উস্তাদ নুমান আলী খান

নুমান আলী খান একজন মুসলিম দা’ঈ। কুর’আন এর জ্ঞানে তার অসাধারণ গভীরতা এবং সুন্দর উপস্থাপনা শৈলীর কারণে সমগ্র বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশ এবং বাংলাভাষাভাষী অনেক ইসলাম অনুরাগী তরুণ তাঁর অসাধারণ আলোচনা থেকে উপকৃত হচ্ছে নিয়মিত …

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন

বর্তমানে আমরা ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল এ নুমান আলী খানের লেকচার গুলো নিয়মিত প্রকাশ করছি এবং এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে তা শ্রেণীবদ্ধ ভাবে সংরক্ষণ করছি। আপনি আমাদের ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল লাইক /সাবস্ক্রিপশন করে আমাদের সাথে আরো নিবিড় ভাবে সংযুক্ত থাকতে পারেন।

আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন…

সংযুক্ত থাকুন

ভিডিও + প্রতিলিপি

আয়াতুল কুরসী – আল কুর’আনের এক অসাধারণ সৌন্দর্য

মিডিয়াফায়ার ডাউনলোড লিংক আয়াতুল কুরসী – আল কুর’আনের এক অসাধারণ সৌন্দর্য আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। উস্তাদ নুমান আলী খান এর কাজগুলো বাংলায় অনুবাদ করে বাংলাভাষী সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার নিয়্যাতে আমাদের এই ফেসবুক পেজের যাত্রা শুরু। আলহামদুলিল্লাহ, যাত্রার শুরুতেই আপনাদের সকলের কাছ থেকে যে বিপুল আন্তরিক অভ্যর্থনা ও দু’আ আমরা পেয়েছি সেটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এর পক্ষ থেকে তাঁর রাহমাহ ও বারাকাহ ছাড়া আর কী হতে পারে! আল্লাহ আমাদের সকলের জন্য তাঁর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজকে আরও অনেক সহজ করে দিন। আল্লাহুম্মা আমিন। ইন-শা-আল্লাহ সামনের দিনগুলোতে আমরা আমাদের কাজগুলো নিয়ে আপনাদের সামনে আসছি। প্রত্যাশা রইলো আপনাদের আন্তরিকতা ও দু’আ আমাদের জন্য সবসময় অব্যাহত রাখবেন। জাযাক আল্লাহু খাইরান...

আখিরাতের জন্য পরিকল্পনা করা

  জানেন, আমরা এটা থেকে কি শিখলাম? কোন কিছুকে বড় করে দেখলেই সেটা বড় ব্যাপার হয়ে যায়। কোন কিছুকে ছোট করে দেখ তাহলেই সেটা সামান্য মনে হবে। জানেন, এই আয়াতে আখিরাতকে বড় এবং দুনিয়াকে ছোট করে দেখানো হয়েছে।পুরো আয়াতটা এটা নিয়েই। দুনিয়াতে আমরা জীবন যাপন করবো। আমাদের ক্যারিয়ার হবে।আমাদের শিক্ষাগত অর্জন থাকবে।আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই সব কিছুই জীবনে থাকবে।কিন্তু একটা ব্যাপার কি জানো এই সব কিছু ক্ষণস্থায়ী। সব কিছুই। একদিন আসবে যেদিন এক জমায়েত হবে।এবং সেদিন তারা নামায পড়বে। আর সেদিন তারা একটা ঘোষণা দিবে।যে একটা জানাযা হবে। এবং এই ঘোষণাটা একদিন হবে আমার জন্য এবং একদিন হবে আপনার জন্য। এটা হতে যাচ্ছে এবং একদিন মানুষ আমাদের জন্য জানাজার নামায পড়বে। এবং ততক্ষনে আমরা চিরকালের জন্য চলে গেছি। এবং এটা শীঘ্রই ঘটবে, দেরীতে নয়। আমি বলতে চাচ্ছি আমাদের জীবনের অনেকখানি তো ইতোমধ্যেই কেটে গেছে। সুতরাং এমন নয় যে সেই দিনটা থেকে আমরা দূরে যাচ্ছি, বরং আমরা সেই দিনের আরো কাছে পৌছাচ্ছি। তাই যত তাড়াতাড়ি আমরা এটা আত্মস্থ করি যে, আল্লাহর কাছে যা আছে তা তুলনামূলক ভাবে ভালো। কারন যে কোন ভাবেই হোকনা কেন আমরা সেদিকেই যাচ্ছি। তাহলে আমরা নিজেরা নিজেদেরই উপকার করব । যদি আমরা শুধু এটা শিখতে পারি যে কিভাবে সময়ের সদ্ব্যবহার করতে হয়। যেমনটা আমি বললাম যে আমরা ১০ বছরের পরিকল্পনা করি, ১৫ বছরের পরিকল্পনা করি।কিন্তু আমরা আখিরাতের কথা চিন্তাই করিনা। তাহলে আখিরাতের কথা কিভাবে ভাবা উচিত? কিভাবে আখিরাতের জন্য বাস্তবতা ভিত্তিক পরিকল্পনা করা যায়? আখিরাতের জন্য আমরা ১০ বছরব্যাপী, ১৫ বছরব্যাপী পরিকল্পনা করিনা। আমরা এর জন্য দৈনন্দিন পরিকল্পনা করি। এটা দীর্ঘ সময়ব্যাপী লক্ষ্য নির্ধারণ করা নয়। এটা আজকের দিনটা আপনি কিভাবে ব্যয় করলেন তার সাথে সংশ্লিষ্ট। আপনি তার পরে কি করতে যাচ্ছেন এটা তার...

মানসিক শান্তির সন্ধানে

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম [উস্তাদ নুমান আলী খানের কুর’আনিক জেমস (Quranic Gems) সিরিজের ঊনত্রিশতম পর্বের বাংলা ভাবার্থ। দ্রুত অনুবাদ করার কারণে কিছু ভুল-ত্রুটি থাকাটা স্বাভাবিক। আমার এই অনিচ্ছাকৃত ভুল আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যা কিছু কল্যাণকর তার সম্পূর্ণই আল্লাহ্‌র তরফ থেকে, আর যা কিছু ভুল সেটি সম্পূর্ণ আমার। আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন আমার সেই ভুলগুলো মার্জনা করুন। তিনি পরম ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। আল্লাহ্‌তালা আমাদের সকলকে কুর’আনের আয়াতসমূহ বুঝে পড়ার তৌফিক দান করুন এবং সঠিক মর্মার্থ বুঝে সেই ভাবে জীবনকে পরিচালিত করার মত হিকমাহ, সাহস ও ধৈর্য দিক। আমিন।] সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র; যিনি এই বিশ্বগজতের প্রতিপালক। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর বার্তাবাহক মুহাম্মদ (সাঃ), তাঁর পরিবার-পরিজন ও সঙ্গী-সাথীদের প্রতি। আল্লাহ্‌ বলেনঃ “প্রকৃতপক্ষে তারাই শান্তি ও নিরাপত্তার অধিকারী এবং তারাই সঠিক পথে পরিচালিত, যারা নিজেদের ঈমানকে যুলমের সাথে (শিরক এর সাথে) মিশ্রিত করেনি।” (সূরা ৬: আল-আন’আম, আয়াত:৮২) এই আয়াতটির পূর্বের আয়াতের সাথে সম্পৃক্ততা রেখে আমরা ঐ সম্প্রদায়ের মাঝে তুলনা করব যে কারা শান্তি অর্জন করবে। আজ আমরা তাদের নিয়ে আলোচনা করব যারা জীবনে শান্তি অর্জন করবে, অভ্যন্তরীণ শান্তি, আত্মার শান্তি। আমাদেরকে জীবনে অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয় – আবেগ, ক্লান্তি, অবসাদ, হতাশা, দুঃখ কষ্ট রাগ দুশ্চিন্তা…… এতসবের মাঝে থেকে কীভাবে আমরা শান্তি অর্জন করব? এই আয়াত থেকে তা শিখব। বিশ্বাস এবং শান্তির মাঝে সম্পর্ক রয়েছে, মানসিক এবং শারীরিক শান্তি। যারা সত্যিকার অর্থে ঈমান এনেছে, বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং তাদের সেই ঈমানের ছদ্মবেশে কোন খারাপ কাজ করেনি তাদের জন্যই আছে শান্তি। (ঈমান অর্থ বিশ্বাস স্থাপন, ছোটবেলা থেকে স্কুলের ধর্ম বইয়ে পড়ে আসছি ঈমান আনা মানে আল্লাহ্‌র উপর বিশ্বাস স্থাপন এবং যেহেতু আমরা জন্মগত ভাবে মুসলিম এবং আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করি তাই আমরা মনে করি আমরা ঈমান এনেছি। ঈমান আনা বলতে এখানে...

ছেলে এবং মেয়েরা কি শুধু বন্ধু হতে পারে?

মিডিয়াফায়ার ডাউনলোড লিংকঃ দা দীন শো হোস্টঃ আমাদের বলুন, নারী এবং পুরুষ, ছেলে এবং মেয়ে কি বন্ধু হতে পারে? একটা মেয়ে কি এই রকম আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারে দেখ আমি ওর সাথে শুধু ঘুরতে যাচ্ছি এবং অন্য মেয়েরা আমাকে নিয়ে ঈর্ষান্বিত। শুধু শুধু ওরা ভুল কথা বলে। জানো ও আমার সাথে হাঁটবে। ও আমার সাথে খুবই ভালো আচরণ করে, ও আমার আসলে প্রশংসা ও করে, ও সবসময় আমাকে খুব মিষ্টি করে কথা বলে, ও আসলে খুবই ভালো জানো। আমি ওর সাথে কিছুই করবো না; আমরা শুধু একসাথে ঘোরাঘুরি করবো। এটা কি সম্ভব? নুমান আলী খানঃ এটা হতে পারে না, এটা হচ্ছে তো অবশ্যই। এবং এটা হওয়া উচিৎ নয় তাও সত্যি। দা দীন শো হোস্টঃ কিন্তু ওরা বলছে ওরা শুধুই বন্ধু। ওরা বন্ধুই থাকবে। ছেলে এবং মেয়ে কি শুধু বন্ধু হতে পারে? নুমান আলী খানঃ না। ছেলেরা সেটা খুব ভালো করে জানে। তারা স্বীকার করবে না কিন্তু তারা এটা খুব ভালোভাবে জানে। কখনো কখনো মেয়েরা জানে না এবং এটাই আমাকে আমার বোনদের, মেয়েদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় ফেলে যে তারা অনেক সময় পুরুষদের এই পরিকল্পিত ফাঁদটা বুঝতে পারে না। দা দীন শো হোস্টঃ পুরুষদের পরিকল্পিত ফাঁদ? নুমান আলী খানঃ হ্যাঁ। তো আমরা দেখা করছি কারণ জানেন তো আমরা ল্যাব পার্টনার অথবা আমরা স্কুলের প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা করছি, MSA, সম্মেলন, আমরা ইসলাম নিয়ে আলোচনা করছি এবং এইসব বোনেরা অনেক সময় এসবের আড়ালের পুরোটা দেখতে পান না এবং আমাদের বোনদের মধ্যে আসলে সচেতনতার এবং সাবধানতার মাত্রা বাড়াতে হবে। যাতে তারা…আপনাকে পুরুষদের সাথে মতবিনিময় করতে হবে, এটা হবেই, ব্যবসা ক্ষেত্রে, স্কুলে, কর্ম ক্ষেত্রে এটা হবেই। আপনার মতবিনিময় হবেি কিন্তু কিছু গাইডলাইন আপনাকে মানতে হবে যাতে তা অস্বাস্থ্যকর না হয়ে স্বাস্থ্যকর হয়। আমি আসলে ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস...

আল্লাহর রাস্তায় অগ্রসর হও

“হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, যখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর, তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প।” আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলি আল্লাহ্‌ সুরা তওবা-র ৩৮ নং আয়াতে বলেছেন “ইয়া আইয়ুহাল্লাজ্বীনা আমানূ” – যারা নিজেদের বিশ্বাসী বলে দাবী কর, “মা লাকুম” -তোমাদের কী সমস্যা? “ই’জা ক্বীলা লাকুমুনফিরূ ফী সাবীলিল্লাহ” তোমাদেরকে বলা হয়েছে আল্লাহ্‌র পথে এগিয়ে যাও “সাকালতুম ই’লাল আ’রদ্ব” তোমাদের পা হিঁচড়ে যায়। তোমরা মাটিতে গেঁড়ে যাও। ভাবুন এমন যে কারো পা বালিতে গেঁড়ে গিয়েছে। এবং সে তার পা টেনে হিঁচড়ে চলার চেষ্টা করছে এবং সে এগুতে পারছে না- আল্লাহ্‌ এই দৃশ্যের কথা বলছেন। “ইস সাকালতুম ই’লাল আ’রদ্ব” আল্লাহ্‌ কেন এই দৃশের কথা বলছেন? আমি এই আয়াতটি বেছে নিয়েছি বিশেষত আমাদের তরুণদের জন্য। রমজান মাসে তোমরা দেখিয়েছ তোমরা রোযা রাখতে সক্ষম, তোমরা অনেক বদ-অভ্যাস থেকে বিরত থাকতে পারো যেসব থেকে তোমরা ভেবেছিলে তোমরা বিরত থাকতে পারবে না, তোমরা সময়মত উঠে নামায পড়তে পারো, তোমরা অ-নে-ক কিছু করতে সক্ষম; এইজন্য নয় যে এটা রমজান মাস এবং এমাসে তোমরা সুপার হিউম্যান হয়ে যাও বরং আল্লাহ্‌ তোমাদের সেই সামর্থ্য দিয়েছেন। এরপর আল্লাহ্‌ খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করলেন, যখন তোমাদেরকে সামনে আসতে বলা হয় এবং তোমরা তা করতে সক্ষম তখন তোমাদের পা টান দাও, এটা কেন?” “সাকালতুম ই’লাল আ’রদ্ব” এবং এই প্রশ্নটি করা হয়েছে বিশ্বাসীদের, বিশ্বাসীদের প্রশ্ন করা হয়েছে, “আ’রাদ্বীতুম বিল হায়াতিদ দুনিয়া মিনাল আখিরাহ” তোমরা কী আখিরাতের পরিবর্তে এই পার্থিব জীবন নিয়ে পরিতুষ্ট? আল্লাহ্‌ এই প্রশ্ন করেছেন বিশ্বাসীদের। আল্লাহ্‌ যেন বলছেন, যারা বিশ্বাসী নয় তারা তো অবশ্যই এই পার্থিব জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট কারণ তাদের কাছে এর পরবর্তী জীবনের কোন ধারণা নেই। তোমরা বিশ্বাসী, আমি তোমাদের জান্নাতের...

প্রবন্ধ

প্রাইভেট সেক্টর এবং একাডেমিয়ার গুরুত্ব

[বক্তব্যটি আমেরিকার প্রেক্ষাপটে দেয়া হয়েছে] আপনার দৈনন্দিন জীবনে সরকারের প্রভাব কতটুকু? আমি জানি, আপনি সরকারকে প্রতি বছর ট্যাক্স দিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারটি আপাতত একপাশে রেখে যদি আপনার প্রাত্যাহিক জীবনের কথা ভাবেন, তাহলে আপনার উপর সরকারের প্রভাব কতটুকু? উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এই দেশে মানুষের মূল ভাবনা হলো ফ্যাশন সচেতনতা, জীবনের সাফল্য-ব্যর্থতা, মন-মানসিকতা ইত্যাদি। আপনারা জানেন, এসবের পেছনে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। প্রাইভেট সেক্টরের প্রভাবেই এসব বিষয়ে মানুষ প্রভাবিত হচ্ছে। এগুলোর পেছনে আছে বিনোদন জগত, একাডেমিয়া এবং বড় বড় করপোরেশনগুলো, যারা আমাদের কাছে তাদের পণ্য বিক্রি করছে, বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। এমনকি মেডিক্যাল রিসার্চসহ বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক অর্থায়নকৃত সকল ধরনের গবেষণা প্রকল্প ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করছে। তাহলে বুঝা যাচ্ছে, আপনার দৈনন্দিন জীবনকে যেসব বিষয় প্রভাবিত করে তার বেশিরভাগই সরকারী নয়, বেসরকারী খাতের উদ্যোগ। এই ব্যাপারটি বুঝতে পারলে আমাদের এখন কী নিয়ে চিন্তা করার কথা? আমরা যদি সত্যিই এই সমাজকে আমাদের আদর্শে পরিচালনা করতে চাই, তাহলে আমাদেরকে কীসের নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে? বেসরকারী খাতের। এটি একটি অবাধ ক্ষেত্র। অথচ মুসলমানরা এখনো এই সেক্টরে কাজ শুরুই করতে পারেনি। মিডিয়াতে কয়জন মুসলমান আছে? বর্তমানে মিডিয়া সরকারের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি পাল্টে দিতে পারে মিডিয়া। মিডিয়া প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের মুখে পর্যন্ত ঠেলে দিতে পারে। মিডিয়া জনমানসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। ‘ওমাবা একজন মুসলিম’ – এ ধরনের চটকদার ও বিপজ্জনক গুজব মিডিয়াই ছড়াতে পারে পারে। এসব করেও তারা পার পেয়ে যায়। কারণ, মিডিয়া অত্যন্ত শক্তিশালী। তারপর একাডেমিয়ার কথা ধরুন। এই সমাজের যারা নেতা, তাদের চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। একাডেমিয়া জগতে কয়জন মুসলমান আছে? কয়জন মুসলিম নৃবিজ্ঞানী, রাজনীতি বিজ্ঞানী কিংবা ইতিহাসবিদ রয়েছে? এসব ক্ষেত্রে আমাদের পদচারণা নেই বললেই চলে। আমরা এ দেশে আসছি এবং ভাবছি, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়াই বুঝি জীবনের সফলতা। তা...

একজন বিশ্বাসীর রাত্রিযাপন (১ম পর্ব)

মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে সবার জন্য রাতের সময়টা স্পেশাল। একটা বিষয় মনোবিজ্ঞানীরা প্রায় বলে থাকেন – রাতের সময়টা হলো আধ্যাত্মিক সময়। এই সময়টাতে মানুষ তার নিজের মনের অনেক কিছু শেয়ার করতে চায়। তারা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ থাকে। ইসলাম কী করে, ইসলাম এই সময়টার সুযোগ গ্রহণ করতে বলে। অন্যরা যখন বিভিন্ন পাপ কর্ম করে এই সময়টা কাটায়, বিশ্বাসীরা তখন এই আধ্যাত্মিক, এই আবেগময় সময়টা তাদের রবের উদ্দেশ্যে নিবেদিত করে। স্কলাররা প্রায় বলে থাকেন, রাতের কাজ একজন ব্যক্তির ভালোবাসার সাক্ষ্য দেয়। সুতরাং, মানুষ যে বিষয়টা বেশি ভালোবাসে, সাধারণত সে বিষয়টা রাতের জন্য উৎসর্গ করে। যাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হলো, মৌজ মাস্তি করা, যতবেশি সম্ভব আনন্দ লাভ করা, তারা তাদের রাতের সময়টা এই লক্ষ্য অর্জনে ব্যয় করে। অন্যদিকে, যদি একজন ব্যক্তির একমাত্র লক্ষ্য হয় আখেরাত এবং আল্লাহর জন্য ভালোবাসা, তাহলে তিনি তার রাতের সময়টা এই আখেরাত পাওয়ার উদ্দেশ্যেই ব্যয় করবেন। এবং তার রাতের সময়টা আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِّلَّهِ ۗ – “কিন্তু যারা মু’মিন আল্লাহর সঙ্গে তাদের ভালবাসা প্রগাঢ়।” ইমাম হাসান আল বসরী (র)…. আমি প্রায়শ ইমাম হাসান আল বসরী (র) এর উদৃতি দিয়ে থাকি। কারণ তিনি ইসলামের দ্বিতীয় প্রজন্মের মানুষ, একজন তাবেয়ী। তিনি আমাদের আধ্যাত্মিক দিকের উপর বেশ গুরুত্বারোপ করেছেন। আমি মনে করি, তাঁর কথাগুলো যদি আমাদের সময়ে আমরা পালন করি, তাহলে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারবো। তো, এই মহান ইমাম হাসান আল বসরী (র) কে কিছু মানুষ জিজ্ঞেস করেন – ” কেন আমরা ক্বিয়ামুল লাইল তথা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারি না? তারা আরো বলেন – ” আমরা রাতে নামাজ পড়তে উঠার জন্য অনেক চেষ্টা করি, কিন্তু আমাদের জন্য এটা অনেক কঠিন মনে হয়।” তখন তিনি জবাবে বলেন – ” তোমাদের পাপের কারণে এবং...

দুঃখ শোকে হতাশ হয়ে পড়বেন না ; আল্লাহ আপনার কষ্টের কথা জানেন

ই পৃথিবীতে আপনি কখনই পরিপূর্ণ সুখী হতে পারবেন না। আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা আপনাকে যত কিছুই দান করুক না কেন? আপনি কখনই সত্যিকার অর্থে পরিতৃপ্ত হবেন না। এই দুনিয়াকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে এটা আপনার হৃদয়কে ভেঙ্গে চুরমার করে দিবে। এটাকে নকশা করা হয়েছে এভাবেই। আপনি যদি দুনিয়ায় সুখী হওয়ার প্রত্যাশায় থাকেন, আপনি আসলে ভুল জায়গায় আছেন। আমার প্রিয় ভাইয়েরা, কিভাবে নিজেকে মূল্যহীন ভাবতে পারেন? আমার প্রিয় বোনেরা, কিভাবে নিজেকে মূল্যহীন ভাবতে পারেন? আপনি তো লাত, ওজ্জার দাস নন। অথবা ঈসা (আঃ), কৃষ্ণ বা গণেশ এর দাস নন। আপনি তো ফ্যাশন বা অর্থের দাস নন। অথবা খ্যাতি, সৌন্দর্য, ক্ষমতা বা পদবির দাস নন। আপনি আল্লাহর দাস, আল্লাহর গোলাম। বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষের মাঝে আল্লাহ আপনাকে পছন্দ করেছেন। আল্লাহ আপনাকে পছন্দ করেছেন আর ইসলামের মাধ্যমে মহিমান্বিত করেছেন। দুঃখ-বেদনা একমাত্র তখনি নেতিবাচক হয়, যদি এটা আপনার এবং আল্লাহ সুব হা নাহু ওয়া তায়ালার মাঝে বাধার দেয়াল তৈরি করে। আর দুঃখ-বেদনা তখন ইতিবাচক হয়ে উঠে, একটি অনুপ্রেরণা হয়ে উঠে যখন এটি আপনাকে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালার নিকটবর্তী করে তোলে। ”ও আমার প্রিয় বান্দাহ! তোমার প্রভুর নিকট ফিরে আস।” ও আমার প্রিয় দাস! এটি তোমার জন্য একটি স্মরণিকা এজন্য যে আমি তোমাকে আমার নিকট ফিরিয়ে আনতে চাই। ‘’তাদের উপর কোন ভয় নেই আর তারা দুঃখ ভারাক্রান্তও হবে না।” এখনো ঘটেনি এমন কিছুতে মানসিকভাবে আতঙ্ক গ্রস্ত হয়ে পড়বেন না, এটা হল ভয়। আবার ঘটে যাওয়া কোন দুর্ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙ্গেও পড়বেন না। সবকিছুই আল্লাহর পূর্বনির্ধারিত। মুসলমানদের জন্য দ্বীনের যে বিষয়টি মেনে নেয়া সবচেয়ে কঠিন – আমাদের দ্বীনের ৬ষ্ঠ অনুচ্ছেদ – তা হল ”আল্লাহর কদর”। আমরা এটা স্বীকার করতে চাই না। আমরা আল্লাহর ক্ষমতার কথা ভুলে যাই। আমরা আল্লাহর উপস্থিতির কথা ভুলে যাই। আমরা ভুলে...

ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় উপাদানসমূহ

আমরা কাউকে অপছন্দ করি, কাউকে ভালোবাসি। ঠিক বিপরীত বিষয় এদুটি। এভাবে আপনি যে আল্লাহর প্রিয়, আল্লাহ আপনাকে ভালোবাসে কিনা সেটা বুঝতে পারলেই উপলব্ধি করতে পারবেন। ইসলাম কেবল হানাফি-সালাফি নিয়মনীতি না – এজন্য আপনার ফিকহের সাথে না মিললেই আরেকজনের মসজিদ ধ্বংস করে দিবেন যেখানে আল্লাহর জন্য সিজদা করা হয় – না এইটা ইসলাম না। ফিকহটা আপনার, কিন্তু সেই মসজিদে যে সিজদা করা হয় সেইটা আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য। আবার আপনি বিশুদ্ধ জিনিসের দাওয়াত দিবেন কিন্তু বিশুদ্ধ পদ্ধতিতে দিবেন না সেইটাও ইসলাম না। আপনি সারা জীবন নামাজ পড়বেন, কিন্তু কোনো এক বা দুইজনের প্রতি জুলুম করেছেন, আল্লাহর অন্য সৃষ্টির উপর জুলুম করেছেন সেজন্য আপনার সমস্ত জীবনের ইবাদাতই শেষ হয়ে যেতে পারে। কারণ আপনি আল্লাহর ভালোবাসার ঠিক বিপরীত একটা দুইটা চরম কাজ করেছেন। আপনি প্রচুর ইসলামী কাজ করেন, কিন্তু সাথে আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দিলেও আপনার সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যেতে পারে। এক মহিলা অনেক নামাজ পড়তো, সাদাকাও করতো অনেক কিন্তু সে একটি বিড়ালকে না খাইয়ে রেখেছিলো রেখেছিলো, সেজন্য তার সমস্ত আমল শেষ, জাহান্নামে গিয়েছিলো। কারণ সে আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দিয়েছিলো, যেটা আপনার সমস্ত আমলের বিপরীত, ভালোবাসার বিপরীত। আবার আরেকজন কেবল ফরজগুলো মানতো, কিন্তু কাউকে কষ্ট দিতো না, সে জান্নাতে গিয়েছিলো। বোঝা গেছে? ইসলামের মৌলিক বিষয় বুঝবেন কোনগুলো? আল্লাহকে ভালোবাসার জায়গাগুলো বুঝুন। সিজদায় বেশি বেশি থাকুন, আল্লাহকে ভালোবাসার কাজগুলো দেখুন। পোস্টের পাশাপাশি নিচের উস্তাদের লেকচারটি দেখুন, এই বিষয়েই পূর্বে আমাদের ডাবিং...

আল্লাহর উপর ভরসা ধরে রাখা

সর্বশেষ যে বিষয়টি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই তা হলো – আল্লাহর উপর ভরসা ধরে রাখা। অনেকের জন্য এই বিষয়টা মেনে নেয়া বেশ কঠিন যে, আল্লাহ তার কথা শুনবেন। তারা হয়তো লম্বা সময় ধরে কোনো খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। তারপর তারা মনে মনে ধরে নেন যে, আল্লাহ আমার কথায় কোনো মনোযোগ দিবেন না, আমার দোয়া তাঁর নিকট গুরুত্বহীন, আমি দোআ করার কোনো অর্থ দেখি না। আপনাদের একটা কথা বলে রাখি, আল্লাহর নিকট থেকে আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ যে উপহারটি পাবেন, তা কী জানেন? ক্ষমা। এটাই সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার। আপনি এটার মূল্য উপলব্ধি করুন আর নাই করুন। আর যা কিছু আল্লাহ আপনাকে দিবেন বলেছেন, এর সবই অতিরিক্ত। আপনাদেরকে একটা উদাহরণ দেই। আমার অনেকগুলো সন্তান আছে। ধরুন, আমার এক সন্তানের উপর আমি খুবই অসন্তুষ্ট। সে কোনো একটা অন্যায় করেছে, তাই আমি খুবই রাগান্বিত হয়ে আছি। “তোমার এটা বলা উচিত হয়নি। তোমার এটা করা উচিত হয়নি। আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে, তুমি এটা করেছো।” এভাবে আমি তাকে কিছুটা বকা-ঝকা করলাম। তারপর দিনের অন্য এক সময় আমার জন্য তার কিছু একটা করার কথা। যেমন, আমার জন্য একটা কার্ড আঁকার কথা যাতে লেখা থাকবে “বাবা, আমি আপনাকে ভালোবাসি”। সে জিনিসটা আঁকলো। কিন্তু পরে কি মনে করে কাগজটা টুকরা টুকরা করে ময়লার বাক্সে ফেলে দিলো। এটা দেখে তার অন্য ভাই বললো – “কী! তুমি এটা ফেলে দিলে কেন? তোমার না এটা বাবাকে দেখানোর কথা।” জবাবে সে বললো – ” বাবা আমার উপর খুবই রাগান্বিত। তিনি এটার প্রতি কোনো গুরুত্ব দিবেন বলে মনে হয় না। তিনি আমাকে আর ভালোবাসেন না।” আমি যদি জানতাম যে, সে বিষয়টাকে এভাবে দেখছে তাহলে আমি কী করতাম? আমি কি এভাবে বলতাম যে, “হ্যাঁ, ফেলে দাও। আমার এসবের কোনো দরকার নেই?” না,...

মু’জিযা

No Results Found

The page you requested could not be found. Try refining your search, or use the navigation above to locate the post.

Facebook Like

সাথেই থাকুন

 

<—-Facebook & YouTube —->

Youtube Subscriber