ভিডিও + প্রতিলিপি
ইসলাম ও ইগো (আত্ম-অহংকার) – পর্ব : ০৫ (শেষ পর্ব)
এটা বলার বিভিন্ন ধরণ আছে, তাই না? “এই কাজটি করাতে তুমি দোজখে যাবে তুমি জানো তো?” ‒ এটা একভাবে বলা।”নিজের কাজের জন্য তোমার লজ্জিত হওয়া উচিৎ।” ‒ এটা বলার একটা ধরণ।”ভাই আমি সত্যিই তোমার জন্য উদ্বিগ্ন। তুমি জানো ওটা খারাপ আর আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি এটা কেন করছ? তোমার কোন সাহায্য লাগবে? আসলেই কেন করছ, বন্ধ কর। আসো এটা নিয়ে আলোচনা করি।” আন্তরিক! (অডিয়েন্সে বসা কেউ হাঁচি দিলেন, উস্তাদ নুমান বললেন, “ইয়ার হামু কাল্লাহ”, অর্থাৎ আল্লাহ আপনার প্রতি ক্ষমাশীল হোন)। আন্তরিকতা, এটা দেখা যায় না, তবে প্রকাশিত হলে হৃদ্যতা বাড়ায়। আপনি কীভাবে মানুষের সাথে কথা বলেন, এতে প্রকাশ পায় আপনি আন্তরিক নাকি শুধু ওদের প্রতি আপনার মন্তব্য প্রকাশ করতে চান। এখানে পার্থক্য আছে। আপনি মানুষের সাথে কীভাবে কথা বলছেন এতে পার্থক্য আছে।أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ “আযিল্লাতিন আলাল মু’মিনীন”,(৫: ৫৪ ) বিশ্বাসীদের কাছে যখন নিজেদের উপস্থাপন করে ওরা আন্তরিক, বিনয়ী ‒ কুরআনে এভাবে বলা আছে, কিন্তু আপনি কীভাবে জানবেন আপনি আন্তরিক কিনা। এই আয়াতে এটা বলা আছে, এরপরই আমরা শেষ করবো। فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْرِ “ফা’ফু আনহুম ওয়াস তাঘফির লাহুম ওয়া শাভিরহুম্ ফিল আমার”,(৩: ১৫৯) তাদের ভুলের পর আপনি তাদের প্রতি সহনশীল; যদি তারা ভুল করে ফেলে, প্রথম কাজ, তাদেরকে মমতার সাথে ক্ষমা করে দিন। “ফাফু আনহুম”, এরপর আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার কাছে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ্র কাছে অন্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা মানে এই নয় — ধরুন, কোন ভাই কিছু করলো আর আপনি বললেনঃ “এই, যা হোক আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তোমাকে মাফ করুন।”ওটা “ফাস্তাঘফির লাহুম” নয়। আপনি কখন তাদের জন্য আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাইবেন? যখন আপনি নিজের জন্য আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাইছেন, নির্জনে ক্ষমা চাইছেন। নির্জনে প্রার্থনার মানে কী? ঐ প্রার্থনা আন্তরিক, ওটা অকৃত্রিম। সবার...ইসলাম ও ইগো (আত্ম-অহংকার) – পর্বঃ ০৪
আপনি এখানে কেন এসেছেন? আপনি কি এখানে এসেছেন কারণ আপনার বন্ধুরা এসেছে বলে? কারণ আপনাকে আসতে জোর করা হয়েছে? আপনার গাড়ি আজ ছাড়ছে না, তাই আপনি আটকে গেছেন এখানে। এজন্য? তাহলে আপনি কিছুই অর্জন করতে পারলেন না।কিন্তু আপনার এখানে আসার কারণ এবং নিয়ত যদি এরকম হয়-“আজ রাতে আমি আল্লাহ্ কে স্মরণ করব, আমি আল্লাহ্র আরোও নিকটবর্তী হব। এমনকি যখন কিছু হচ্ছে না, আপনি সেটার অপেক্ষায় আছেন। এ অপেক্ষার সময়টাও আপনার স্বপক্ষে পূণ্য হিসেবে গণ্য হবে। শুধু দরকার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, নিয়তের পরিবর্তন। ঠিক আছে? এটি আপনাকে জীবনভর অনেক সাহায্য করবে। কারণ আপনি যখন কিছু করবেন, যেমন- প্রচারপত্র দেওয়া, মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া এবং কেউ কোন আগ্রহ দেখাল না এবং আপনি হয়তো মনে মনে বলবেন-কেউ কিছু শুনতে চায় না। কিন্তু আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন না। কেন জানেন? কারণ, কেন আপনি প্রচারপত্র গুলো বিলি করছিলেন? কেন আপনি দাওয়াত দিচ্ছিলেন? কোথায়, কার আছে আপনার প্রত্যাশা? (আঙুল ঊর্ধ্বমুখী, মানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে।)আপনার কাজ চেষ্টা করা। ফলাফল তাঁর কাছে। আপনি এই ফলাফলের দায়িত্বে নন। আপনি যখন এটাকে আন্তরিক ভাবে মেনে নিতে পারবেন,তখন জীবন অনেক সহজ হয়ে যাবে। এবং নিজের প্রতি অনেক সন্তুষ্ট থাকবেন। আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন না।’ ‘সেখানে মাত্র অল্প কিছু মানুষ, তাদের সংখ্যা আরোও বেশি হতে পারত।’ ‘ হ্যাঁ,সেখানে আরো মানুষ থাকতে পারত কিন্তু সেটি আল্লাহ্র হাতে। আমি কি আমার দায়িত্বটুকু পালন করেছি? আমি কি যথেষ্ট চেষ্টা করেছি? শুধুমাত্র এটাই নিজেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন এবং আমার চেষ্টা কি সত্যিই আল্লাহ্র জন্য ছিল? এই প্রশ্নটিই নিজেকে করতে পারেন। আমি এসব আলোচনায় আনছি কারণ ‘নিয়ত’ এমন কিছু নয় যা আপনি জীবনে একবারমাত্র করেন। জীবনে একবার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন যে আল্লাহ্র রাস্তায় কাজ করবেন, একজন ভালো মুসলিম হবেন। আপনি সেই ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন কিন্তু...ইসলাম ও ইগো (আত্ম-অহংকার) – পর্বঃ ০৩
তারপর আল্লাহ একই আয়াতে একটি সতর্ক বাণীও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন : وَلَا يَكُونُوا كَالَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلُ তারা (মুমিনরা) যাতে তাদের মত না হয়, যাদেরকে তাদের পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল।فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْأَمَدُ তাদের উপর একটি বড় সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। তার মানে তারা এই কিতাব ধারণ করেছিল দীর্ঘ সময়ের জন্য। যখন তারা এভাবে কিতাব ধারণ করেছিল, আপনারা জানেন – যখন আপনি প্রথম ধর্মীয় অনুশাসন মানা শুরু করেন, আপনি এ ব্যাপারে খুবই উত্তেজিত থাকেন। এই উত্তেজনা একসময় চলে যায়, যা থাকে তা হলো বহিরাবরণ। সুতরাং ঐসব লোকদের ক্ষেত্রে কী ঘটল? فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেল। একটি দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর, ধর্মীয় কর্ম সম্পাদন একটি রুটিনে পরিনত হয়ে গেল। এমন কিছু যা তারা শুধু করে, যা করতে হয়, তারা এটা করছে কারণ এটাতে তারা অভ্যস্ত। কিন্তু এটা আর এমন কিছু নয়, যা তাদের হৃদয়কে আলোড়িত করে। তাদের হৃদয় হয়ে গেছে কঠিন। আর যখন আপনার অন্তর কঠিন হয়ে যায়, তখন কলুষিত হওয়া আপনার জন্য খুবই সহজ। এজন্য আয়াতের পরবর্তী অংশে বলা হয়েছে- وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ তাদের অধিকাংশই পাপাচারী। তাদের বড় একটা সংখ্যা আসলে খারাপ।আয়াতটি শেষ হয়েছে আহলে কিতাবদের দিয়ে , আর এটা কি দিয়ে শুরু হয়েছিল? আলোচনাটি আসলে তাদের নিয়ে যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে। আর কিভাবে তাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে। আর এটা যদি আপনি আপনার ভেতরে অনুভব করতে পারেন, কেউ আপনাকে এটা বলে দিতে পারবে না। আমি আবার বলছি, আপনার জন্য কেউ এটা অনুমান করতে পারবে না। একমাত্র যে এটা ধরতে পারবে সে ব্যক্তি হলো আপনি নিজে, অন্য কেউ নয়। আপনি আল্লাহর সামনে কতটুকু বিনয়ী, আপনি অন্যদের সামনে কতটুকু বিনয়ী এ বিষয়টা আমরা আপনাকে বলে দিতে পারব না, একমাত্র আপনি আপনার এই বিষয়টা ভালো বলতে পারবেন।...ইসলাম এবং ইগো (আত্ম অহংকার) পর্বঃ ০২
যখন ইগো-ই মুল সমস্যা। #ইগো কোথা থেকে আসে? আপনার মধ্যে ইগো তখনই জন্মায় যখন আপনি প্রকৃতভাবে আল্লাহর মাহাত্ম্যকে মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হন। তখন আপনি আল্লাহকে প্রশংসা করার স্থানে নিজের ব্যাপারে উচ্চধারনা পোষণ করতে শুরু করেন। তখনই এটা শুরু হয়; এটাই এই সমস্যার ভিত্তি গড়ে দেয়। তাই প্রথম যে পয়েন্টটা আমি বলবো ইনশাআল্লাহ তা হল অনেক মানুষই ধর্মের বেশ ধরে থাকে। তাদেরকে দেখে ধার্মিক মনে হয়, তারা ধর্মীয় কথা বলে, তাদের জ্ঞানও আছে। আল্লাহ যেন আমাদের এ থেকে রক্ষা করেন। এটা খুবই গুরুতর সমস্যা। এদেরকে যে মানুষটার দাড়ি নেই তাঁর থেকে বেশী প্র্যাকটিসিং মনে হয়। অনেক বোনদের যেসব বোনেরা হিজাব পালন করেন না তাদের তুলনায় বেশী আল্লাহভীরু মনে হতে পারে। তাদেরকে বাইরে থেকে দেখতে খুবই ভালো লাগে। কিন্তু তাদের মনের মধ্যে ইগো আছে। আপনার ভেতরে অন্যের সামনে নিজেকে মহানরূপে উপস্থাপন করার তাড়না কাজ করে। আপনার মনে হয় যে আপনি বেশী ধার্মিক, বেশী যোগ্য, আপনি অন্যদের থেকে ভালো অবস্থানে আছেন। আর আপনি যদি মনের ভেতর আরেকজন মুসলিমকে ছোট করে দেখেন তাঁর অবস্থা যেমনই হোক না কেন, তাহলে আপনার হৃদয়ে যে জিনিসটা বাসা বেধেছে তা হল ‘কিবর’। অহংকার। আর আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উপদেশ থেকে জানতে পারি যে, যাদের হৃদয়ে সরিষাদানার সমান, অর্থাৎ বলতে গেলে কিছুই না, এমন অণু পরিমাণ অহংকার থাকে তাদের জন্য জান্নাতের দরজা খোলা নেই। তাই আমি যেটা বলতে চাচ্ছি তা হলো, ধরুন একজন মুসলিম খারাপ কাজ করে। হয়তো সে মদ্যপান করে বা যেকোনো ধরনের খারাপ কাজ করে। তাঁর কুকর্মগুলো বাহ্যিক, চোখে দেখা যায়। কিন্তু আপনার খারাপ কাজটা কোথায় ঘটছে? অন্তরের মধ্যে। বাইরে থেকে আপনাকে দেখতে ভালোই লাগে। মনে হয় যে আপনি ঠিকঠাকই আছেন। নিঃসন্দেহে সেই লোকটা তাঁর খারাপ কাজগুলোর কারণে শাস্তিযোগ্য। আপনার খারাপ কাজটাও কি নয়? আর যদিও...ইসলাম এবং ইগো (আত্ম অহংকার) পর্বঃ ০১
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আমি সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি এবং কিছুটা আশ্চর্যও হয়েছি আপনারা এতক্ষণ অপেক্ষা করেছেন দেখে আলহামদুলিল্লাহ্। আমার কণ্ঠস্বর কিছুটা ক্লান্ত মনে হতে পারে কারণ আমি আসলেই তাই … আট ঘন্টার টানা লেকচার ছিল কিন্তু আমি ইনশাল্লাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে খুব সংক্ষিপ্ত কিছু কথা শেয়ার করব। এটা এমন একটা বিষয় যা এখন আর তেমন আলোচনায় আসে না কিন্তু এর প্রতি আমাদের মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। কোন সন্দেহ নেই যে এই বিষয়ের প্রতি আমাদের নজর দেয়া দরকার ইনশাল্লাহ। আমি আপনাদের সাথে কথা বলতে চাচ্ছি মুসলিম তরুণদের নিয়ে যারা কোন ধর্মীয় পথের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে পশ্চিমা সমাজে। তাদের মাঝে এক সংষ্কৃতি গড়ে উঠেছে। অনেক সময়ই মুসলিম তরুণরা যে জীবন যাপন করে তাকে বলা যেতে পারে … মনে করুন ‘পার্টিইং’ … ঠিক আছে … এবং তারপর জীবনের কোন এক সময় তারা কোন বিশেষ উপলব্ধির মুখোমুখি হয় এবং দ্বীনের পথে চলতে শুরু করে। এমন প্রচুর ভাই-বোন আছে যারা জীবনের কোন এক সময় পরিবর্তিত মানসিকতার ভেতর দিয়ে যায় এবং তারপর ধীরে ধীরে আরও ধার্মিক হয়ে ওঠে। কিন্তু তারপর যা হয় তা হচ্ছে, যখন সময়ের সাথে সাথে তারা আরও ধার্মিক হয়ে ওঠে, তারা অনেক বেশি কড়া হয়ে যায় এবং নিজেদের জন্য নিজেরাই কোন শিক্ষক খুঁজে নেয়। সেই শিক্ষক হচ্ছে কখনো কোন মানুষ, কখনো কোন লেকচার সিরিজ, কখনো কোন ওয়েবসাইট, কখনো ব্লগ, কখনো অপরিচিত কোন নাম কিন্তু সেটা যাই হোক না কেন, তারা নিজেদের জন্য একটা জ্ঞানের উৎস খুঁজে নেয় যেটাকে তারা “সঠিক” বলে মনে করে। এর প্রতি তারা খুবই অনুরক্ত হয়ে পড়ে এবং আস্তে আস্তে যা ঘটতে শুরু করে তা হচ্ছে তারা খুব কঠোর ও অনমনীয় হয়ে ওঠে। তারা লক্ষ্য করতে শুরু করে যে তাদের চারপাশের মানুষরা ঠিক তাদের মতো না।...প্রবন্ধ
চলুন ফিরে যাই আল্লাহর পথে
”অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞ।” [সূরা নিসাঃ আয়াত ১৭] আজকে আমি আপনাদের সাথে সূরা নিসার ১৭ নম্বর আয়াত নিয়ে কিছু কথা বলবো। বান্দা যখন আল্লাহ্র দিকে ফিরে আসে, আল্লাহ্ তা’আলাও তখন তার বান্দার দিকে ফিরে আসেন। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, “إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ” ফিরে আসা, কেউ যদি খাঁটি মনে সত্যিকারভাবে আল্লাহ্র দিকে ফিরে আসতে চায় তবে তাকে কিছু শর্ত মেনে নিতে হয়।অন্যকথায় আরবী শব্দ “إِنَّمَا” বিশেষ কিছু বুঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।আপনি যখন প্রশান্ত হৃদয়ে আল্লাহ্র দিকে ফিরে আসার চিন্তা করেন, আপনি এই শর্তগুলো পূরণ করে ফিরে আসতে পারেন ।তাই আয়াতের প্রথমে “إِنَّمَا” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, “إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ”নিশ্চয় আল্লাহ্ তা’আলা আপনার তওবা কবুল করা তঁার নিজের উপর অপরিহার্য করে নিবেন, যদি আপনি এই শর্তগুলো মেনে নেন, তিঁনি নিশ্চয় কবুল করবেন “لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ” এই তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে তাদের জন্য, যারা কুৎসিত, ঘৃণ্য, জঘন্য, পাপকাজ করে – এ সবগুলোই “سُّوءَ”এর অর্থ হিসেবে ব্যবহত হতে পারে। আর, “بِجَهَالَةٍ”অর্থাৎ অপ্রতিরোধ্য আবেগের বশবর্তী হয়ে, যেমন কুকর্মে প্ররোচনা, রাগের বশবর্তী হয়ে, হতাশার আগুনে পুড়ে অথবা এমন কোন শক্তিশালী মানবিক অনুভূতি, যা ওই মুহূর্তে বিজয়ী হয়েছে। তারপর তারা ওই ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এটা হোল “جَهَالَةٍ” । আপনার অলসতা এক ধরনের “ جَهَالَةٍ” যখন আপনি নিজেই জানেন আপনার ফজরের নামাজ বাদ যাচ্ছে শুধু আপনার অলসতার জন্য। আপনার ক্রোধ এক ধরনের “ جَهَالَةٍ” যখন আপনি আপনার পিতামাতার উপর নিজের কণ্ঠ উঁচু করেন। আপনার চোখের সামনে কোন খারাপ ছবি আসার পরেও যখন টিভির চ্যানেল পাল্টাতে আপনার মনে অনীহা আসে, বুঝে নিবেন এটি সেই “ جَهَالَةٍ”। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন...প্যারালাইসিসে আক্রান্ত রবার্ট ডেভিলার ইসলাম গ্রহণের চমকপ্রদ কাহিনী
...এক ধনী মহিলার গল্প
একবার এক ধনী মুসলিম মহিলার সাথে আমার আজব এক কথোপকথন হয়েছিল। আমেরিকার একটি অঙ্গরাজ্যে যার নাম আমি বলবো না, একটি প্রোগ্রামে আলোচনার পর আমাকে রাতের খাবার খেতে এক বাসায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। আর সেটি ছিল ১৫ হাজার বর্গ ফুটের বিশাল এক প্রাসাদ। আমি গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করার সময় বাড়ির সৌন্দর্য দেখে মনে মনে ভাবতে লাগলাম, কে এই এল-ক্যাপনের (আমেরিকার এক বিখ্যাত গ্যাংষ্টার) বাড়িতে বাস করে!!! তারপর আমরা ম্যানশনে প্রবেশ করলাম। আমাদেরকে ডিনার পরিবেশন করা হয়েছিল কিং আর্থারের টেবিলের মত প্রকান্ড এক টেবিলে। সম্ভবত টেবিলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে কথা পৌঁছাতে হলে মাইক্রোফোনের প্রয়োজন হবে, এত লম্বা এক টেবিল! যাইহোক, আমরা সবাই এক পাশে বসে খাবার খেলাম। তারপর কথা-বার্তা বলতে লাগলাম। বাড়ির কর্তী বললো – “আমার একটি ব্যক্তিগত প্রশ্ন আছে।” আমি বললাম – “ঠিকাছে, বলুন।” তিনি বললেন – “না, আমি সবার সামনে এটা বলতে পারবো না।” তখন আমি অন্য সবাইকে বললাম – “আপনারা টেবিলের অপর প্রান্তে গিয়ে বসুন, (যার অবস্থান ভিন্ন আরেকটি জিপ কোডে 🙂 ) যেন আমি তার সাথে কথা বলতে পারি।” সবাই দূরে গিয়ে বসলো। তারপর ঐ মহিলা বললেন – “আমি জানি, আমাদের সবাইকে মরতে হবে, এবং কিয়ামতের দিন উঠতে হবে….কিন্তু আমি এই বাড়ি ছেড়ে যেতে চাই না।” তাদের লিভিং রুমের আয়তন হবে এই মসজিদের আয়তনের মত। পেছনে রয়েছে কৃত্রিম ঝর্ণা, প্রায় সব ওয়ালে গ্লাস লাগানো। তাদের বাসার ভেতরের সিঁড়িটি ছিল অসম্ভব সুন্দর মার্বেল পাথরে ঝড়ানো, দেখে মনে হয় যেন উপর থেকে সিল্ক গড়িয়ে পড়ছে। আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি এটা আসলে কী? পরে বুঝতে পেরে চমৎকৃত হয়ে গেলাম। তারা আমাকে জানালো, বাড়িতে ২৭ টি বেড রুম রয়েছে। আমি ভাবলাম – ঘুমান তো এক রুমে, বাকিগুলো দিয়ে কী করেন। কিন্তু ঐ মহিলা ম্যানসনটি নিয়ে এতো বেশি আচ্ছন্ন এবং সম্মোহিত…. প্রতিটি...আমাদের ধর্ম কি অন্ধ অনুসরণ করতে বলে?
একটা বিষয় এখানে গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা হয়তো শুনেছেন – কুরআন বলেছে – মানুষের মাঝে এমন অনেকে রয়েছে যারা নবীদের প্রতি বিশ্বাস আনেনি কারণ তারা বলেছে – আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের অনুসরণ করবো। আপনাদের মনে আছে সেটা? আমরা নবীদের মেনে নিব না কারণ আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের অনুসরণ করি। তাই আমাদের কোন চিন্তা ভাবনা করার দরকার নেই। আমাদের পূর্বপুরুষরাই সব চিন্তা ভাবনা করে ফেলেছে। তারা যা-ই করেছে, তারা ছিলেন আমাদের চেয়ে বয়স্ক, আমাদের চেয়ে বিজ্ঞ তাই তারা যা করেছে তা অবশ্যই সঠিক ছিল। তাই আমরা কেন তাদের কাজ কর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করবো? এটাই কি তাদের চিন্তা পদ্ধতি ছিল না? এখন আপনি যদি এমন ভাবেন যে, আমার পিতা মাতা কী করতো, আমার দাদা-দাদী কী করতো বা আমার প্রপিতামহ কী করতো তাহলে এটা তো খুবি অসম্মানজনক। এটা অসম্মানজনক। তাদের কার্যকলাপকে প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত নয়। আমার দায়িত্ব হলো শুধু অনুস্মরণ করা। কিন্তু আপনি যদি ইব্রাহিম (আ) এর প্রতি বিশ্বাস করেন তাহলে আপনি কখনো এমন হতে পারেন না। কারণ তাঁর গোটা জিন্দেগী ধরে তিনি শুধু প্রশ্ন করার কারণেই ঝামেলায় পড়েছেন। তিনি কখনোই প্রশ্ন করা বন্ধ করেন নি। তিনি কি তাঁর পিতাকে প্রশ্ন করেছিলেন? হ্যাঁ। তিনি কি রাজাকে প্রশ্ন করেছিলেন? “ইব্রাহীম যখন বললেন, আমার পালনকর্তা হলেন তিনি, যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। সে বলল, আমি জীবন দান করি এবং মৃত্যু ঘটিয়ে থাকি। ইব্রাহীম বললেন, নিশ্চয়ই তিনি সুর্যকে উদিত করেন পূর্ব দিক থেকে এবার তুমি তাকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত কর।” তিনি রাজাকে প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি তাঁর পিতাকে প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি তাঁর সমাজকে প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি এমনসব প্রশ্ন করাতে বিপদে জড়িয়ে পড়েন। ইব্রাহিম (আ) কোন জবাব গ্রহণ করেননি যতক্ষণ পর্যন্ত না জবাবের স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করা হয়েছে, যতক্ষণ না কারণ জানানো হয়েছে, যতক্ষণ না এটা যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে।...
Empathy – অন্যের আবেগ অনুভূতির সাথে একাত্ম হওয়ার ক্ষমতা: রাসূল (স) এর এক অসাধারণ গুণ
...মু’জিযা
No Results Found
The page you requested could not be found. Try refining your search, or use the navigation above to locate the post.