উস্তাদ নুমান আলী খান

নুমান আলী খান একজন মুসলিম দা’ঈ। কুর’আন এর জ্ঞানে তার অসাধারণ গভীরতা এবং সুন্দর উপস্থাপনা শৈলীর কারণে সমগ্র বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশ এবং বাংলাভাষাভাষী অনেক ইসলাম অনুরাগী তরুণ তাঁর অসাধারণ আলোচনা থেকে উপকৃত হচ্ছে নিয়মিত …

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন

বর্তমানে আমরা ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল এ নুমান আলী খানের লেকচার গুলো নিয়মিত প্রকাশ করছি এবং এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে তা শ্রেণীবদ্ধ ভাবে সংরক্ষণ করছি। আপনি আমাদের ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল লাইক /সাবস্ক্রিপশন করে আমাদের সাথে আরো নিবিড় ভাবে সংযুক্ত থাকতে পারেন।

আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন…

সংযুক্ত থাকুন

ভিডিও + প্রতিলিপি

আপনাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে, সামনে এগিয়ে যান

– আসসালামু আলাইকুম আব্দুল্লাহ, – ওয়ালাইকুমুস সালাম। – কেমন চলছে? আপনি আপনার এক বন্ধু সম্পর্কে কথা বলতে চাচ্ছিলেন? – হ্যাঁ, আমি একজনের সাথে বল খেলছিলাম, এরপর আমরা ‘ঈদ মুবারক’ জাতীয় যা করে না, সেরকম করলাম। কিন্তু সে মনে করে যে সে এমনকি ঈদও পালন করতে পারবে না, কারণ সে মনে করে সে তার অতীতে এমন কাজ করেছে, এবং তার কারণে সে অনেক দূরে সরে গেছে (ইসলাম থেকে)। এবং তার আশেপাশের সবাইও তাকে এই ব্যাপারটা ভুলতে দিচ্ছিল না, তাই কোন আশা আর নেই। আমি তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলাম, কিন্তু সেটা কাজ করল না। – আমারও এরকম অনেক মানুষের সাথে দেখা হয়েছে। কিন্তু সুবহানাল্লাহ, আমরা অনেক নিষ্ঠুর, দয়াহীন অন্য লোকদের প্রতি। এবং পরিহাসের ব্যাপার হল, আমরা আল্লাহর কাছে নিজেদের জন্য অনেক দয়া চাই, কিন্তু আমরা অন্য লোকদের প্রতি তার বিন্দু মাত্রও প্রদর্শন করি না। মানুষ ভুল করতেই পারে, ঠিক আছে। কোন কোন লোক হারাম কাজ করে, কেউ কেউ অনন্য, অসাধারন, হারামের উপর হারাম, এমন কাজ করে। এবং অন্য লোকেরা যখন এটা সম্পর্কে জানে, তখন তারা বলা শুরু করে, ওহ তুমি তো কখনোই ক্ষমা পাবে না, তোমাকে তো কখনোই আল্লাহ মাফ করবেন না। তুমি! ভুলে যাও, তুমি তো জাহান্নামে জ্বলবে। এই ধরনের কথা বার্তা! এবং আপনি যখন বারবার এই ধরনের কথা শুনা শুরু করবেন, আপনি যখন বারবার অনুশোচনায় দগ্ধ হবেন, তখন আপনিও এটা বিশ্বাস করা শুরু করবেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যখন আপনি এটা বিশ্বাস করা শুরু করবেন যে আপনি আর ক্ষমা পাবেন না, তাহলে আপনার এই জীবনে ভাল কাজ করার আর কোন অনুপ্রেরনাই থাকবে না। যেমন ধরেন, আপনি ভাববেন কেন আমি নামাজ পড়বো? কারণ আমি তো এমনিতেই জাহান্নামে যাব। কেন আমি আমার বাবা-মার দেখাশুনা করবো? কেন আমি সত্য কথা বলবো?...

এক বোনের ইসলাম গ্রহনের আবেগপ্রবণ কাহিনী

উপস্থাপকঃ আমাদের সাথে এমন কিছু ঘটনা শেয়ার করুন যে কীভাবে মানুষ শুধু কুরআনের কারণে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। নু’মান আলী খানঃ আমি আপনাকে গত রাতের একটি ঘটনা বলছি। গত রাতে আমি সূরা ত্বহা আলোচনা করেছিলাম। সূরা ত্বহা থেকে কিছু শিক্ষা এবং মূসা আঃ এর ঘটনার সৌন্দর্য এবং কীভাবে আল্লাহ তা আমাদের বলেছেন। আলোচনা শেষে এক তরুণী আমার নিকটে আসলো, ব্রিটেনে বড় হওয়া…মনে হয় চাইনিজ তরুণী। সে আমার কাছে এসে বলল – ” আমি অনেক দিন ধরে ইসলাম নিয়ে ভাবছি, আর আজকের লেকচার শুনে আমি খুব আলোড়িত হয়েছি, কুরআনের এই শিক্ষাগুলো আসলেই আমার মন নরম করে দিয়েছে। কিন্তু আমি আসলে নিশ্চিত নই আমি মুসলিম হতে চাই কিনা।” আমি বললাম – “তোমার পিছুটান কীসে?” সে বলল- “আমি সিওর না।” তারপর আমি বললাম – “তোমাকে এর চেয়ে ভাল উত্তর দিতে হবে”। সে কিছুক্ষণ চিন্তা করলো তারপর বলল- “আমার পিতা মাতা, আমার বন্ধু-বান্ধব, আমার আশপাশের মানুষ, চাপ, ধকল।” আমি বললাম- “এগুলো সবই বাস্তব কারণ। আমি এর সাথে টক্কর দিয়ে পারবো না, আর আমি তোমাকে এটাও বলবো না যে তুমি ইসলাম গ্রহণ করলে, এই বইকে গ্রহণ করে নিলে সব সহজ হয়ে যাবে। আমি মনে করি হ্যাঁ, ঐ সম্পর্কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নিশ্চিত এটা হবে, আমি তোমাকে এখনই বলছি। এটা আসলেই কঠিন হবে, লোকজন তোমার উপর খুবই রাগান্বিত হবে। তবে আমি তোমাকে একটা বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারি, তুমি তোমার অন্তরে যে প্রশান্তি পাবে, এবং আল্লাহর সাথে তোমার যে সম্পর্ক তৈরি হবে তার জন্য এইসব ধকল সহ্য করা যায়।” তখন সে কাঁদতে শুরু করলো। সে সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলো। তখন আমি তাকে বললাম- তুমি জানো, তুমি কেন কাঁদছ? সে বলল- কেন? বললাম – “কারণ তুমি ইতিমধ্যে ইসলাম গ্রহণ করে ফেলেছ। তোমার হৃদয় ইতিমধ্যে ইসলাম গ্রহণ...

প্রবন্ধ

আল্লাহ সবকিছু জানেন এর দ্বারা আসলে কী বোঝায়?

— নোমান আলী খান আজ আমি আপনাদের সাথে আল্লাহর একটি নাম নিয়ে আলোচনা করবো যা কুরআনে বহু বার এসেছে। আর সে নামটি হল: আল-আলীম, যিনি সবকিছু জানেন। আল্লাহ কুরআনে বার বার উল্লেখ করেছেন – তিনি সবকিছু জানেন। “وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ” – যে আয়াতটির উদাহরণ দিয়ে আমি আলোচনা শুরু করতে চাই তা হল, কুরআনের ৬৪ তম সূরা, সূরা আত-তাগাবুনের একটি আয়াত। তিনি বলেন – يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَيَعْلَمُ مَا تُسِرُّونَ وَمَا تُعْلِنُونَ – “নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা আছে, তিনি তা জানেন। তিনি আরও জানেন তোমরা যা গোপনে কর এবং যা প্রকাশ্যে কর।” তাহলে আপনি যা সবার অগোচরে করেন আর যা সবার সম্মুখে করেন – আল্লাহ তার সবই জানেন। وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ – “এছাড়াও আল্লাহ অন্তরের অবস্থা সম্পর্কেও সম্যক জ্ঞাত।” মানুষের মনের মাঝে যা লুকিয়ে আছে তার প্রকৃতি এবং আসল অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ সবসময় পুরোপুরি জানেন। এটি অসাধারণ একটি আয়াত। নতুন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এই আয়াত থেকে স্পষ্টত যা বুঝা যায় তার বাহিরে গিয়ে চিন্তা করুন। আমরা জানি, আল্লাহ সবকিছু জানেন। আমরা জানি, আমাদের বাহ্যিক ব্যাপারগুলো আল্লাহ যেমন জানেন তেমনি তিনি আমাদের গোপন ব্যাপারগুলোও জানেন। আমরা জানি, আল্লাহ সাত আসমানের সবকিছু জানেন। চলুন, এর থেকে কিছু বিষয় সঠিক দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করে দেখি। আল্লাহ কিভাবে আমাদের নিকট তুলে ধরেন যে, আল্লাহ যা জানেন তা কোনদিনও কোনভাবেই আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। আল্লাহর নামের মর্ম উপলব্ধি করার একটি সর্বোত্তম পন্থা হল আমাদের নিজেদের সীমাবদ্ধতা বুঝতে পারা। তারপর তুলনা করলে বুঝতে পারব আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লার ক্ষমতা কতটা ব্যাপক আর আমরা কতটা তুচ্ছ এবং অক্ষম বান্দা। চলুন, ইতিহাসের জ্ঞান দিয়ে শুরু করা যাক। কখন কোন যুদ্ধ হয়েছে, কোন রাজা জয়লাভ করেছে, কোন জাতির উপর বিজয়ী হয়েছে, একটি রাজবংশ...

●|● পৃথিবীঃ আমাদের দ্বিতীয় জীবন – উস্তাদ নোমান আলী খান ●|●

কেমন করে তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী অবলম্বন করছ? অথচ তোমরা ছিলে মৃত। (বাকারা – ২৮) এই আয়াতটি খুবই গভীর দার্শনিক অর্থ বহন করে। এই আয়াত সম্পর্কে অনেক কিছু বলা হয়েছে। যে মতামতগুলো আমার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে সেগুলো এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আমি মরহুম ইসরার আহমেদের কাছে কৃতজ্ঞ। এই আয়াত থেকে সবচেয়ে গভীর অন্তর্দৃষ্টি আমি তার কাছ থেকেই পেয়েছি। তিনি ১৯৮৬ সালে এই আয়াত নিয়ে একটি প্রবন্ধ রচনা করেন। ভারত পাকিস্তানের বহু আলেম তার এই প্রবন্ধের প্রশংসা করেন। আমি এখন আপনাদের নিকট তার একটি সারমর্ম তুলে ধরবো। কারণ আমি মনে করি এটি অনেক মূল্যবান। আল্লাহ আজ্জা বলেন, كَيْفَ تَكْفُرُونَ بِاللَّهِ وَكُنتُمْ أَمْوَاتًا – কেমন করে তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী অবলম্বন করছ? অথচ তোমরা ছিলে মৃত। প্রথম পর্যায় – وَكُنتُمْ أَمْوَاتًا তোমরা মৃত ছিলে। দ্বিতীয় পর্যায় – فَأَحْيَاكُمْ অতঃপর তিনি তোমাদের জীবন দান করেছেন। ৩য় পর্যায় – ثُمَّ يُمِيتُكُمْ তারপর তিনি তোমাদের মৃত্যু দান করবেন; ৪র্থ পর্যায় – ثُمَّ يُحْيِيكُمْ তারপর তিনি তোমাদের আবার জীবিত করবেন। প্রথম পর্যায়টা কী ছিল? তোমরা মৃত ছিলে। আমাদেরকে প্রথম যে বিষয়টি বুঝতে হবে তা হলো – মৃত আর অস্তিত্ব না থাকা একই বিষয় নয়। যেমন, মৃত কাউকে কফিনে রাখা হয়েছে এবং তার জানাজা হচ্ছে – এর মানে এই নয় যে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। প্রকৃতপক্ষে, পৃথিবীর যে কোনো ভাষায় মৃত বলতে এমন কাউকে বোঝায় যার পূর্বে জীবন ছিল। সুতরাং এই আয়াতে মনে হয় যেন একটি ইঙ্গিত রয়েছে…(আমরা একটু পর আবার এ বিষয়ে আলোচনা করবো, তার পূর্বে কিছু বিষয় বুঝে নেয়া জরুরি) কুরআন এবং রাসূল (স) এর সুন্নায় – মৃত্যুকে ঘুমের কাছাকাছি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। মৃত্যু এবং ঘুম একে অন্যের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। ঘুমাতে যাওয়ার সময় আমরা কী পড়ি? ‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমূতু...

আমাদের ধর্ম আপনাকে এই দুনিয়ায় দুর্দশাগ্রস্থ জীবন যাপন করতে বলে না।

—নোমান আলী খান। ইব্রাহিম (আ) আল্লাহর নিকট দুআ করেন- رَبِّ اجْعَلْ هَٰذَا بَلَدًا آمِنًا وَارْزُقْ أَهْلَهُ مِنَ الثَّمَرَاتِ مَنْ آمَنَ مِنْهُم بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ – ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি এ শহরকে নিরাপদস্থল করুন এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালের উপর ঈমান আনে, তাদেরকে ফলমূল হতে জীবিকা প্রদান করুন’। (২:১২৬) এই উম্মাহর ভবিষ্যতের জন্য ইব্রাহিম (আ) এর মূল উদ্বেগ ছিল— নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধি। উম্মাহর নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধি নিয়েই তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। অন্য যে কোনো কিছুর চেয়ে। যারা আল্লাহ এবং শেষ বিচারের দিনে বিশ্বাস করে তাদের জন্য তিনি এটাই চেয়েছেন। আমাদেরকে এই ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের ধর্ম এই দুনিয়াতে আপনার জীবনকে সৌন্দর্যময় করে তোলে, একই সাথে এটা আপনাকে এমন এক আখিরাতের জন্য প্রস্তুত করে যা আরো সৌন্দর্যময়। এটা যেমন আপনাকে দুনিয়ার সামগ্রীর জন্য অতিরিক্ত ভোগ বিলাসী করে তোলে না, একই সাথে এটা আপনার জীবনকে দুর্দশাগ্রস্তও করে তোলে না। আল্লাহ আপনাকে এই দুনিয়াতে সুখী করতে চান এবং পরকালেও তিনি আপনাকে সুখী করতে চান। আল্লাহ বলেন, وَ جَعَلۡنَا لَکُمۡ فِیۡهَا مَعَایِشَ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تَشۡکُرُوۡنَ – “তোমাদের জন্য তাতে রেখেছি জীবনোপকরণ। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞ হও।” (৭:১০) তিনি এই পৃথিবীতে এমন সব উপকরণ রেখেছেন যা ব্যবহার করে তোমরা ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারবে। এমনকি আমরা যখন জান্নাতের কথা বলি, তিনি জান্নাতের কোন কোন নিয়ামতের বর্ণনা দিয়েছেন? গাছপালা, বাগান, ঝর্ণাধারা, সম্পদ, সুন্দর জামাকাপড়, অলংকার, সুন্দর স্বামী স্ত্রী। যদি এগুলোর কোনোটার কোনো আনন্দ এই দুনিয়াতে উপভোগ না করতেন তাহলে কোনোদিন কি জান্নাতের গুলোর জন্য আকৃষ্ট হতেন? কল্পনা করুন, এই দুনিয়াতে কোনো গাছ নেই। আল্লাহ যখন বলেন— জাওয়াতা আফনান (উভয় উদ্যানই ঘন শাখা-পল্লববিশিষ্ট) , মুদহাম্মাতান (কালোমত ঘন সবুজ)। আপনি তখন বুঝতেন? এগুলো কী? আল্লাহ যদি এই দুনিয়াতে আমাদেরকে ঝর্ণাধারা না দেখাতেন এবং কুরআনে বলতেন,...

পরীক্ষা : সম্মান ও অনুগ্রহ দান

–উস্তাদ নোমান আলী খান। আল্লাহ বলেন – فَأَمَّا الْإِنسَانُ إِذَا مَا ابْتَلَاهُ رَبُّهُ فَأَكْرَمَهُ وَنَعَّمَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَكْرَمَنِ – ” মানুষ এরূপ যে, যখন তার পালনকর্তা তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর সম্মান ও অনুগ্রহ দান করেন, তখন বলে, আমার পালনকর্তা আমাকে সম্মান দান করেছেন।” আল্লাহ এখানে বলছেন তিনি মানুষকে সম্মান এবং অনুগ্রহ প্রদান করার মাধ্যমে পরীক্ষা করেন। এখানে তিনি ‘আনআমাহু’ বলেন নি, তিনি বলেছেন – نَعَّمَهُ অর্থাৎ তিনি বার বার দিতে থাকেন। তিনি তার জীবনকে ক্রমান্বয়ে উন্নত করতে থাকেন… ফলে আপনি দেখতে পান সমাজে হঠাৎ করেই তার সম্মান বেড়ে যায়। কারো কারো ভার্সিটি থেকে ডিগ্রি অর্জন করলে সম্মান বেড়ে যায়। আবার কেউ ভালো কোন চাকরি পেলেও সমাজে তার সম্মান বেড়ে যায়। এখন প্রশ্ন হল কেউ সম্মান অর্জন করার পর যদি বলে, “আল্লাহ আমাকে সম্মানিত করেছেন” তাহলে এখানে সমস্যা কোথায়? কিন্তু এই আয়াতে এই কথাটি সমালোচনামূলক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে সমালোচনাটি হলো, “আল্লাহ আমাকে সম্মানিত করেছেন” এই কথা বলে আপনি থেমে যেতে পারেন না। আপনাকে বলতে হবে আল্লাহ আমাকে সম্মানিত করেছেন, আর এই সম্মানিত করার মাধ্যমে তিনি আমাকে পরীক্ষা করছেন। আয়াতের ভাষা ছিল, ” যখন তার পালনকর্তা তাকে পরীক্ষা করেন।” আর সেই পরীক্ষার অংশ হিসেবে তিনি তাকে সম্মান দান করেন এবং অবিরাম নেয়ামত দান করতে থাকেন। এখন বান্দা কীভাবে সাড়া দেয়? বান্দা শুধু নিজের উন্নতিই দেখতে পায়। আল্লাহ যে তাকে পরীক্ষাও করছেন সেই ব্যাপারটা উপলব্ধি করতে সে ব্যর্থ হয়। এখানে পার্থক্যটা কোথায়? আপনি যদি এটাকে আপনার প্রতি আল্লাহর সম্মান ও অনুগ্রহ মনে করেন এবং পরীক্ষা মনে না করেন তাহলে আপনি ভাববেন – “আল্লাহর কাছে আমি মনে হয় অনেক ভালো তাই তিনি আমাকে এতোসব নেয়ামত দান করছেন। আল্লাহ আমাকে সম্মান দান করেছেন কারণ আমি নিশ্চয়ই সম্মান পাওয়ার যোগ্য। আল্লাহ অনেক ভালো।” জীবনে...

সবচেয়ে বিশুদ্ধ বুদ্ধির মানুষ কারা?

— নোমান আলী খান। মানুষের মাঝে যাদের সবচেয়ে পরিপক্ক ঈমান রয়েছে কুরআনে তাদের জন্য একটি পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, আর তা হলো – উলুল আলবাব বা সবচেয়ে পরিশুদ্ধ বুদ্ধির মানুষ। আল্লাহ এই মানুষদের কথা সূরা আলে-ইমরানে বলেছেন – إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ – “নিশ্চয়ই আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে এবং রাত্র ও দিনের আবর্তনে জ্ঞানবানদের (উলুল আলবাবদের) জন্য বহু নিদর্শন আছে।” (৩:১৯০) তারা ঈমানের বুদ্ধিবৃত্তিক অনুসন্ধানে এবং ঈমানের আধ্যাত্মিক অনুসন্ধানে এক ধরণের পরিপক্কতায় পৌঁছে গিয়েছে, এমনকি কুরআনের সংস্পর্শে আসার পূর্বেই। সবচেয়ে পরিণত ঈমানের মানুষেরা ঐশী জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পাওয়ার পূর্বেই নিজেদের ভেতর বিশ্বাসের ভিত গড়ে তুলেছিলেন। চলুন দেখি, কীভাবে? আল্লাহ বলেন – “ইন্না ফিই খালকিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়াখতিলাফিল লাইলী ওয়ান নাহারি…” নিশ্চয়ই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টিতে এবং রাত্র ও দিনের আবর্তনে “লাআ-ইয়াতিন” অলোকিক নিদর্শন রয়েছে, শুধু একটা নয়, বহু বহু নিদর্শন রয়েছে এর প্রত্যেকটাতে। রাতের মাঝে অনেক শিক্ষা আছে, দিনের মাঝে অনেক শিক্ষা আছে, আকাশের মাঝে অনেক শিক্ষা আছে, পৃথিবীর মাঝেও অনেক শিক্ষা আছে। এর প্রত্যেকের মাঝে রয়েছে অনেক অনেক শিক্ষা। কার জন্য? উলুল আলবাব-দের জন্য। সবচেয়ে পরিশুদ্ধ বুদ্ধির মানুষদের জন্য, খাঁটি বুদ্ধিমত্তার অধিকারী মানুষদের জন্য। এখন, খাঁটি বুদ্ধিমত্তার সংজ্ঞা কী? আল্লাহ কিভাবে খাঁটি বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন? তিনি পরবর্তী আয়াতে “উলুল আলবাব-দের” পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন – الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللَّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىٰ جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ – যাঁরা দাঁড়িয়ে, বসে, ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষয়ে…. তাহলে উলুল আলবাবদের প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো, যারা সবসময় আল্লাহকে স্মরণ করে। দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হল, “ওয়া ইয়াতা ফাক্কারুনা ফিই খালিকস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ” এবং তারা আকাশ ও জমিনের সৃষ্টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে। তাহলে এখন দেখুন…...

মু’জিযা

No Results Found

The page you requested could not be found. Try refining your search, or use the navigation above to locate the post.

Facebook Like

সাথেই থাকুন

 

<—-Facebook & YouTube —->

Youtube Subscriber