উস্তাদ নুমান আলী খান

নুমান আলী খান একজন মুসলিম দা’ঈ। কুর’আন এর জ্ঞানে তার অসাধারণ গভীরতা এবং সুন্দর উপস্থাপনা শৈলীর কারণে সমগ্র বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশ এবং বাংলাভাষাভাষী অনেক ইসলাম অনুরাগী তরুণ তাঁর অসাধারণ আলোচনা থেকে উপকৃত হচ্ছে নিয়মিত …

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন

বর্তমানে আমরা ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল এ নুমান আলী খানের লেকচার গুলো নিয়মিত প্রকাশ করছি এবং এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে তা শ্রেণীবদ্ধ ভাবে সংরক্ষণ করছি। আপনি আমাদের ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল লাইক /সাবস্ক্রিপশন করে আমাদের সাথে আরো নিবিড় ভাবে সংযুক্ত থাকতে পারেন।

আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন…

সংযুক্ত থাকুন

ভিডিও + প্রতিলিপি

যতই খারাপ অবস্থায় থাকুন না কেন, মনে রাখুন আল্লাহ আপনাকে ছেড়ে যাননি

যতই খারাপ অবস্থায় থাকুন না কেন, মনে রাখুন আল্লাহ আপনাকে ছেড়ে যাননি

যদি আমরা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক করতে চাই, যদি আপনি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রাখতে চান, তাহলে এই কথাগুলো মনে রাখুন।অনুগ্রহ করে এগুলো মনে রাখুন কারণ এগুলো খুব জরুরি। মানুষজন আপনাকে হয়ত ভাল জানে বা তারা হয়ত আপনাকে খারাপ ভাবে, আল্লাহর কাছে কিন্তু এসবের কোন মূল্য নেই। আপনার ব্যাপারে আল্লাহর যে ধারণা এবং মানুষজনের যে ধারণা তার মধ্যে কোন সম্পর্ক নেই আর মানুষজন যদি ভাবে আপনি মহান। তাহলে এটি কিন্তু কোন নিশ্চয়তা দেয় না যে আল্লাহর কাছেও আপনি মহান হবেন। একদম না, একদম না। আপনি তাহলে কিন্তু নিজেই নিজেকে ধোঁকা দেবেন। যদি মানুষজন ভাবে আপনি ভয়ানক, আপনি জাহান্নামে যাবেন, আপনি খারাপ, এর মানে এই নয় যে আল্লাহও আপনাকে খারাপ ভাবেন।হয়ত আপনার জন্য আল্লাহর ভালবাসা মজুদ রয়েছে। মানুষজন আমার আর আপনার ব্যাপারে কী ভাবল তার কোন মূল্য আল্লাহর কাছে নেই। যখন মানুষজন আমাদের প্রশংসা বা নিন্দা করে, তখন আমাদের এটা ভাবা উচিত হবে না যে আল্লাহও আমাদের ব্যাপারে তেমনটাই ভাবেন।একদিকে একজন ব্যক্তির বিভ্রম হয় এই ভেবে যে অন্যরা যেহেতু তার প্রশংসা করছে সেহেতু তারা আল্লাহর কাছেও প্রশংসনীয় হবে। এমন ব্যক্তিরা বিভ্রান্ত হয়ে যায়, তাদের মধ্যে ভন্ডামি, আত্ম-ধার্মিকতা ঢুকে পড়ে এবং আল্লাহর কাছে তারা তাদের মর্যাদা হারিয়ে বসে।তারা শুধু দুনিয়া আর এর মানুষদের প্রশংসা পায়, যখন তারা আল্লাহর সামনে হাজির হবে তখন আল্লাহ বলবেন, তোমরা যার জন্য কাজ করেছ তা তো পেয়েই গিয়েছ, আমার সাথে তোমার কোন কিছু নেই।  অপরদিকে এমন ব্যক্তি রয়েছে যারা হয়ত ভাল হওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু অন্যরা তাদের বিচার করে বসে এবং তাদের ব্যাপারে এটা-সেটা মন্তব্য করে, তখন সেই সব ব্যক্তিরা ভাবে মানুষজন যখন আমাকে ভাল বলছে না, তখন হয়ত আমি আসলেই ভাল নই। কে বলছে আপনি ভাল না? আল্লাহ? না। আল্লাহ আপনার ব্যাপারে আশা ছেড়ে দেন নি, আপনি...
অপচয় কী আর শয়তানের ভাই কারা?

অপচয় কী আর শয়তানের ভাই কারা?

কুরআনে আল্লাহ তাআলা অসংযতভাবে ব্যয়কারীদের কথা উল্লেখ করেছেন এবং এর জন্য দুটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। একটি হল ইসরাফ। ইসরাফ মানে হল প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খরচ করা। আপনি যদি শপিং এ যান কারণ আপনার একটি শার্টের প্রয়োজন আর আপনি একটি শার্টের পরিবর্তে ২০ টি শার্ট কিনলেন কেবলমাত্র আপনার সামর্থ্য আছে বলে।এ কাজটি এক ধরনের ইসরাফ। অবশ্যই শার্ট আপনার কাজে লাগবে আপনি সেগুলো পরতে পারবেন ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত কিছু করে ফেলেন সেটাই হল ইসরাফ। কুরআনে ইসরাফ ব্যাপারটিকে নিচু চোখে দেখা হয়েছে। কিন্তু আরেক ধরনের খরচের বাতিক আছে। মানুষের মাঝে যা এর থেকেও অনেক খারাপ। যেটাকে আল্লাহ বলেছেন তাবযীর। তাবযীর মানে হল আপনি এমন জিনিসে খরচ করছেন যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় এটা কোন মৌলিক চাহিদা নয়। আপনি জিনিসটি একেবারেই অর্থহীন কারণে কিনছেন। কোন উল্লেখযোগ্য চাহিদাও পূরণ হচ্ছে না আপনি যা কিনেছেন এই তাবযীর দ্বারা। তাবযীর শব্দটির মানে আপনি বলতে পারেন অতিরিক্ত ব্যয় করা কিংবা অপব্যয় করা, ফালতু জিনিসে খরচ করা। কিন্তু আল্লাহ যেভাবে তাবযীর শব্দটি বর্নণা করেছেন তা হল…“ইন্নাল মুবাযযিরীনা কানু ইখওয়ানাশ শায়াতীন” যারা অপ্রয়োজনীয় খরচ করে তারা শয়তানের ভাই। এই ঘোষণাটি খুব নিষ্ঠুর মনে হতে পারে। আমি শুধু খরচ করছি বলে ধরুন খরচ করছি ভিডিও গেমস এর উপর কিংবা Las Vegas এ একটি ট্রিপে যেতে অনেক টাকা খরচ করছি ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলোর জন্যে আমাকে শয়তানের ভাই হিসেবে কেন আখ্যা দেওয়া হল! আল্লাহ বলেননি এটা হারাম কিংবা এটা করো না কিংবা এ থেকে দূরে থাক। সরাসরি আমাকে শয়তানের অনুগত হিসেবে বিবেচিত করলেন! আল্লাহ এমনটা কেন বললেন! এর পিছনে অনেক কারণ আছে। চলুন ধীরে ধীরে আয়াতগুলো বুঝার চেষ্টা করি। প্রথমেই আল্লাহ বলছেন “রব্বুকুম আ’লামু বিমা ফী নুফূসিকুম ইন তা কুনু সলিহীন”। “তোমাদের রব জানেন তোমাদের অন্তরের গভীরে...
নামাজের পূর্বে সুন্দর পোশাক পরিধান করুন

নামাজের পূর্বে সুন্দর পোশাক পরিধান করুন

আল্লাহ্‌ বলেন, “ইয়া বানী আদাম, খুজু ঝিনাতা ইনদা কুল্লি মাসজিদ”। নামাজের পূর্বে যেকোনো স্থানে তুমি তোমার পোশাকের প্রতি যত্নবান হও, তোমার সৌন্দর্যের প্রতি মনোনিবেশ করো। আমার সামনে দাঁড়াবার পূর্বে নিজেকে প্রশংসনীয় রূপে উপস্থাপন করো। নামাজের পূর্বে সুন্দর পোশাক পরিধান করো। বিছানার পরিহিত পোশাক পড়ে ফজর নামাজ আদায় করতে এসো না। সুন্দর পোশাকের ব্যাপারে যত্নশীল হও। আচ্ছা মনে করুন, আপনার অফিসের সিইও এর সাথে, অথবা আপনার ভার্সিটির ডীনের সাথে অথবা ইমিগ্রেশন অফিসারের সাথে দেখা করতে গেলে কি আপনি ময়লা পোশাক পড়ে যাবেন? বরং আপনার সবচেয়ে সুন্দর পোশাক পড়েই তাদের সাথে দেখা করতে যাবেন। তাহলে আল্লাহ্‌র সামনে আপনি এইভাবে কেন দাঁড়াচ্ছেন? আল্লাহ্‌র সামনে সুন্দর ভাবে দাঁড়ানোর ব্যাপারে যত্নশীল হোন। বলুনতো কেন এটা এতো গুরুত্বপূর্ণ? আপনি যখন সালাতের জন্য আপনার কাপড় ইস্ত্রি করবেন মনে রাখবেন আপনি সালাতের সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করছেন। যখন আপনি আপনার পছন্দের পোশাক নির্বাচন করছেন আপনি সালাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মানুষ সাধারনত পার্টিতে গেলে সুন্দর পোশাক পরিধান করে, তাইনা? কিন্তু কেন? কারণ তার আশেপাশের লোকগুলো তার দিকে বারবার তাকাবে, হয়তো দুই একটা ছবিও তুলে ফেলতে পারে। কিন্তু যদি তাকানোর মতো কেউ না থাকে আপনি কি সেজেগুজে থাকবেন? পার্টিতে কেউ নিজেকে জবুথবু রূপে উপস্থাপন করে না অথবা করতে চায় না। এটাই সত্যি কথা। আমার একটা ছাত্র ছিল যে কাপড় ইস্ত্রি না করেই ক্লাসে চলে আসতো। তার বাবা একদিন বাঁধা দিয়ে বললেন, হয় নিজের কাপড় ইস্ত্রি করে পরিধান করো, নয়তো ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করো। আমরা যখন সুন্দর পোশাক পড়ি আমরা আশেপাশের মানুষের রুচির কথা খেয়াল রেখেই পোশাক পড়ি। তাহলে আপনি যদি সালাতের জন্য উত্তম পোশাক পরিধান করেন আপনার সচেতন মন স্বাভাবিক ভাবেই আল্লাহ্‌র দিকে নিজেকে রজ্জু করবে কারণ আপনি জানেন আল্লাহ্‌ আপনার দিকে তাকিয়ে আছেন। এই সামান্য কাজটা আপনার সালাতে...
আমরা মুসলিম, কিন্তু কেনো?

আমরা মুসলিম, কিন্তু কেনো?

আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, قُلْ هَٰذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللَّهِ ۚ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي ۖ وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ “বলে দিনঃ এই আমার পথ। আমি আল্লাহর দিকে বুঝে সুঝে দাওয়াত দেই আমি এবং আমার অনুসারীরা। আল্লাহ পবিত্র। আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই।”  (সূরা ইউসুফঃ ১০৮) এই হলো সাবিল (পথ, পন্থা)। চমৎকার বাক্য। আমি আল্লাহর পথে ডাকি চোখ খোলা রেখে, সঠিক উপলব্ধি সহকারে। ‘বাসীরা’। ‘বাসীরা’ হলো যখন কোনো কিছুর প্রতি আপনার পূর্ণাঙ্গ দৃষ্টি রয়েছে। আসলে , আরবি ভাষা অনুযায়ী এই মুহুর্তে আমার ‘বাসীরা’ নেই কারণ এই পিলারটির জন্য পিলারের পেছনের মানুষদের আমি দেখতে পাচ্ছি না এবং তারাও আমাকে দেখতে পাচ্ছে না তাই আমার বাসীরা নেই। ‘বাসীরা’ মানে হলো আপনার পূর্নাঙ্গ দৃষ্টি রয়েছে। এমনকি আংশিক দৃষ্টিও ‘বাসীরা’ নয়। আল্লাহ বলেন : আমরা লোকদের দ্বীনের পথে ডাকি দৃষ্টি খোলা রেখে। আপনারা জানেন এর মানে কী ? এর মানে হলো – আমাদের পরিপূর্ণ জ্ঞান রয়েছে যে কেন আমরা মুসলিম। শুধু এটা নয় যে , আলহামদুলিল্লাহ আমরা জানি যে আমরা মুসলিম। কিন্তু আমাদের চোখ খোলা থাকতে হবে। কেন আমি মুসলিম? কেন আমি বলি – লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ? কেন আমি বলি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম? কেন কুর’আন আল্লাহর কিতাব? আমার নিজের জন্যই এই বিষয়ে আমার পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি। বহু মুসলমান আজকে মুসলিম কারণ, আর আপনি যদি তাদের জিজ্ঞেস করেন কেন তুমি মুসলিম ? তারা বলবে – কারণ আমার বাবা-মা মুসলিম। অথবা তারা বলবে কারণ আমি বড় হয়েছি একটি মুসলিম দেশে। অথবা তারা বলবে : আমি জানি না, আমার মনে হয় সবাই মুসলিম তাই আমিও মুসলিম। এগুলো ভালো জবাব নয়। ঐ প্রশ্নের এগুলো ভালো উত্তর নয়। আর আমি আপনাদের বলছি ..আমি...
রামাদান প্রস্তুতি

রামাদান প্রস্তুতি

ইতিমধ্যে হয়ত আপনারা রামাদান নিয়ে নিজস্ব পরিসরে কিছু পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছেন আর হয়ত নিবেন ইনশাল্লাহ। আপনাদের পরিকল্পনার কুর’আনের পার্টটিতে আমরা আপনাদের জন্য নিচের এই ভিডিও কে ভিত্তি করে একটি সহজ প্ল্যান দিচ্ছি। চাইলে অনুসরণ করতে পারেন।  একটি সুরা (সুরা জুমা) আমরা ইনশাল্লাহ মুখস্থ করব আর আর গোটা রামাদান ব্যাপী আমরা এর তাফসীর দিব (উস্তাদ নুমান আলী খানেরই) । মুখস্ত করার অনেক সুবিধা আছে। প্রথমত, মুখস্থ করার জন্য একটি আয়াত অনেকবার পড়া হয়। যত পড়বেন তত সাওয়াব। আর রামাদানে তো আর বেশী সাওয়াব।  আর দ্বিতীয়ত, কুর’আন মুখস্থ করতে অনেক সময় দিতে হয়। আপনার সময়ও ভাল যাবে রামাদানে ইনশাল্লাহ।  —– —- —– —- —– —- —– —- —– —- —– —- —– —-  আলহামদুলিল্লাহ, রমজান মাস প্রায় চলেই এল। আমাদের নিজেদের এবং আমাদের পরিবারের তাই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে এই সময় থেকে উপকৃত হওয়ার জন্যে। এ মাসটি হল কুরআনের মাস। আল্লাহ আযযা ওয়াযাল আমাদের এ মাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেনঃ “শাহরু রমাদান আল্লাযী উনযিলা ফী হিল কুরআন। রমজান হল সেই মাস যখন কুরআন নাযিল হয়েছে”। রমজান মাস সম্পর্কে প্রথম এটাই বলা হয়েছে। আমি অনেক বারই একথা বলেছি যে এই মাসটিকে আল্লাহ যেভাবে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন তা দিয়ে আল্লাহ বুঝিয়ে দিলেন যে রমজানের এত বিশেষত্ব রয়েছে কেননা এ মাসে কুরআন নাযিল হয়েছে। আমরা ভাবি রমজান মাস মানেই যেন রোযা রাখার মাস। কিন্তু আল্লাহ বললেন এ মাস কুরআনের মাস। রোযা রাখার কথা আসলে আরও অনেক পরে বলা হয়েছে। এই লম্বা আয়তের প্রথম অংশে কেবল কুরআনেরই বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। “হুদাল্লিন নাসঃ এটা মানবজাতির জন্যে পথ নির্দেশক”। “ওয়া বায়্যিনাতিম মিনাল হুদা ওয়াল ফুরক্বান…অলৌকিক নিদর্শন…সুস্পষ্ট প্রমাণ…আর সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী হল কুরআন”। কুরআনের প্রাথমিক বর্ণনাই আয়াতের শুরুতে দেওয়া হয়েছে। এই আয়াতের একটা অদ্ভূত...

প্রবন্ধ

বিয়ের উদ্দেশ্য এবং মূলনীতি

বিয়ে একটি শক্ত প্রতিজ্ঞা। কুরআনেও এই ব্যাপারে খুব গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। “আল্মুহসানাত”, “আল্মুহসিনিন”। আরবিতে “ইহসান” মানে হল কাউকে নিরাপদ দুর্গের মধ্যে রাখা। অনেকটা মিলিটারি ক্যাম্পের মত। উদাহরনটা এমন যে, বাইরে শত্রু আছে আর তাই যে মিলিটারি ক্যাম্পের ভিতরে আছে সে নিরাপদ। এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে নারীরা যেন নিরাপদ প্রাচীরের মধ্যে আছে, আর কে তাদের সুরক্ষা দিচ্ছে? তাদের নিজ নিজ স্বামীরা। সবকিছু থেকে সুরক্ষা দিচ্ছে, দুঃখ কষ্ট, লজ্জাহীনতা, এমনকি অজ্ঞানতা থেকেও, কারন তাকে সঠিক শিক্ষা দেয়াও তার স্বামীর দায়িত্ব। সে তাকে সব দিক থেকে নিরাপদ রাখছে। আর যারা বিয়ে করতে ইচ্ছুক তাদেরকে আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, “মুহসিনিন গাইরা মুসাফিহিন”।(সূরা নিসা ২৪) তারা হল সেসব মানুষ যারা নারীদের এরূপ নিরাপত্তায় আনতে আগ্রহী, তাদের নিজেদের পরিচর্যায়, পরিবার গঠনের উদ্দেশ্যে, শুধুমাত্র তাদের নিজেদের কামনা পূরণ করার জন্য নয়। “মুসাফিহ” বলতে এমন কাউকে বুঝায় যে নিজের হরমোনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আর একারনেই সে বিয়ে করতে চায়, এটাই একমাত্র কারন। তাই আল্লাহ বিয়ের সম্পর্কে আমাদের মনোভাব পরিবর্তন করেছেন। যদি আপনি সঠিক কারনে বিয়েতে আবদ্ধ হন, তাহলে আপনার স্ত্রীর সাথে আপনার একটি সুস্থ সম্পর্ক গড়ে উঠবে। আর যদি আপনি ভুল কারনে বিয়ে করেন, ভুল কারন কি কি হতে পারে? আমার হরমোনের সমস্যা আছে তাই আমি বিয়ে করতে চাই, ব্যাস। তাহলে অবশ্যই আপনার সংসার অশান্তির হবে, আর আপনি কখনই সন্তুষ্ট হবেন না। আর খুব সম্ভবত আপনাদের অনেকেই এটা অনুধাবন করেছেন কঠিন উপায়ে। কারন আপনার নিয়্যতে ভুল ছিল। আপনার নিয়্যত থাকতে হবে একটি পরিবার শুরু করার, আল্লাহকে খুশি করা, সমাজে ভাল কিছু বৃদ্ধি করা। তাই আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীনের অন্যান্য সব কিছুর মত বিয়ের মূলনীতিও হলঃ আপনি নিজের দায়িত্ব নিয়ে চিন্তিত থাকুন, আর আপনার অধিকার আদায়ের কথা ভুলে যান। আমি জানি যে এটা খুবই রুক্ষ শুনাচ্ছে, কিন্তু...

পৃথিবীতে অন্যায় – অবিচার, পরকালীন বিশ্বাস এবং আমাদের আমল

’’যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।’’ (২:৬২) এই আয়াতে আল্লাহ আমাদেরকে একেবারে প্রাথমিক কিছু কথা বলেছেন, যা কিনা একটি শিশুর পক্ষেও বোঝা সম্ভব। কিন্তু একই সাথে ঈমান সম্পর্কে অত্যন্ত শক্তিশালী দৃষ্টিভঙ্গীও তুলে ধরেছেন। ঈমান — একেবারে প্রাথমিক বিষয়, তাই না? একজন মুসলিমের জন্য ঈমান হলো সবচেয়ে প্রাথমিক বিষয়। কিন্তু এখানে আল্লাহ আমাদেরকে ঈমানের সামগ্রীক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়েছেন যা জীবনকে পরিবতর্ন করে দেয়ার মত বিষয়। আপনাদেরকে আমি এই সম্পর্কেই বলতে চাই। আল্লাহ এই আয়াতে ঈমানের তিনটি দিক সম্পর্কে বলেছেন, তাই না? তিনি বলেছেন, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, এই তিনটি বিষয়ের কথা বলা হয়েছে যা পরকালের সফলতার জন্য প্রয়োজন وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ ’’আর তাদের কোনই ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখিতও হবে না।” (২:৬২) এখন খেয়াল করুন, এই আয়াতের আগের আয়াতগুলোতে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন বনী ইসরাইলের জঘন্য খারাপ অপরাধগুলোর কথা। আমরা সেগুলো পড়েছি। এখন, তিনি বলছেন, ঈমানের প্রথম অংশ হলো, আল্লাহর প্রতি ঈমান। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের অত্যাবশ্যকীয় ফলাফল হলো, আপনি অবশ্যই, অবশ্যই, অবশ্যই পরকালে বিশ্বাস করবেন। এটা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের ফলেই হয়। আপনি যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস না করেন, তখন আপনার জন্য এটা মেনে নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে যাবে যে, এই জীবনের পরে আরও একটি জীবন আছে। কিন্তু আপনি যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করেন, তাহলে এই বিশ্বাসেরই যৌক্তিক পরিণতি হলো পরকাল। কিভাবে? আপনি যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করেন, তাহলে আপনি এবং আমি কি এটা বিশ্বাস করি না যে, তিনি সকল কাজই নিখুঁতভাবে করেন? তিনি একদম নির্ভুল, তাই না? আপনি যদি কোন নাস্তিক, দার্শনিক কিংবা অজ্ঞাবাদীর সাথে কথা বলেন, তারা বলবেন,...

যখন আরশ কুরসির প্রভু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা হাসবেন

কিয়ামতের দিন সবার বিচার শেষ করার পর একজন লোক বাকি থাকবে। তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হবে কিন্তু তার চেহারা জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। তখন সে লোকটি কেঁদে বলবে- হে আমার রব! জাহান্নামের উত্তাপ আমাকে অস্থির করে তুলছে এবং এর শিখা আমাকে জ্বালাচ্ছে। আপনি আমার চেহারা জাহান্নাম থেকে অন্য দিকে ফিরিয়ে দিন। সে এভাবে আল্লাহর কাছে ক্রমাগত প্রার্থনা করতে থাকবে। তারপর আল্লাহ তাকে বলবেন- তোমার এ প্রার্থনা মঞ্জুর করা হলে তুমি কি আর কিছু চাইবে? সে বলবেঃ না, আপনার ইজ্জতের কসম! আমি আর কিছু চাইবো না। তো, তার চেহারা জাহান্নমের দিক থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। তারপর সে আবার বলতে শুরু করবে, হে আমার প্রভূ! আমাকে একটু জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দেন। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি বলোনি এরপর আর কিছু চাইবে না? ধিক হে মানব সন্তান! তুমি কোন কথা রাখো না। কিন্তু এ ব্যক্তি প্রার্থনা করতেই থাকবে। তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলবেন – তোমার এ ইচ্ছা পূরণ করা হলে আর কিছু চাইতে পারবে না। সে বলবে- না, আমি আপনার মর্যাদার কসম করে বলছি আমি আর চাইবো না। এভাবে সে অঙ্গীকার আর প্রতিজ্ঞা করতে থাকবে যে সে আর কিছু চাইবে না। অবশেষে তাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দেয়া হবে। অতঃপর যখন সে জান্নাতে গেটের দিকে তাকিয়ে জান্নাতের সূখ শান্তি দেখবে, নিজের ওয়াদার কথা স্মরণ করে কিছুক্ষণ চুপ থাকবে। কিন্তু পরিশেষে সে বলবে, হে আমার প্রভু আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন। তখন আল্লাহ বলবেন- তুমি না এতক্ষণ ধরে সব ওয়াদা আর অঙ্গীকার করলে যে আর কিছু চাইবে না? ধিক তোমার! হে বানী আদাম! কতই না ও‘য়াদা ভঙ্গকারী তুমি। সে বলবে, হে আমার প্রভূ আমাকে আপনার সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে দুর্ভাগা করে রাখবেন না। সে এভাবে প্রার্থনা করতেই থাকবে, অবশেষে আল্লাহ সুব হানাহু...

কিভাবে বুঝব শাস্তি না পরীক্ষা নিচ্ছেন আল্লাহ তাআলা?

যখন কোন একটা বিপদ তোমাদের উপর বর্তায় (উহুদের যুদ্ধকালীন) যদিও তোমরা এর আগে (বদরের যুদ্ধে শত্রুদের মাঝে) এর চেয়ে ও দ্বিগুণের মাঝে পরিবেষ্টিত ছিলে তোমরা বল, “এগুলো কোথা থেকে এলো?” বল, “এগুলো তোমাদের থেকেই এসেছে”। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ সব কিছু করতে সক্ষম। (৩-১৬৫) আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলী আমি সুরা আল ইমরানের ১৬৫ নাম্বার আয়াত আপনাদের সাথে খুব সুনির্দিষ্ট একটু উদ্দেশ্যে আলোচনা করতে চাই। অনেক মানুষই প্রশ্ন করেন কেন আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাদেরকে কঠিন সময়ে ফেলেছেন এবং এটা একটা কঠিন প্রশ্ন। ওনারা জানতে চান কি এমন ওনারা করেছেন যে এইরকম কষ্টের মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে। এবং কখনো কখনো মানুষ এটাও বলে, যখন খারাপ কিছু হয়, এটা হয়েছে কারণ, “আমি কিছু খারাপ কাজ করেছি, কারণ এটা আমারই ভুল নয়তো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এরকম ইচ্ছা করেছেন আমার পরীক্ষা নিতে। আমি কিভাবে বুঝবো কোনটা আসল কারণ?” আবার কিছু মানুষ আছে যারা যখনই তাদের উপর কোন বিপদ আসে, তারা নিজেদেরকে এর জন্য দোষারোপ করে। তারা শুধু বলে, “আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ন্যায়বান… নিশ্চয়ই আমিই কিছু অন্যায় করেছি, আমি নিশ্চয়ই আমার পিতামাতার সাথে খারাপ আচরণ করেছি অথবা অন্য কিছু, এবং এই কারণে আমার গাড়ী এক্সিডেন্ট করেছে অথবা অন্যকিছু”। তারা অদৃশ্য থেকে দৃশ্যমান জগতে মনোযোগী হয়। এখন কিছু আয়াত আছে যা আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করবে, একদিকে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন, যেমন এই আয়াতে, আওয়া লাম্মা আসাবাকতুম মুসীবাতুনক্বাদ আসাবতুম মিছলায়হা যখন উহুদের যুদ্ধে মুসলমানেরা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছিলো, আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলছেন, “যখন তোমরা কোন বিপর্যয়ে আক্রান্ত হও, যেরকমটি তোমাদের শত্রুদের থেকে আগে ও এসেছে এবং তোমরা পরাহত করেছ” (ক্বাদ আসাবতুম মিছলায়হা) “আগের বছরই এরচেয়ে দ্বিগুণ ক্ষয়-ক্ষতি তোমরা তোমাদের শত্রুদের করেছ”। ক্বুলতুম আন্না হাথা তোমরা বললে, “এটা কীভাবে সম্ভব? আল্লাহ কী করে এরকম...

স্বপ্নের প্রকারভেদ – ২য় পর্ব (সমাপ্ত)

প্রসঙ্গতঃ স্বপ্নদোষ বা অশ্লীল স্বপ্ন এগুলোও শয়তানের পক্ষ থেকে। এ ধরণের স্বপ্ন দেখাতে একজন পুরুষ বা নারীর কোন দোষ নেই। যাইহোক, আপনারা সবাই এ বিষয়ে ফিকহ জানেন; এ রকম স্বপ্ন দেখলে এবং এটা হলে আপনাকে গোসল করতে হবে। এ স্বপ্ন শয়তানের নিকট থেকে, যদিও এতে আপনার কোন দোষ নেই কারণ আপনি আপনার স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ করেন না। এ কারণে নবীদের কখনো স্বপ্নদোষ হতো না। কোন নবীদের এটা হতো না। কারণ এ স্বপ্ন, এ রকম চরম নির্লজ্জতা শয়তানের নিকট থেকে। এটা প্রাকৃতিক, এতে আমাদের কোন অপরাধ বোধ করার প্রয়োজন নেই। একজন মানুষের জন্য এ পর্যায় অতিক্রম করা স্বাভাবিক। এর জন্য নিজের প্রতি কোন ঘৃণা অনুভব করার প্রয়োজন নেই। আমাদের উপলব্দি করা দরকার যে, শয়তানই এ রকম অশ্লীল দৃশ্য আমাদের দেখায় আর ভয়ংকর শীতের রাতে আমাদের গোসল করতে হয়। এটা আমাদের কাছ থেকে নয় বা আল্লাহর নিকট থেকেও নয়। এটা আসে শয়তানের কাছ থেকে। সুতরাং এটা আরেক রকম ‘হুলম’ বা অশুভ স্বপ্ন। এ ক্ষেত্রেও আমরা মানুষদের এসব বলে বেড়াই না। আমরা কাউকে বলি না, কিন্তু স্পষ্টতঃ যদি আমরা এরূপ অবস্থায় জেগে উঠি আমাদের গোসল করতে হবে। তো, এটা হল দ্বিতীয় প্রকারের স্বপ্ন। প্রথম প্রকার কি ছিল? ‘হাদিসুন নাফস’। দ্বিতীয় প্রকারঃ শয়তানের পক্ষ থেকে দুঃস্বপ্ন। তারপর আছে তৃতীয় প্রকার। তৃতীয় প্রকার হল- মুবাশশিরাত। এটাকে আরবিতে আরও বলা হয়- রু’ইয়া। রু’ইয়া হল আল্লাহর পক্ষ থেকে দেখানো স্বপ্ন। এটা একটা ইতিবাচক স্বপ্ন। আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন স্বপ্ন দেখলে আপনি ভীত হয়ে জেগে উঠবেন না। আপনি আতঙ্কিত হবেন না। যদি এমন হত তাহলে তো আর একে মুবাশশির (সুসংবাদ) বলা হত না। মুবাশশির শব্দটি বাশির, বাশারা থেকে আগত। মুবাশশির অর্থ কি? সুসংবাদ, ভাল সংবাদ, আশাব্যঞ্জক কিছু অথবা যদি এটা ইতিবাচক নাও হয় তবু এটা হবে প্রকৃত সত্য...

মু’জিযা

No Results Found

The page you requested could not be found. Try refining your search, or use the navigation above to locate the post.

Facebook Like

সাথেই থাকুন

 

<—-Facebook & YouTube —->

Youtube Subscriber