জান্নাতে যাওয়ার সহজ মাধ্যমগুলো জেনে নিন

১- প্রত্যেক ওযুর পর কালেমা শাহাদত পাঠ করুন (আশ্‌হাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্‌দাহু লা- শারী কা লাহূ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূ ওয়া রাসূলুহূ) এতে জান্নাতের ৮টি দরজার যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। (১) ২- প্রত্যেক ফরজ সলাত শেষে আয়াতুল কুরসি পাঠ করুণ এতে মৃত্যুর সাথে সাথে জান্নাতে যেতে পারবেন। (২) ৩- প্রত্যেক ফরজ সলাত শেষে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্‌, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার এবং ১ বার (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর) পাঠ করুন এতে আপনার অতীতের সব পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে। (৩) সেই সাথে জাহান্নাম থেকেও মুক্তি পেয়ে যাবেন কেননা দিনে ৩৬০ বার এই তাসবিহগুলো পড়লেই জাহান্নাম থেকে মুক্ত রাখা হয় আর এভাবে ৫ ওয়াক্তে ৫০০ বার পড়া হচ্ছে। (৪) ৪- প্রতিরাতে সূরা মুলক পাঠ করুণ এতে কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। (৫) ৫- রাসুল (সাঃ)-এর উপর সকালে ১০ বার ও সন্ধ্যায় ১০ বার দরুদ পড়ুন এতে আপনি নিশ্চিত রাসুল (সাঃ)-এর সুপারিশ পাবেন। (৬) ৬- সকালে ১০০ বার ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি পরলে সৃষ্টিকুলের সমস্ত মানুষ থেকে বেশী মর্যাদা দেওয়া হবে। (৭) ৭- সকালে ১০০ বার ও সন্ধ্যায় ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি পাঠ করলে কিয়ামতের দিন তার চেয়ে বেশী সওয়াব আর কারো হবে না। (৮) ৮- সকালে ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০০ বার আলহামদুলিল্লাহ্‌, ১০০ বার আল্লাহু আকবার এবং ১০০ বার লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর পাঠ করলে অগণিত সওয়াব হবে। (৯) ৯- বাজারে প্রবেশ করে- (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু য়্যুহয়ী ওয়া য়্যুমীতু ওয়া হুয়া হাইয়ুল লা য়্যামূত, বিয়াদিহিল...

এক টুকরো জান্নাত

“জান্নাতের মাটি আর জমীন হচ্ছে জাফরান আর কস্তুরীর। এর ছাদ হচ্ছে আল্লাহর আসন। শিলাখণ্ডগুলো মণিমুক্তোর। দালানগুলো সোনারূপায় তৈরি। গাছের শাখা-প্রশাখাগুলো সোনারূপার। ফলগুলো মাখনের চেয়ে নরম, মধুর চেয়ে মধুর। পাতাগুলো সবচেয়ে কোমল কাপড়ের চেয়েও কোমল। কিছু নদী দুধের। যার স্বাদ কখনো বদলায় না। কিছু শরাবের। যারা পান করবে তাদের তৃপ্তি মিটবে। কিছু নদী পবিত্র মধুর। কিছু নদী সতেজ পানির। যে-ফলমূল তারা চাইবে তা-ই তাদের খাবার। যে-পাখির গোশত তারা খেতে চাইবে তা-ই পাবে। তাদের পানীয় হচ্ছে তাসনীম, সজীবতা উদ্দীপক ও কাাফূর। তাদের পেয়ালাগুলো স্বচ্ছ, সোনারূপার তৈরি। এর ছায়া এত বড় যে, দ্রুতগতির কোনো অশ্বারোহী এক শ বছর ধরে চললেও সেই ছায়া থেকে বের হতে পারবে না। এর বিশালতা এত বেশি যে, জান্নাতের সবচেয়ে নিচু অবস্থানে যে থাকবে তার রাজত্বে যেসব দেওয়াল, ভবন আর বাগান থাকবে সেগুলো পার করতে হাজার বছর লেগে যাবে। এর তাঁবু আর শিবিরগুলো যেন লুকোনো মুক্তো। একেকটা প্রায় ষাট মাইল লম্বা। এর ভবনগুলোতে রুমের উপর রুম। তাদের নিচ দিয়ে নদী বয়ে যায়। এগুলোর উচ্চতা যদি জানতে চান তাহলে আকাশের যেসব উজ্জ্বল তারা দেখা যায় সেগুলোর দিকে তাকান। দৃষ্টি যেসব তারার নাগাল পায় না সেগুলোও দেখার চেষ্টা করুন। জান্নাতবাসীর পোশাক হচ্ছে রেশম আর স্বর্ণ। তাদের বিছানায় যেসব কাঁথা থাকবে সেগুলো হবে সবচেয়ে উঁচু মাপের রেশমি কাপড়ের। তাদের চেহারা হবে চাঁদের মতো। তাদের বয়স হবে ৩৩। মানবজাতির পিতা আদামের অবয়বে। সেখানে তারা শুনবে তাদের পবিত্র স্ত্রীদের গান। তার চেয়েও ভালো হচ্ছে সেখানে তারা ফেরেশতা আর নাবিদের কণ্ঠ শুনতে পাবে। এর চেয়েও ভালো হচ্ছে সেখানে তারা নিখিল বিশ্বজগতের প্রভুর কথা শুনতে পাবে। তাদের খেদমতে থাকবে চিরতরুণ বালকেরা। তাদের নমুনা হচ্ছে ছড়ানো-ছিটানো মুক্তোদানার মতো। তাদের স্ত্রীরা হবে পূর্ণ-যৌবনা। তাদের অঙ্গ-প্রতঙ্গে যৌবনের উন্মাদনা ছড়াতে থাকবে। সে যদি তার সৌন্দর্য দেখায় তাহলে মনে হবে...

চেনা বন্ধুরা যখন জান্নাতি বা জাহান্নামী

জানেন, মানুষ যখন খুশিতে থাকে তখন তারা কি চিন্তা করে? তারা বসে বসে ভাবে ইসস.. জীবনটা যদি সব সময় এরকম হত। তারা জানে যে এরকম হবার নয়, জীবনের বাঁকে বাঁকে সমস্যা আছে। কিছু না কিছু সমস্যা হবেই, শারীরিক বা মানসিক, কিছু একটা হবেই। জীবনে আর কোন সমস্যাই আসবে না এটা যদি জানা যেত!! আমার অত্যন্ত অত্যন্ত প্রিয় একটা বর্ণনা জান্নাত সম্পর্কে, এটা সুরা সাফফাত থেকে (আয়াত ৫০-৫৯) এক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করলো এবং সে দেখলো সেখানে তার বন্ধুরাও আছে। তারা একজন একজনকে দেখে উচ্ছসিত হয়ে বলল ”আরে তুমিও সফল হয়েছ!!” তারপর তারা একে অপরকে অভিনন্দিত করবে। তারা একজন আরেকজনকে বলতে থাকবে, ও আল্লাহ! তুমি, ও তুমিও!! তারা আবার একজন আরেকজনের সাথে পরিচিত হতে থাকবে। আমি তোমাকে ওখানে চিনতাম। এরপর সে চিন্তা করবে আচ্ছা আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু যে তার কি হল? তাকে তো দেখছি না। অর্থাৎ সে তার পুরোনো জীবনের কথা স্মরণ করবে আর ভাববে যে তার এক বন্ধু এখানে নেই। তখন সে বাকীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে তোমরা কি জান ওর কি হয়েছে? কিন্তু কেউই এই ব্যাপারে জবাব দিতে চাইবে না। কিন্তু সে আসলেই জানতে চায় যে তার পুরাতন বন্ধুর কি হল। ব্যাপারটা এমন হবে যে আল্লাহ জান্নাতে একটা জানালা খুলে দিবেন যাতে সে জাহান্নামে তার বন্ধুকে দেখতে পায়। এই ধরনের একটা চিত্রই ৩৭ নম্বর সুরাটিতে বর্ণিত হয়েছে। সে দেখবে যে তার সবচেয়ে ভাল বন্ধু জাহান্নামে জ্বলছে। হ্যাঁ, আপনি জান্নাত থেকে এটি দেখতে পারবেন, কারণ জান্নাতে আপনি যা চাইবেন তাই পাবেন। আর সে তার বন্ধুকে দেখতে চাইলো আর তার ইচ্ছাও পূরণ হল। তাই সে জাহান্নামের একটি ঝলক দেখতে পেল এবং সেখানে তার বন্ধুকে দেখলো। তখন সে বলবে إِن كِدتَّ لَتُرْدِينِ তুমিও আমাকে প্রায় ওখানেই নিয়ে যাচ্ছিলে। সে তার বন্ধুকে দেখলো...

জান্নাতের সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার

আপনি কি জানেন, জান্নাতের সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয়টি কী হবে? আল্লাহ আমাদের সবাইকে জান্নাতে একত্রিত করবেন ইনশাআল্লাহ! এবং আল্লাহ আমাদের সাথে কথা বলবেন। কল্পনা করুন… সহীহ হাদিস ভাইয়েরা, আমি চাই আপনারা সত্যিকার অর্থেই ব্যাপারটা কল্পনা করুন কোনো হাসি ঠাট্টা নয়। জান্নাতে আল্লাহ্‌ আমাদের সকলকে একত্রিত করবেন এবং আল্লাহ আমাদের সাথে কথা বলবেন আমার ভাই ও বোনেরা, আল্লাহ আপনাদের জিজ্ঞাসা করবেন “তোমরা কি আর কিছু চাও? তোমাদের জন্য আর কী করতে পারি?” কল্পনা করুন, এই ভঙ্গিমায় আল্লাহ আপনার সাথে কথা বলছেন… কল্পনা করুন আল্লাহ আপনাকে ডেকে বলছেন, আমি কি তোমার জন্য আর কিছু করতে পারি? তখন আমরা বলব, “হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেছেন, আমাদের জান্নাতে দাখিল করেছেন, আপনি আমাদের চিরদিনের জন্য জান্নাতে থাকার সুযোগ দিয়েছেন, আপনি আমাদের এতসব ভোগবিলাসের সামগ্রী প্রদান করেছেন হে আল্লাহ! আমাদের আর কিইবা চাওয়ার থাকতে পারে?” তখন আল্লাহ বলবেন, “তোমরা কি সন্তুষ্ট?” আমরা বলব, “হে আল্লাহ! আমরা এতটাই সন্তুষ্ট যে আমাদের আর কিছুই চাওয়ার নেই!” আল্লাহ বলবেন- “যদি তা-ই হয়ে থাকে আজকের দিন থেকে আমি কথা দিচ্ছি যে আজকের দিন থেকে, আমি আর কোনোদিন তোমাদের উপর অসন্তুষ্ট হবো না! (অর্থাৎ আমি চিরদিনের জন্য তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম!)”। এটা কল্পনা করুন ভাইয়েরা আমার…কল্পনা করুন, আল্লাহ আপনার উপর আর কক্ষনো রুষ্ট হবেন না! আপনি কি ভাবছেন এখানেই শেষ? ওয়াল্লাহি, এখানেই শেষ নয়! রাসূলুল্লাহ (সা.) সহীহ হাদিসে আমাদের জানিয়েছেন…আল্লাহ আমাদের একত্রিত করবেন আরেকবার এবং বলবেন, “হে আমার বান্দারা! তোমরা কি সুখী? তোমরা কি খুশি? তোমরা কি সন্তুষ্ট?” এবং আমরা উত্তর দিবো…”হে আল্লাহ! আমাদের আর কি চাওয়ার থাকতে পারে?” “হে আল্লাহ! আমরা যা চেয়েছি, আপনি তো আমাদের সবই দিয়েছেন! হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জান্নাত দিয়েছেন, আপনি আমাদের সকল ইচ্ছা পূরণ করেছেন। এবং আপনি আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে,...

যখন আরশ কুরসির প্রভু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা হাসবেন

কিয়ামতের দিন সবার বিচার শেষ করার পর একজন লোক বাকি থাকবে। তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হবে কিন্তু তার চেহারা জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। তখন সে লোকটি কেঁদে বলবে- হে আমার রব! জাহান্নামের উত্তাপ আমাকে অস্থির করে তুলছে এবং এর শিখা আমাকে জ্বালাচ্ছে। আপনি আমার চেহারা জাহান্নাম থেকে অন্য দিকে ফিরিয়ে দিন। সে এভাবে আল্লাহর কাছে ক্রমাগত প্রার্থনা করতে থাকবে। তারপর আল্লাহ তাকে বলবেন- তোমার এ প্রার্থনা মঞ্জুর করা হলে তুমি কি আর কিছু চাইবে? সে বলবেঃ না, আপনার ইজ্জতের কসম! আমি আর কিছু চাইবো না। তো, তার চেহারা জাহান্নমের দিক থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। তারপর সে আবার বলতে শুরু করবে, হে আমার প্রভূ! আমাকে একটু জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দেন। আল্লাহ বলবেন, তুমি কি বলোনি এরপর আর কিছু চাইবে না? ধিক হে মানব সন্তান! তুমি কোন কথা রাখো না। কিন্তু এ ব্যক্তি প্রার্থনা করতেই থাকবে। তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলবেন – তোমার এ ইচ্ছা পূরণ করা হলে আর কিছু চাইতে পারবে না। সে বলবে- না, আমি আপনার মর্যাদার কসম করে বলছি আমি আর চাইবো না। এভাবে সে অঙ্গীকার আর প্রতিজ্ঞা করতে থাকবে যে সে আর কিছু চাইবে না। অবশেষে তাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দেয়া হবে। অতঃপর যখন সে জান্নাতে গেটের দিকে তাকিয়ে জান্নাতের সূখ শান্তি দেখবে, নিজের ওয়াদার কথা স্মরণ করে কিছুক্ষণ চুপ থাকবে। কিন্তু পরিশেষে সে বলবে, হে আমার প্রভু আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন। তখন আল্লাহ বলবেন- তুমি না এতক্ষণ ধরে সব ওয়াদা আর অঙ্গীকার করলে যে আর কিছু চাইবে না? ধিক তোমার! হে বানী আদাম! কতই না ও‘য়াদা ভঙ্গকারী তুমি। সে বলবে, হে আমার প্রভূ আমাকে আপনার সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে দুর্ভাগা করে রাখবেন না। সে এভাবে প্রার্থনা করতেই থাকবে, অবশেষে আল্লাহ সুব হানাহু...