ভিডিও + প্রতিলিপি

বিয়ে আর ডেটিং কি একই?
আসুন আমরা একটু চিন্তা করি, বিয়ের মাধ্যমে নিজের লজ্জাস্থান সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে। বর্তমান সময়ে একজন যুবক বিয়ে করার পূর্বে কি করছে? ধরুন সে এদিক সেদিক কিছু মুভি দেখেছে, মানে তাওবা করে ধার্মিক হওয়ার আগে আরকি। আর এসব মুভির মাধ্যমে তার মধ্যে ভালোবাসা আর বিয়ে নিয়ে কিছু ধারণা গড়ে উঠছে। প্রায়ই ভাইয়েরা আমার কাছে এসে বলে, “ভাই, আমার বিয়ে করা খুবই জরুরি”। তাদের ভিতর এমন একটা ধারণা হয়েছে যে, একবার বিয়ে হয়ে গেলেই যাবতীয় লালসা নিমিষেই উধাও হয়ে যাবে, জীবন শান্তিতে পূর্ণ হবে, “আমরা একসাথে কুরআন পড়ব” ইত্যাদি ইত্যাদি…। এটা একটা আধ্যাত্মিক ব্যাপার হয়ে উঠবে, আর এভাবে তাদের মনে বিয়ে নিয়ে অতিরঞ্জিত একটি ধারণা গড়ে উঠে। আপনারা যারা বিবাহিত তারা খুব সম্ভবত হাসতেও ভুলে গিয়েছেন, আপনারা ভাবছেন “এইসব কি বলছে?” কারন আপনারা ভুলেই গিয়েছেন এসব অনুভুতির কথা। অবশ্যই আপনারা কখনও কখনও কঠিন বাঁধার সম্মুখীন হন, কারন আমাদের বিয়ে সম্পর্কে যা দেখানো হয়, যে ধারণা দেয়া হয়, বিশেষ করে আধুনিক সময়ে, সে মুসলিমই হোক আর অমুসলিম, আধুনিক সময়ে নারী আর পুরুষের মাঝে ভালোবাসা, নির্ভরশীলতা বা বোঝাপড়ার যে ধারণা দেয়া হয় তার সাথে ডেটিং এর ধারনার কোন পার্থক্য নেই। আর ডেটিং মানে হল, যতদিন সম্ভব আনন্দ করা, তারপর যখন কোন কঠিন সময় আসে আপনি সব ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে যান। এটাই ডেটিং, ঠিক কিনা? তাই আমরা যখন বিয়ে নিয়ে চিন্তা করি, ভাইয়েরা এমনকি বোনেরাও যখন বিয়ে নিয়ে চিন্তা করেন, তারা বিয়েকে ডেটিং এর মতই ভাবেন। কিন্তু আপনারা নিশ্চয় জানেন বিয়ে আসলে ডেটিং এর চেয়েও অনেক বড় কিছু, তাইনা? টাকা পয়সা খরচ, ঘরের কাজকর্ম, আরেকজন মানুষের সাথে থাকতে শেখা, মাঝে মাঝে এটা খুবই কঠিন মনে হয়, আপনি আপনার মত করতে চান, সে তার মত করতে চায়, কখনও তোয়ালে বাঁকা ভাবে রাখা নিয়ে, অথবা...
আমি মুসলিম অথচ আমি নামাজ ঠিকমতো আদায় করতে পারিনা
মহান আল্লাহর নামে শুরু করছি এবং রাসুলের প্রতি দরূদ পেশ করছি। আসলে দুটি আলাদা সমস্যায় দুই ধরনের উত্তর দেয়া হয়। প্রথম সমস্যা হল, কেউ বলছে আমি দিনে পাঁচ বার সালাত আদায় করতে পারি না। আমি এটা পারছি না। এখন, প্রথমত আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না। যেই বলুক আমি এটা পারছি না, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না। কেন জানেন? কারন আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি। আর আমি বলিনি আমি আল্লাহকে স্বীকার করি, আমি বলেছি আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি। এর মধ্যে পার্থক্য আছে, তাই না? আমি আল্লাহকে স্বীকার করি মানে আমি আল্লাহের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি। কিন্তু যখন আমি বলি, আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি, তার অর্থ আমি তার কথাগুলো বিশ্বাস করি। তিনি বলেন…আল্লাহ্ কখনোই কারও উপর সামর্থের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেন না। এটাই আল্লাহ্ বলেছেন । তিনি বলেছেন তিনি কারও উপরে এমন দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না যতক্ষন না তারা সেই দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা অর্জন করে। আপনি বলছেন, আপনি এমন দায়িত্ব পালনে অক্ষম যা আল্লাহ্ আপনাকে দিয়েছেন। তাই নয় কি? আপনি বলছেন, আমি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে পারছি না। এটা মাত্রাতিরিক্ত! আর আল্লাহ্ বলছেন আপনি পারবেন। সুতরাং আমাকে বেছে নিতে হবে, আমি আপনাকে বিশ্বাস করব না আল্লাহকে। এবং সম্ভবত যদি আপনি তা বুঝতে না পারেন তাহলে নিজের সাথে মিথ্যাচার করছেন। সম্ভবত আপনি এমন ভাবছেন আপনার আলসেমীর কারনে, নিজের ইচ্ছার অভাবের কারনে, আপনি দিনে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে চান না। আপনাকে পারতে হবে… আমি আপনাকে বুঝতে পারছি না, আমি জানি না সমস্যাটা কি? কিংবা সমস্যাটা হল, আপনি অমুসলিমদের সামনে সালাত আদায়ে লজ্জা পাচ্ছেন। মানুষ কাজের ফাঁকে ১৫ মিনিট ধূমপানের বিরতি নিতে পারে, তাই না? তারা বিরতি নিয়ে বাইরে যেতে পারছে, যা খুশি করতে পারছে আর আপনি দিনে ৫ বার সালাত আদায় করতে পারছেন...
কোথায় আপনার লজ্জাবোধ?
আপনার যদি কোন সমস্যা না থাকে কোন মেয়ের দিকে তাকানোর প্রতি, অশালীনভাবে তাকানোতে, অর্থাৎ আপনি তার দিকে সম্মানের সাথে তাকাচ্ছেন না, আপনি যেন তাকে পশু বা মাংসপিণ্ড মনে করছেন, যদি এই আপনার মনোভাব হয়, তার মানে এই যে, আপনার নিজের মায়ের প্রতি, নিজের বোনের প্রতি, নিজের স্ত্রীর প্রতি, নিজের কন্যার প্রতি আপনার কোন শ্রদ্ধাবোধ নেই। তারাও নারী। আপনি কখনই চাইবেন না যে মানুষ তাদের দিকে অশোভন ভাবে তাকাক। আর আপনি যার দিকে তাকাচ্ছেন তিনিও কারো মেয়ে, কারো বোন বা কারো মা। তাই সাবধান হউন। এমনকি উনাদের যদি নিজেদের জন্য শ্রদ্ধা নাও থাকে, কখনও অমুসলিম নারীদের নিজেদের প্রতি সম্মানবোধ থাকেনা, তাই তারা কখনো কখনো অশালীন পোশাক পরে, এমনকি মুসলিমরাও অশোভন পোশাক পরে থাকে। কিন্তু আপনারতো নিজের প্রতি এবং আপনার পরিবারের নারীদের প্রতি সম্মানবোধ আছে, তাই আপনি নিজের দৃষ্টিকে নত করুন। অবশ্যই করুন। আর এটা খুবই ঘৃণ্য ব্যাপার যে, পুরো পরিবারে সবাই একসাথে বসে মুভি দেখে, আর যখন কোন আপত্তিকর দৃশ্য আসে, তখন মা আর মেয়ে তাদের স্বামী আর ভাইদের সাথে একসাথে তা দেখে – “ওহ, এইটা মাত্র একটা খারাপ দৃশ্য, এইটা এমন কিছু না”! এটা খুবই ন্যাক্কারজনক, এটা কোন মুসলিম পরিবারের আচরণ হতে পারেনা। এই ধরণের অশ্লিলতায় আমাদের বিরক্তি হওয়া উচিৎ। আমাদের এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। এটা আমাদের সমাজের একটা বিশাল সমস্যা, আমাদের সমাজে অনেক ভাল ব্যাপার আছে, অনেক অনেক ভাল দিক আছে। কিন্তু এটা এমন একটা ব্যাপার যা আমাদের তরুণদের ধ্বংস করে দিচ্ছে। অশ্লিলতার অতিরিক্ত প্রকাশ। কোন এক মেয়ে যদি আপনাকে মেসেজ পাঠায়, “আমি তোমার ফেসবুক ফ্রেন্ড হতে চাই”। ঠিক আছে। কিন্তু আমি চাইনা। না। যাও তোমার ভাইয়ের সাথে ফ্রেন্ডশিপ কর! তোমার কি বাবা নেই? সে কি তোমার সাথে বন্ধুভাবাপন্ন নয়? তোমার কেন অন্য বন্ধু দরকার? আমি খুব গুরুত্ব...
কুরআনের ভাষাগত মুজিযাঃ ঈসা (আঃ) এর সম্মান
কুর’আন যে আল্লাহর কিতাব তার আরো একটি প্রমাণ হল কুর’আনে ঈসা (আঃ) কে আল্লাহ কী দারুনভাবে উপস্থাপন করেছেন। উস্তাদ নুমান আলী খানের এই লেকচারটিতে সেটাই তুলে ধরা হয়েছে। ………… কুর’আনে ঈসা (আঃ) কে যে সম্মান দেয়া হয়েছে, আমি আপনাদেরকে এর একটি অনুপম দৃষ্টান্ত দিচ্ছি। মুসা (আঃ) কে কোন জাতির কাছে পাঠানো হয়েছিল? বনি ইসরাইল, সবাই এটা জানে, বনি ইসরাইল। আর ঈসা (আঃ) এর প্রাথমিক শ্রোতা কারা ছিল? বনি ইসরাইল নাকি অন্য কেউ? অবশ্যই বনি ইসরাইল। এখন দেখুন সূরা নম্বর ৬১, আস-সাআফ এ, এখানে একটি আয়াত আছে যেখানে মুসা (আঃ) তার জাতির উদ্দেশ্যে বলছেন, আর ঠিক তার পরের আয়াতেই ঈসা (আঃ) তার জাতিকে বলছেন। এটা মনে রাখুন যে, যদিও তাদের এই ঘটনার মধ্যে অনেক সময়ের পার্থক্য রয়েছে, কিন্তু তারা উভয়েই কোন জাতির উদ্দেশ্যে বলছেন? বনি ইসরাইল, তারা একই জাতি। এখন মনোযোগ দিয়ে শুনুন, “ওয়া ইজ কালা মুসা লিকাওমিহি ইয়াকাওমি” – যখন মুসা তার জাতিকে বলল, “হে আমার জাতি”। তিনি তাদেরকে সম্বোধন করার জন্য প্রথম কোন শব্দ ব্যবহার করলেন? “হে আমার জাতি”। “ইয়াকাওমি”- “হে আমার জাতি”। ঠিক আছে, আসুন দেখি ঈসা (আঃ) কি বলেছেন, “ওয়া ইয কালা ঈসা ইবনে মারিয়াম” – “এবং যখন মারিয়ামের পুত্র জিসাস বলল” ; “ইয়া বানী ইসরাইল” – “হে ইস্রাইলের সন্তানেরা”। “হে ইস্রাইলের সন্তানেরা”, তিনি কি বলেননি? মুসা (আঃ) কি বলেছেন যা ঈসা (আঃ) বলেননি? তাহলে, মুসা (আঃ) বলেছেন “হে আমার জাতি” অথচ ঈসা (আঃ) বলেছেন, “হে ইস্রাইলের সন্তানেরা”। এখন আমরা জানি “হে ইস্রাইলের সন্তানেরা” আসলে বনি ইসরাইল কেই বুঝায়, তাইনা? আপনারা জানেন এর থেকে আমরা কি জানতে পারি? সেমিটিক প্রথা এবং আরব প্রথা যা ইব্রাহীম (আঃ) এর সময় থেকে প্রতিষ্ঠিত তাতে বংশ পরিচয় হয় পিতার পরিচয়ের মাধ্যমে। ইসরাইল জাতির নামটি কিসের ভিত্তিতে? মাতৃ পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়,...
কুরআন কি শেখায়, একতা নাকি বিভাজন?
উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া কুরআনের রত্ন সিরিজ থেকে। ”আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমুহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার।” (আলে ইমরানঃ ১০৩) আসসালামুয়ালাইকুম Quran Weekly. আজকে আমি আপনাদের কাছে খুবই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়াত পরিবেশন করতে যাচ্ছি। এটি সূরা আল- ইমরান এর ১০৩ তম আয়াত। এটি থেকে কিছু শিক্ষা আমাদের জন্য, ইনশাল্লাহ যা আপনি এবং আমি উভয়ই হৃদয়ে ধারন করতে পারি, এবং এর আলোকে নিজেদের আলকিত করতে পারি। আল্লাহ বলেনঃ ওয়াতাআসিমু বিহাব্লিল্লাহি জামিয়ান। ‘ওয়াতাসিমু’ শব্দটি আরবিতে কোন কিছু নিরাপত্তার জন্য শক্ত করে ধরে রাখা বুঝায়। ‘ইস্মা’ হল নিরাপত্তা। ‘ইতসাম’ হল নিরাপত্তার জন্য কোন কিছু ধরে রাখা। নিজের নিরাপত্তার জন্য কোন কিছু আঁকড়ে ধরে থাকা। ‘ওয়াতাআসিমু বিহাব্লিল্লাহি’- আল্লাহ্র নিরাপত্তা অথবা আল্লাহ্র দড়ি ধরে থাকা। ‘জামিয়ান’- সবাই একসাথে, আল্লাহর দড়ি পরিপূর্ণ ভাবে ধরে থাকা। দড়ি হল এমন কিছু যা আপনাকে সরাসরি অন্য কিছুর সাথে সংযুক্ত করে, ‘হাব্লুল্লাহ’- এই অংশটি- ‘হাব্লুল্লাহ’ – আল্লাহ্র দড়ি – এর ব্যাকরণগত গঠনও এটাই প্রকাশ করে যে এই দুটি শব্দ এখানে অবিচ্ছেদ্য। আরবিতে একে ‘ইদাফাহ’ বলা হয়। কিন্তু আমি ব্যাকরণের খুব গভীরে যাচ্ছি না। আমি যা বলতে চাচ্ছি, আল্লাহ এমন ভাবে বলছেন যেন এই দড়ি আল্লাহ্র সাথে সরাসরি সংযুক্ত, তাই আপনার নিরাপত্তার জন্য একে ধরে থাকা উচিৎ, এবং আপনি যদি তা করেন তাহলে আপনিও আল্লাহ্র সাথে সরাসরি যুক্ত হবেন, এবং আল্লাহ্র এই দড়ি,...প্রবন্ধ
কুরআনের সাথে সম্পর্ক পর্ব – ০১
আজকের খুতবার একদম শুরুতে আমি দুটো কথা বলে নিতে চাই, প্রথমত এই যে, অনেক দীর্ঘ সময় নিয়ে ভাবনা চিন্তার পর আজকে যে বিষয়টি আমি বেছে নিয়েছি, এটা খুব কঠিন এবং জটিল। যদিও আমি যখন খুতবার জন্য কোন বিষয় নির্বাচন করি সাধারণত আমি চেষ্টা করি সেটাকে যতটা সহজ করা যায়। কিন্তু আমি মনে করি এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা সব মুসলিমদের জন্য যথেষ্ট জরুরী এবং ভীষণ গুরুত্বপুর্ণ তাই আমি আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বালের কাছে প্রার্থনা করছি যেন আজকের বক্তব্যে আমি আমার ভাবনাগুলো খুব পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করতে পারি যাতে আপনারা এ থেকে উপকৃত হতে পারেন। দ্বিতীয়ত, যখনই আমি এখানে এলাম আমি দেখলাম আমাদের ইমাম সাহেব এখানে বসে আছেন, আমার মনে হলো আরবীতে একটা কথা আছে, “আগনাস সাবা আনীল মিসবাহ”, যার মানে হলো, “সময়টা যখন সকাল, আপনার বাতির প্রয়োজন নেই”(স্মিত হাসি)। আমি ঠিক জানি না আমাকে কেন খুতবা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত করা হয়েছে যেখানে ইমাম সাহেব স্বয়ং উপস্থিত আছেন। যা হোক, যেহেতু আমি এখন এ জায়গায় আছি, ইন শা আল্লাহ আশা করছি আমি এ সুযোগটা সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে পারবো। আজকের এই সংক্ষিপ্ত খুতবায় আমি কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্কের দুইটি দিক নিয়ে কথা বলতে চাই। আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বাল কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে বর্ণনা করেছেন বিভিন্ন ভাবে। এটা শুধু এক ধরণের সম্পর্ক নয়, কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্কটা বিভিন্ন ধরণের। যেমন ধরুন এটা (কুরআন) একটা স্মরণিকা নিজের জন্য আবার এটা অন্যকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার একটা মাধ্যমও ।এটা জিকির বা স্মরণিকা আমাদের নিজেদের জন্য এবং কুরআন একটা মাধ্যমও যাতে আমরা অন্যদেরকেও স্মরণ করিয়ে দিতে পারি। এটা চিন্তা করার মতো বিষয় এবং আমাদেরকে বার বার বলা হয়েছে যাতে আমরা কুরআনকে নিয়ে চিন্তা করি, খুব মনযোগ দিয়ে শুনি এবং গভীর ভাবে ভাবি। এই “গভীর করে ভাবা” ব্যাপারটা নিয়েই...আনন্দময় বিবাহ চান?
আল্লাহ আজ ওয়াজ্জাল বিবাহ সম্পর্কে বলেছেন, وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (৩০ঃ ২১) এটি কুরআনের অত্যন্ত সুন্দর কিছু বাণী। আপনারা যারা বিবাহিত তাদের পুরো বিবাহিত জীবনে এই বাণীর প্রযোজ্যতা খুঁজে পাবেন। আল্লাহ বলেন, তিনি আপনাদের মধ্যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা ‘মাওয়াদ্দা’, এবং প্রগাঢ় ভালোবাসা দিয়েছেন, ‘ওয়া রাহমা’ দৈবানুগ্রহ দিয়েছেন। কারণ, বিবাহের প্রথম দিকে ভালোবাসা প্রগাড় থাকে। আপনি আপনার স্ত্রীকে নিয়ে মুগ্ধ থাকেন। আপনি অন্য কিছুর কথা আর চিন্তা করতে পারেন না । আপনার বন্ধুরা যখন আপনাকে কল দেয়, তারা সরাসরি ভয়েস মেইল এ যায়। ঠিক? কারণ, আপনি সদ্য বিবাহিত। আপনারা জানেন, ছয় মাস ধরে আপনার কোন দেখা নেই, কেউ আপনাকে দেখে নি। কিন্তু তারপর যখন বিবাহিত জীবন আরও অগ্রসর হয়, কী আপনাদের বিবাহিত জীবন চাঙ্গা রাখে? এটা কি আগের মত থাকে? কারণ, অন্যান্য দায়িত্ব নিতে হয়। বাচ্চা হয়, কাজে ব্যস্ততার কারণে আর মধুর থাকে না। কিভাবে আপনার দাম্পত্য জীবন বজায় রাখবেন? রাহমা, আপনার স্ত্রীর প্রতি অনুগ্রহ থাকতে হবে। স্বামীর প্রতি অনুগ্রহ থাকতে হবে। একে অপরকে সম্মানপ্রদর্শন করতে হবে। একবার উমর (রাঃ) এর কাছে এক লোক আসল। সে বলল, আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাই। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কেন তুমি তোমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাও? (উত্তরঃ) আমি তাঁকে আর ভালোবাসি না, তাঁকে আর আকর্ষিত মনে হয় না। তারপর উমর (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ফা’ইনা রি’ইয়াআ, সৌজন্যতার কি অবস্থা? তোমার স্ত্রীর প্রতি উদারতার কি হল? সে কি তোমার...ডাকুন আপনার রবের পথে
প্রথমেই যে ব্যাপারটা আমি বলতে চাই তা হলো, আল্লাহ আজ্জা ওয়াজাল সুরা আন নাহল এর শেষ অংশে বলেছেন, ‘উদয়ু ইলা সাবিলি রাব্বিক’। যেটার অর্থ সাধারণ ভাবে বলা যায় ‘তোমার রবের পথে ডাকো’। এটাই সাধারণ ভাবে বলা হয়েছে এখানে। বিল হিকমাহ অর্থ প্রজ্ঞা ব্যবহার করে , অথবা বলা যায় তোমার রবের প্রতি ডাকো প্রজ্ঞার সাথে। কিন্তু এ বিষয়টাই এখন একটু গভীরভাবে ভাবা যাক। যখন আপনি কাউকে দাওয়াত দেন ; দাওয়াত দেবার অর্থ হলো এটা একই সাথে হবে বন্ধুত্বপূর্ণ, দয়ার্ত ও ভালবাসাময় একটা ব্যাপার। আপনি তেমন কাউকে দাওয়াত দিবেন না যাদের আপনি ঘৃণা করেন। এবং এই দাওয়াতের কাজটা তখনও সম্পন্ন হবে না যখন আপনি রাগান্বিত থাকবেন। অন্যভাবে বলা যায়, ব্যাপারটি এমন ও না যে আপনি কাউকে ডিনারের দাওয়াত দিতে গিয়ে রাগতস্বরে বললেন যে, এহ! আমার বাসায় এসো। আপনি সেটা করবেন না। কারণ আপনি নিশ্চিত ভাবে জানেন যে আপনার সে আমন্ত্রন প্রত্যাখ্যাত হবে। আমি যা বুঝাতে চাচ্ছি তা হলো, দাওয়াত দেবার পন্থাটা কেমন হবে। দাওয়াতের সেই পন্থা যেটা ইসলামকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়, মানুষকে ইসলামের পথে আনে। আপনি যে মানুষটাকে দাওয়াত দিয়ে ইসলামের পথে ডাকেন তার প্রতি ভালবাসা, সৌজন্যতা, সম্মান থাকতে হবে। এই দাওয়াতে ঘৃণা মেশানো কোন কথা থাকতে পারে না, বিচার করার বার্তা থাকতে পারবে না। এই দাওয়াত নিজেকে জাহির করার জন্যও নয় যেখানে কোনভাবেও দেখানো হয় যে যাকে দাওয়াত দিচ্ছেন তার চেয়ে আপনি উত্তম। এর কোনটাই দাওয়াতে থাকতে পারবে না। যদি থাকে তাহলে সেটা কখনই দাওয়াত হতে পারে না। এখন দেখা যাক আল্লাহ প্রথম শব্দটিতে কি ব্যবহার করেছেন। ‘উদয়ু’। এবং তার পরে তিনি বলেছেন ‘ইলা সাবিলি রাব্বিক’- তোমার রবের পথে ডাকো। এটা নিয়ে একটু চিন্তা করুন। ক্লাসিক্যাল তাফসীর থেকে এ সম্পর্কে অনেক কিছুই বলা যায়। কিন্তু আজকের দর্শকদের জন্য আমি...জীবন, স্বাধীনতা আর সুখের সন্ধান – পর্ব ০৩
আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে ‘প্রভাবসৃষ্টি’ এটাই হয়তো সর্বোচ্চ শিখর, কিন্তু না এর থেকেও বড় কিছু আছে। এর উপরে আছে চূড়ান্ত সত্য। কেউ কেউ ন্যায়ের খোঁজ করে। কেউ কেউ সত্যের খোঁজ করে। কেউ কেউ আদর্শের খোঁজ করে। তারা ন্যায়ে বিশ্বাস করে। আর ন্যায় এমন একটা জিনিস সেটা আপনি পরিপূর্ন ভাবে দুনিয়াতে দেখবেন না। দেখবেন কি? এটা কখনোই নেই পুরোপুরি ভাবে, কিন্তু তারা এর পরোয়া করেন না, তারা এটার জন্যই কাজ করেন। ও আরেকটি ব্যাপার, যখন আপনি এমন কিছু করতে চান যেটার দুনিয়াতে কোন নজীর নেই তখন সেটা করাটাই সবচেয়ে কঠিন কাজ হয়। আপনি যদি পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে চান, তখন যদি আপনি সামান্য একটুও পরিবর্তন দেখেন, তাতেও আপনি উদ্দীপিত হয়ে যান, আপনি অনুপ্রানিত হন এবং এটি আপনাকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু আপনি যখন এমন একটা আদর্শের জন্য কাজ করবেন, ন্যায়ের জন্য, আপনি হয়তো ন্যায় কখনো দেখবেনই না। এই লোকেরা কেমন করে নিজেদেরকে অনুপ্রেরনা দিবে যখন তারা এমন কিছুর জন্য কাজ করা যেটা দেখা যাচ্ছে না। এরাই হচ্ছে সবচাইতে অসাধারন, সহনশীল ব্যক্তি। একবার তারা একটা আদর্শের পেছনে পড়লো, সবাই তাকে পাগল ভাবলো কিন্তু তাতে তার কিছু এসে যায় না। তারা এগিয়েই চলেন। তাই এখন আমি শুরু করতে যাচ্ছি একদম সর্বোচ্চটা দিয়ে যেটা হল সত্যের খোঁজ। ন্যায়ের খোঁজ। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি যে আমাদের সকল নবীদের (আঃ) এর পথই ছিল সত্যের অন্বেষণ। তারা মানুষের সাথে সত্যটা শেয়ার করতে আগ্রহী ছিলেন। এবং অনেক সময়ই, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম এর হাদীস থেকে আমরা জানি কেয়ামতের দিন অনেকেই, মানে অনেক নবীই আল্লাহর সামনে দাঁড়াবেন যাদের পেছনে কোন অনুসারীই থাকবেন না। একজন অনুসারীও নয়। এক না দুই না একেবারে শূন্য, শূন্য। তাদের লক্ষ্য টা কি ছিল? সত্য। তাদের প্রভাব কতটুকু ছিল? শূন্য। কিন্তু...জীবন, স্বাধীনতা আর সুখের সন্ধান – পর্ব ০২
এরপর এর উপরে রয়েছে আর এক ধরনের প্রচেষ্টা সেটা হল “সম্মানের” পেছনে ছুটে চলা। কলেজের ছাত্রদের কাছে এটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, প্রাথমিক বা হাইস্কুলের ছাত্রদের চেয়ে। কিন্তু কলেজের ছাত্রদের কাছে এর গুরুত্ব অনেক। এইমাত্র আমি কি বললাম? “সম্মান”! আমি ক্রমানুসারে যেতে চাই। সবার নীচে “সুখ”, তারপরে কি?” সামাজিকতা (cool)”। তারপর? “জনপ্রিয়তা”। এখন আমরা কি নিয়ে কথা বলছি? “সম্মান”! “সম্মান” মানে হল আপনি নিজের সাথে এমন কিছু যুক্ত করতে চান যেটা অনেক মূল্যবান। আপনি মানুষকে বলতে চান, “জানো! আমি হার্ভার্ডে গিয়েছিলাম!” আপনি তাদের বলেন না যে আপনি সেখানে সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন! আপনার বন্ধুর সাথে দেখা করতে! কিন্তু আপনি নিজের নামের সাথে একই বাক্যে হার্ভার্ড শব্দটাকে ব্যবহার করতে ভালোবাসেন। সত্যি কথা হল, আপনি যদি হার্ভার্ডে নবীন ছাত্র হন, আপনি কি অর্জন করেছেন? কিছুই না। আপনি শুধু সেই ভার্সিটিতে পড়েন, এর বেশিতো কিছু না। কিন্তু আপনি নিজের নামের সাথে একটা সম্মানিত প্রতিষ্ঠানের নাম যোগ করতে পছন্দ করেন। নিজের নামের সাথে একটা মর্যাদাপূর্ণ ব্র্যান্ড- এর নাম যুক্ত করতে আপনার ভালো লাগে। আপনার নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের পোশাক করতে ভালো লাগে এবং যদি ব্র্যান্ডের লেবেল দেখা না যায় আপনি অন্য মানুষদের সাথে এমনভাবে কথা বলেন যেন তারা বাধ্য হয় প্রশ্ন করতে যে, “আপনি এটা কোথা থেকে কিনেছেন”? আপনি যেন বলতে পারেন যে এটা আরমানী ব্র্যান্ড বা কিছু একটা। কারণ আপনি চান নিজের নামের সাথে সেই ব্র্যান্ডের নাম যুক্ত করতে। এমনটাই ঘটে নতুন কোন ব্র্যান্ডের গাড়ি বাজারে আসলে। কোন গাড়ি আপনি চালাচ্ছেন, কোন ধরণের পোশাক আপনি পরছেন, কোন ধরণের মানুষের সাথে আপনি মিশছেন। সেলফি এজন্য তোলেন না যেন আপনি তাদের মনে রাখতে পারেন, আপনি এজন্য তোলেন যেন ছবিটা পোস্ট করতে পারেন। যেন অন্য মানুষ আপনাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কারণ আপনি সেই বিশেষ ব্যক্তির পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। এটা...মু’জিযা
No Results Found
The page you requested could not be found. Try refining your search, or use the navigation above to locate the post.