ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় উপাদানসমূহ

আমরা কাউকে অপছন্দ করি, কাউকে ভালোবাসি। ঠিক বিপরীত বিষয় এদুটি। এভাবে আপনি যে আল্লাহর প্রিয়, আল্লাহ আপনাকে ভালোবাসে কিনা সেটা বুঝতে পারলেই উপলব্ধি করতে পারবেন। ইসলাম কেবল হানাফি-সালাফি নিয়মনীতি না – এজন্য আপনার ফিকহের সাথে না মিললেই আরেকজনের মসজিদ ধ্বংস করে দিবেন যেখানে আল্লাহর জন্য সিজদা করা হয় – না এইটা ইসলাম না। ফিকহটা আপনার, কিন্তু সেই মসজিদে যে সিজদা করা হয় সেইটা আল্লাহকে ভালোবাসার জন্য। আবার আপনি বিশুদ্ধ জিনিসের দাওয়াত দিবেন কিন্তু বিশুদ্ধ পদ্ধতিতে দিবেন না সেইটাও ইসলাম না। আপনি সারা জীবন নামাজ পড়বেন, কিন্তু কোনো এক বা দুইজনের প্রতি জুলুম করেছেন, আল্লাহর অন্য সৃষ্টির উপর জুলুম করেছেন সেজন্য আপনার সমস্ত জীবনের ইবাদাতই শেষ হয়ে যেতে পারে। কারণ আপনি আল্লাহর ভালোবাসার ঠিক বিপরীত একটা দুইটা চরম কাজ করেছেন। আপনি প্রচুর ইসলামী কাজ করেন, কিন্তু সাথে আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দিলেও আপনার সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যেতে পারে। এক মহিলা অনেক নামাজ পড়তো, সাদাকাও করতো অনেক কিন্তু সে একটি বিড়ালকে না খাইয়ে রেখেছিলো রেখেছিলো, সেজন্য তার সমস্ত আমল শেষ, জাহান্নামে গিয়েছিলো। কারণ সে আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দিয়েছিলো, যেটা আপনার সমস্ত আমলের বিপরীত, ভালোবাসার বিপরীত। আবার আরেকজন কেবল ফরজগুলো মানতো, কিন্তু কাউকে কষ্ট দিতো না, সে জান্নাতে গিয়েছিলো। বোঝা গেছে? ইসলামের মৌলিক বিষয় বুঝবেন কোনগুলো? আল্লাহকে ভালোবাসার জায়গাগুলো বুঝুন। সিজদায় বেশি বেশি থাকুন, আল্লাহকে ভালোবাসার কাজগুলো দেখুন। পোস্টের পাশাপাশি নিচের উস্তাদের লেকচারটি দেখুন, এই বিষয়েই পূর্বে আমাদের ডাবিং...

আল্লাহর উপর ভরসা ধরে রাখা

সর্বশেষ যে বিষয়টি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই তা হলো – আল্লাহর উপর ভরসা ধরে রাখা। অনেকের জন্য এই বিষয়টা মেনে নেয়া বেশ কঠিন যে, আল্লাহ তার কথা শুনবেন। তারা হয়তো লম্বা সময় ধরে কোনো খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। তারপর তারা মনে মনে ধরে নেন যে, আল্লাহ আমার কথায় কোনো মনোযোগ দিবেন না, আমার দোয়া তাঁর নিকট গুরুত্বহীন, আমি দোআ করার কোনো অর্থ দেখি না। আপনাদের একটা কথা বলে রাখি, আল্লাহর নিকট থেকে আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ যে উপহারটি পাবেন, তা কী জানেন? ক্ষমা। এটাই সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার। আপনি এটার মূল্য উপলব্ধি করুন আর নাই করুন। আর যা কিছু আল্লাহ আপনাকে দিবেন বলেছেন, এর সবই অতিরিক্ত। আপনাদেরকে একটা উদাহরণ দেই। আমার অনেকগুলো সন্তান আছে। ধরুন, আমার এক সন্তানের উপর আমি খুবই অসন্তুষ্ট। সে কোনো একটা অন্যায় করেছে, তাই আমি খুবই রাগান্বিত হয়ে আছি। “তোমার এটা বলা উচিত হয়নি। তোমার এটা করা উচিত হয়নি। আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে, তুমি এটা করেছো।” এভাবে আমি তাকে কিছুটা বকা-ঝকা করলাম। তারপর দিনের অন্য এক সময় আমার জন্য তার কিছু একটা করার কথা। যেমন, আমার জন্য একটা কার্ড আঁকার কথা যাতে লেখা থাকবে “বাবা, আমি আপনাকে ভালোবাসি”। সে জিনিসটা আঁকলো। কিন্তু পরে কি মনে করে কাগজটা টুকরা টুকরা করে ময়লার বাক্সে ফেলে দিলো। এটা দেখে তার অন্য ভাই বললো – “কী! তুমি এটা ফেলে দিলে কেন? তোমার না এটা বাবাকে দেখানোর কথা।” জবাবে সে বললো – ” বাবা আমার উপর খুবই রাগান্বিত। তিনি এটার প্রতি কোনো গুরুত্ব দিবেন বলে মনে হয় না। তিনি আমাকে আর ভালোবাসেন না।” আমি যদি জানতাম যে, সে বিষয়টাকে এভাবে দেখছে তাহলে আমি কী করতাম? আমি কি এভাবে বলতাম যে, “হ্যাঁ, ফেলে দাও। আমার এসবের কোনো দরকার নেই?” না,...
কীভাবে আমার চরিত্রের উন্নতি করবো?

কীভাবে আমার চরিত্রের উন্নতি করবো?

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম প্রথম কথা হল হারাম কাজ পরিত্যাগ করা। মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা। মন্দ কাজ থেকে বিরত হবার আগ পর্যন্ত ভালো কথা বলতে যেও না। কারণ তুমি শরীরের ক্ষতস্থানে রক্ত প্রবাহিত অবস্থায় ঔষধ দিলে সেটা ফলপ্রসু হবে না আর মন্দ কাজ বা পাপ থেকে বিরত না হয়ে ভালো কথা বললেও সেটা ফলপ্রসু বা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম তোমাকে আনন্দের মধ্য দিয়ে যে বদ অভ্যাস গড়ে তুলেছ তা থেকে বিরত থাকতে হবে। মুভি দেখা বাদ দিতে হবে, রাস্তায় চলমান অবস্থায় চক্ষুকে অবণত করতে হবে-কারণ নারীর প্রতি তোমার প্রত্যেকটা চাহনির সাথে তোমার মানবিক গুনকে নষ্ট করে ফেলছ। তুমি একজন নারীর দিকে এমনভাবে তাকাও যেন সে একটা খাবারের টুকরা, যেন সে একটা প্রাণী- আর এটাই প্রমাণ করে যে তুমি একজন মানুষকে তাঁর মানবিক অবস্থানমূলক সম্মানের জায়গাকে অপমানিত করছ। এটাই প্রমাণিত করে যে তুমি নিজেই এক প্রাণীতে পরিণত হয়েছ।   সুতরাং চারিত্রিক উন্নতি করতে হলে তোমাকে অবশ্যই প্রথমে সেই মানবিকতা ফিরিয়ে আনতে হবে এবং তারপর তোমার জীবনকে ভালো কাজ দিয়ে সুশোভিত কর, তাকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর। নিজেকে ভালো করে গড়ে তুলার ক্ষেত্রে ছোট ছোট পদক্ষেপ নিতে থাকো – যেমন , সুন্দর ও পারফেকটভাবে সালাত আদায় কর, কিছু প্রয়োজনীয় দোয়া মুখস্ত করা, কাজের ক্ষেত্রে সততা বজায় রাখা, পিতা-মাতার প্রতি সদয় হওয়া। আর এগুলো তেমন কিন্তু তেমন কঠিন কাজ নয় – চাইলেই পারো।   আল্লাহ আমাদের কাছ থেকে এইগুলোই প্রত্যাশা করেন।   কেউ প্রশ্ন করতে পারে আল্লাহ কেন আমাদের কাছে এগুলো প্রত্যাশা করেন, এগুলো কি তাঁর কোন উপকারে আসে?   এর উত্তরে বলা যায়- আমরা জানি আল্লাহর একটি নাম হল “গনী” যার অর্থ যিনি ধনী, এমন ধনী যে যার আর কোন কিছুরই দরকার নেই কারো কাছে। অর্থাৎ চূড়্রান্ত ধনী। তাহলে কি আমরা বলতে...