উস্তাদ নুমান আলী খান

নুমান আলী খান একজন মুসলিম দা’ঈ। কুর’আন এর জ্ঞানে তার অসাধারণ গভীরতা এবং সুন্দর উপস্থাপনা শৈলীর কারণে সমগ্র বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশ এবং বাংলাভাষাভাষী অনেক ইসলাম অনুরাগী তরুণ তাঁর অসাধারণ আলোচনা থেকে উপকৃত হচ্ছে নিয়মিত …

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন

বর্তমানে আমরা ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল এ নুমান আলী খানের লেকচার গুলো নিয়মিত প্রকাশ করছি এবং এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে তা শ্রেণীবদ্ধ ভাবে সংরক্ষণ করছি। আপনি আমাদের ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল লাইক /সাবস্ক্রিপশন করে আমাদের সাথে আরো নিবিড় ভাবে সংযুক্ত থাকতে পারেন।

আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন…

সংযুক্ত থাকুন

ভিডিও + প্রতিলিপি

কিভাবে নিজেকে সংশোধন করবেন?

কিভাবে নিজেকে সংশোধন করবেন?

বিভিন্ন আসক্তি থেকে বাঁচার প্র্যাকটিক্যাল কিছু উপদেশ। আমাদের সবারই চরিত্রের বিভিন্ন দিক রয়েছে যার উন্নতি সাধন প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজন ঠান্ডা মাথায় , গভীরভাবে নিজেকে পর্যবেক্ষণ করা যে , আমি আসলে চরিত্রের কোন ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করতে চাই ? আরো বেশি জ্ঞান অর্জন করার পূর্বে আপনি কি নিজের প্রতি সৎ থেকে একটা লিস্ট বানাতে পারবেন ? ইস ! এই বিষয়গুলো যদি আমি জীবনে না করতাম। ইস ! এই বিষয়গুলো যদি আমি আমার জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারতাম ! এটা হলো এক নাম্বার কাজ। তখন এই লিস্ট এ থাকবে এমন কিছু বিষয় যা আপনি আপনার জীবন থেকে বাদ দিতে পারতেন । আর কিছু বিষয় থাকবে এমন যা আপনি আপনার জীবনে যুক্ত করতে পারতেন ।এখন যে বিষয়গুলো আপনি জীবন থেকে বাদ দিতে পারতেন সেগুলোর ব্যাপারে নিজেকে প্রশ্ন করুন যে কিভাবে আমি এগুলো থেকে মুক্তি পেতে পারি ? উদাহরণ সরূপ কারো কারো হয়ত বিভিন্ন ধরনের আসক্তি থাকতে পারে। যেমন ..ড্রাগ , মদ্যপান বা পর্নোগ্রাফি যাই হোক কোনো এক ধরনের আসক্তি। এই আসক্তিগুলো সাধারণত ঘটে বিশেষ পরিস্থিতিতে। ধরুন , কোনো এক যুবক বাসায় একা, সে স্কুল থেকে কিছুটা আগেই বাসায় আসে, বাবা -মা এখনো কর্মস্হল থেকে ফেরত আসেনি, তার ঘন্টা দেড়েক বাসায় একা একা থাকার সুযোগ হয়। ঠিক তখনি সমস্যায় আক্রান্ত হয়। সুতরাং আপনি নিজেই বুঝতে পারেন যে , হ্যাঁ আমি এই খারাপ কাজটা করি। কিন্তু আমি এটা করি একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে। তাই আমি যদি এই নির্দিষ্ট সময় এবং নির্দিষ্ট পরিস্থিতির মাঝে কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারি তাহলে এটা আমাকে সাহায্য করতে পারে। আমি জানি আমি একা একা বাসায় থাকলে আমার সমস্যা হয়। আমি হয়ত এই বিষয়টা আগে চিন্তা করে দেখিনি। মনে হয় আমার আরো বেশি সময় স্কুলে থাকা উচিত। অথবা আমি এই...
ফিরাউনের শাসন প্রণালী ও আজকের বিশ্ব

ফিরাউনের শাসন প্রণালী ও আজকের বিশ্ব

উস্তাদ নুমান আলী খানের “Speak up, Make a Difference” লেকচারের অংশ বিশেষ।   আজকের খুতবায় আমি একটি উচ্চ লক্ষ্য স্থির করেছি। আমি সচরাচর এমনটা করিনা। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে আমি এটা করাকে আবশ্যক মনে করছি। আমি শুরুর আগে আপনাদের কিছু পূর্ব ধারণা দিতে চাই। আল্লাহ আযযাওয়াজাল কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় মুসা (আঃ) এবং তাঁর সংগ্রাম নিয়ে কথা বলেছেন। এবং মুসা (আঃ) এর কাহিনীতে অন্যতম একজন, যাকে আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে, তিনি হলেন মুসা (আঃ) এর একজন বন্ধু। এই বন্ধুটি তৎকালীন মিশরীয় সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন, তিনি ফিরাউনের অধীনে ছিলেন। তাকে আপনারা একজন সেনা প্রধান অথবা পুলিশ প্রধান হিসেবে ভাবতে পারেন। যেহেতু সেটা ছিল একটি পুলিশি রাষ্ট্র। এবং মুসা (আঃ) এর সাথে বন্ধুত্বের কারণে তিনি মুসলিমও হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এটা কাউকে বলেননি। তিনি চুপিচুপি মুসলিম ছিলেন। এবং এই ব্যক্তিই হল সেই ব্যক্তি যিনি মুসা (আঃ) কে মিশর থেকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন। সূরা গাফিরে আল্লাহ আমাদের এই ব্যক্তি সম্পর্কে বলছেন, আমাদের সময়ে তাফসিরে তাকে যে নামে ডাকা হয়, যেহেতু তার নাম উল্লেখ করা নেই, তা হল “মু’মিনু আলি ফিরাউন”, ফিরাউনের সম্প্রদায়ের বিশ্বাসী। ফিরাউনের অধীনস্থ বিশ্বাসী। কিছু একটা ঘটল মুসা (আঃ) এর জীবনে, এমন কিছু যা আগে কখনও ঘটেনি এবং তা এক সময় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। আর আমি আজকে এই চূড়ান্ত পর্যায়টি নিয়েই আলোচনা করতে যাচ্ছি। নিশ্চিতভাবেই ক্ষমতাবান কারও যদি মুসা (আঃ) এর প্রতি সামান্য সহানুভূতি থেকে থাকে তবে সে হল ফিরাউন নিজেই। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মুসা (আঃ) সম্পর্কে বলেছেন, “ওয়া আল্কাইতু আলাইকা মহাব্বাতান মিন্নি” (সূরা তাহাঃ ৩৯)। “আমি তোমার প্রতি এক বিশেষ ভালোবাসা প্রদান করেছি, যা শুধু আমার পক্ষ থেকে।” এই ভালবাসার একটি নিদর্শন হলঃ যখন ফিরাউন তাঁকে প্রথমবার দেখেছিল সে তাঁকে ভালবেসে ফেলেছিল। যদিও শিশুটি ছিল বানী ইসরায়েলের, সে ছিল দাস...
জীবনে কেন বিপদাপদ ঘটে? পর্বঃ ০৩ (শেষ পর্ব)

জীবনে কেন বিপদাপদ ঘটে? পর্বঃ ০৩ (শেষ পর্ব)

এটা ছিল দু’টো আয়াতের একটি যে ব্যাপারে আমি কথা বলতে চেয়েছিলাম। বিপদের প্রতি আমাদের প্রতিক্রিয়া হল- “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না লিল্লাহি রাজিউন”। কিন্তু এখন শেষ কিছু মিনিটে আমি অন্য একটা বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই, জীবনে যত বিপদ আপদ, সমস্যা, চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় সেগুলো নিয়ে। আর সেটা হল কুরআনে দুই ধরনের আয়াত আছে। এক ধরণের আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন যে যা কিছুই তোমাদের ক্ষেত্রে ঘটে مَا أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي أَنفُسِكُمْ إِلَّا فِي كِتَابٍ مِّن قَبْلِ أَن نَّبْرَأَهَا ‘’পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে।‘’( সূরা হাদিদ -২২) জীবনে যত রকম বিপদ হয়, যেখানেই হোক, যার উপরেই হোক, এমন কোন বিপদ নেই আকাশে মাটিতে যেখানেই হোক, যেটা আগে থেকেই কিতাবে লেখা নেই। এটা পূর্ব নির্ধারিত। অর্থাৎ এটি আল্লাহ পাকের কদর, যে এটা হবেই, হবারই ছিল। ধরুন কেউ একজন খুব অল্প বয়সে মারা গেল, আপনি এটা বলতে পারেন না যে আহা বেচারার পুরো জীবনটা সামনে পড়ে ছিল। না, তার ছিল না। এই রকম কিছুর অস্তিত্ত নেই। তার জীবনটা ওইটুকুই নির্ধারিত ছিল। এই দুনিয়াতে তার সময় ওইটুকুই ছিল, বেশিও নয়, কম ও নয়। আমার এই দুনিয়াতে থাকার সময়ও নির্ধারিত, আপনার সময়ও নির্ধারিত। আপনি বিভিন্ন কবরস্থানে গেলে দেখবেন যে কারও কারও জন্ম ১৯০১ সালে, মারা গেল ২০১৩ সালে। আবার এটাও দেখবেন যে কেউ জন্ম নিল ২০১৩, আবার মারাও গেল ২০১৩ সালে। এমন কবরও আপনি পাবেন। আর এটা আল্লাহ পাক আগেই নির্ধারণ করে রেখেছেন যে কতটুকু সময় আমরা প্রত্যেকে এই দুনিয়াতে থাকব। এটা নির্ধারিত।আপনি বলতে পারেন না যে আজ যদি সে বেঁচে থাকতো !না, না, না । কারণ এটা ঠিক করা ছিল, আগে থেকেই! আরেকটি ব্যাপার আল্লাহ পাক বলেন...
জীবনে কেন বিপদাপদ ঘটে? পর্বঃ ০২

জীবনে কেন বিপদাপদ ঘটে? পর্বঃ ০২

আমাদের মনে নানা ধরনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য আছে, যা আমরা মনে করি আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। অথচ আল্লাহ বলেন, এর চেয়েও অনেক মূল্যবান কিছু তোমাদের মনে আছে, যদি তোমরা তা বাস্তবায়ন করতে পার- যদিও এর মূল্য তোমরা অনুধাবন করতে পার না, তবে আমি তোমাদের জানাচ্ছি এর মূল্য কতখানি! – এর মূল্য হলো এটা অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। আর ঠিক এরপরেই, এই অভিনন্দন জানানোর পরই আল্লাহ পাক বলেন الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُو ” যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।” (সূরা বাকারাঃ ১৫৬) কোন ধৈর্যশীল ব্যক্তিদের জন্য এই অভিনন্দন? যখনই একটি নির্দিষ্ট বিপর্যয় তাদের আঘাত করে , যে কথাটি প্রথমেই তাদের মুখে চলে আসে –‘কালু’ (তারা বলে) , এমনকি ‘ফাক্বালু’ও (অতপর তারা বলে ) নয়। এমনকি ‘ছুম্মা ক্বালু’ ও (এরপর তারা বলে) নয়। আল্লাহ পাক বলছেন না যে, তখন তারা বলে। যদি এটা ঘটে বা যখন ঘটে তখন তারা বলে। বাক্যটিতে কোন “যদি” নেই, এমনকি “তখন” কথাটিও নেই। কেন নেই? কারণ এটা হতে হবে একটি তাৎক্ষণিক জবাব! আমরা ফিজিক্স , মেডিসিন অথবা বায়োলজিতে পড়ে থাকতে পারি, ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে। যখন একজন ডাক্তার আমাদের শারীরিক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করে তখন সে হাটুতে হালকা আঘাত করে এবং হাটু তাৎক্ষণিকভাবেই একটু উপরে উঠে যায়। তারা এই রিফ্লেক্সগুলোকে পরীক্ষা করে। এই আয়াতটি আমাদের এটাই শিখাতে চাচ্ছে যে, যখন যাবতীয় বিপদ-আপদ আপনার আমার উপর আসবে, আমাদের একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত। প্রতিক্রিয়া কখনই দেরিতে হয়না, সঙ্গে সঙ্গেই হয়ে যায়। কাউকে জোর করে করতে হয়না, এমনিতেই চলে আসে। আর কী চলে আসে ? “ইন্না লিল্লাহি” কোন সন্দেহ নেই, আমরা আল্লাহ্‌রই জন্য। “ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন” এবং আমরা একমাত্র তার...
জীবনে কেন বিপদাপদ ঘটে? পর্বঃ ০১

জীবনে কেন বিপদাপদ ঘটে? পর্বঃ ০১

আজকের খুতবায়, ইনশাআল্লাহু তা’য়ালা, আমি আপনাদের সাথে আমাদের দ্বীন এর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধারণা প্রসঙ্গে বলব। যে সম্পর্কে কুর’আনে বহুবার বলা হয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে, অন্ততঃ আমার জানা মতে, অবশ্যই আল্লাহ আযযা ওয়াযাল ভাল জানেন, আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সাধারন মুসলিমরা বিশেষতঃ এই বিষয়টিতে বেশ বিভ্রান্ত (কনফিউজড), আর যে বিষয়টি কি না আমাদের ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত। কেননা এটা আমাদের কথাবার্তায় চলে আসে এবং ব্যাপারটি নিয়ে অনেকেই অনেক কষ্ট পেয়ে থাকেন শুধুমাত্র ঠিকমত এ বিষয়টি না বোঝার কারণে। আর তাই আজকের খুতবার বিষয়টি হলঃ “কেন বিপদাপদ ঘটে? কেন (জীবনে) বিপদাপদ আসে?” আর আমরা যদি এই বিষয়টিকে আমাদের ঈমানের অংশ হিসেবে না দেখি, তখন আমরা অনেক সময় বিপদগ্রস্ত কাউকে এমন কিছু বলে বসি, যা কি না তাকে আরও বেশী কষ্ট দেয়। উদাহরণস্বরূপ, এইতো ক’দিন আগেই আমি কথা বলছিলাম আমার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের সাথে। কথা হচ্ছিল আমাদের প্রয়াতঃ দাদীকে নিয়ে। উনি মারা গেছেন (আল্লাহ ওনাকে রহম করুক)। মারা যাওয়ার আগ দিয়ে উনি অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তো আমাদের পরিবারেরই এক চাচাতো ভাই (কাজিন) এর ধারণা হল, ওনার এই মৃত্যুকষ্ট পাওয়ার কারণ, উনি যখন অল্পবয়সের ছিলেন তখন কোন এক চাচী বা কারও একজনের সাথে ভীষণ খারাপ ব্যবহার করতেন! আর সেজন্যই আল্লাহ ওনাকে মারা যাওয়ার আগে এত কষ্টের ভেতর দিয়ে নিয়েছেন! তারা এসব কথাচ্ছলে বলে। কথার কথায় বলে ফেলে। কিন্তু আসলে প্রথমতঃ এধরণের কথা খুবই বেদনাদায়ক, আর কাউকে নিয়ে এমন কথা বলা কতটুকু ন্যয়সঙ্গত যে আল্লাহ অমুক কারণে তাকে শাস্তি দিচ্ছেন, বিশেষত এমন কাউকে নিয়ে বলা যিনি ইতোমধ্যে মারা গিয়েছেন। সত্যি বলতে কী, আমি খেয়াল করে দেখলাম, আমাদের পারস্পরিক কথাবার্তায় আমরা অহরহ এধরণের কথা বলে থাকি একজন আরেকজনকে। “জানো, কেন তোমার এমন হচ্ছে?? কারণ, আল্লাহ তোমার প্রতি নারাজ!” এমনকী আমি বাবা-মাদেরকেও এধরনের কথা ব্যবহার করতে...

প্রবন্ধ

স্বপ্নের প্রকারভেদ (১ম পর্ব)

আমরা কুরআন এবং সুন্নাহ থেকে জানতে পারি যে, স্বপ্ন আসতে পারে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালার কাছ থেকে, স্বপ্ন আসতে পারে শয়তানের কাছ থেকে এবং আপনি নিজের কল্পনা থেকেও স্বপ্ন দেখতে পারেন। সুতরাং স্বপ্নের তিনটি বিভাগ রয়েছে। আল্লাহর কাছ থেকে স্বপ্ন। নবীরা এ ধরনের স্বপ্ন দেখে থাকেন। তাঁরা অন্য দু’ধরনের স্বপ্ন দেখেন না। এটা নবীদের বেলায় ঘটে। নবীরা শুধু আল্লাহর কাছ থেকে স্বপ্ন দেখেন। আল্লাহ তাদের স্বপ্ন শয়তানের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছেন। এবং আল্লাহ তাদের নিজেদের কল্পনা থেকেও তাদের স্বপ্নকে সংরক্ষিত করেছেন। আর তাই যখনই একজন নবী একটি স্বপ্ন দেখেন সেটা অহি হিসেবে গণ্য করা হয়। এটাকে আল্লাহর নিকট থেকে অহি হিসেবে দেখা হয়। একজন নবীর প্রতিটি স্বপ্ন হল আল্লাহর নিকট থেকে অহি। আমরা ব্যাপারটি ইব্রাহীম (আ) এর পরিবারের বেলায় দেখেছি। ইব্রাহীম (আ) এর কি ঘটেছিল? তিনি ইসমাইল (আ) এর ব্যাপারে একটি স্বপ্ন দেখেন। তিনি দেখেন যে, তিনি ইসমাইল (আ) কে কুরবানি করছেন। ‘ইন্নি আরা ফিল মানামে আন্নি আজবাহুক’ আমি স্বপ্নে দেখেছি যে আমি তোমাকে জবেহ করছি। তাহলে নবী ইব্রাহীম (আ) আমাদেরকে স্বপ্নের বাস্তবতা সম্পর্কে বলেছেন। তাঁর পরবর্তী বংশধর ইউসুফ (আ)ও একটি স্বপ্ন দেখেন। সুতরাং স্বপ্ন এমন একটা বিষয় যা আল্লাহর নবীদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু এটা একমাত্র নবীদের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। এটা সম্ভব যে, নবী নয় এমন মানুষও এ ধরনের স্বপ্ন দেখতে পারেন। তিরমিজি শরিফের একটি হাদিসে রাসূল (স) বলেন- নবুওতের অংশ থেকে শুধু ‘মুবাশশিরাত’ বা সুসংবাদ অবশিষ্ট রয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হল – ‘মুবাশশিরাত’ কি? হে আল্লাহর রাসূল (স)। তিনি বলেন- “এমন স্বপ্ন যা তুমি দেখ বা অন্য কেউ দেখে যেখানে তুমি রয়েছ।” হয় তুমি দেখেছ বা অন্য কেউ দেখেছে আর সে এসে তোমাকে বলে যে, ভাই আমি আপনাকে একটি স্বপ্নে দেখেছি। আমি এরূপ এরূপ দেখেছি। এটাকে বলা...

আদম (আ) এর গল্প ও একজন অমুসলিম প্রফেসরের ইসলাম গ্রহণ

এখানে আমি প্রফেসর জেফ্রি লেংস এর ঘটনা শেয়ার করতে চাই। অসাধারণ এক লেকচার! তার ঘটনা শুনে আমি হতভম্ব। তাঁর কথা শুনে সম্পূর্ণরূপে অভিভূত। তিনি একটি কঠোর পরিবেশে বড় হন। তাঁর মা একজন অসাধারণ মহিলা ছিলেন। তিনি একজন নার্স ছিলেন, একটি হাসপাতালে নিয়মিত কাজের পাশাপাশি অতিরিক্ত কাজও করতেন। সবাই তাকে ভালোবাসতো। যখনই তিনি হাসপাতালে তার মাকে আনতে যেতেন, সেখানকার রোগীরা বলতো- তোমার মা তো একজন সাধু মহিলা। তার মায়ের মৃত্যুর পর লোকজন এসে বলতে লাগলেন তার মা কেমন ভাল মহিলা ছিলেন। মোটকথা চমৎকার এক মহিলা ছিলেন; জেফ্রি ও তার ভাইয়ের জীবনে তিনি গভীর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেন। অপরদিকে, তার বাবা ছিলেন একজন মদ্যপায়ী, খারাপ মানুষ; যিনি তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়মিত মারধোর করতেন, গালিগালাজ করতেন। জেফ্রি তার মাকে জীবনে একটি বারের জন্যও গালি দিতে শুনেন নি। তার বাবা তাকে এবং তার মাকে নিয়মিত প্রহার করতেন। মোটকথা তার বাবা খুবই জঘন্য চরিত্রের এক মানুষ ছিলেন। দেখতে দেখতে জেফ্রি ষোল বছর বয়সে পৌঁছে গেলেন, কিন্তু তিনি এর কোন কারণ খুঁজে পেলেন না। তিনি একজন ক্যাথলিক খ্রিস্টান হিসেবে বেড়ে উঠেন। তার মা খুবই ধার্মিক একজন মহিলা ছিলেন। তিনি ভাবতেন- “কোন ধরনের প্রভু এটা ঘটতে দিতে পারেন? কোন কারণে তার মা এর যোগ্য হল? কী দোষ ছিল আমার, কেন আমি সবসময় এরকম মার খেতাম?” তিনি সবসময় গডের কাছে প্রার্থনা করতেন যেন পরিস্থিতি ভাল হয়ে উঠে। পরিস্থিতি কি ভাল হয়েছিল? না, হয়নি। বাচ্চা বয়সে তিনি এভাবে প্রার্থনা করতেন, কিন্তু কোন জবাব পেলেন না। তারপর কী ঘটলো? তিনি ভাবতে লাগলেন- “কেউ কি আসলে আমার প্রার্থনা শুনছে? নাহ! কোন গড নেই, যদি থাকতো তাহলে এরকম ঘটবে কেন?” এভাবে তিনি মানবতার উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন- যদি সত্যিই একজন প্রভু থেকে থাকে আমাদের কেন তিনি সৃষ্টি করলেন? কেন...

সফল হওয়ার মানে কী?

বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাই। আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু। إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُّبِينًا لِّيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِن ذَنبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ وَيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكَ وَيَهْدِيَكَ صِرَاطًا مُّسْتَقِيمًا وَيَنصُرَكَ اللَّهُ نَصْرًا عَزِيزًا ইনশাআল্লাহ আজকের এই সিক্রেট টপিক, আয়োজকদের বলেছিলাম সিক্রেট টপিক কারণ আমি তখনও এটি নিয়ে চিন্তা করছিলাম। যেটি নিয়ে আমি গত কয়েকটি মাস ধরে চিন্তা করে যাচ্ছি, সেটি নিয়ে কথা বলবো। আমি অনুভব করি যে আমাদের উম্মাহের মাঝে ভিন্ন ভিন্ন অনেক গুলো ব্যাপারে বিভ্রান্তি কাজ করে। আমরা আমাদের চারপাশে বাস্তবতা দেখছি, সেটা হতে পারে রাজনৈতিক বাস্তবতা অথবা সামাজিক বাস্তবতা কিংবা ইকোনোমিক বাস্তবতা অথবা আমাদের নিজেদের জীবনের সাথে সম্পর্কিত বাস্তবতা। আমাদেরকে সবসময়ই কিছু একটা নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে, কোন একটা খবর এর অর্থ বুঝার চেষ্টা করতে হচ্ছে অথবা আমাদের জীবনের কোন একটি চ্যালেঞ্জ এর মোকাবেলা করার উপায় খুঁজতে হচ্ছে। কিন্তু আমি খুব বেশি একটি ব্যাপার অনুভব করি যে, আমরা আমাদের চারপাশের বাস্তবতাকে আল্লাহর বইয়ের সাপেক্ষে বিচার করি না। অন্যভাবে বলা যায় যে, বাস্তবতাকে বুঝার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আল্লাহর থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানের বিভিন্ন concept কে ভালোভাবে বুঝা। এবং যখন আপনি এগুলো শিখে যাবেন, তখন আপনার দৃষ্টিভঙ্গি, আপনার দৃষ্টিকোণ এবং মতামত বদলে যাবে। আমি একটি উদাহরণ দিয়ে শুরু করবো। আপনি কল্পনা করুন যে আপনার চোখের দৃষ্টি খুবই দুর্বল কিন্তু আপনি আপনার চশমাটি ব্যবহার করছেন না। এই অবস্থাতেও আপনি দেখতে পারবেন, কিন্তু সেই দেখার মাঝে অনেক কিছুই মিসিং থাকবে। আপনি হয়তো একটি সাইনবোর্ডের আকৃতি বুঝতে পারবেন, কিন্তু সেটাতে কি লিখা আছে তা পড়তে পারবেন না। কিন্তু যখনই আপনি আপনার নির্দিষ্ট পাওয়ারের চশমা পড়ে নিবেন, তখনই সব কিছু পরিষ্কার ভাবে পড়তে পারবেন। এখন আপনি পবিত্র কোরআনকে এমনই একটি সঠিক পাওয়ারের চশমা হিসেবে ভাবুন। যখনই আপনি...

কুরআন কি বুঝে পড়ব নাকি মুখস্থ করব?

আস সালাম আলাইকুম সবাইকে, এখানেএকটি শান্ত / গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে এসেছে গালফ সফর থেকে, আমি কোরআন পড়ি কিন্তু আমি আরবি বুঝি না , সুতরাং আমি কোরআন পড়ার সময় কোন কিছুই বুঝতে পারি না । এটি কি শুধুমাত্র ইংরেজিতে পড়া যায় না এবং এই সকল লোকজনরা বলেন যে তোমাকে কোরআন মনে রাখতে হবে, কোরআন মুখস্থ করলে আরও বেশী (সাওয়াব) পাওয়া যাবে, এবং এখানে এমন অনেকে বাবারা আছেন যারা কোরআন মুখস্থ করেছেন কিন্তু অর্থ বুঝেন নি । আমাদের কি মানুষকে কোরআন মুখস্ত করতে না বলে কোরআন পড়তে বলা উচিতনা? এবং আপনি জানেন কি আমি যখন এই প্রশ্নটি শুনি আমি কিছু উপলব্ধি করলাম, যে প্রতিটা কাজেরই একটি সমান ও বিপরীত মুখী প্রতিক্রিয়া আছে । আমাদের সমাজে কিছু চরমপন্থী লোক আছেন, আমাদের কিছু একমুখী লোক রয়েছেন যারা কোরআন মুখস্ত করার উপর গুরুত্ব দেন কিন্তু বুঝার উপর গুরুত্ব দেন না, এবং আপনি একজন বিজয়ী হয়ে যাবেন যখন আপনি কোরআন মুখস্ত করে ফেলবেন এবং আপনি তারাবী সালাত পড়াবেন এবং আপনি অনেক সুন্দর করে তেলাওয়াত করবেন এবং লোকজন বলবে যে আপনি কতো চমৎকার তাজউয়ীদ উল কোরআন, কিন্তু আপনার কোন ধারনাই নেই যে এখানে এই সকল আয়াতে কি বলা হয়েছে । এটা হয় এক প্রকার চরমপন্থা, এবং এই চরমপন্থা আরও অন্যান্য চরমপন্থার জন্ম দেবে, আপনি জানেন কি এই সকল লোক কোরআন তেলাওয়াত করছেন কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই এবং এরা শুধুমাত্র সুন্দর করে শব্দগুলো তেলাওয়াত করে যাচ্ছে , কিন্তু প্রকৃত বার্তা / সংবাদটি কি ? আমাদের উচিত মুখস্ত করার কথা ভুলে যাওয়া / বাদ দেয়া , আমাদের পড়া এবং বুঝার উপর ফোকাস করা / গুরুত্ব দেয়া উচিত , আপনি জানেন এটি কি, এটি হচ্ছে দুটি চরমপন্থা । এই সকল ক্ষেত্রে প্রকৃত সত্যটি এই ২ টি ঘটনার মাঝখানে বিরাজমান থাকে,...

স্ত্রী এবং শ্বশুর-শ্বাশুড়ি

-আসসালামু আলাইকুম। কেমন চলছে? -আলহামদুলিল্লাহ। – কেমন চলছে? – আলহামদুলিল্লাহ ভালো। -পরিবার? -পরিবারও ভালোই আছে। -তোমার বাবা কেমন আছে? তাঁকে আমার সালাম পৌঁছে দিও দয়া করে। ইনশা আল্লাহ। -শনিবারে সে আসবে। -ও তাই! তাহলে তো দেখা হচ্ছে! ও দাঁড়াও! আমি তো শনিবার থাকবো না। -আপনি কোথায় যাচ্ছেন? – আমি হিউস্টন যাচ্ছি ইনশা আল্লাহ। – আপনার কি অনেক প্রোগ্রাম থাকছে আজকাল? – হ্যাঁ। অনেক প্রোগ্রাম আছে। -কেমন চলছে প্রোগ্রামগুলো? – অনেক প্রোগ্রামই তো আছে। একটা ঘটনা আমার মাথায় এখনো গেঁথে আছে, প্রোগ্রাম শেষে এক মহিলা আমার কাছে এসে আমাকে এক পাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে তার স্বামী নিয়ে কথা বলা শুরু করলো। আমার শোনা সবচেয়ে খারাপ ঘটনা এটি নয়, কিন্তু যথেষ্ট জগাখিচুড়ি পাকানো একটি ঘটনা। সে এসে বলেছিল, আমার স্বামী যথেষ্ট ধার্মিক। সে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়ে। সবসময় মসজিদে যায়। ইত্যাদি, ইত্যাদি। কিন্তু একইসাথে, সে আমাকে আমার পরিবারের সাথে দেখা করতে নিষেধ করে। আমি যখন তাদের কল করি, যখন তাদের সাথে দেখা করতে যাই, সেটা সে পছন্দ করে না। আমাকে খুব কষ্ট করে, লুকিয়ে লুকিয়ে আমার মাকে কল করতে হয়, দেখা করতে হয়। যদি আমি আমার স্বামীকে না বলি যে, আমি আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি, তাহলে কি আমি গোনাহগার হব? কারণ, আমাকে তো আমার স্বামীর কথা মেনে চলতে হবে। সে আমাকে বলে, স্ত্রীদের উপর পুরুষের কর্তৃত্ব রয়েছে। তাই সে যা বলে, আমাকে তো তাই করতে হবে। সে হচ্ছে ঘর-বাড়ির আমির। সে বলে- আল্লাহ এবং তার দ্বীন এর মতে, সুন্নাহ এবং শরীয়াহ এর মতে, তোমাকে আমার কথা মেনে চলতে হবে যেহেতু তুমি আমার ঘরে বাস কর। তুমি তোমার পরিবারের সাথে, ভাইবোনদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারবে না। এবং এগুলোর সাথে সে তার উপর আরও শর্ত আরোপ করে, আমি চাই না তুমি...

মু’জিযা

No Results Found

The page you requested could not be found. Try refining your search, or use the navigation above to locate the post.

Facebook Like

সাথেই থাকুন

 

<—-Facebook & YouTube —->

Youtube Subscriber