ভিডিও + প্রতিলিপি

কুর’আন কী? – পর্বঃ ১
অন্যের ধর্মের ভাই বোনেরা যদি জিজ্ঞাসা করেন কুর’আন কী? আমরা কী বলব? — ঠিক এই প্রশ্নের উত্তর নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন উস্তাদ নুমান আলী খান অন্য ধর্মের মানুষদের সামনে। আপনারা প্রস্তুত? তাহলে আমরা শুরু করছি। এই পর্বে নিজের ব্যাপারে আমি আপনাদের কিছু বলব। এটা কুরআনের সাথে প্রাথমিক পরিচয় পর্ব হবার কথা ছিল। আর আমি যেভাবে কুরআনকে মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই, সেটা খুবই ব্যক্তিগতভাবে। গতানুগতিক কোনও নিয়মে নয়, যেমন আগে থেকে বানানো কোনও পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বক্তব্য উপস্থাপন সম্পর্কিত কিছু নয়। আসলে আমি আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে কুরআনের সাথে সবাইকে পরিচয় করাতে চাচ্ছি। আমি মুসলিম ঘরেই বড় হয়েছি। কিন্তু আমি এমন কোন পরিবেশে বড় হইনি যেন ছোটবেলা থেকেই কুরআন পড়েছি, অর্থ জেনেছি কিংবা পুরোটা একবার হলেও অর্থ সহকারে পড়েছি। এগুলোর কোনটাই করিনি কখনও। এইজন্য আমি ঠিকভাবে জানতামও না এটা আসলে কি। আর এমনকি নিউইয়র্ক সিটিতে কলেজে যাই যখন তার আগ পর্যন্ত ওইভাবে ধর্মের সাথে আমার যোগাযোগও ছিলনা। নিউইয়র্ক সিটিতেই আমি স্কুলে গিয়েছি। যখন আমি আমার ধর্মকে নতুন করে আবিষ্কার করা শুরু করলাম। তখন আমি আসলে একাই থাকছিলাম নিজের মত করে, আমার বাবা মা ততদিনে এখান থেকে চলে গেছেন। নিজের মত করে ছিলাম, নিজের মত করেই ধর্মকে শিখছিলাম। পরিবারের কোনও হস্থক্ষেপ, কোনও প্রতিষ্ঠানের প্রভাব ছাড়া। খানিকটা নিজের আবিষ্কারের মত। কুরআন পড়ার খুব কম সময়ের মাঝেই এটা বুঝে যাই যে এইরকম সেক্সপিয়রিয় অনুবাদ দিয়ে আমি খুব বেশি কিছু বুঝব না আর সঠিক ভাবটা বুঝব না। লিখনটি আমার জন্য বোঝা খুব কঠিন ছিল। এইরকম বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের আমি সহ আরও অনেকেই সম্মুখীন হয়েছে, কুরআনকে বুঝতে গিয়ে। এদের মাঝে প্রথমটি ছিল, এটা অন্য সব বইয়ের মত পড়া যায়না। এখানে ১১৪ টি ভাগ আছে, আপনারা বলেন চ্যাপ্টার, আমরা বলি সূরা। এগুলো...
কিভাবে বুঝব শাস্তি না পরীক্ষা নিচ্ছেন আল্লাহ তাআলা?
কুরআন উইকলি তে দেয়া উস্তাদ নুমান আলী খানের “Quranic Gems” সিরিজ থেকে নেয়া। যখন কোন একটা বিপদ তোমাদের উপর বর্তায় (উহুদের যুদ্ধকালীন) যদিও তোমরা এর আগে (বদরের যুদ্ধে শত্রুদের মাঝে) এর চেয়ে ও দ্বিগুণের মাঝে পরিবেষ্টিত ছিলে তোমরা বল, “এগুলো কোথা থেকে এলো?” বল, “এগুলো তোমাদের থেকেই এসেছে”। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সব কিছু করতে সক্ষম। (৩-১৬৫) আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলী আমি সুরা আল ইমরানের ১৬৫ নাম্বার আয়াত আপনাদের সাথে খুব সুনির্দিষ্ট একটু উদ্দেশ্যে আলোচনা করতে চাই। অনেক মানুষই প্রশ্ন করেন কেন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাদেরকে কঠিন সময়ে ফেলেছেন এবং এটা একটা কঠিন প্রশ্ন। ওনারা জানতে চান কি এমন ওনারা করেছেন যে এইরকম কষ্টের মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে। এবং কখনো কখনো মানুষ এটাও বলে, যখন খারাপ কিছু হয়, এটা হয়েছে কারণ, “আমি কিছু খারাপ কাজ করেছি, কারণ এটা আমারই ভুল নয়তো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এরকম ইচ্ছা করেছেন আমার পরীক্ষা নিতে। আমি কিভাবে বুঝবো কোনটা আসল কারণ?” আবার কিছু মানুষ আছে যারা যখনই তাদের উপর কোন বিপদ আসে, তারা নিজেদেরকে এর জন্য দোষারোপ করে। তারা শুধু বলে, “আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ন্যায়বান. নিশ্চয়ই আমিই কিছু অন্যায় করেছি, আমি নিশ্চয়ই আমার পিতামাতার সাথে খারাপ আচরণ করেছি অথবা অন্য কিছু, এবং এই কারণে আমার গাড়ী এক্সিডেন্ট করেছে অথবা অন্যকিছু”। তারা অদৃশ্য থেকে দৃশ্যমান জগতে মনোযোগী হয়। এখন কিছু আয়াত আছে যা আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করবে, একদিকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন, যেমন এই আয়াতে, আওয়া লাম্মা আসাবাকতুম মুসীবাতুনক্বাদ আসাবতুম মিছলায়হা যখন উহুদের যুদ্ধে মুসলমানেরা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছিলো, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলছেন, “যখন তোমরা কোন বিপর্যয়ে আক্রান্ত হও, যেরকমটি তোমাদের শত্রুদের থেকে আগে ও এসেছে এবং তোমরা পরাহত করেছ” (ক্বাদ আসাবতুম মিছলায়হা) “আগের বছরই এরচেয়ে দ্বিগুণ ক্ষয়-ক্ষতি তোমরা তোমাদের...
আল্লাহর রাস্তায় অগ্রসর হও
Quran Weekly তে দেয়া উস্তাদ নুমান আলী খানের Quranic Gems সিরিজ থেকে। “হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, যখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর, তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প।” আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলি আল্লাহ্ সুরা তওবা-র ৩৮ নং আয়াতে বলেছেন “ইয়া আইয়ুহাল্লাজ্বীনা আমানূ” – যারা নিজেদের বিশ্বাসী বলে দাবী কর, “মা লাকুম” -তোমাদের কী সমস্যা? “ই’জা ক্বীলা লাকুমুনফিরূ ফী সাবীলিল্লাহ” তোমাদেরকে বলা হয়েছে আল্লাহ্র পথে এগিয়ে যাও “সাকালতুম ই’লাল আ’রদ্ব” তোমাদের পা হিঁচড়ে যায়। তোমরা মাটিতে গেঁড়ে যাও। ভাবুন এমন যে কারো পা বালিতে গেঁড়ে গিয়েছে। এবং সে তার পা টেনে হিঁচড়ে চলার চেষ্টা করছে এবং সে এগুতে পারছে না- আল্লাহ্ এই দৃশ্যের কথা বলছেন। “ইস সাকালতুম ই’লাল আ’রদ্ব” আল্লাহ্ কেন এই দৃশ্যের কথা বলছেন? আমি এই আয়াতটি বেছে নিয়েছি বিশেষত আমাদের তরুণদের জন্য। রমজান মাসে তোমরা দেখিয়েছ তোমরা রোযা রাখতে সক্ষম, তোমরা অনেক বদ-অভ্যাস থেকে বিরত থাকতে পারো যেসব থেকে তোমরা ভেবেছিলে তোমরা বিরত থাকতে পারবে না, তোমরা সময়মত উঠে নামায পড়তে পারো, তোমরা অ-নে-ক কিছু করতে সক্ষম; এইজন্য নয় যে এটা রমজান মাস এবং এমাসে তোমরা সুপার হিউম্যান হয়ে যাও বরং আল্লাহ্ তোমাদের সেই সামর্থ্য দিয়েছেন। এরপর আল্লাহ্ খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করলেন, যখন তোমাদেরকে সামনে আসতে বলা হয় এবং তোমরা তা করতে সক্ষম তখন তোমাদের পা টান দাও, এটা কেন?” “সাকালতুম ই’লাল আ’রদ্ব” এবং এই প্রশ্নটি করা হয়েছে বিশ্বাসীদের, বিশ্বাসীদের প্রশ্ন করা হয়েছে, “আ’রাদ্বীতুম বিল হায়াতিদ দুনিয়া মিনাল আখিরাহ” তোমরা কী আখিরাতের পরিবর্তে এই পার্থিব জীবন নিয়ে পরিতুষ্ট? আল্লাহ্ এই প্রশ্ন করেছেন বিশ্বাসীদের। আল্লাহ্ যেন বলছেন, যারা বিশ্বাসী নয় তারা তো অবশ্যই এই পার্থিব জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট কারণ...
অতীতের জাতি থেকে শিক্ষা
Quran Weekly তে দেয়া উস্তাদ নুমান আলী খানের Quranic Gems সিরিজ থেকে। আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আজকে আমি আপনাদের সাথে সূরা বাকারার ৫৭তম আয়াতের কিছু বিষয় বর্ণনা করতে চাই। এবং এই আয়াত আল্লাহ্ আযযা ওয়া জাল বনী ইসরাইলদের সম্বোধন করে বলছেন, ইসরাইলের সন্তানদের। এবং আল্লাহ্ তার কিছু অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করেছেন। যেই কারণে আমি আপনাদের সাথে আয়াতটি শেয়ার করতে চাই তা হল এই আয়াতটির ভেতরে একটি অসাধারণ স্থানান্তরণ ঘটে। সেই পরিবৃত্তি অনুধাবন করার সুবিধার্থে আমি প্রথমে আপনাদের জন্য একটি দৃশ্যপট দাঁড় করছি। ধরুন একজন শিক্ষক ক্লাসরুমে, এবং ধরা যাক তার ছাত্ররা ৩ ভাগে, না, ২ ভাগে বিভক্ত। বাম পাশে হচ্ছে ছাত্রদের একাংশ, মাঝখানে কিছুটা ফাঁক, এবং ডান পাশে রয়েছে আরেক অংশ। বাম পার্শ্ববর্তী ছাত্ররা আগের দিন পরীক্ষা দিয়ে দিয়েছে, ধরা যাক তারা গ্রুপ A, তারা পরীক্ষা দিয়েছে, এবং ফেল করেছে। আর গ্রুপ B এই পরীক্ষাটি দিবে কালকে। দিনটি হল দুই পরীক্ষার মধ্যখানে। শিক্ষক ক্লাসে ঢুকলেন, এবং গ্রুপ A, যারা কিনা পরীক্ষাটি দিয়েছে, তাদেরকে তীব্র ভাবে বকা দিতে লাগলেন। কারণ তারা পাশ করে নি। এবং তিনি বকা দিয়ে বলছেন, মনে করেন, “ আমি তোমাদের জন্য কি না করেছি!রিভিউ করেছি!সব উত্তর দিয়ে দিয়েছিলাম, এমন কি প্রশ্নপত্রের কপিও পরীক্ষার আগের দিন দিয়ে দিয়েছিলাম!তাও কিভাবে ফেল করলে? তোমাদের জন্য আর বেশি কি করা যাই আমি ভেবে পাই না!” আর এই সময়টুকুতে, যখন তিনি তাদেরকে বকাঝকা করছিলেন, গ্রুপ B বসে বসে দেখছিল। কয়েকজন ওই ছাত্রগুলোকে টিটকারি মারছিল, “হা হা দেখ না ওদের অবস্থা”। তবে তাদের মধ্যেকার অন্যরা,যারা বুদ্ধিমান, তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ল কারণ তারা জানে কাল তাদের পরীক্ষা, এবং তারা খুব শীঘ্রই একি ধরনের শাস্তির শিকার হতে পারে। এখন শিক্ষক বললেন, “তোমরা, জান? তোমাদের সাথে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না”। তিনি গ্রুপ...
আমাদের হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করা
“Quran Weekly” তে দেয়া উস্তাদ নুমান আলী খানের ”Quranic Gems” সিরিজ থেকে। ”এবং আমি নিশ্চয়ই জাহান্নাম সৃষ্টি করেছি কিছু মানুষ এবং জ্বিনদের জন্য। ওদের অন্তর আছে কিন্তু বুঝতে পারে না, তাঁদের দৃষ্টি আছে কিন্তু ওরা দেখে না এবং ওদের কান আছে কিন্তু তারা শুনতে পায় না। তারা পশুর মত, বরং এরচেয়েও জঘন্য। এরাই তারা যারা অসাবধানী।” (সুরা আল-আ’রাফ – ১৭৯) আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলি, আজকে আমি সুরা আল-আ’রাফ এর ১৭৯ নং আয়াত এবং কুরআনের আরো কিছু জায়গা থেকে এবং রাসুল (সাঃ) এর কিছু হাদিস নিয়ে আলোচনা করতে চাই। দেখুন আল্লাহ্ কুরআনে সুরা আল-মুমিনুন এ বলেছেন যে, বিশ্বাসীরাই হবে জান্নাতের উত্তরাধিকারী। أُولَٰئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ “ওলা-জকা হুমু আলওয়ারিঝুন” (২৩:১০) তারা হবে বেহেশতের উত্তরাধীকারী। যখন আপনি উত্তরাধিকার নিয়ে ভাবেন, আপনার মনে হবে এমন কিছু যা আপনার জন্য আপনার নামে লিখে রাখা আছে, যখন সময় হবে সেটা আপনি পেয়ে যাবেন। তো এটা আমাকে ভাবালো, আমরা কেন বেহেশতের উত্তরাধিকারী হতে যাবো? এটা তো এমন না, ওটা কী আগেই আমাদের জন্য লেখা ছিলো?” এবং তাই আমি এ বিষয়টি আরো গভীরভাবে বুঝতে চেষ্টা করলাম এবং আমি দেখলাম রাসুল (সাঃ) এই বিষয়ে বলেছেন, একটু মন দিয়ে শুনুন, আল্লাহ্ বেহেশতে বাড়ী বানিয়ে রেখেছেন, যত মানুষ সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেকের জন্য। যত মানুষ পৃথিবীতে এসেছে প্রত্যকের জন্য বেহেশতে বাড়ী বানানো আছে। এবং বিশ্বাসীরা, অবশ্যই সব মানুষই বেহেশতে যাবে না, যখন বিশ্বাসীরা বেহেশতে যাবে তারা তাঁদের নিজের বাড়ীতে যাবে তারা তাঁদের আশেপাশে কিছু বাড়ী দেখবে যেগুলো খালি। এবং ঐসব বাড়ী ওদের জন্য বানানো আছে যারা বেহেশতে যাবে কিন্তু যেতে অস্বীকার করেছে। তারা ওখানে যেতে চায়নি। এবং তাই তারা যে শুধু নিজের বাড়ী পাবে তা নয়, তারা ঐসব বাড়ীর ও উত্তরাধিকারী হবে যারা ওখানে যেতে পারেনি। এখন আপনি হয়তো ভাবতে থাকবেন, “আল্লাহ্...প্রবন্ধ
শোয়াইব (আঃ) এর মেয়ের সাথে মুসা (আঃ) এর বিয়ে থেকে কিছু শিক্ষা
• সৌজন্যতা আর ভদ্রতার সাথে কোন ছেলে অন্য কোন মেয়েদের সাহায্য করতে পারে। (মুসা (আঃ) মাদিয়ানে এসে যখন দুই বোনকে সাহায্য করেন।) • শালীনতা আর সতর্কতার সাথে মেয়েরা প্রয়োজনে বাইরে কাজে যেতে পারে। (দুই বোন তাদের বকরীগুলোকে পানি পান করানোর জন্য বের হতো তাদের বাবা অতি বৃদ্ধ বলে। আর সবার শেষে পানি পান করাতো যাতে পুরুষদের সাথে ঘেঁষাঘেঁষি না হয়) • শুধু ছেলেরা না, মেয়েরাও ছেলেদের পছন্দ করতে পারে। মেয়েরা যখন বাবার সামনে কোন ছেলের প্রশংসা করে, তখন বাবার বুঝা উচিত মেয়ে কী বুঝাতে চাচ্ছে। ( শোয়াইব আঃ এর মেয়ে বাসায় গিয়ে মুসা (আঃ) এর প্রশংসা করে) • মেয়ের বাবাদের উচিত তার সন্তানের পছন্দকে মূল্যায়ন করা আর গুরুত্ব দেয়া। • অর্থ কড়ি না থাকলেও ছেলে চরিত্রবান, দায়িত্ববান হলে তাকে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। (মুসা (আঃ) ঐ সময় মাদিয়ানে এসেছিলেন একটি খুনের পলাতক আসামী হিসেবে, তাঁর (আঃ) অর্থ, জামা কাপড় কিছুই ছিল না।) • বিয়ের প্রস্তাব মেয়ে পক্ষও পাঠাতে পারে। ( শোয়াইব আঃ এর মেয়ে তার বাবাকে বলেন মুসা (আঃ) কে কাজের জন্য বাসায় রেখে দিতে। শোয়াইব (আঃ) বুঝতে পেরেছেন তার মেয়ে কী বুঝাতে চেয়েছে আর শোয়াইব (আঃ) বিয়ের প্রস্তাব দেন মুসা (আঃ) কে) • বিয়ের পর মেয়েদের দায়িত্ব যেহেতু বাবা থেকে বরের কাছে হস্তান্তর হয়, তাই বিয়ের আগে সবচেয়ে বেশি কথা বলবে ছেলে আর মেয়ের বাবা। • কোন শর্ত দিয়েও বিয়ে করানো যায়। (মুসা (আঃ) কে ৮ বছর কাজ করার শর্ত দেয়া হয়েছিল।) আর সবশেষে— • ছেলেরাও শশুর বাড়ি থাকতে পারে 🙂 —Bayyinah.tv এর Story Night – Against all odd সিরিজ...আমাদের সবার সাথে ক্বারিন আছে …
নোমান আলী খান রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ وُكِّلَ بِهِ قَرِينُهُ – প্রত্যেক মানুষের সাথে একজন ক্বারিন, একজন করে সহযোগী শয়তান বরাদ্দ করা আছে। তারা সারাক্ষনই তোমাদের কুমন্ত্রণা দিয়ে যাচ্ছে। এর মানে কি আপনারা বুঝতে পারছেন? এটা কিন্তু টম এন্ড জেরি কার্টুনের মতো না যে এক কাঁধে ত্রিশূল হাতে শয়তান দাঁড়িয়ে থাকে আর অন্য কাঁধে ফেরেশতা। এমন না কিন্তু। একটি শয়তান সবসময় থাকে। আপনি যা-ই দেখছেন, যা-ই করছেন, জীবনে যত অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন—তার কাজ হলো, এর প্রতিক্রিয়ায় আপনাকে দিয়ে সম্ভাব্য সর্ব নিকৃষ্ট কাজটি করানো।কেউ এসে আপনাকে সালাম জানালো। সে আপনাকে বলবে, “সে সালাম দিচ্ছে ঠিকই কিন্তু ভেতরে ভেতরে তোমাকে ঘৃণা করে।”আপনিও বলেন, “হ্যাঁ আসলেই!” “হ্যাঁ, ওয়ালাইকুমুস সালাম। হুহ” (একটু সন্দেহসহ আপনি জবাব দেন)ভালো কিছু দেখলেন, সেটার মধ্যে মন্দ কিছু খুঁজে দেখার ইচ্ছে করবে। আবার খারাপ কিছু দেখলেন। সে বলবে, “এটা অতোটা খারাপ না। এতো খারাপ না। দেখোই না! তুমি তো মাত্র একমাস আগেই উমরাহ করলে। অনেক সোয়াব কামিয়েছো। কোন সমস্যা নেই। আর রামাদান তো এক সপ্তাহ পরেই আসছে! এতো চিন্তা কীসের? আল্লাহ তো তোমাকে ক্ষমা করেই দিচ্ছেন।”আপনি ভাবছেন, “হ্যাঁ! আসলেই তো! আল্লাহ অনেক ক্ষমাশীল!” যেকোনো পরিস্থিতিতে পড়েন না কেন আপনি, একটি চিন্তা মাথায় আসে, “খারাপ কিন্তু অতো খারাপ না। তুমি ভালোই আছো।” আর ভালো জিনিস হলে বলে, “আরে! তুমি আসলেই তা করতে চাও?” কখনও কি এমন হয়েছে যে আপনি বিছানায় শুয়ে আছেন, এখনো ইশা পড়েননি। আর আপনার শরীর যেন চারগুণ ভারী হয়ে গেছে?সে বলে, “শুধু আর পাঁচটা মিনিট শুয়ে থাকো। তারপর উঠে নামায পড়ো। শুধু পাঁচ মিনিট!” আপনিও ভাবলেন, “হ্যাঁ আর মাত্র পাঁচ মিনিট। নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করার জন্য একটু সময় দরকার।”আর এমন হয় যে কিছু বোঝার আগেই… (ঘুম)এমন হয় কি না?এটাই...অস্থির মনকে কী দিয়ে শান্ত করবেন?
— নোমান আলী খান মানুষের ডিফল্ট অবস্থা হলো, আপনাদের কেউ কেউ হয়তো টেকি(প্রযুক্তিতে খুব আগ্রহী। তাই ডিফল্টের অর্থ বুঝবেন), অনেক মানুষের ডিফল্ট অবস্থা হলো, অনেক মানুষের ডিফল্ট অবস্থা হলো তাদের মাথায় সবসময় পাগলাটে কোনো চিন্তা-ভাবনার আনাগোনা চলতে থাকে। কিছু একটা সবসময় তাদের মাথায় থাকে, কখনোই এটা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। আর তারা ভাবতে থাকে— কিভাবে এটা থেকে মুক্তি পাবো? এই চিন্তাটা কখনো কখনো খারাপ আচরণের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। খারাপ কাজের মাধ্যমে, উদ্বেগ, হতাশা…মাথা থেকে এটা কখনো যায় না। এখন, থেরাপিস্টরা বলবে, এটা একটা ব্যাধি। ঠিক কিনা? আর কুরআন বলছে- “ইন্নাল ইনসানা খুলিকা হালুউ’আ।” অর্থাৎ, “মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে খুবই অস্থির-মনা করে।” (৭০:১৯) তোমাদেরকে এমন করেই সৃষ্টি করা হয়েছে। এটাই তোমার স্বাভাবিক অবস্থা। আরেকটা কথা বলি— মানুষের শরীরকে মেরু ভালুকের (পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে যাদের বাস। তুষারে ঢাকা প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় যারা বাস করে।) শরীরের সাথে তুলনা করে দেখি। খুবই চমৎকার একটা উদাহরণ, তাই না? মানুষের শরীরের তুলনায় মেরু ভালুকের শরীর… আমাদের শরীরকে প্রকৃতিগতভাবে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়নি যে, আমরা প্রচন্ড ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে জামা-কাপড় ছাড়া বাঁচতে পারব। আমাদের শরীর নকশাগতভাবেই বৈরী প্রকৃতি মোকাবেলা করতে সক্ষম নয়। আর তাই নিজেদের রক্ষা করতে আমরা বিভিন্নরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকি। কারণ, আমাদের চামড়া এবং রক্তের তাপমাত্রা যথেষ্ট নয়। আমরা মারা যাবো। তাই, জামা-কাপড় পরিধান করা শুধু দ্বীনের ব্যাপার নয়, বেঁচে থাকার জন্যেও এর প্রয়োজন। ঠিক একইভাবে, আমাদের মনকেও ইতিবাচকতার দিকে অনুকূল করে তৈরী করা হয়নি। ব্যাপারটা প্রাকৃতিক নয়। তাই, আপনার আমার মন মানসিকতাকে ধ্বংস হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্যেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শেষে গিয়ে আল্লাহ এর প্রতিকার প্রদান করেন। তিনি বলেন— “ইল্লাল মুসল্লিন” মানুষ হালুউ(অস্থির-মনা), খারাপ কিছু ঘটলে তারা হয়ে যায় জাজুউ(অতিমাত্রায় উৎকন্ঠিত), আর ভালো কিছু ঘটলে তারা...আল্লাহর কাছে যাওয়া পরিশ্রমের কাজ
আল্লাহর কাছাকাছি হওয়াটা একবারেই করে ফেলার কাজ না। এটা একটা প্রক্রিয়া। এটা এমন কিছু যার জন্য প্রত্যহ কাজ করে যেতে হবে। এখন, আপনি ইচ্ছে করলে দৈনিক ভিত্তিতে এই সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে পারেন অথবা ইচ্ছে করলে দৈনিক ভিত্তিতে এ সম্পর্কের ক্ষতি সাধন করতে পারেন। একটি ভালো দিন…আপনি সকালে উঠে মসজিদে গেলেন। কিছু কুরআন তিলাওয়াত করলেন। অন্তর বিগলিত করে অকৃত্রিম কিছু দোয়া করলেন। কিছু খারাপ কাজ আপনার অভ্যাসের অংশ হয়ে গিয়েছে কিন্তু আজ সেগুলো থেকেও দূরে থাকলেন। মানুষকে কষ্ট দিয়ে কোনো কথা বললেন না। কোনোভাবে কারো কোনো ক্ষতি করলেন না। এভাবে যোহর পর্যন্ত পৌঁছে গেলেন। এখন, অনুভব করছেন আপনি আগের চেয়ে আল্লাহর অনেক কাছাকাছি আছেন। অন্তরে এক ধরণের স্বর্গীয় প্রশান্তি অনুভব করছেন। নিজের উদ্বেগ উৎকণ্ঠাগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। এরপর… কেমন করে যেন মনোবল কমে গেল। ভাবলেন, আমার হাতে কিছুটা ফ্রি সময় আছে। মুভি বা কিছু একটা দেখে একটু বিনোদন করি এবং শুরু করলেন। এখন, আপনি আবার পিছিয়ে যাচ্ছেন। উন্নতি অর্জন করছিলেন কিন্তু এখন আবার নিচের দিকে নামা শুরু করলেন। এমনটা সবসময় ঘটে আসছে। কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করেন এরপর আবার পিছিয়ে পড়েন। কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করেন এরপর আবার পিছিয়ে পড়েন। আমাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে দেখা যায়, আমরা এমনসব কাজে যুক্ত হয়ে পড়ি যা আমাদেরকে ধীরে ধীরে আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। আর কদাচিৎ আমরা কিছু ভালো কাজ করি যা আমাদের আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে আসে। এখন, আপনি যদি অবিরত নীচের দিকে নামতে থাকেন, আর কালেভদ্রে একটুখানি উপরে উঠেন- আপনি কি তখন নিজের উন্নতি অনুভব করেন? না। তখন উন্নতি অনুভূত হয় না। ফলে, আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার মধুরতা কখনো ফিল করেন না, তাই আপনি শুধু নিচের দিকেই নামতে থাকেন। এটি সর্পিল অবনতি। ব্যাপারটা ঠিক এমন, আপনি নিয়মিত জাঙ্ক ফুড আহার করেন, শরীরের স্থানে...সূরাতুন নাসে আল্লাহর তিনটি নামের যৌক্তিক অগ্রগতি
সূরাতুন নাসে আল্লাহর তিনটি নামের যৌক্তিক অগ্রগতি[রাব্বিন নাস, মালিকিন নাস, ইলাহিন নাস] নোমান আলী খান চলুন, প্রথমে নিজেদের অন্যান্য প্রাণীদের থেকে আলাদা করে দেখি। আমার একটি ছাগল থাকতে পারে, কিংবা গরু বা উট। আমি এর প্রয়োজনগুলোর খেয়াল রাখি। এরপর একটা বেড়া তৈরি করে দেই। কখনো বেড়াটি বেশ বড় হয়। এরপর একে বলি— মুখে বলি না— কিন্তু সে জানে যে, যতক্ষণ এই সীমার মধ্যে থাকবো ইচ্ছেমত ঘুরাঘুরি করা যাবে। প্রাণীটি নিজের পুরো জীবন সেই সীমানার মধ্যেই কাটাতে পারে, সমস্যা ছাড়াই। সে খুশি। কোন অসুবিধা নেই। কারণ— এক, সে সুরক্ষিত আর তার খেয়াল রাখা হচ্ছে। দুই, সে আমার দেয়া সীমানা মেনে নিয়েছে।এরকম যখন হয়, তার জীবন সুন্দর। কোন চাহিদা নেই।কিন্তু অন্যদিকে, মানুষ এমন হতে পারে না। আমরা এভাবে কাজ করি না। আমাদের মানসিকতা এমন না। আমাদের মানসিকতা প্রানীদের থেকে একদমই ভিন্ন। আপনি একজন মানুষকে একটি বাড়ি দিলেন অথবা একটি এপার্টমেন্ট। সেই মানুষটিকে আপনি চাকরিও দিলেন যেন সে নিজে খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারে। এটাকি তার জন্য যথেষ্ট? নাকি সে আরও বেশী কিছু চাইবে? সে আরও বেশী কিছু চাইবে। সে আরও ভালো কিছু চাইবে। আমি কিন্তু লোভের কথা বলছি না। বুঝে নিন কি বলছি আমি। আল্লাহ মানুষের মধ্যে এমন কিছু দিয়েছেন যা অন্য কোন প্রাণীকে দেননি— নিজের চাইতে বড় কিছু অর্জন করার আকাঙ্ক্ষা। নিজের চাইতে বড় কিছুতে পৌছানোর আকাঙ্ক্ষা। মানবজাতি… এমনকি নাস্তিক, ইহুদি, খৃষ্টান মুসলিম যে-ই হোক না কেন। যদি আপনার কোন শিক্ষাগত ডিগ্রী না-ও থাকে, যদি কোন ভালো চাকরি নাও থাকে, যদি কোন সম্মানজনক পেশাতেও না থাকেন আপনি, আপনার মাথার মধ্যে কিন্তু এই চিন্তাটা থাকে— যদি কিছু অর্জন করতে পারতাম ! জীবনে যদি আরো বেশী কিছু করতে পারতাম। পৃথিবীতে যদি স্মরণীয় কিছু করে যেতে পারতাম। পৃথিবীর জন্য যদি কোনো অবদান রাখতে পারতাম।...মু’জিযা
No Results Found
The page you requested could not be found. Try refining your search, or use the navigation above to locate the post.