রামাদান কর্মপরিকল্পনা (২য় পর্ব)

রামাদান কর্মপরিকল্পনা (২য় পর্ব)

যারা এখানে বাবা-মা আছেন, আপনাদের বাচ্চাদের আপনারা পুরস্কৃত করুন কুর’আন মুখস্ত করার জন্য এই মাসে। এখন, প্রথম কথা হচ্ছে, আপনাদের উচিৎ সুনির্দিষ্ট সময় ঠিক করা যখন আপনার বাচ্চারা কুর’আন মুখস্ত করবে। এবং তারপর, মুখস্ত শেষ করার জন্য তাদের পুরস্কৃত করুন। এবং আরও ভিডিও গেমস দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করবেন না। ভাল কিছু দিন। বুঝছেন তো। তাদের ঘুরতে নিয়ে যান। ঈদে বিশেষ কিছু করুন। কিছু তো করুন। তবে আপনার সন্তানদের উৎসাহের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে আপনার। এটি না হয় ছিল শিশুদের জন্য নূন্যতম কিছু। আপনি যদি শেষ করতে পারেন, অলরেডি মুখস্ত করে ফেলেছেন, ব্যাপারটি যদি আপনার জন্য সহজ হয়, আমি একটি বাড়তি সুপারিশ করতে পারি, এটি পুরো পরিবারের জন্য, শুধুমাত্র শিশুদের জন্য নয়, এটি গোটা পরিবারের জন্য, আপনার উচিৎ দৃঢ় সংকল্প করা যে আপনি ২০টি দোয়া মুখস্ত করবেন। এবং, আমি চেষ্টা করব হ্যান্ডআউট তৈরি করতে এই সপ্তাহে যাতে করে তারা আগামি জুমু’ওয়াতে আপনাদের তা পৌঁছে দিতে পারেন, ইন শাা আল্লাহ্‌। ২০টি দোয়া। ঘরে প্রবেশ করা, ঘর থেকে বের হওয়া, মসজিদে প্রবেশ করা, মসজিদ থেকে বের হওয়া, বাথরুমের জন্য, পানাহারের জন্য, কাপড় পরিবর্তনের, শুধু ২০টি দোয়া। রমযান মাসে। জানেন তা আপনার জন্য কি করবে? তা আপনার বাকি জীবনে পরিবর্তন এনে দিবে। তো, আপনি যখন এই কাজগুলো নিয়মিত করবেন, আল্লাহ্‌কে স্মরণ করা আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। আমাদের সবার কাছে দোয়ার বই-পুস্তক আছে, কিন্তু দোয়াগুলো থাকতে হবে আমাদের মাথায় এবং অন্তরে, কাগজে নয়। আপনাকে দোয়াসমূহ মুখস্ত করতে হবে। তো, পরিবারের জন্য কুরআন মুখস্ত করার প্রজেক্ট এবং দোয়াসমূহ মুখস্ত করুন যদি হাতে সময় থাকে। এটি আপনাদের সবার জন্য সত্যিকার অর্থে কল্যাণকর হবে। এখন আমি বোনদের প্রতি একটু মনোনিবেশ করতে চাই। প্রথম উপদেশ যা আপনাদের দেব তা হোল, আপনার সন্তানদের যা করতে দেবেন, আপনি নিজেও...
রামাদান কর্মপরিকল্পনা (১ম পর্ব)

রামাদান কর্মপরিকল্পনা (১ম পর্ব)

আলহামদুলিল্লাহ্‌, আমি মনে করি আপনারা সবাই অবহিত যে রমযান মাস খুব দ্রুতই এগিয়ে আসছে। এবং এটাই উপযুক্ত সময়, আমরা যাতে আমাদের প্রত্যেকটি সুযোগকে কাজে লাগাই নিজেকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য এবং যতটুকু সম্ভব নিজেদেরকে প্রস্তুত করে নিই এই মাসটির সম্পূর্ণ সুযোগ গ্রহণের জন্য। ক্ষমার প্রাপ্তির সুযোগ, আল্লাহ্‌র জান্নাত লাভের সুযোগ, এবং আমাদের ঈমানকে নতুন করে তরতাজা করার সুযোগ — আমরা যেন এই সুযোগগুলো কোন মতে না হারাই। আর তাই আমি মনে করেছিলাম এটি একটি উপযুক্ত সময় আমার নিজের এবং আমার পরিবারের স্মরণের জন্য এবং আপনি এবং আপনার পরিবারের স্মরণের জন্য, যে কী কী উপায়ে আমরা রমযান থেকে সবচাইতে বেশি লাভবান হতে পারি।  সেই কারনেই আমি খুৎবার শুরুতে রমযান সম্পর্কিত আয়াতটি তেলাওয়াত করেছি, এটি কুর’আনে উল্লেখিত রমযান সম্পর্কিত একমাত্র আয়াত। তবে সম্পূর্ণ আয়াতটি বর্ণনা না করে, আমি আয়াতটির শেষাংশের দিকে দৃষ্টিপাত করতে চাই। সাধারনত খুৎবার সময়টুকু হয় আধঘণ্টা বা তার কম, এবং আয়াতের শুরুর অংশ বর্ণনা করতে করতে এত সময় পেরিয়ে যায় শেষের দিকে গেলে আপনি অত মনোযোগ দিতে পারেন না, অথবা খতীবের কাছে খুব কম সময় থাকে রমযান সম্পর্কিত এই আয়াতটির শেষাংশের প্রাচুর্যটা তুলে ধরার। তাই, ইন শাা আল্লাহু তা’য়ালা, আমার আজকের খুৎবা হবে শুধুমাত্র আয়াতটির শেষের অংশ নিয়ে, সুবর্ণ এই রমযান মাস সম্পর্কিত আল্লাহ আজ্জা ওয়া জালের বাণীগুলো নিয়ে। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ আপনার জন্য সহজ করতে চান, তিনি আপনার জন্য কাঠিন্য চান না”। কাউকে এটা বলাই যথেষ্ট যে ‘আমি চাই তোমার কাজগুলো সহজ হোক’, তার উপরে এটা না বললেও হয় যে ‘আমি চাই না যে তোমার কাজগুলো কঠিন হোক’ । আপনি বলতে পারেন ‘আমি চাই খাবার টা সুস্বাদু হোক’। আপনার বলতে হবে না, ‘আমি চাই না খাবার টা খেতে খারাপ হোক’। ব্যাপারটা বলা হয়ে যায় যখন আপনি বলেন,...
এক কানে শুনা, আরেক কান দিয়ে বের করা

এক কানে শুনা, আরেক কান দিয়ে বের করা

উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া “Quranic Gems” সিরিজ থেকে নেয়া। আজ আমি আপনাদের সাথে সুরা আনফালের দুটি আয়াত আলোচনা করব। আয়াত ২১ ও ২২। এই দুটি আয়াতে আল্লাহ রব্বুল আলামীন শ্রবণের গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ বলেন, “আর তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা বলে যে, আমরা শুনেছি, অথচ তারা শোনে না।” অতএব শুধু শুনলেই হবে না, মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। এই আয়াতে মনোযোগী শ্রোতা হওয়ার ব্যাপারে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন যে, আজকাল আমরা মিডিয়ার উপরখুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। আপনি হয়ত একই সময়ে কিছু শুনছেন এবং অন্য কিছু দেখছেন, আবার হয়ত আপনার বাবা-মার কথাও শুনছেন। আমরা একই সময়ে বিভিন্ন জিনিস নিয়ে ব্যস্ত আছি, কিন্তু আসলে কোনোটাই মনোযোগ দিয়ে করছি না।  আমাদের এমন ভাবে নিজেদের তৈরি করতে হবে যে, যখন আমরা কিছু শুনব, আমরা যেন তাতে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারি। আজকাল এটা খুবই সাধারণ ঘটনা যে, এমনকি জুমুয়ার নামাজে, লেকচারে বা ধর্মীয় আলোচনার আসরেও শ্রোতারা মনোযোগ দিচ্ছেন না। এমনকি আপনারা যখন আমার এই লেকচার শুনছেন আপনারা মোবাইলে মেসেজ চেক করছেন। কেউ কেউ হয়ত মোবাইল ঘাঁটছেন বা ফেইসবুক আপডেট করছেন ।এই ভিডিওটিও শুনার সময়ই আপনি হয়ত অর্ধেক মনোযোগ দিয়ে আমার লেকচার শুনছেন। বাকি অর্ধেকটা দিয়ে অন্য কিছু করছেন।  আল্লাহ বলেন, “তাদের মত হয়ো না যারা বলে যে, শুনছি কিন্তু আসলে মনোযোগ দিয়ে শুনে না।” রাসুলাল্লাহকে (সাঃ) তাদের যে সম্মান দেখানোর কথা এখানে তার কথাই বলা হচ্ছে। তাহলে আয়াতের প্রথম অংশে মনোযোগ দেয়ার কথা বলা হচ্ছে।  প্রথম উপদেশ হচ্ছে যে, “আমরা যখন কারো কথা শুনব…” দেখুন, এখানে কিন্তু সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি যে, কার কথা শুনব,এখানে এই মুহূর্তে শুধু শিষ্টাচারের কথাই বলা হচ্ছে। আমাদের ভালো মনোযোগী শ্রোতা হতে হবে। আপনার মা আপনার সাথে কথা বলছেন, ফোন সরিয়ে রাখুন।...
যা বলেন তা চর্চা করুন

যা বলেন তা চর্চা করুন

উস্তাদ নুমান আলী খানের কুরআন উইকলি তে দেয়া “Quranic Gems” সিরিজ থেকে নেয়া। أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنسَوْنَ أَنفُسَكُمْ وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ ۚ أَفَلَا تَعْقِلُونَ কুরআন পড়ার সময় তোমরা কী মানুষকে ভালো কাজের আদেশ দাও আর নিজেদের কথা ভুলে যাও? তোমরা কী তোমাদের বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করবে না? (২:৪৪)  আসসালামু আলাইকুম কুরআন উইকলি,  আজকে সুরা বাকারার ৪৪তম আয়াত থেকে কিছু পয়েন্ট আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। আল্লাহ্‌ আজ্বা ওয়া জাল ইসরাইলীদেরকে বলছেন এবং উনি তাদেরকে বেশ কিছু আদেশ দিলেন প্রথমে। এই আদেশগুলো আসলে আপনি ইতিবাচক প্রভাব বলতে পারেন।  একটা অংশ হচ্ছে, , “أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ ۚ” “আতআ’মুরুনা আন-নাসা বিল-বিররি” তোমরা কি মানুষকে ভালোর কথা বল বা ভালো কাজের আদেশ, পরামর্শ দাও আর একই সময় নিজেদের কথা ভুলে যাও, “وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ” “ ওয়া আ’ন্তুম তাতলূনা আল-কিতাবা” যখন আদতে তোমরাই কিতাবটি পড়ছ। তোমরাই এই বই পড়াতে নিমগ্ন।  এখন এই “কিতাব পড়াতে” কথাতে আমি ফিরছি একমিনিট পর। এখন এই আয়াত “أَفَلَا تَعْقِلُونَ” “আ’ফালা তা’ক্বিলুনা” তখন তোমরা কী ভাবো না, তোমরা কী নিজেদের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ কর না। অবশ্যই এই আয়াতের মূল অর্থ হচ্ছে তোমারা মানুষকে ভালো কাজ করতে বল এবং তোমরা নিজেদের কথা ভুলে যাও, নিজেরাই তা কর না। এটা কীভাবে হয়? আসুন আরো গভীরভাবে দেখি কয়মিনিটের জন্য।  প্রমথত এবং প্রধাণত, আল্লাহ্‌ আজ্বা ওয়া জাল, বিদ্রুপ করে বলছেন ““وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ” “ ওয়া আ’ন্তুম তাতলূনাল-কিতাবা” তোমারা হচ্ছ তারা যারা কিতাবটি পড়ছ। এখানে বলা হচ্ছে যে কেউ আল্লাহ্‌র কিতাব পড়ে, এটা হতে পারে অতীত কালের তাওরাত অথবা বর্তমান কুরআন, যখন আপনি আল্লাহ্‌র কিতাব পড়ছেন, প্রথম যার কথা আপনার চিন্তা করা উচিৎ, প্রথমত এবং প্রধাণত আপনার নিজের জন্য ভাবা উচিৎ। আমার নিজের জন্য ভাবা উচিৎ। আল্লাহ্‌র কিতাব আমার এই উদ্দেশ্য নিয়ে দেখা উচিৎ নয় যাতে...
কিভাবে নিজেকে সংশোধন করবেন?

কিভাবে নিজেকে সংশোধন করবেন?

বিভিন্ন আসক্তি থেকে বাঁচার প্র্যাকটিক্যাল কিছু উপদেশ। আমাদের সবারই চরিত্রের বিভিন্ন দিক রয়েছে যার উন্নতি সাধন প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজন ঠান্ডা মাথায় , গভীরভাবে নিজেকে পর্যবেক্ষণ করা যে , আমি আসলে চরিত্রের কোন ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করতে চাই ? আরো বেশি জ্ঞান অর্জন করার পূর্বে আপনি কি নিজের প্রতি সৎ থেকে একটা লিস্ট বানাতে পারবেন ? ইস ! এই বিষয়গুলো যদি আমি জীবনে না করতাম। ইস ! এই বিষয়গুলো যদি আমি আমার জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারতাম ! এটা হলো এক নাম্বার কাজ। তখন এই লিস্ট এ থাকবে এমন কিছু বিষয় যা আপনি আপনার জীবন থেকে বাদ দিতে পারতেন । আর কিছু বিষয় থাকবে এমন যা আপনি আপনার জীবনে যুক্ত করতে পারতেন ।এখন যে বিষয়গুলো আপনি জীবন থেকে বাদ দিতে পারতেন সেগুলোর ব্যাপারে নিজেকে প্রশ্ন করুন যে কিভাবে আমি এগুলো থেকে মুক্তি পেতে পারি ? উদাহরণ সরূপ কারো কারো হয়ত বিভিন্ন ধরনের আসক্তি থাকতে পারে। যেমন ..ড্রাগ , মদ্যপান বা পর্নোগ্রাফি যাই হোক কোনো এক ধরনের আসক্তি। এই আসক্তিগুলো সাধারণত ঘটে বিশেষ পরিস্থিতিতে। ধরুন , কোনো এক যুবক বাসায় একা, সে স্কুল থেকে কিছুটা আগেই বাসায় আসে, বাবা -মা এখনো কর্মস্হল থেকে ফেরত আসেনি, তার ঘন্টা দেড়েক বাসায় একা একা থাকার সুযোগ হয়। ঠিক তখনি সমস্যায় আক্রান্ত হয়। সুতরাং আপনি নিজেই বুঝতে পারেন যে , হ্যাঁ আমি এই খারাপ কাজটা করি। কিন্তু আমি এটা করি একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে। তাই আমি যদি এই নির্দিষ্ট সময় এবং নির্দিষ্ট পরিস্থিতির মাঝে কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারি তাহলে এটা আমাকে সাহায্য করতে পারে। আমি জানি আমি একা একা বাসায় থাকলে আমার সমস্যা হয়। আমি হয়ত এই বিষয়টা আগে চিন্তা করে দেখিনি। মনে হয় আমার আরো বেশি সময় স্কুলে থাকা উচিত। অথবা আমি এই...