Articles |
কোরআন কেন মানুষের সৃষ্টি হতে পারে না – ১ম পর্ব পি.এইচ.ডি ছাত্রদের প্রধান উপদেষ্টাঃ সন্দেহ থেকে একনিষ্ঠ দৃঢ় বিশ্বাসের পথে যাত্রা তিনি প্রচন্ড মেধাবী ও ধীশক্তিসম্পন্ন সৃষ্টিশীল ছিলেন। যুবক বয়সে দর্শন (ফিলোসফি) পড়ে প্রভাবিত হন এবং “সকল ধর্ম মনুষ্য-সৃষ্টি” – এই উপসংহারে প্রতিজ্ঞ হন। তার ভাবনা ছিল কেবল কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষরাই স্বর্গ ও নরকে বিশ্বাস করে আর এভাবে তিনি ধর্মে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। তিনি মনে করতে থাকেন তার আশেপাশের অনেক লোকই ধর্মে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে কিন্তু উচ্চারণ করতে ভয় পাচ্ছে। তিনি মনে করেন তারা ধর্মকে চর্চা করে, কারণ এটা পরিবারে চর্চিত হয় এবং তারা এটা নিয়ে চিন্তাও করে না। পরবর্তীতে তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান সেখানে সেকুলার পরিবেশ থাকার কারণে তার অবিশ্বাসের কথা প্রকাশ করেন। ইরাক মুসলিম দেশ হলেও সেখানকার ভার্সিটিগুলো খুবই লিবারেল এবং সেকুলার প্রকৃতির আর সেকারণে সবাই স্বাধীনচেতা হিসেবে থাকত। কিন্তু তিনি চিন্তাশীল ব্যক্তি ছিলেন আর সেজন্য ধর্ম সত্য হতে পারে এরকম একটা “সম্ভাবনা” রাখতেন। “কমপক্ষে সম্ভাবনা থাকতে পারে যে ধর্ম সত্য হতে পারে”, ‘সম্ভাবনা’-কে তো আর প্রত্যাখ্যান করা যায় না। আর সেজন্য তিনি কিছু নোট লিখতে শুরু করেন যেগুলো “ধর্মের পক্ষে” এবং “ধর্মের বিপক্ষে” ছিল। তার সম্মুখে প্রাথমিকভাবে দু’টি উপায়ন্তর রাখেনঃ ১. এটা কি সত্য? ২. নাকি সত্য নয়? কিন্তু দ্বিতীয় ধরণের প্রশ্নও ছিল তার কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ৩. যদি এটা সত্য হয় তবে কী? (তাহলে আমার জীবন কেমন হবে?) ৪. আর যদি সত্য না হয় তবে কী? (তাহলে আমার জীবন কেমন হবে?) বেশিরভাগ মানুষের জন্য প্রথম ধরণের প্রশ্নের কোন প্রধানতম কারণ থাকে না। তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায় আমি যদি ধর্মগ্রহণ করি অথবা না করি তবে “আমার জীবন কেমন হবে?” বেশিরভাগ মানুষ ধর্মে থাকে কারণ তার পরিবার কষ্ট পাবে যদি ধর্মত্যাগের কথা শুনে। তাই...
Articles |
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম [উস্তাদ নুমান আলী খানের লেকচার অবলম্বনে অনুবাদ] ইসলামের পথে আমার যাত্রার গল্প হয়তো অনেকের সাথেই মিলে যাবে। আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা একজন মুসলিম হিসেবেই। আমার যখন ১৫ বছর বয়স, তখন আমার পরিবার ইউনাইটেড স্টেটসে চলে আসে। কয়েক বছরের মাঝেই সঙ্গ আর পরিবেশের প্রভাবে ধর্ম আমার জীবন থেকে পুরোপুরি হারিয়ে তো গেলই, সেই সাথে আমি ধর্মের প্রতি অবিশ্বাসী হয়ে উঠলাম, বিশেষ করে কয়েকটা দর্শন (ফিলোসফি) ক্লাস করার পর। আমার মনে হয়, দীনের পথে আমার ফিরে আসার যাত্রাটা একটা ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপ ছিল। ১৯ বছর বয়সে যখন আমি ইসলামের প্রকৃত মানে কি সেটা জানা আবিস্কার করা শুরু করলাম, তখন আমি নিউ ইয়র্কে। নিউ ইয়র্ক একটা চমৎকার জায়গা। সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্রপূর্ণ জায়গাগুলোর মাঝে একটা। সেখানে আমি অনেকগুলো গ্রুপের সাথে মিশেছিলাম, যারা সবাই নিজেদের সুন্নী ইসলামের প্রতিনিধি বলে দাবী করত। আমি যখন কোন একটা গ্রুপের স্টাডি সার্কেলে বসতাম, তখন আমি প্রায়ই “অন্য” গ্রুপগুলোর বিভ্রান্তি সম্পর্কে শুনতে পেতাম। হয়তো রাস্তার ঠিক ওপারে থাকা “অন্য গ্রুপটা” যে কতটুকু নষ্ট, বিভ্রান্ত, বিপথগামী, এমনকি তারা আমার নিজের পরিত্রাণের জন্য কতটা বিপজ্জনক, এসব প্রায়ই আমার কানে আসত। ভালর জন্য হোক কিংবা খারাপের জন্য হোক, আমি শেখার জন্য একটা নিয়ম দাঁড় করিয়ে ফেললাম যে আমি দুই গ্রুপের কথাই শুনে দেখব। এরকম কোন “বিচ্যুত” গ্রুপের (অন্যদের চোখে) কথা আমার কানে আসলেই আমি সেই “বিচ্যুত” লোকগুলোর সাথে দেখা করে তাদের সাথে কথা বলতাম, যাতে তারা আসলে কি বলেছে সেটা সরাসরি তাদের মুখ থেকেই শুনতে পারি। এখন আমি বুঝতে পারছি যে, সে বয়সে সেটা করা অনেক বিপদজনক কাজ ছিল, কিন্তু ইসলামের পথে ফিরে আসার জন্য সেটাই ছিল আমার প্রথম পদক্ষেপ। আমি ইসলামের পথে ফিরে আসার কথা চিন্তাই করতাম না যদি আমার মাঝে সামান্য হলেও খোলা মন না থাকত।...