কুর’আনের সাথে গভীর সম্পর্ক

কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন তিলাওয়াত প্রতিদিনের একটা অবশ্য কাজ। আমি আপনাকে গোটা পারা খতম দিতে বলছি না, এখন আর আমি এতটা আশা করিনা । কিন্তু এক পাতা করে পড়ুন, আরবীতে, আপনার তিলাওয়াত যত খারাপই হোক না কেন …আপনার তিলাওয়াত যতই খারাপ হোক না, কিছুই আসে যায় না। যদি আপনি আপনার তিলাওয়াত নিয়ে লজ্জ্বা পান তাহলে একটা রুমে যেয়ে দরজা লাগিয়ে দেন। কিন্তু জোরে জোরে তিলাওয়াত করবেন, মনে মনে না, সজোরে । এবং তিলাওয়াতের আগে, যদি আপনার আরবি পড়তে সমস্যা থাকে তাহলে আল্লাহ কাছে দুয়া করবেন ‘’ইয়া আল্লাহ – আমি তোমার বাণী তিলাওয়াত করছি, শুধু তোমারই জন্যে … এবং একমাত্র তুমিই পার আমার জন্যে একে সহজ করে দিতে । একমাত্র তুমিই পার আমার জন্যে কুরআনের তিলাওয়াতকে সহজ করে দিতে, এটির হিফজ সহজ করে দিতে, এটির বুঝ সহজ করে দিতে .. এর প্রতি আমার ভালবাসাকে বাড়িয়ে দিতে এবং এটি দিয়ে আমার নামাজকে সহজ করে দিতে । একমাত্র তুমিই পার আমাকে সাহায্য করতে। ইয়া আল্লাহ, আমার এই তিলাওয়াত শুধু তোমারই জন্য। ‘’ এটি হবে আল্লাহর সাথে আপনার একান্ত ব্যক্তিগত সময় (নামাজ ব্যতিত) । মাত্র ১০ মিনিট লাগবে । কিন্তু আপনাকে এই সময়টা বের করে নিতে হবে । আপনার জীবনের মাঝ থেকে এই সময়টা বের করে নিতে হবে । এবং যখন কুরআনের প্রতি আপনার ভালবাসা তৈরী হয়ে যাবে, আমাকে আর আপনাকে এভাবে বলে বোঝাতে হবেনা ১০ মিনিট সময় দেবার জন্যে, আপনি নিজে থেকে ২০, ৩০, ৪০ ৫০ মিনিট, এক ঘন্টা ধরে কুরআন নিয়ে বসে থাকবেন। সময়টা বাড়তেই থাকবে। সময়টা বাড়বে, কিন্তু এটা নিজে থেকে হতে হবে । আপনি যদি নিজেকে একটা রুটিনে নিয়ে আসতে না পারেন, এটা কখনই হবে না।এসব কিছুই আপনার কাজে লাগবে না যতক্ষণ পর্যন্ত এটিকে আপনার দৈনন্দিন রুটিনে আসবেন। আপনি সত্যিই...

আমার সবচেয়ে প্রিয় দুআ

দু’আটি হল সূরা আল-ফুরকান এর ৭৪ নং আয়াতঃ وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا এবং যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা (নয়নের প্রশান্তি) দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ...

প্রত্যাশার মাস রামাদান (৫ম পর্ব)

আর যখনই আপনি দোয়া করবেন .. আল্লাহ সাথে সাথেই তার জবাব দিবেন। এই আয়াতটি রামাদান প্রসঙ্গে। বিশেষ করে আল্লাহ যেহেতু রমজান মাসে কুরআন প্রেরণ করেছেন, তাই এই মাসে তাঁকে ডাকতে থাকুন। আল্লাহর কাছে বিভিন্ন জিনিস চাইতে থাকুন, আল্লাহর সাথে কথা বলুন, আল্লাহর সাথে কথা বলুন যখন আপনি একা থাকেন, আল্লাহর সাথে কথা বলুন যখন আপনি গাড়িতে থাকেন। আপনাকে আরবিতে কথা বলতে হবে না, তাঁর সাথে পাঞ্জাবি, বাংলা, ইংরেজি যেকোনো ভাষায় আপনি কথা বলতে পারেন। আপনাকে তাঁর সাথে বইয়ের ভাষায় কথা বলতে হবে না, সাধারণ কথ্য ভাষায়ও কথা বলতে পারেন। আল্লাহ সব ভাষা বুঝেন। আপনি যদি কুরআনের ভাষায় কথা বলতে না পারেন, সমস্যা নেই। আল্লাহ আপনার নিকট থেকে সর্বপ্রথম যে বিষয়টা চান তা হলো, তাঁর সাথে আপনি যোগাযোগ করুন, তাঁর সাথে কথা বলুন, তাঁকে ডাকুন। কতজন মানুষ আসলে আল্লাহকে ডাকে, তাঁর সাথে কথা বলে, তাঁর নিকট কাকুতি-মিনতি করে, কান্নাকাটি করে? এভাবে একা একা আল্লাহর সাথে কথা বলার সময় কেউ দেখে ফেলবে ভেবে আমরা বিব্রত ফিল করতে পারি। মানুষ ভাবতে পারে আমার হয়তো মাথায় সমস্যা আছে। এটাকেই বলা হয় ঈমান বিল গায়েব। অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস। আপনি যদি বিব্রত ফিল করেন, তাহলে মনে হতে পারে, তিনি আসলে আমার কথা শুনছেন না। যদি আসলেই বিশ্বাস করেন যে, তিনি আপনার কথা শুনছেন তাহলে তাঁর সাথে কথা বলুন। মানুষ যাই মনে করুক না কেন তাতে কিছু যায় আসে না। এই কথোপকখন শুধু আল্লাহ এবং আমার মাঝে। তাই তিনি আপনাকে প্রস্তাব দিচ্ছেন যে, “যখনই তুমি আমাকে ডাকবে আমি তার জবাব দিবো।” আর এর বিনিময়ে তিনি আপনার নিকট একটা অনুরোধ করছেন – فَلْيَسْتَجِيبُوا – “কাজেই তাদের কমপক্ষে আমার ডাকে সাড়া দেয়ার চেষ্টা করা উচিত।” আপনি আল্লাহর সাথে কথা বলছেন, আর আল্লাহ বলছেন, হ্যাঁ, আমি তোমার ডাকে সাড়া...

প্রত্যাশার মাস রামাদান (৪র্থ পর্ব)

আজকের খুৎবার পরিসংহারে এসে আমি এই মাসের অন্যতম একটি শ্রেষ্ঠ উপহার নিয়ে কথা বলতে চাই। রামাদানের আয়াতে অনেকগুলো উপহারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, আমি শুধু একটি উপহার নিয়ে কথা বলতে চাই। আশা করি, আমি আপনি এর সুযোগ পরিপূর্ণরূপে কাজে লাগাতে পারবো। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জ্বাল বলেন – وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ – “আর আমার বান্দারা যখন আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে।”  আল্লাহ এখানে বলেন নি, যদি আমার বান্দারা জিজ্ঞেস করে, তিনি বলেছেন, যখন আমার বান্দারা জিজ্ঞেস করে। কারণ তিনি আশা করেন যে, এটা অবশ্যই ঘটবে। তিনি আপনার সম্পর্কে আশাবাদী। আপনি হয়তো আপনার সম্পর্কে আশাবাদী নাও হতে পারেন, কিন্তু আল্লাহ আপনাকে নিয়ে আশাবাদী। তিনি রাসূল (স) কে বলেন, যখন তারা আপনাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে….. সাধারণভাবে আয়াতটি তো এমন হওয়ার কথা ছিল, যখন তারা আপনাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, আপনি তাদের বলে দিন আমি নিকটে। কিন্তু আয়াতের বক্তব্য এটা নয়, আয়াতের বক্তব্য হলো – যখন তারা আপনার নিকট আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে… এটা বলার পর তিনি তাঁর রাসূলের সাথে কথা বলা বন্ধ করে আমার আপনার সাথে সরাসরি কথা বলা শুরু করলেন এবং বলেন – নিশ্চিতভাবেই আমি সন্নিকটে। আয়াতের মাঝখানে এসে বক্তব্যটি আর আল্লাহ এবং রাসূল (স) এর সাথে না হয়ে আল্লাহ এবং আমার আপনার সাথে সরাসরি হয়ে গেলো। বহুদিন যাবৎ আপনি হয়তো আল্লাহর সাথে কথা বলেন না। আপনি যদি কারো সাথে অনেক দিন কথা না বলেন, আপনার মনে হতে পারে সেও হয়তো আপনার সাথে কথা বলতে চায় না। “এতদিন কোথায় ছিলে তুমি?” আপনি অন্য একজনের মাধ্যমে তার সাথে কথা বলতে চান। সে কি এখনো আমার প্রতি রাগান্বিত?আপনি তার সাথে সরাসরি কোনো যোগাযোগ করতে চান না। কিন্তু আল্লাহ আজ্জা ওয়া জ্বাল সেই দেয়ালটি ভেঙে...