদিকেই যাচ্ছি। তাহলে আমরা নিজেরা নিজেদেরই উপকার করব । যদি আমরা শুধু এটা শিখতে পারি যে কিভাবে সময়ের সদ্ব্যবহার করতে হয়। যেমনটা আমি বললাম যে আমরা ১০ বছরের পরিকল্পনা করি, ১৫ বছরের পরিকল্পনা করি।কিন্তু আমরা আখিরাতের কথা চিন্তাই করিনা। তাহলে আখিরাতের কথা কিভাবে ভাবা উচিত? কিভাবে আখিরাতের জন্য বাস্তবতা ভিত্তিক পরিকল্পনা করা যায়? আখিরাতের জন্য আমরা ১০ বছরব্যাপী, ১৫ বছরব্যাপী পরিকল্পনা করিনা।
আমরা এর জন্য দৈনন্দিন পরিকল্পনা করি। এটা দীর্ঘ সময়ব্যাপী লক্ষ্য নির্ধারণ করা নয়। এটা আজকের দিনটা আপনি কিভাবে ব্যয় করলেন তার সাথে সংশ্লিষ্ট। আপনি তার পরে কি করতে যাচ্ছেন এটা তার সাথে সংশ্লিষ্ট।
আপনি আগামীকালটা কিভাবে কাটাবেন?
আপনি কখন ঘুম থেকে উঠবেন?
আপনি আপনার অবসর সময়ে কি করবেন?
আপনি কবে আপনার ফোন থেকে ঐ অকাজের গেমগুলো মুছে ফেলবেন?
কবে আপনি এত বেশিক্ষন টিভি দেখা বন্ধ করবেন?
কবে বন্ধ করবেন এসব?
আপনি কবে সময় নষ্ট করা বন্ধ করবেন, শুধু চ্যাট করে বা ট্রল করে।
কবে বন্ধ করবেন?
যদি আজকে না হয়, তবে কবে আপনি আপনার জন্য একটি উচ্চতর মান বজায় রাখবেন। আপনি যদি দিনের কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন না আনেন। আপনি কখন ঘুমাতে যাবেন, কখন ঘুম থেকে উঠবেন। আপনি যা বলেন এবং আপনি যা করেন। বিশেষত আপনি যেটাকে অবসর সময় বলে মনে করেন সেটাকে কিভাবে ব্যয় করেন। কারন এটা বিনামূল্য নয়। আপনি এখন এটার জন্য কোন মূল্য দিচ্ছেননা, কিন্তু আপনাকে এবং আমাকে আল্লাহর কাছে এর হিসাব দিতে হবে। আমাদেরকে এর জবাবদিহীতা করতে হবে। এই সময়েরও দাম আছে।
আমাদের হয়তো খেয়াল থাকেনা যে আমাদেরকে এর জন্য মূল্য দিতে হবে, কিন্তু এর হিসাব রাখা হচ্ছে। আপনারা তো জানেন মানুষ যখন ঘড়ির কাঁটা ধরে না চলে তখন তারা কেমন হালকা মেজাজে থাকে। যখন তারা অফিস থেকে বের হয়। কিন্তু ফেরেশতারা ঘড়ি ধরে আমাদের সব সময়ের হিসাব রাখছে। তারা কোন বিরতি নেয়না। এবং যখন তারা বিরতি নেয় তখন তারা অন্যদের তাঁদের দায়িত্ব দিয়ে যায়। জানেন এটা এ কারনেই আমাদের প্রতিদিনের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। তাই কেননা আমরা নিজেদের কাছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি করি । এটা আর কাউকে জানানোর জন্য নয়। এটা শুধু আপনিই জানবেন।
এব্যাপারে আপনি নিজেই আপনার সবচেয়ে কঠিন সমালোচক । আপনাকে আর আমাকেই ঠিক করতে হবে আমরা কিভাবে ভিন্ন রকম জীবনযাপন করব। কারন আল্লাহ্র কসম যে মুহূর্তে আমরা বলতে শুরু করবো …যে আমি তো বেশ ভালোই করছি। আমার জীবনে পরিবর্তন করার কিছু নাই। এটাতো বিভ্রম। অন্য কোন মানুষ হয়তোবা আপনাকে নিজের ব্যাপারে ভুল ধারণা দিয়েছে। তারা আপনাকে দীর্ঘদিন অন্ধকারে রেখেছে। তারা চোখে এতো ধূলা দিয়েছে যে এখন আপনি নিজে কি সেটাও বুঝতে পারেননা।