‘আলহামদুলিল্লাহ’ এর মানে আসলে কী?

আমরা সেই দলের লোক যারা বলি ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এর অর্থ কী? যদিও আমরা এর অর্থ নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আলোচনা করতে পারি, প্রকৃতপক্ষে এর মূল অর্থ দুটি। আলহামদুলিল্লাহ এর দুটি অংশ রয়েছে। প্রথমটি হলো – আপনি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ (আল্লাহকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন), কৃতজ্ঞতা (শুধুমাত্র) আল্লাহর জন্য। আর দ্বিতীয় অংশ হলো – প্রশংসা; প্রশংসা আল্লাহর জন্য। কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা দুটি আলাদা বিষয়। একদিকে প্রশংসা আর অন্যদিকে কৃতজ্ঞতা, দুটি দিক। এখন চলুন প্রথমে আমরা এই দুটি বিষয়ের পার্থক্য বোঝার চেষ্টা করি। আপনি একটি সুন্দর বাড়ি দেখলেন, এবং প্রশংসা করলেন, কিন্তু আপনি বাড়িটিকে ধন্যবাদ দিবেন না। আপনি একজন অসাধারণ খেলোয়াড় দেখলেন, যিনি ফুটবল খেলেন, তিনি একটি অসাধারণ গোল করলেন। আপনি ঐ খেলোয়াড়ের প্রশংসা করবেন, কিন্তু আপনি ঐ খেলোয়াড়কে ধন্যবাদ দিবেন না, আপনি ঐ খেলোয়াড়ের প্রতি কৃতজ্ঞ হবেন না। আপনি একটি অসম্ভব সুন্দর গাড়ি দেখলেন। আপনি গাড়িটির প্রশংসা করবেন, কিন্তু গাড়িটির প্রতি কৃতজ্ঞ হবেন না। আবার মাঝে মাঝে উল্টোটাও ঘটে। কিছু মানুষের প্রতি আপনি কৃতজ্ঞ থাকেন যদিও আপনি কখনো তাদের প্রশংসা করবেন না। এমন ঘটে। এর উদাহরণ হচ্ছে ‒ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা একজন মুসলিমকে সকল অবস্থাতেই তার বাবা-মার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে বলেন, এমনকি তার বাবা-মা মুশরিক হলেও়! আপনাকে অবশ্যই আপনার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। এমনকি যদিও তারা আপনাকে শিরক করার জন্য জোর করেন। তারা চান আপনি ঈমান পরিত্যাগ করেন, তারপরও আপনাকে উনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। আপনি তাদের শিরক এর প্রশংসা করবেন না , কিন্তু তারপর ও আপনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেন। অতএব জীবনের কোনো কোনো সময় আপনি প্রশংসা পাবেন কৃতজ্ঞতা ছাড়া, আবার কখনো কখনো কৃতজ্ঞতা দেখবেন প্রশংসা ছাড়া। আমি আপনাদের নিকট আরো একটি উদাহরণ পেশ করব, যার মধ্যে কৃতজ্ঞতা আছে কিন্তু প্রশংসা নেই, যেন বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। আপনারা...
আমরা কেন কৃতজ্ঞ হই না

আমরা কেন কৃতজ্ঞ হই না

এটি নুমান আলী খানের লেকচারের বাংলা অনুবাদ   ইনশাআল্লাহ আজকে আমি কুরআনের ১৪ নম্বর সুরা সম্পর্কে আলোচনা করব। এটি হল সুরা ইব্রাহিম। কুরআনে যে জাতি সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি বলা আছে, যা থেকে মুসলমানরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে তা হল মুসা (আ) এবং তার জাতি বনী ইসরাইল। কুরআনে ৭৫ এর বেশি জায়গায় মুসা (আ) এবং তার জাতির কথা আলোচনা করা হয়েছে। তাদের কথা শুধু নবী (সা) মদিনাতে হিজরত করার পরে বলা হয়নি, কারণ এই সুরাটি একটি মাক্কি সুরা। মুসা (আ) এবং তার জাতির উদাহরন দেওয়া হয়েছে একদম প্রথম দিকের মুসলমানদেরকে। এমনকি তাদের কথা আমাদের নবী (সা) এর জন্যও উদাহরণ হিসেবে কাজ করেছে, যা থেকে তিনি নিজেও শিক্ষা নিয়েছেন। এই সুরাটি শুরু হয়েছে- كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ النَّاسَ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ “এটি একটি অসাধারন গ্রন্থ, যা আমি আপনার (মানে নবী(সা) এর) প্রতি নাযিল করেছি-যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন। তারা বিভিন্ন গভীরতার অন্ধকারের মধ্যে ডুবে আছে, তাদেরকে তা থেকে বের করে আনা হচ্ছে আপনার দায়িত্ব। এই হল আপনার কাজ”। এর কিছু আয়াত পরে আরও বলা হয়েছে যে মুসা (আ) কেও একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ بِآيَاتِنَا “আমি মূসাকে নিদর্শনাবলী সহ প্রেরণ করেছিলাম” أَنْ أَخْرِجْ قَوْمَكَ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ “যাতে করে আপনি আপনার জাতিকে বিভিন্ন গভীরতার অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসেন”। সুতরাং নবী (সা) কে শুরুতেই আল্লাহ বলছেন যে মুসা (আ) কেও ঠিক একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল – তাই আপনি দেখুন সে তার জাতিকে কি বলেছিল। আপনি কেননা সেদিকে মন দেন যাতে করে আপনি শিখতে পারেন আপনি আপনার জাতিকে কি বলবেন। এভাবেই আল্লাহ আমাদেরকে এবং তার শেষ নবীকে (সা) শেখাচ্ছেন। যাহোক, কুরআনে বনী ইসরাইলিদের অনেক ধরনের গল্প রয়েছে। কুরআনে আমরা বনী ইসরাইলিদের সম্পর্কে...