বিচার দিবসে আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

— নোমান আলী খানআমি আপনাদের আগেই সতর্ক করে দিচ্ছি। আজকের বক্তব্যটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করার চেষ্টা করবো কিন্তু ৪৫ মিনিটের কমে শেষ করতে পারব বলে মনে হয় না। আগেই বলে দিচ্ছি, যেন আপনারা বিরক্ত না হয়ে পড়েন। আবারো বলছি, আমি আগেও আপনাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছিলাম কীভাবে কোন শব্দ না করে চুপি চুপি মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতে হয়। পাশের দরজাগুলো দিয়ে কেউ চলে যেতে চাইলে যেতে পারেন, আমি মাইন্ড করব না।আজ আমি ভয়ানক একটি ব্যাপার নিয়ে বক্তব্য শুরু করতে চাই। আমাদের ধর্ম হল সত্য ধর্ম। আর সত্য সুখবর যেমন প্রদান করে তেমনি সাবধানবাণীও প্রদান করে। আমাদের সকল নবী রাসূলদের বিশেষত রাসূলুল্লাহ (স) কে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা বর্ণনা করেছেন “মুবাসশিরান ওয়া নাজিরান” হিসেবে। সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী। যদি কাউকে শুধু সুসংবাদ প্রদান করেন তাহলে সে সাবধানবাণীর কথা ভুলে যাবে। আর যদি শুধু সতর্ক করতে থাকেন তাহলে সে এতোই হতাশ হয়ে পড়ে যে মনে করে ভালো খবর বলতে কিছু নেই। বুঝতে পারছেন?আমি চেষ্টা করেছি এই ভারসাম্য রক্ষা করার। যেহেতু, এই মাসটি প্রত্যাশার মাস তাই আমি সুসংবাদের উপর একটু বেশি জোর দিয়েছি। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লার প্রতি আমাদের আশা এবং ভালবাসা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, একই সময়ে এর মাঝে একটা ভারসাম্য থাকতে হবে। যদিও আজকের বক্তব্যের শেষ অংশে আশার খবর রয়েছে, কিন্তু শুরু করছি এমন একটা জায়গা থেকে যা অতটা আশাব্যঞ্জক নয়।দেখুন, আমাদের পূর্বের জাতি বনী ইসরাইলকে আল্লাহ বই দান করেছেন। আমাদের যেমন কুরআন রয়েছে তাদেরকেও অন্য কিতাব দেওয়া হয়েছিল। কুরআন যাকে বর্ণনা করেছে অন্য কুরআন হিসেবে, অর্থাৎ আগের কিতাব। তারা তাদের কিতাবকে গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করেনি। তাদের মাঝে বেশ কিছু বিভ্রান্তিমূলক ধারণা গড়ে উঠে – ‘আমরা যদিও এতো ভালো মুসলমান নই, সমস্যা নেই, আল্লাহ যদি আমাদের দোজখে ফেলেনও- সবচেয়ে...

কার অন্তরে মোহর মারা হয়েছে?

নোমান আলী খান আমি তোমাদের ছোট একটি উপমা দিতে চাই, যা তোমাদের এই বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করবে যে, কুরআনে কেন কোনো কোনো মানুষের অন্তরে সিল মেরে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তোমাদের অনেকেই ব্যায়াম করার সাথে পরিচিত। মনে করো, কেউ একজন এক্সিডেন্টের কবলে পড়লো এবং হাসপাতালে ভর্তি হলো। তাকে ছয় মাস যাবৎ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকতে হলো। সে ছয় মাস থেকে এক বছর যাবৎ পা নাড়াতে পারেনি। শেষে, যখন সে উঠতে যাবে সে কি তার পা ব্যবহার করতে পারবে? না। সম্ভবত, সে উল্টে পড়ে যাবে। আমাদের মাংসপেশিগুলো যদি ব্যবহার করা না হয়, যদি এগুলোর অনুশীলন করা না হয়, তাহলে এগুলো কাজ করার শক্তি হারিয়ে ফেলতে থাকে। যেমন, তুমি যদি পাঁচ বছর যাবৎ তোমার চোখ বন্ধ করে রাখো, সম্ভবত চোখের জ্যোতি হারিয়ে ফেলবে। বুঝতে পারছো? হেদায়াত গ্রহণ করার সামর্থ, নিরপেক্ষভাবে কোনো কিছু চিন্তা-ভাবনা করার সামর্থ হলো আল্লাহর দেওয়া মাসল, আধ্যাত্মিক পেশী, বুদ্ধিবৃত্তিক পেশী। নবী করিম (স) এর সময়কালে মানুষকে এই পেশীগুলোর অনুশীলন করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা অস্বীকার করে। যখন সত্য তাদের নিকট এসেছিলো তারা সত্যকে গ্রহণ করার এবং গুরুত্বের সাথে একে বিবেচনা করার সামর্থ অনুশীলন করতে অস্বীকার করে। এখন, তুমি যদি এভাবে প্রতিনিয়ত তোমার এই সামর্থ অনুশীলন করতে অস্বীকার করো…. তুমি চিন্তা করতে অস্বীকার কর, তুমি তোমার অন্তর ব্যবহার করতে অস্বীকার কর, তুমি আন্তরিক হতে অস্বীকার কর, তাহলে কী হবে ভাবতে পারো? পরিশেষে, তোমার অন্তর শুরুতে যে কাজ করার সামর্থ রাখতো সেই সামর্থ হারিয়ে ফেলবে। তুমি সেই পেশী হারিয়ে ফেলেছো। সেই সামর্থ হারিয়ে ফেলেছো। এই উপমার মাধ্যমে আমরা অন্তর মোহরাংকিত হওয়ার মানে উপলব্ধির একটি চেষ্টা করলাম মাত্র। ব্যাপারটা এমন নয় যে, তাদের একটি বিলিফ সিস্টেম রয়েছে এবং সেটাতে সিল মেরে দেওয়া হয়েছে। একজন ব্যক্তি নাস্তিক হতে পারে বিভিন্ন কারণে,...

কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হওয়ার পরিণাম।

– নোমান আলী খান নামাজ আদায় করাকে আমরা বলি ‘ইকামাতুস সালাহ।’ ‘ইকামা’ শব্দের অর্থ হলো দাঁড়ানো। আর যখন আপনি দাঁড়ান আপনি এদিক ওদিক হেলে পড়েন না। বর্তমানে, পৃথিবীর সামাজিক মূল্যবোধে রয়েছে ‘ইওয়াজ বা বক্রতা।’ কিন্তু, এই কিতাবটি অনড় অটল, আর এটা আপনাকেও অনড় করে তোলে। এটা সোজা দাঁড়িয়ে থাকে, এর মূল্যবোধে সামান্যতম নড়াচড়াও পরিলক্ষিত হয় না। এখন, আল্লাহ আমাদেরকে এই ইস্পাত কঠিন মূল্যবোধগুলো দেয়ার পর আমরা কী করলাম? আল্লাহ বলেন – فَخَلَفَ مِن بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ – ১৯:৫৯ ”অতঃপর তাদের পরে এল অপদার্থ পরবর্তীরা। তারা নামায নষ্ট করল ….” তারা নামাজ নষ্ট করলো। আর যখন আপনি নামাজ নষ্ট করেন – নামাজের সাথে যে নৈতিক মূল্যবোধগুলো আপনি পেয়েছিলেন সবগুলো তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে। যখন আপনি নামাজ ছেড়ে দেন তখন এটাই ঘটে। এরপর কী হয়? وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ – ”এবং তারা কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হল। আজ আমরা কোন পৃথিবীতে বসবাস করছি? ভোগবাদী যে বিশ্বে আজ আমরা বসবাস করছি তার নিকট চূড়ান্ত নৈতিকতা মানে হলো – ”তোমার কামনা বাসনার অনুবর্তী হও, তোমার মন যা চায় তাই করো।” জাস্ট ডু ইট, শব্দগুলো পরিচিত মনে হয়? আমার নিজের কাছে যদি এটা সঠিক মনে হয় তার মানে এটা সঠিক। …আমরা অফিসিয়ালি এমন এক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছি যারা وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ কুপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হল। প্রথম পতন কোনটি ছিল? নামাজ। এরপরের আরও জঘন্য পতন হল, فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا (Then they will fall into deviation) غَي এর আক্ষরিক অর্থ হল, deviation বিচ্যুতি, নৈতিক অধঃপতন। অর্থাৎ, তাদের মূল্যবোধের ক্রমান্বয়ে অধঃপতন ঘটবে। অনৈতিকতার এক ধাপ থেকে আরেক ধাপে ক্রমান্বয়ে নামতে থাকবে। আর এরপর তাদের চূড়ান্ত পতন হবে জাহান্নামে। আর তাই এই আয়াতের তাফসিরে বলা হয় – امطرت السماء نباتا – “আকাশ শাকসবজি বর্ষণ করেছে।” আকাশ শাকসবজি বর্ষণ করে না, আকাশ থেকে...

রাগ সংবরণ করা যা আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে

●|●নোমান আলী খান ●|● কিছু লোক খুবই দুর্দশাগ্রস্থ জীবনযাপন করে কারণ তারা তাদের রাগ দূর করতে পারে না। তাদের ভেতর থেকে কোন কিছু তাদেরকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে অথচ তারা তার বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারছে না। ধীরে ধীরে তারা এটা মেনে নিচ্ছে যে “আমি আমার রাগ দূর করতে পারবো না এবং আমি নিশ্চিত আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন না কারণ আমি অনেক রাগী। আমি কাউকে মাফ করতে পারি না।” সাহাবীরা হুদাইবিয়ার সন্ধি নিয়ে অনেক রাগান্বিত ছিলেন কিন্তু আল্লাহ রাগ দূর করা নিয়ে কি বলেছেন? “ হুওয়াল্লাযী য় আনযালাস সাকীনাতা ফী কুলূবিল্ মুমিনীনা” (৪৮ঃ৪)- তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেছিলেন । তিনি মুমিনদের অন্তরে শান্তি, ধৈর্য, প্রশান্তি নাযিল করেছিলেন আকাশ থেকে। ধৈর্যশীলতা নিজ থেকে আসে না আর আমরা নিজেদের ধৈর্যশীল বানাতে পারি না। মূসা আ. এর মা চিন্তায়, ভয়ে মৃতপ্রায় ছিলেন যখন তিনি তার বাচ্চাকে পানিতে ভাসিয়ে দিচ্ছিলেন। আল্লাহ বলেন, “লাওলা আর রাবাতনা আলা ক্বালবিহা…”(২৮ঃ১০)- আমরা কি তাঁর হৃদয়কে দৃঢ় করিনি ও তাকে শক্ত রাখিনি? আল্লাহ তার অন্তরকে দৃঢ় করে দেন যার সাধ্য তাঁর ছিলো না। তিনি এটা নিয়ে ভয়ে ছিলেন, মানসিক অশান্তিতে ছিলেন। ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপ আপনাকে সাহায্য করে শান্ত হতে। কিছু লোক পাপ করে, নেশা করে, অশ্লীলতার প্রতি প্রলুব্ধ থাকে, অত্যাধিক রাগী হয় যে তারা তাদের রাগ সংবরণ করতে পারে না। কিছু লোক অতি লোভী, যারা সারাদিন টাকা নিয়ে ভাবে তারাও নিজেদের সাহায্য করতে পারে না। এই সকল সমস্যার সমাধান আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে। এসব কারণেই আল্লাহ আকাশের দরজা দেন। আকাশের দরজা খুলে যায় এবং আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এটা আপনাকে পবিত্র করে দেয় যেমনভাবে পানি পৃথিবীকে পবিত্র করে। আল্লাহ বলেন, “ইয়ুমদিদ কুম বি আমওয়ালিন ওয়াবানিন” (৭১ঃ১২)- তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, “ওয়াজা...

প্রজ্ঞা ও দক্ষতা

— নোমান আলী খান ভাইদের ষড়যন্ত্রের কারণে দাস হিসেবে ইউসুফ (আ) বিক্রিত হন। ফলে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কোনো সুযোগ পাননি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আপনাকে সার্টিফিকেট দেয়, অনেকাংশেই বাস্তব দুনিয়ার পরিবর্তিত কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা দেয় না। ফলে, এই তত্ত্বীয় সার্টিফিকেটও আপনার কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগে না অনেক ক্ষেত্রে। কারণ, এটা আপনার কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনমাফিক বাস্তব শিক্ষা দেয়নি। ইউসুফ (আ) ছিলেন মন্ত্রীর বাড়িতে। এটা প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষাকেন্দ্র না, অভিজ্ঞতার কেন্দ্র। তাই, তিনি সার্টিফিকেটকে কেন্দ্র আগান নাই জীবনে। তিনি বরং বাস্তবিক কর্মক্ষেত্র দেখে শিখেছেন মন্ত্রীর কাছ থেকে। মন্ত্রীর আস্থাভাজন ও প্রিয়ভাজন হওয়ার কারণে তিনি মন্ত্রীর কাজ দেখাশোনা করতেন। ফলে, মন্ত্রী যে বড় বড় লোকেদের সাথে কথাবার্তা বলতেন, কাজ নিয়ে দেনদরবার করতেন, আলাপ করতেন, সমস্যা নিয়ে কথা বলে সমাধান দিতেন – এসবই তিনি লক্ষ্য করতেন ও শিখতেন। এরপর তিনি আরেক বড় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে জেলে চলে যান। এখানে তিনি আল্লাহর দ্বীন প্রচার করতেন থাকেন। এমন অবস্থায় বাদশাহ খারাপ স্বপ্ন দেখেন। কেউ স্বপ্নের ব্যাখ্যা কর‍তে পারে না। ইউসুফ (আ) কে আল্লাহ এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা ও প্রজ্ঞা দিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ) স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে ছাড়া পান। ছাড়া পেয়ে তিনি অর্থমন্ত্রীর পদ তাকে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি সেটা পান। রাজার স্বপ্নের ব্যাখা ছিলো আসন্ন ৭ বছরব্যাপী দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে। ৭ বছর ভালো ফলন হবে, এরপরের ৭ বছর দুর্ভিক্ষ হবে। টানা ৭ বছর দুর্ভিক্ষ মানে মিশর একদম শেষ হয়ে যাবে। না খেয়ে তো ৭ দিনও থাকা যায় না, আবার ৭ বছর! মানে বিরাট বিপদ, একটা জাতি পৃথিবীতে থেকে উজাড় হয়ে যাবে এই অবস্থার কারণে। ইউসুফ (আ) অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেন কেন? কারণ তার এই বিষয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা রয়েছে। প্রজ্ঞা(হিকমাহ) হলো সেই জ্ঞান যা বাস্তব অভিজ্ঞতা ও কল্যাণ দেয়; এটা সার্টিফিকেট বা তত্ত্বীয় কোনো জ্ঞান নয়। তো, মিশরে ঐ সময়ে যত ফসল হতো...

ভালো করে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন না, পড়তে কষ্ট হয়? তাহলে এই লেখাটি পড়ুন।

— উস্তাদ নোমান আলী খান কুরআন তেলাওয়াতে পারদর্শী নয় এইরকম একজন যুবক ভাই একদিন আমাকে একটা প্রশ্ন করেছিলেন। প্রশ্নটা ছিল এইরকম – ‘আমি সবসময় ভালো করে কুরআন পড়ার চেষ্টা করি কিন্তু এত চেষ্টা করার পরও আমি শুদ্ধ করে পড়তে পারি না’। যুবকের কথা শুনে মনে হচ্ছিল সে খুবই আবেগী প্রকৃতির মানুষ। একদিন সে রেডিও তে কোন এক প্রোগ্রামে একটা ছোট বাচ্চার কুরআন তেলাওয়াত শুনছিল। সেই বাচ্চাটা এত সুন্দর করে পড়ছিল যে ওই প্রোগ্রাম এর শিক্ষক বলছিলেন, ‘সুবহানআল্লাহ! তোমার নফ্স, তোমার মন খুব পবিত্র। তুমি খুব পবিত্র। আর এই কারণে আল্লাহ তোমাকে এত সহজে, এত সুন্দর করে তেলাওয়াত করার ক্ষমতা দিয়েছেন’। তো এই কথা শুনে ওই যুবক চিন্তায় পড়ে গেল এবং ভাবতে লাগলো – আমি মনে হয় ভালো মানুষ না, এজন্যে আমি ভালো করে কুরআন পড়তে পারি না, আমার আত্মা পবিত্র না। এসব ভেবে সে মানসিকভাবে কষ্ট পেতে লাগলো। যদিও আমি নিশ্চিত ওই রেডিও প্রোগ্রামের শিক্ষক এইরকম কিছু বোঝাতে চান নি, তিনি নিছক সেই বাচ্চা ছেলেকে উংসাহ দেয়ার জন্য এইরকম কিছু বলেছিলেন। এই প্রেক্ষিতে আসুন আমরা একটা হাদিস দেখি, রাসুল (স) বলেছেন ‘কুরআন তেলাওয়াতে পারদর্শী ব্যক্তিরা উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। কিন্তু যারা উচ্চারণগত বা অন্য কোন সমস্যা থাকা সত্বেও কষ্ট করে পড়ার চেষ্টা করে, তারা এর দ্বিগুন পুরস্কার পাবে। (সহি মুসলিম)’ এখন প্রশ্ন হচ্ছে ঐসব লোক কাদের তুলনায় এই দ্বিগুন পুরস্কার পাবে? সাধারণ তেলাওয়াতকারীদের তুলনায়? নাকি তেলাওয়াতে পারদর্শিদের তুলনায়? আমার মতে তেলাওয়াতে পারদর্শীদের তুলনায় এই দ্বিগুন পুরস্কার দেয়া হবে। কারণ একজন মানুষ কতটুকু অর্জন করলো আল্লাহ সেটাকে গুরুত্ব দেন না, আল্লাহ গুরত্ব দেন সে কী পরিমান চেষ্টা করলো সেটাকে। আমরা মানুষরাই অর্জনকে বেশি গুরুত্ব দেই, সবসময় দেখতে চাই ফলাফল কি, লাভ কতটুকু হলো? আমরা কতটুকু জানি, কতটুকু মুখস্ত...